সমাজ
সমাজে চাঁদাবাজির সংস্কৃতি বন্ধ করুন: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, চাঁদাবাজি সমাজে একটি সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে।
সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, 'আমার সহকর্মী সংসদ সদস্যদের কাছে আমার আবেদন। আসুন আমরা এই একটি কারণে ঐক্যবদ্ধ হই, যেখানে কোনো পয়সা খরচ হবে না। কিছুই লাগবে না। আমরা তাদের সমর্থন করব না, শুধু তাদের প্রতিহত করব। আমার মনে হয়, এটা করলেই বাংলাদেশ টিকে থাকবে।’
একটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ উল্লেখ করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, পণ্য পরিবহনে চাঁদা দিতে হয়। এতে মোট দাম বাড়ে। বাড়ি নির্মাণ করতে হলে চাঁদা দিতে হয়।’
আরও পড়ুন: চলচ্চিত্র প্রযোজকের বিরুদ্ধে 'হত্যাচেষ্টা ও চাঁদাবাজির' অভিযোগ এনে শাকিব খানের মামলা
কেউ যদি চাঁদার টাকা দিতে না চায় তাহলে তাকে রড, ইট, সিমেন্ট বা বালু সরবরাহের কাজ দিতে হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘গরিব হকারদের কাছেও চাঁদাবাজি করা হয়, রিকশা স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজরাও থাকে। চাঁদাবাজি একটি ভয়াবহ ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে।’
এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সামনে ভয়ংকর সমস্যা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি সব সংসদ সদস্যকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চাঁদাবাজদের সমর্থন না করতে এবং তাদের প্রতিহত করার শপথ গ্রহণের আহ্বান জানান।
অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির আরেক সদস্য ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখিয়ে বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরম বিক্রির টাকা উপাচার্য, উপউপাচার্য ও অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে।
‘চবি ছাত্রলীগ এই অর্থ ভাগাভাগির অংশীদার হতে চায়, যা তারা আগেও করেছে।’
শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে মুজিবুল হক বলেন, এটা যদি সঠিক হয়, তাহলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জনগণকে জানাতে হবে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
রাণীশংকৈলে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে ২ যুবক গ্রেপ্তার
বিএনপি রাষ্ট্র, সমাজ ও সাংবাদিকদের শত্রু: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘এই রাষ্ট্র-সমাজ ও সাংবাদিকদের শত্রু বিএনপি, এরা মানবতারও শত্রু। এদের প্রতিহত করতে হবে।’
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সাপ্তাহিক ‘চাঁটগার সংবাদ’ পত্রিকার ১১তম বর্ষপূর্তি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিদেশে বসে গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দেশে মামলা হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে গিয়ে এখন ইঁদুরের গর্তে ঢুকেছে। তাদের নেতারা গর্তের মধ্য থেকে একটু একটু করে তাকিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করে।’
তিনি আরও বরেন, ‘তারা গাড়িতে চোরাগুপ্তা হামলা চালায়, মানুষের উপর হামলা চালায়, স্কুল-ঘর পুড়িয়ে দেয়, ৩২ জন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করেছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা সাংবাদিকের বেশ ধরে গাড়িতে আগুন দিতে যায়।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে দেশকে ধ্বংস করার জন্য বায়তুল মুকাররমে আগুন দেওয়া হয়েছিল। পবিত্র কোরআনে আগুন দেওয়া হয়েছিল, শত শত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। সাড়ে তিন হাজার গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। বহু ট্রেন-লঞ্চে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল। শতাধিক ড্রাইভারকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে বিএনপি-জামাত।’
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই অগ্নিসন্ত্রাসকে মোকাবিলা করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছি উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৮ সালেও সেই একই অপচেষ্টা হয়েছিল, তারা সফল হয়নি। এবারও দেশের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, এখনও হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করতে হবে।’
চাঁটগার সংবাদ পত্রিকার জন্য শুভকামনা জানিয়ে গণমাধ্যমের উদ্দেশে ড. হাছান বলেন, আজকে যে দেশটা বদলে গেল, মানব উন্নয়ন, সামাজিক, অর্থনৈতিকসহ সব সূচকে আমরা যে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছি, পাকিস্তান যে আজকে আমাদের দিকে তাকিয়ে হা-হুতাশ করে, বাংলাদেশ কীভাবে তাদের পেছনে ফেলে এগিয়ে গেল।
তিনি আরও বলেন, আমরা মানব উন্নয়ন, সামাজিক ও স্বাস্থ্য সূচকে ভারতকেও পেছনে ফেলেছি। এমনকি মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে ভারতকে আমরা অতিক্রম করেছি, সেই সত্যটা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সব প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতাকে উপড়ে ফেলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলো, সেই গল্পটাও গণমাধ্যমে আসা দরকার।
আরও পড়ুন: বিএনপির আগুনসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কলম ধরুন: সাংবাদিকদের প্রতি তথ্যমন্ত্রী
নির্বাচনে আসার জন্য সরকার কাউকে চাপ সৃষ্টি করছে না: তথ্যমন্ত্রী
সমাজের জন্য অনুসন্ধানী রিপোর্টিং প্রয়োজন: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মানুষ যে দিকে তাকায় না, সমাজ যেটি নিয়ে ভাবে না, দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি যে দিকে কাজ করে না, সেক্ষেত্রে বিশেষ রিপোর্টিং দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি খুলে দেয় এবং সমাজকেও ভাবায়।
তিনি বলেন, এমন অনেক রিপোর্ট পত্রিকার পাতায় ও টেলিভিশনে প্রচারের ফলে সমাজের তৃতীয় নয়ন উন্মোচিত হয়। দেশ ও সমাজের জন্য এ ধরনের অনুসন্ধানী রিপোর্টিং খুবই দরকার।
রবিবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটি আয়োজিত বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: তথ্যমন্ত্রী সম্পর্কে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
মন্ত্রী বলেন, যারা অনুসন্ধানী রিপোর্ট করেন তাদের অনেক সময় অনেক হুমকির মুখে পড়তে হয়। এখন তো এমন একটি সময় এসেছে যে, অনেকেই নিজের ব্যবসার পাহারাদার হিসেবে পত্রিকা বের করে ও টেলিভিশন খোলে।
আমি তথ্যমন্ত্রী হিসেবে বলছি, সেখানে থেকে কাজ করা অনেক কঠিন হয়। কিন্তু অনেক সাংবাদিক ঝুঁকি নিয়েই কাজ করে। তারা অনেক সময় রিপোর্ট নিয়ে আসে কিন্তু সম্পাদক সেটি সংবাদপত্রে ছাপান না, এ রকম ঘটনাও আছে।
তিনি বলেন, আমি যখন এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলাম না, তখনও রিপোর্টার্স ইউনিটির সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল, ভবিষ্যতেও যে পরিস্থিতিতেই থাকি না কেন আমি আপনাদের পাশে থাকব।
তিনি আরও বলেন, আমার ছোটবেলার অনেক বন্ধু সাংবাদিক। আমি এই সাংবাদিক বন্ধুদের কাছ থেকে জানি যে, সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে কত প্রতিবন্ধকতা এবং যারা সাংবাদিকতায় ঢোকে তারা অনেক মেধাবী। আমার যতটুকু সুযোগ ও সামর্থ্য থাকবে সবসময় আপনাদের সঙ্গে থাকব।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সিনিয়র সাংবাদিক শাহজাহান সরদার, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জালাল আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পুরস্কার জুরি বোর্ডের সদস্য জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনোয়ার হোসেন, মোস্তফা কামাল মজুমদার ও ডিআরইউ সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে ১৯ ক্যাটাগরিতে ২০ জন সাংবাদিককে পুরস্কৃত করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে দৈনিক সমকালের আবু সালেহ রনি, শিক্ষা বিষয়ে ডেইলি নিউ এইজের শাহীন আক্তার, অপরাধ বিষয়ে ঢাকা পোস্টের আদনান রহমান, তথ্য বিষয়ে দৈনিক জনকণ্ঠের রহিম শেখ, রাজনীতি বিষয়ে জাগো নিউজের জাহাঙ্গীর আলম, ক্রীড়া বিষয়ে দৈনিক কালের কণ্ঠের রাহেনুর ইসলাম, স্বাস্থ্য বিষয়ে দৈনিক যুগান্তরের হক ফারুক আহমেদ, সেবাখাতে দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশের ফয়সাল খান, কৃষি বিষয়ে চ্যানেল আই অনলাইনের আরেফিন তানজীব, আর্থিক খাতে দৈনিক কালবেলার মোহাম্মদ ইউসুফ (ইউসুফ আরেফিন), বৈদেশিক বিষয়ে দৈনিক সমকালের আবুযর আনছার উদ্দীন আহাম্মদ (রাজীব আহাম্মদ), নারী বিষয়ে দৈনিক ভোরের কাগজের বর্ণা মণি, বিদ্যুৎ বিষয়ে শেয়ার বিজের ইসমাইল আলী, সুশাসন বিষয়ে দৈনিক প্রথম আলোর আরিফুর রহমান, পোশাক খাতে সারাবাংলা ডটনেটের এমদাদুল হক তুহিন, সামগ্রিক অর্থনীতি বিষয়ে ফিনানসিয়াল এক্সপ্রেসের দৌলত আক্তার মালা, অর্থনীতিতে ফিনাসিয়াল এক্সপ্রেসের জসিম উদ্দিন হারুন, কৃষি বিষয়ে যুগ্মভাবে চ্যানেল২৪ এর মাকসুদ উন নবী ও মাছরাঙ্গা টিভির আবু জাহেদ মুহ. সেলিম, নারী-শিশু বিষয়ে চ্যানেল২৪ এর মাসউদুর রহমান।
এদের সবার হাতে ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং সম্মাননা তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ডিস লাইন ডিজিটালাইজড করার সময় বাড়ানো হবে: তথ্যমন্ত্রী
হামলার দায় ফেসবুক এড়াতে পারে না: তথ্যমন্ত্রী
দেশ ও সমাজ বিনির্মাণে গণমাধ্যম অনবদ্য ভূমিকা পালন করতে পারে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশ ও সমাজ বিনির্মাণে এবং একইসঙ্গে মানুষকে স্বপ্ন দেখানোর কাজে গণমাধ্যম অনবদ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যম সমাজের তৃতীয় নয়ন ও উন্মোচিত নয় এমন বিষয় উন্মোচন করতে পারে, যেখানে দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি পড়ে না, সেখানে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে পারে।
সোমবার সন্ধ্যায় দৈনিক কালবেলা পত্রিকার প্রথম বছর পূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর বেইলী রোডে অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির আন্দোলনে জনসমর্থন নেই: হাছান মাহমুদ
তিনি বলেন, ‘আমি কালবেলাকে অসংখ্য অভিনন্দন জানাই যে অত্যন্ত অল্প সময়ে, প্রকাশের কয়েক মাসের মধ্যে এটি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। পত্রিকাটি শতবর্ষী হোক।’
তিনি আরও বলেন, দৈনিক কালবেলা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে সমাজের দর্পণ হিসেবে কাজ করে, একইসঙ্গে দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা পালন করছে।
মন্ত্রী বলেন, সবার আগে সংবাদ পরিবেশনার প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে অসত্য সংবাদ পরিবেশন করে সমাজে অস্থিরতার অবস্থা যাতে তৈরি না হয়, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
এ সময় কালবেলার সম্পাদক আবেদ খান, নির্বাহী সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, প্রকাশক নজরুল ইসলাম, সম্পাদকীয় দল, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, সম্পাদক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা হাছান মাহমুদের
ফিলিস্তিনের বিষয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করছে ইউরোপীয় দেশগুলো : ড. হাছান মাহমুদ
জনপ্রতিনিধিরা সমাজে আদর্শ হলে ইতিবাচক পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
জনপ্রতিনিধিরা আদর্শবান হলে সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধিরা যতটা মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ পায় তা অন্য কোনো পেশার মানুষের পক্ষে সম্ভব হয় না। নির্বাচনের জন্য হোক অথবা মানুষের সেবা করার জন্য হোক, সমাজে জনপ্রতিনিধিদের মানুষের সঙ্গে মিশে থাকতে হয়।
তিনি বলেন, মানুষের অভাব অনটন থেকে শুরু করে দুঃখ-দুর্দশা এবং বিভিন্ন মতবিরোধে বিচার সালিশ করতে হয় জনপ্রতিনিধিদেরই। তাই জনপ্রতিনিধিরা যখন সমাজের সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়, মানুষ তাদের সব সমস্যা নির্দ্বিধায় জনপ্রতিনিধিদের বলতে পারে তখন সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।
তিনি রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের জন্য আয়োজিত “সিটি কর্পোরেশন সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ” কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: প্রকল্পে অংশীদারদের মতামতের সমন্বয় জরুরি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার জন্য শুধুমাত্র অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন এ ধারণার বিরোধিতা করে বলেন, সরকারি যেকোনো অর্থ একটি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খরচ হয়, সেখানে নিজের খেয়াল খুশি মতো খরচ করার সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, অর্থ বরাদ্দের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়নের সঙ্গে মানুষের অংশগ্রহণ যাতে সবাই নিজ নিজ সম্ভাবনাকে বিকশিত করার সুযোগ পায়।
মন্ত্রী এ সময় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের নিজ নিজ এলাকায় সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে নগরায়ন হলে তার সুবিধা সবাই ভোগ করবে। অপরিকল্পিত নগরায়ন হলে তা টেকসই হয় না বরং মানুষের ভোগান্তি বাড়ে।
এক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে আরও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, বিশ্বায়নের এই যুগে মানুষ একা বেঁচে থাকতে পারে না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের টিকে থাকতে হবে।
ডেঙ্গু রোগের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আপনি একা সচেতন হলে সামগ্রিকভাবে তা ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর হচ্ছে না। পাড়া-প্রতিবেশী থেকে শুরু করে সবাই যখন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেবে তখনই ডেঙ্গুর মতো রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
