বিপৎসীমা
খুলনায় ৫ নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে
পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা অঞ্চলের নদ-নদীতে জোয়ারের চাপ বেড়েছে। এর ফলে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), খুলনার তথ্যানুযায়ী, জেলার ৫টি নদীর ৮টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুরের জোয়ারে করমজল পর্যটন কেন্দ্র ৩ ফুট জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে এ বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের কুমির, হরিণ, কচ্ছপ ও বানরসহ অন্যান্য প্রাণীর তেমন কোন ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে বনবিভাগ।
আরও পড়ুন: বরগুনায় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে
পাউবো জানায় যে বেতনা খোলপেটুয়া, রূপসা, পশুর, শিবসা, ইছামতি নদীর আটটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে কপোতাক্ষ, শিবসা ও পশুরসহ বিভিন্ন নদীর তীরে ভাঙন, তীরবর্তী এলাকার বসতবাড়ি ও ফসলি জমি নিমজ্জিত হচ্ছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিনে ভারি বৃষ্টিতে ও এলাকায় বিভিন্ন নদ-নদীতে জোয়ারে পানিবৃদ্ধির কারণে ভদ্রা নদীর তীরে তিলডাংগা ইউনিয়নের বটবুনিয়া বাজার সংলগ্নে ওয়াবদা রাস্তায় ভাঙন দেখা যায়। এলাকার মানুষের মাঝে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। যেকোনো সময় ওয়াবদা রাস্তা ভেঙে ভিতরে পানি প্রবেশ করতে পারে।
দাকোপ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, আমি খবর পেয়েছি। অফিসিয়াল কাজে বাইরে থাকার কারণে এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীসহ ডিজি মহোদয়কে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হয়েছে। আশাকরি উনারা তাড়াতাড়ি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
স্থানীয় বাসিন্দা কার্তিক চক্রবর্তী, মিঠুন চক্রবর্তী, উৎপল রায়, সাধন রায়, ঠাকুর দাস হালদার জানান, চুনকুড়ি নদীতে পানিবৃদ্ধির কারণে ঘরের মধ্যেও পানি উঠে গেছে। ছাগল ও গবাদি পশু নিয়ে তারা বিপদে পড়েছে। এছাড়া ঘরে পানি ওঠায় রান্না-বান্না বন্ধ রয়েছে তাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রভাষ দাস ও নারায়ণ দাস বলেন, আষাঢ়-শ্রাবণ মাস আসলে খুবই কষ্টে থাকতে হয়। মাঝে মাঝেই পানি উঠে যায়। নদীর তীরে উঠা নামার এ রাস্তাটা যদি একটু উঁচু করে বাঁধ দেওয়া থাকতো, তাহলে আমরা কিছুটা শান্তিতে পার হতে পারতাম।
আরও পড়ুন: দক্ষিণাঞ্চলের ৮টি নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে
অন্যদিকে জানা যায়, সুন্দরবনের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রসহ অন্যান্য স্পট ও বনের অভ্যন্তরে ২/৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দুই দিন যাবত বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও চলতি পূর্ণিমার গোনের প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় কয়েক ফুট অধিক উচ্চতার জ্বলোচ্ছাসে প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবন ও বনের বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র।
মঙ্গলবার দুপুরের জোয়ারে করমজল পর্যটন কেন্দ্র ৩ ফুট জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে এ বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের কুমির, হরিণ, কচ্ছপ ও বানরসহ অন্যান্য প্রাণীর তেমন কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে বনবিভাগ।
এদিকে, সুন্দরবনের কটকা ও কচিকালী এলাকা বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন হওয়ায় সেখানেও ৩/৪ ফুট পানিতে তলিয়েছে। পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে সাগর পাড়ের সুন্দরবনের দুবলার চরও।
অপরদিকে, অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবন উপকূলের বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও চিংড়ি ঘের।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির বলেন, লঘুচাপ ও চলতি পূর্ণিমার গোনের প্রভাবে করমজলে স্বাভাবিকের তুলনায় ২/৩ ফুট জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পানিতে ভিজে ছুটির দিনে আগত দর্শনার্থীরা বাড়তি আনন্দ উপভোগ করেন। তবে এ জলোচ্ছ্বাসে বনের এ কেন্দ্রের কোথাও কোনো ধরনের ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
তিনি আরও বলেন, বনের অভ্যন্তরে পানি আরও বেশি হলেও তাতে তেমন কোনো ক্ষতি হবেনা বন্যপ্রাণীর। কারণ ঝড়-জ্বলোচ্ছাসে বন্যপ্রাণীর আশ্রয়ের জন্য বনের ভিতরের বিভিন্ন জায়গায় উঁচু টিলা তৈরি করে রাখা হয়েছে। পানি বাড়ায় বন্যপ্রাণী সেসব টিলায় আশ্রয় নিয়ে থাকে।
পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী মধুসূদন মল্লিক বলেন, খুলনার নদ-নদীতে পানির চাপ বেশি রয়েছে। জেলার চারটি পয়েন্টে নিয়মিত পানির চাপ মাপা হয়। গত তিন দিন প্রতিটি পয়েন্টেই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউব, খুলনা ২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, পূর্ণিমার প্রভাবে গত তিন দিন ধরে নদ-নদীতে বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার কিছু নদীতে পানির চাপ সামান্য কমেছে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে
দক্ষিণাঞ্চলের ৮টি নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে
বর্ষাকাল ও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আটটি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নদীর পানিও বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে।
রবিবার (১ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ১৯টি নদীর পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করা হয়। রবিবারের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৮টি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে, দক্ষিণাঞ্চলে এখন পর্যন্ত বন্যায় কোনো প্রভাব পড়েনি বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপরে, কুড়িগ্রামে বন্যার আশঙ্কা
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে
উজানে ও দেশের অভ্যন্তরে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কুড়িগ্রামের তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বাড়ছে অন্যন্য নদ-নদীর পানিও। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দুঃশ্চিতায় পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার আমন চাষীরা।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপরে
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ২৪৮ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া কুড়িগ্রাম সদর পয়েন্টের ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দলদলিয়া ইউনিয়নের তিস্তা নদীর অববাহিকার চাপড়ার পাড় এলাকার কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, রবিবার থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে আমার আমন খেতে পানি চলে আসছে। সোমবার ধান খেত তলিয়ে গেছে। জমিতে পানি উঠায় খুব চিন্তায় পড়ে গেছি। এর আগে দুইবার খেত নষ্ট হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপরে, কুড়িগ্রামে বন্যার আশঙ্কা
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম বলেন, এরকম বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে শীতকালীন মরিচ ও চালকুমড়াসহ বিভিন্ন শাক সবজির ক্ষতি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও ক্ষতি হতে পারে রোপা আমনেরও। আবহাওয়া এরকম থাকলে বিভিন্ন সবজিতে ক্ষতির আশঙ্কা আছে।
ফের তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
উজানের পাহাড়ি ঢল ও মৌসুমি বর্ষার বৃষ্টির কারণে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকাল ৪টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৬ মিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে ১৪ আগস্ট বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও একদিন পরে তা নিচে নেমে আসে। বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার বন্যার শঙ্কায় চিন্তিত তিস্তাপাড়ের মানুষ।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে
এদিকে বৃহস্পতিবার রাত থেকে পানি বাড়তে থাকে। শুক্রবার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমা বরাবরে প্রবাহিত হয়। ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে ৩ ঘণ্টা পরে দুপুর ১২টায় বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
উজানে ভারী বর্ষণ ও ভারতের গজলডোবায় তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় উজানের ঢেউ বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ।
ব্যারাজ ও নদী তীরের বাসিন্দারা জানান, পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের সব জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
নদী পাড়ের বাসিন্দারা জানান, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের আবাদ করা ফসলের খেতে পানি উঠেছে। নিম্নাঞ্চলের পরিবারগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। যার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ইতোমধ্যেই চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
চর গোবর্দ্ধন এলাকার আজিজুল ইসলাম জানান, রাত থেকে পানি বাড়ছে তিস্তায়। নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলের খেত রাস্তাঘাট ও পুকুর। চরাঞ্চলে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি যেতে নৌকা ব্যবহার করতে হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের শতশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
হলদিবাড়ি চরের আব্দুল মতিন বলেন, নদীতে পানি বাড়লেই চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। বর্ষাকালে বন্যা নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। রাত থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। ক্রমেই বাড়ছে পানি। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। পরিবার-পরিজন নিয়ে মাচাংয়ের ওপর বসে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে নদীপাড়ের মানুষদের। এসব এলাকার বাসিন্দারা শিশু-বৃদ্ধ আর গবাদি পশুপাখি নিয়ে চরম বিপদে রয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে
কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপরে
কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপরে
বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ সবগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
প্লাবিত হয়েছে জেলার নদ-নদীর অববাহিকায় নিম্নাঞ্চলগুলো। তলিয়ে গেছে আমন-আবাদসহ বিভিন্ন সবজির খেত।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত
সোমবার (১৪ আগস্ট) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়াও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৯ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৮ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তার অববাহিকার গড়াইপিয়ার এলাকার নয়ন মিয়া বলেন, ২-৩ দিন থেকে আবারও তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বাড়া দেখে এখানকার মানুষেরা অনেক দুঃশ্চিতায় আছে। তা ছাড়াও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও নদী ভাঙে, পানি কমলেও নদী ভাঙে। তিস্তা পাড়ের মানুষের ১২ মাসই কষ্ট।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে
লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার ৩৫ সেন্টিমিটার।
অর্থাৎ বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি কমলেও দেখা দিয়েছে ভাঙন
ব্যারেজ ও নদী তীরবর্তী মানুষেরা জানান, কয়েকদিন থেমে থেমে ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের সব জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
রবিবার সকাল থেকে পানি বাড়তে থাকে। সোমবার সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ভারতের গজলডোবায় তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় উজানের ঢেউ বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।
নদীপাড়ের মানুষজন জানায়, পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে।
নিম্নাঞ্চলের আবাদকৃত ফসলের খেতে পানি উঠেছে। শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। যার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ইতোমধ্যেই চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
মহিষখোঁচা ইউনিয়নের চর গোবর্ধন এলাকার মমিনুর রহমান বলেন, রাত থেকে পানি বাড়ছে তিস্তায়। নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলের খেত রাস্তাঘাট ও পুকুর। নিম্নাঞ্চলের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
হলদি বাড়ি তিস্তা পাড়ের আমছার আলী বলেন, নদীতে পানি বাড়লেই চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বর্ষাকালে বন্যা নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। রাত থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। ক্রমেই বাড়ছে পানি। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। পরিবার পরিজন নিয়ে মাচাংয়ের ওপর বসে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে নদীপাড়ের মানুষদের। এসব এলাকায় শিশু বৃদ্ধ আর গবাদি পশুপাখি নিয়ে চরম বিপদে রয়েছেন তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ-দৌলা বলেন, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সোমবার সকাল ৬টা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে তিস্তার তীরবর্তী এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: তিস্তা পাড়ে কৃষকের নির্ঘুম রাত কাটছে
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত
সিরাজগঞ্জে বিপৎসীমার কাছাকাছি যমুনার পানি
কয়েকদিন ধরে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। এতে সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে শুরু করেছে। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই।
সেইসঙ্গে যমুনা তীরবর্তী ৫টি উপজেলা কাজিপুর, চৌহালী, শাহজাদপুর, বেলকুচি ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ ভাঙনও শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে শতাধিক ঘরবাড়ি, খেয়াঘাট, গাছপালা ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে যমুনায় ভেসে গেছে স্পার বাঁধের ৪০ মিটার
এ ভাঙন নিয়ন্ত্রনে কাজ করছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (হেডকোয়ার্টার) রনজিৎ কুমার সরকার জানান, রবিবার (১৩ আগস্ট) সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪৫ মিটার। অপরদিকে কাজিপুরের মেঘাই পয়েন্টে পানি রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ১৫ মিটার।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও মেঘাই পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, উজানে ভারী বর্ষণের ফলে যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে আগামী ৭২ ঘণ্টায় যমুনা পানি বৃদ্ধি পেয়ে এ দফায় বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এতে সিরাজগঞ্জ বন্যার তেমন কোনো আশংকা নেই।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে যমুনা তীর ভাঙনে ৫০টি স্থাপনা ভেসে গেছে
সিরাজগঞ্জে ট্রাক-পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ৪
বরগুনায় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে
বর্ষা ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে বরগুনার গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় জেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে। নদীর পানি বাড়ায় বাঁধ ভাঙার শঙ্কায় কাটছে তাদের দিন।
