তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী
তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
তথ্য চাইতে গিয়ে কোনো সাংবাদিক যাতে হেনস্তা বা হয়রানির শিকার না হয় সেটি নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর সার্কিট হাউজ রোডের তথ্য ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দ্বিতীয় পর্যায়ের কল্যাণ অনুদানের চেক বিতরণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কোথাও একজন সাংবাদিক তথ্য চাওয়ার জন্য কোনোভাবে যাতে হেনস্তা বা হয়রানির শিকার না হয়, সেই সুরক্ষা আমরা নিশ্চিত করতে চাই।
এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা এটা নিশ্চিত করতে চাই, বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে সাংবাদিকতা করতে গিয়ে কোনো সাংবাদিক যেন কোনো ধরনের হয়রানি বা ঝুঁকির মুখে না পড়ে। তাদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনভাবে গণমাধ্যম তাদের কাজ করবে। কর্তৃপক্ষকে, সরকারকে প্রশ্ন করবে, সমালোচনা করবে, এরকম একটি সমাজ ব্যবস্থা আমরা তৈরি করতে চাই।’
ঢাকার বাইরে গণমাধ্যমের একজন সাংবাদিককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড প্রদান করে জেলে নেওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, খবরটি জানার সঙ্গে সঙ্গে খোঁজ নিয়েছি। তথ্য কমিশন অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত করেছে।
কমিশনের কাছ থেকে সঠিক তথ্য জানতে চেয়েছেন বলে জানান তিনি।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষা বলয় তৈরির জন্য শেখ হাসিনার প্রয়াসের অংশ হিসেবে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে কল্যাণ অনুদান দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক চিন্তার ঊর্ধ্বে উঠে প্রয়োজন এবং পেশা বিবেচনায় সরকার সাংবাদিকদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: টিআইবির গবেষণা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পড়ে না: আরাফাত
নবম ওয়েজ বোর্ডের বকেয়া পাওনা দ্রুততার সঙ্গে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য সব গণমাধ্যমের মালিকপক্ষের প্রতি এ সময় আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এবং পেশাদার সাংবাদিকদের পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করছে।
এ সময় সহানুভূতি ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য বেসরকারি খাতের মালিকদের আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম পাশাপাশি হাতে হাত ধরে চলে, সে পরিবেশ আমরা নিশ্চিত করতে চাই।
সমাজে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে অপতথ্য প্রচারকারীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বাদলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া, ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও দৈনিক সংবাদের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাশেম হুমায়ুন, ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ঢাকার ৪২ জন সাংবাদিককে কল্যাণ অনুদানের চেক বিতরণ করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট হতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দ্বিতীয় পর্যায়ে ২৬৩ জন সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারের অনুকূলে বিতরণের জন্য ২ কোটি ৩ লাখ টাকা অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর আগে একই অর্থবছরে প্রথম পর্যায়ে ২৩৬ জন সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারের অনুকূলে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়।
প্রতিষ্ঠার পর ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট হতে দুস্থ, অস্বচ্ছল, দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিকদের এবং মৃত সাংবাদিকদের পরিবারের অনুকূলে আর্থিক সহায়তা/কল্যাণ অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত ট্রাস্ট থেকে ৩ হাজার ৯৩২ জন সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারের অনুকূলে ৩৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুকন্যা আছেন বলেই দেশে সমৃদ্ধি ঘটছে: আরাফাত
গণমাধ্যমে আরও পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা আনা প্রয়োজন: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, গণমাধ্যমে আরও পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা আনা প্রয়োজন। এ বিষয়গুলোতে অনতিবিলম্বে নজর দিতে হবে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের অপব্যবহার কখনোই কাম্য নয়। এ বিষয়ে মালিক-সাংবাদিক সব পক্ষেরই সহযোগিতা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: অপপ্রচার ও গুজবকে জবাবদিহির আওতায় আনতে চান তথ্য প্রতিমন্ত্রী
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নেতাদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত হয় সেটি যাতে টিকে থাকে, একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিতে যারা কাজ করে তারাও যাতে টিকে থাকে সে উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাহলে এক ধরনের ভারসাম্য থাকবে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে ভালো একটি জীবনযাপন করতে পারে সেটাও জরুরি। বাস্তবতার মধ্যে থেকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা-জবাবদিহি আনার চেষ্টা করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
এ সময় মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ের অধীনে যেসব কাজ হয় সেখানে পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা আনা হবে। মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অধিদপ্তরগুলো থেকে যেন কার্যকর ফলাফল পাওয়া যায় সে চেষ্টা থাকবে।
দেশের বিরুদ্ধে যেসব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র আছে সেগুলো নিয়ে কাজ করার প্রত্যয়ও এ সময় ব্যক্ত করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী।
পাশাপাশি বাংলাদেশের বিপক্ষে যেসব অপপ্রচার আছে তা মোকাবিলা করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার কৌশলগত পদক্ষেপও নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: অপতথ্যকে জবাবদিহির আওতায় আনতে চাই: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
কানাডার পর দুবাইয়ে প্রবেশেও বাধা, আজ দেশে ফিরতে পারেন মুরাদ
সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান কানাডা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়ে রবিবার সকালে দেশে ফিরে আসছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার রাতে বিমানবন্দরের একটি সূত্র ইউএনবিকে জানায়, মুরাদকে বহনকারী এমিরেটসের একটি ফ্লাইট সকাল ৮টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সাবেক প্রতিমন্ত্রীর পরিবারের এক সদস্য জানান, মুরাদ কানাডা থেকে রাত সাড়ে ১০টার (বাংলাদেশ সময়) দিকে দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছান।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে তার এক আত্মীয় জানান, দুবাই প্রবেশের বৈধ ভিসা না থাকায় তিনি দেশে ফিরে আসতে পারেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ২০ মিনিটের দিকে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে কানাডার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন ডা. মুরাদ হাসান।
আরও পড়ুন: দেশ ত্যাগ করেছেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ
টরন্টোভিত্তিক বাংলা নিউজ পোর্টাল ‘দ্য বেঙ্গলি টাইমস.কম’ জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত ১.৩১ মিনিটে (কানাডিয়ান সময়) টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান মুরাদ।
কানাডার অভিবাসন কর্মকর্তারা সাবেক প্রতিমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নারীদের প্রতি অশালীন, শিষ্টাচারবহির্ভূত বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
নিউজ পোর্টালটি বলছে, কর্মকর্তারা তাকে জড়িয়ে বিভিন্ন ভিডিও, ছবি এবং খবর দেখায় এবং সেগুলো সম্পর্কে জানতে চান।
এতে বলা হয়, মুরাদকে বাংলাদেশ ছেড়ে কানাডায় আসার কারণ সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করা হয়, কিন্তু তিনি কোনো ‘সন্তোষজনক উত্তর’ দিতে ব্যর্থ হন।
এরপর কানাডার বিমানবন্দর থেকে এমিরেটসের ফিরতি ফ্লাইটে মুরাদকে দুবাই ফেরত পাঠানো হয়।
এদিকে, মুরাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল শনিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্র তার প্রতি ক্ষুব্ধ নয়।
জাতীয় প্রেসক্লাবে নীরপদ সড়ক চাই-এর এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি বলেন, তবে কেউ যদি মুরাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয় তবে মামলা করতে পারে।
আরও পড়ুন: মুরাদের এমপি পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট
মুরাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি
সম্প্রতি মুরাদ হাসান সোশ্যাল মিডিয়ায় এক সাক্ষাৎকারে নারীদের প্রতি অসম্মানজনক মন্তব্যের জন্য বিভিন্ন মহলে সমালোচনার মুখে পড়েন। তার অশালীন মন্তব্য সম্বলিত বেশ কয়েকটি অডিও এবং ভিডিও গত কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
এছাড়া অভিনেতা ইমন ও অভিনেত্রী মাহিয়া মাহির সঙ্গে মন্ত্রীর দুই বছর আগের একটি ফোনালাপ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেই অডিও ক্লিপে মন্ত্রী অভিনেত্রীকে ‘অপমানজনক মন্তব্য’, হুমকি এবং অশালীন প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
সোমবার ৬ ডিসেম্বর) সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাম্প্রতিক অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে মঙ্গলবারের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে বলেছেন।
পরে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।
নারীদের কাছে ‘ক্ষমা’ চাইলেন মুরাদ
পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পর পরই নারীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান।
মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্টে মুরাদ লিখেন, ‘আমি যদি কোনো ভুল করে থাকি বা আমার কথায় মা-বোনদের কষ্ট দিয়ে থাকি, তাহলে আমাকে ক্ষমা করবেন।’
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব সিদ্ধান্ত তিনি চিরকাল মেনে চলবেন।
এর আগে, নারীদের প্রতি আপত্তিকর ও অশালীন মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন মুরাদ।
দায়িত্ব ছাড়ার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন এই প্রতিমন্ত্রী।
সম্প্রতি নারীদের প্রতি বিভিন্ন অসম্মানজনক মন্তব্যের জন্য মুরাদ বিভিন্ন মহলে ক্রমবর্ধমান সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। তার অশালীন মন্তব্য সম্বলিত বেশ কয়েকটি অডিও এবং ভিডিও গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর প্রতিমন্ত্রী মুরাদের পদত্যাগ
অভিনেতা ইমন ও অভিনেত্রী মাহিয়া মাহির সঙ্গে তার দুই বছর আগের একটি ফোনালাপ সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই অডিও ক্লিপে মুরাদ অভিনেত্রীকে বিভিন্ন ‘অপমানজনক মন্তব্য’ করেছিলেন, তাকে হুমকি দিয়েছিলেন এবং তাকে অশালীন প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
সোমবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাম্প্রতিক অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে মঙ্গলবারের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে বলেছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার মুরাদকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার এবং নারী ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে তার ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, জাতিগত ও অবমাননাকর’ মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মুরাদের আপত্তিকর অডিও সরাতে হাইকোর্টের নির্দেশ
প্রতিমন্ত্রী মুরাদের পদত্যাগ চায় বিএনপি
জিয়ার নামে জাদুঘর সরিয়ে ফেলা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান বলেছেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন গুপ্তঘাতক, পাকিস্তানের দালাল। রাষ্ট্রীয় অর্থে পরিচালিত কোনো জাদুঘর জিয়ার নামে থাকতে পারে না। তাই চট্টগ্রাম পুরনো সার্কিট হাউজে জিয়ার নামে চলা জাদুঘর সরিয়ে ফেলা হবে। সে ভবনকে পুনরায় সার্কিট হাউজে পরিণত করা হবে।
সোমবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এম এ হান্নান। সেই ঘোষণার মাইক্রোফোন জিয়ার জাদুঘরে থাকবে না। এটি কালুরঘাটে নিয়ে যাওয়া হবে।
ডা. মুরাদ বলেন, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষী। এখানে হানাদার বাহিনীর টর্চার সেলে শহীদ হয়েছেন অনেক বাঙালি। অনেকগুলো ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী এই সার্কিট হাউস। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের স্বার্থেই জাতির পিতার খুনির নামে রাষ্ট্রের টাকায় জাদুঘর হতে পারে না।
আরও পড়ুন: জিয়ার মরণোত্তর বিচার হতেই হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ চৌধুরীর পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক সহসভাপতি শহীদ উল আলম প্রমুখ।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের নানা সমস্যা, সমাধান এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের পাশে আছেন এবং থাকবেন। তিনি করোনাকালে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে দশ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। কোনো সাংবাদিকের দেশে, বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তিনি পাশে দাঁড়ান। কোনো সাংবাদিকের পরিবার অসহায় অবস্থায় পড়লে তিনি পাশে দাঁড়ান।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীকে চট্টগ্রামে আগমন এবং মতবিনিময় সভায় যোগ দেয়ায় ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করতে হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
জিয়ার মরণোত্তর বিচার হতেই হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার হতেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান।
তিনি বলেন, এদেশে খুনের ইতিহাস যারা তৈরি করেছে তাদের বিচার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর এদেশে ইনডেমনিটি জারি করা সেই খুনি জিয়াউর রহমান ও মুশতাকদের বিচার এখনও পর্যন্ত হয়নি। খুনি জিয়ার মরণোত্তর এবং যারা এখনও বেঁচে আছেন তারেক জিয়াসহ তাদের বিচার বাংলার মাটিতে হতেই হবে।
রবিবার বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের নিউজ স্টুডিও উদ্বোধন এবং বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও বিএফডিসির জন্য বরাদ্দকৃত স্থান পরিদর্শন শেষে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মাথা উচুঁ করে বাঁচতে শিখিয়েছেন। তিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন স্বাধীন-সার্বভৌম একটি দেশ, একটি জাতি। তিনি সর্বদা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।
ডা. মো. মুরাদ হাসান বলেন, এই বাংলাদেশকে সবাই লুটপাট করে খেয়েছে। আজ তারা সমৃদ্ধ। তাদের শাসন-শোষণ থেকে বেরিয়ে এসে বাঙালি জাতিকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে শিখিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুই এ জাতির ঠিকানা খুঁজে দিয়েছেন। সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে কাজ করতে হবে, সবাইকে সোনার মানুষ হতে হবে।
আরও পড়ুন: জিয়া ও খালেদা দুজনই হত্যার রাজনীতির পথে হেঁটেছেন: তথ্যমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের জন্য আমাদের আরও অনেক বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আাদর্শ ধারণ করতে হবে; বঙ্গবন্ধু কন্যার মতো ধিরচেতা দেশপ্রেমিক হতে হবে। সোনার বাংলায় সোনার মানুষ দরকার, বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে আমাদের সোনার মানুষ হতেই হবে। এভাবে দেশ চলতে পারেনা। জনগণের টাকা দিয়ে ফুটানী না করা এবং রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় না করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন করছেন আপনারা। আপনারাই এ দেশকে বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করছেন। নৈতিক দায়িত্ব দেশ বিরোধী খুনিচক্রদের পরিচয় উন্মোচন করা।
বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নিতাই কুমার ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াছমিন, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল হোসেন খান, বিটিভির অনুষ্ঠান পরিচালক জগদীশ এষ, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিচালক ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করতে হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বিএনপি জনগণের সাথে প্রতারণা করছে: তথ্যমন্ত্রী