একা স্বার্থপরের মতো টিকে থাকার সময় শেষ উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিজ এলাকা এবং দেশের উন্নয়নে সবাইকেই সামগ্রিকভাবে অংশগ্রহণ এবং সচেতন হতে হবে।
জনগণকে জাগিয়ে তোলা এবং সচেতন করার ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আপনি আপনার এলাকার মানুষের যতটা কাছে যেতে পারবেন তা কোনো সরকারি কর্মকর্তা কিংবা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জায়েদা খাতুন।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মোজাফফর এবং সভাপতিত্ব করেন- স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম।
আরও পড়ুন: পৌরসভা পর্যায়ে পরিবেশবান্ধব পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অপরিহার্য: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
সন্ধ্যার মধ্যেই কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
সৃজনশীল সমাজ প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, জনপ্রতিনিধিদের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সৃজনশীল সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে হবে।
শনিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় স্থানীয় সরকার ইন্সটিটিউটে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরদের প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধিরা হলেন সমাজের পথ প্রদর্শক৷ শুধু ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে নয় সামাজিক উন্নয়নেও জনপ্রতিনিধিদের অবদান রাখতে হবে। উন্নয়ন করতে হবে পরিকল্পিতভাবে৷
আরও পড়ুন: নিজ এলাকার মানুষের পাশে সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলাম
কুমিল্লা শহরকে আদর্শ শহর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কমিশনারদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্ত্রী জানান, সরকার ডেঙ্গু মোকাবিলার জন্য কাজ করছে। এবছর অন্য সময়ের তুলনায় থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। মূলত আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্যই এবছর এসময়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গুর অবস্থা বেদনাদায়ক কিন্তু সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনসহ অনেক দেশের তুলনায় এখনো অনেক ভালো। ইতোমধ্যে মেয়রদের চিরুনি অভিযানসহ আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আবুল মুহিত ছিলেন আলোকিত সফল মানুষ: তাজুল ইসলাম
সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সহযোগিতা করবে সরকার: তাজুল ইসলাম
সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একার পক্ষে সমাজকে মাদকমুক্ত করা সম্ভব নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একার পক্ষে সমাজকে মাদকমুক্ত করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তিনি বলেন, ‘মাদকদ্রব্য আমাদের দেশে তৈরি না হলেও পাশের দেশ থেকে সেগুলো আসছে। মাদকের ছোবল থেকে নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে। এটি শুধু সরকার বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একার পক্ষ করার সম্ভব নয়। সমাজ মাদকমুক্ত করতে সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী পুলিশ লাইন্সে ‘রাজশাহী পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি জাদুঘর’ উদ্বোধনকালে এ তথ্য জানান তিনি। পরে তিনি জাদুঘর ঘুরে দেখেন এবং পরিদর্শন বইয়ে সাক্ষর করেন।
আরও পড়ুন:দুর্গাপূজায় পূজা মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা বাধ্যতামূলক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবিকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আরাকান আর্মিদের সঙ্গে সে দেশের সরকারের যুদ্ধ হচ্ছে। এ কারণে মাঝে মাঝে আমাদের সীমান্তেও গোলা পড়ছে। এর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবাদ জানিয়েছে। মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবিকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, অচিরেই সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘রাজশাহীতে বিএমডিএর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় যিনিই জড়িত থাকনা কেন; তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তদন্ত করে সবাইকে আইনের মুখোমুখি করা হবে।’
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজশাহী অঞ্চলে শতাধিক পুলিশ সদস্য শহীদ হয়েছেন। তাদের বীরত্বগাঁথা ও দেশপ্রেমের স্মৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার করা হলো। এর মাধ্যমে শহীদদের স্মরণ করা হচ্ছে। তাদের অবদান কখনো ভুলবে না বাংলাদেশ।’
জাদুঘর উদ্বোধন শেষে মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে তিনি ‘মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী পুলিশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। পরে শহীদ পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা প্রদান করেন তিনি।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের দিকে গুলি চালানোর বিরুদ্ধে মিয়ানমারকে সতর্ক করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রে এমআরপি পুনরায় চালুর বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সমাজে অটিস্টিক মানুষদের পূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে:পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সমাজে অটিস্টিক মানুষদের পূর্ণভাবে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের ৭৫ মিলিয়নেরর বেশি অটিস্টিক মানুষ যাতে তাদের প্রতিভাকে সর্বোত্তমভাবে কাজে লাগাতে পারে এবং সমাজে যাতে পূর্ণ অংশগ্রহণ করতে পারে তা নিশ্চিতে আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পুর্নব্যক্ত করছি।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সদরদপ্তরে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। জাতিসংঘস্থ বাংলাদেশ ও কাতার স্থায়ী মিশন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অটিজম স্পিক্সস্ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ড. মোমেন এসময় কোভিড-১৯ অতিমারির সময়ে অটিজম আক্রান্ত শিশু ও তাদের পরিবারের জন্য বিশেষ সহায়তা পদক্ষেপ নেয়া ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারসহ বাংলাদেশের উত্তম অনুশীলনগুলো তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও জোরদার হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অতিমারিকালে শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত হওয়ার ফলে সারাবিশ্বে অটিজমের শিকার শিশুরা সামঞ্জস্যহীনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যমান সামাজিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা, শক্তিশালী তথ্য-প্রযুক্তি অবকাঠামো ও বিস্তৃত কমিউনিটি-ভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবা অনেক পরিবারকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করেছে।
বাংলাদেশে অটিজম বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশে অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা লক্ষণীয়হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অটিজমের শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবার যে সকল চ্যালেঞ্জ ও সামাজিক গঞ্জনা মোকাবিলা করছে, তা প্রশমিত ও দূর করতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, ও সংশ্লিষ্ট অংশীজন একসঙ্গে কাজ করছে।
অটিস্টিক ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষায় গৃহীত বিভিন্ন সরকারি পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন সহায়ক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণকে ত্বরান্বিত করতে আমাদের সরকার ‘উদ্ভাবনের সংস্কৃতি’র প্রচারকে এগিয়ে নিচ্ছে। তাছাড়া ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ উদ্যোগ একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে। যার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক ব্যক্তিদের জন্য ই-সেবাসহ অন্যান্য ওয়েভ ও আইসিটি-ভিত্তিক পরিষেবাগুলো সম্প্রসারিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশের উষ্ণ সম্পর্কের ভিত্তি করে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ড. মোমেন বলেন, জাতীয় প্রচেষ্টার পাশাপাশি জাতিসংঘের উদ্যোগে ২০০৭ সালে শুরু হওয়া ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’সহ জাতিসংঘের অটিজম সংক্রান্ত পদক্ষেপসমূহে বাংলাদেশ তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশ ২০১৩ সালে ‘অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার, নিউরোডেভোলপমেন্ট ডিসঅর্ডারসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিবন্ধীতার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের আর্থ-সামাজিক চাহিদার সমাধান করা’ শীর্ষক সাধারণ-পরিষদ রেজুলেশন-৬৭/৮২ জাতিসংঘে পেশ করে, যা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও আরও বক্তব্য দেন কাতারের সামাজিক উন্নয়ন ও পরিবার মন্ত্রী মিজ্ মরিয়ম বিনতে আলী বিন নাসার আল-মিসনাদ, জাতিসংঘের গ্লোবাল কমিউনিকেশন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মিজ্ মেলিস্সা ফ্লেমিং, জাতিসংঘের ডেসা’র পরিচালক মিজ্ ড্যানিয়েলা ব্যাস ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিউইয়র্ক অফিসের পরিচালক ওয়েরনার ওবারমিয়ের।
এছাড়া অটিজমের শিকার ব্যক্তিরাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন পেশার মানুষ ভার্চুয়লি এতে অংশগ্রহণ করেন।
মেয়ে বিদেশে পড়তে যাওয়ায় ‘সমাজচ্যুত’ পরিবার
মেয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পড়তে যাওয়ায় দেশে থাকা পরিবারকে একঘরে করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মসজিদ কমিটির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
জানা গেছে, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার ভাটেরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের মেয়ে নুরুন নাহার চৌধুরী ঝর্ণা। আইন বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য গত ২৬ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে যান ঝর্ণা। সেখানে বিমানবন্দরে তার সংগঠনের চেয়ারম্যান জয়তূর্য চৌধুরীসহ কয়েকজন তাকে রিসিভ করেন। সেই ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করার পর এলাকায় ঝর্ণার নানা দুর্নাম ছড়াচ্ছে একটি গোষ্ঠী।
এর জের ধরে এলাকার মসজিদ পঞ্চায়েত কমিটি তার পরিবারকে সমাজচ্যুত করে।
ভুক্তভোগী ঝর্ণার বাবা হাজী আব্দুল হাই চৌধুরী (৭০) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন: পাঁচ প্রতিবন্ধী সদস্য নিয়ে এক হতদরিদ্র পরিবারের করুণ কাহিনী
অভিযোগে বলা হয়, হাজী আব্দুল হাই চৌধুরীর দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। মেয়েদের মধ্যে ঝর্ণা চৌধুরী দ্বিতীয়। ২০০৮ সাল থেকে ‘পজিটিভ জেনারেশন অব সোসাইটি বাংলাদেশ’ নামের সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। আর ২০১৩ সাল থেকে সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক। ঝর্ণা নারী অধিকার, নারী শিক্ষা নিয়ে কাজ করেন। এ কারণে এলাকার কিছু মানুষ তাকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখত। সিলেটে পড়াশোনার সময় থেকেই এলাকার কিছু মানুষ ঝর্ণাকে নিয়ে ফেসবুকে নানা অপপ্রচার শুরু করে। গত ২৬ ডিসেম্বর উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি। ঝর্ণার গ্রামের কিছু মানুষ তার যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া এবং সংগঠনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে ছবি তোলা নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করতে থাকে ফেসবুকে। বিষয়টি নিয়ে গত ৮ জানুয়ারি সিলেটের শাহপরান থানায় একটি জিডি করেন আব্দুল হাই চৌধুরী। এরপর এলাকার পঞ্চায়েতের লোকজন আব্দুল হাই চৌধুরীর কাছে জানতে চান তার মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে জয়তূর্য চৌধুরীর সঙ্গে চলাফেরা করছে কেন। তারা তাকে একঘরে করার হুমকি দিতে থাকেন।
এরপর স্থানীয় ভাটেরা বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সামছুল ইসলাম মাখন ও সাধারণ সম্পাদক আমিন মিয়া, কৃষ্ণপুর এলাকার বাসিন্দা শেখ টি এম মাছুম, এলাকার মুরব্বি বাবলু মিয়া, পংকি মিয়া, পাখি মিয়া ঝর্ণার বিচারের জন্য চাপ দিতে থাকেন।
আরও পড়ুন: অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত রিপন, চিকিৎসার জন্য সহায়তা চায় পরিবার
ঝর্ণার বাবাকে পঞ্চায়েত কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকতে চাপ দিচ্ছিলেন তারা। শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় পঞ্চায়েত কমিটির ডাকে সাড়া দেননি আব্দুল হাই চৌধুরী। বৈঠকে না যাওয়ায় গত শুক্রবার মসজিদে বৈঠক করে ঝর্ণার পরিবারকে সমাজচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয় মসজিদের পঞ্চায়েত কমিটি। ওই সিদ্ধান্তের কথা গত শুক্রবার টি এম মাছুম নামের এক ব্যক্তি তার ফেসবুকে পোস্ট করেন। এরপরই ঝর্ণার পরিবারকে সমাজচ্যুত করার বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এই নিয়ে কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গত মঙ্গলবার রাতে ভাটেরা ইউপি কার্যালয়ে এ বিষয়ে বৈঠক হয়। এই সময় স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটির লোকজনকে সতর্ক করা হয়।
এ ব্যাপারে ভাটেরা ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ এ কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, ঝর্ণাকে নিয়ে আগে যারা অপপ্রচার চালিয়েছে, তাদের আমি সতর্ক করেছি।
আরও পড়ুন: সন্তানকে বাঁচাতে অসহায় পরিবারের আকুতি
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি জেনে মসজিদ পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ও সম্পাদককে সতর্ক করে দিয়েছি। ঝর্ণার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে থানার ওসি ও ইউপি চেয়ারম্যানকেও নির্দেশ দিয়েছি।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভুষন রায় বলেন,নূরুননাহার ঝর্ণার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটির লোকজনকে সতর্ক করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে এক দম্পতি
রাগের বশবর্তী হয়ে তালাক দেয়ার পর হিল্লা বিয়ে না দিয়ে আবার বিয়ে করায় সমাজচ্যুত হয়ে এক ঘরে হয়ে থাকা আয়নাল হক ও জমিরন বেগম দম্পতি প্রশাসনের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিত জীবনে ফিরেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে আয়নাল হকের বাড়িতে এই দম্পতি একসাথে বসবাস শুরু করেছে। তাদের বাড়িতে পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনরা আসতে শুরু করেছেন।
দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বিকালে ছলিমনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানীয় সমাজের সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ওই দম্পত্তির ওপর সকল প্রকার বিধি নিষেধ প্রত্যাহার করে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
ভুক্তভোগী আয়নাল হক জানান, কয়েক মাস আগে নিজেদের মধ্যে রাগারাগি হয়ে দুইজনই মৌখিকভাবে তিন তালাক দেন। পরে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে তারা এক মাওলানার মাধ্যমে আবার বিয়ে করেন।
কিন্তু স্থানীয় মুফতি হাফেজদের কথায় এলাকার প্রভাবশালীরা তার স্ত্রীকে হিল্লে বিয়ে দিতে চেয়েছিল। হিল্লার জন্য পাত্রও ঠিক করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ওসি প্রদীপ দম্পতির সব সম্পত্তি রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে নিতে নির্দেশ
হিল্লে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় গত দুই থেকে তিন মাস ধরে তাদেরকে একঘরে করে রাখা হয়। সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া এই দম্পতিকে। এমনকি নিজের সন্তানদেরকেও বাবা মায়ের সাথে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি।
আয়নাল বলেন, আমাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। ঈদে এক টুকরো কোরবানির মাংসও মিলেনি। শুধু তাই নয়, প্রতিবেশী আমির চাঁন আমার বাড়ির চলাচলের রাস্তাও কেটে দিয়েছে। সামাজের ভয়ে কেউ আয়নালকে কাজেও নেয়নি। দুইতিন মাস তাদের বেকার হয়ে খেয়ে না খেয়ে বাড়িতেই কাটাতে হয়েছে।
বিষয়টি মিমাংসার জন্য সামাজপতিদের দ্বারে দ্বারে সহানুভূতি চেয়ে অনুরোধ করলেও কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। এমনকি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও বিষয়টি সমাধান করতে ব্যর্থ হন।
তিনি জানান, অবশেষে চেয়ারম্যানের পরামর্শে জরিমন বেগম- হাফেজ মোস্তফা কামাল, ব্যবসায়ী শাহজাহান আলী, নাসিরউদ্দিন, আমির চাঁন, জুলহাস, সহিদ আলী, রাসেল ইসলাম, আমিনুর ইসলাম, মুফতি আনোয়ার হোসাইন, সুরমান আলীর নামে দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সুন্দরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র রায় বলেন, আমি মুসলিম ধর্ম সম্পর্কে তেমন জানি না। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি সমাধান করে দিতে বলেছিলাম। কেউ আমার কথা শোনেনি। পরিবারটি আমার কাছে গেলে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেই।
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জামাল হোসেন জানান, ওই এলাকায় কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও ধর্মান্ধ কিছু মানুষ রয়েছে। তারা একটি হিল্লে বিয়েকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল। এ ঘটনায় ইন্ধনদাতা ও ফতোয়াদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে এ বিষয়ে কেউ যদি অশান্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চায় তবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: আউয়াল দম্পতির ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ নিয়ে হাইকোর্টের রুল
দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রত্যয় হাসান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজপতিদের নিয়ে ছলিমনগর স্কুলে বৈঠকে বসেছিলাম। কোরআন হাদিসের আলোকে তালাক কিভাবে হয় বা হয় না এ বিষয়টি উপস্থিত সকলকে বুঝাতে পেরেছি। বৈঠকে উপস্থিত সকলেই তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। এরপর আমরা ওই দম্পত্তিকে সমাজে ফিরিয়ে দিয়েছি