তা ছাড়া পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে গেলে এইসব এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দেবে বলে বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), বরগুনা।
বরগুনার মাঝের চর এলাকার বাসিন্দা আলি আকবর বলেন, ‘আমাদের জমাজমি নেই। তাই নদীর চরে বাড়ি করেছি। ভাবছিলাম এবার বন্যা হবে না, কিন্তু পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে বোরো আবাদ মনে হয় বন্যায় খেয়ে যাবে। রাতে ঘুম হয় না, খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত
১ নম্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান রাজা বলেন, ‘মাঝের চরের বরগুনা অংশের কিছু এলাকার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। খুব শিগগিরই এই মৌসুমে এডিপির অর্থ দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মো. মাহাতাব হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) গৌরীচন্না ইউনিয়নের দক্ষিণে অবস্থিত খাকদন নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, বেতাগীর বিশখালী নদীর পানি ৩১ সেন্টিমিটার, বরগুনার আমতলীর বুড়েশ্বর/পায়রা নদীর পানি ১৭ সেন্টিমিটার, বরগুনার বিশখালী নদীর পানি ৪৩ সেন্টিমিটার এবং পাথরঘাটার বিশখালী নদীর পানি বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ৫৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপরে
কাজিপুরে বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যমুনার পানি
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত
উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে লালমনিরহাটের ১০ গ্রামের ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার, যা স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটারের চেয়ে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙন, অর্ধশতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন
দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, শুক্রবার দিবাগত গভীর রাত থেকে তিস্তার পানি মারাত্বকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে শুক্রবার ও শনিবার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা, ধরলা, বুড়ি তিস্তা ও সানিয়াজান নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলাসহ জেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) ভোর থেকে নদীগুলোর পানি বাড়তে শুরু করে। হাতীবান্ধায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে বিকালে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে।
পাউবো সূত্র জানায়, তিস্তাপাড়ের লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভারতের গজলডোবা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে। প্রচণ্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। আরও কী পরিমাণ পানি আসবে তা ধারণা করা যাচ্ছে না। পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
ফলে তিস্তার পানিতে পাটগ্রামে অবস্থিত বহুল আলোচিত বিলুপ্ত ছিটমহল আঙ্গরপোতা ও দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সির্ন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের চর এলাকার ১০ গ্রামের ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে তিস্তায় নৌকাডুবি, ৩ কৃষক নিখোঁজ
কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপরে
কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তাসহ সবকটি নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এসব নদ নদীর পানি।
পানি বৃদ্ধির ফলে প্লাবিত হয়ে পড়ছে নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চলসহ নতুন নতুন জেগে ওঠা চরাঞ্চলগুলো। এসব এলাকার কাঁচা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষেরা।
তবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে জেলায় নদী ভাঙনের তীব্রতা অনেকটা কমেছে।
বুধবার (১৩ জুলাই) বিকালে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অফিস জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের শুলকুর বাজারের ছড়ার পাড় এলাকার নওশাদ আলী বলেন, ‘কিছুদিন আগে বন্যা এসে রাস্তা ঘাট তলিয়ে গেছিল। যাতায়াতে আমাদের খুব কষ্ট ছিল। পানি কমার পর কয়েকদিন ভালোভাবে যাতায়াত করছি। আবারও পানি বাড়ার কারণে রাস্তায় হাঁটু পানি হয়েছে। আমাদের ফির চলাচলে কষ্ট শুরু হইলো।’
ওই এলাকার রুবেল মিয়া বলেন, বাড়ির চারিদিকে পানি ঠিকমতো বাহির হওয়া যাচ্ছে না। বাড়ি থেকে হাট বাজার করারও সমস্যা হয়েছে। এদিকে আবার ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়েও চিন্তার শেষ নাই। কখন যে পানিতে চলে যায় ভয়ে থাকি আমরা। গত বন্যায় সবজির খেত নষ্ট হওয়ার পর কিছু ছিল তাও এই পানিতে শেষ।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। আজ দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙন, অর্ধশতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন
কুড়িগ্রামে বন্যায় ১২ হাজার পরিবার পানিবন্দী, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট