বিদ্যুৎ ও জ্বালানি
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে চীনকে বাংলাদেশের আহ্বান
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে চীনের অংশগ্রহণ বাড়ানোর বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠকে আগামী পাঁচ বছরে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সোমবার প্রতিমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে গভীর সহযোগিতা ও পারস্পরিক স্বার্থ নিয়ে আলোচনা হয়।
হামিদ বলেন, ‘আমরা চীনের কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রত্যাশা করছি। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আগামী পাঁচ বছরে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন।’
চীনের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ইয়াওকে স্বাগত জানান নসরুল হামিদ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘চীনা কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।’
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ: নসরুল হামিদ
তিনি বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো বের করতে একটি বিশেষ দল গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে একটি বিশেষ দল গঠন করা যেতে পারে।’
উষ্ণ অভ্যর্থনা এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাষ্ট্রদূত ইয়াও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য চীনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। ইয়াও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সহযোগিতা বাড়ছে।
তিনি বলেন, সহযোগিতার ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করতে উভয় দেশকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে।
আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ আরও সমৃদ্ধ, শক্তিশালী ও উন্নত দেশ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন চীনা রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে তারা চীনা অর্থায়নে প্রকল্প, লিথিয়াম ব্যাটারি কারখানা স্থাপন, সেমি-কন্ডাক্টর কারখানা, বৈদ্যুতিক যানবাহন, ব্যাটারি স্টোরেজ সিস্টেম, স্মার্ট মিটার, সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, গ্যাস উত্তোলনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্দেশিকা প্রয়োগে জ্বালানির দাম কমতে পারে: নসরুল হামিদ
বিশ্বব্যাংককে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রকল্পে অর্থায়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান নসরুল হামিদের
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের প্রকল্পে দ্রুত অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের জন্য সফররত বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইসারের সঙ্গে মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
সভায় উল্লেখ করা হয় যে গ্যাস মিটার স্থাপনের জন্য বিশ্বব্যাংক দুটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে– যার বাস্তবায়ন শুরু হবে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বিদ্যুৎ খাতে ছয়টি প্রকল্প রয়েছে।
বৈঠকে উভয়পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: জগন্নাথ হল থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
বৈঠকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অর্জন, প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জের ওপর আলোকপাত করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও হাইড্রোজেন ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যাপক অবদান রাখবে।
নসরুল হামিদ উল্লেখ করেন, ‘হাইড্রোজেন এনার্জি এবং বৈদ্যুতিক যানবাহন খাতে সংশ্লিষ্টদের উৎসাহিত করতে বিশ্বব্যাংক একটি নীতিমালা প্রণয়নে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।’
তিনি বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটকে আন্তর্জাতিক মানের একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা কামনা করেন।
নসরুল হামিদ বলেন, বায়ু শক্তি, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা মোকাবিলায় বিদ্যুৎ খাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
নবায়নযোগ্য শক্তি, ক্যাপটিভ পাওয়ার, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক শক্তি সংকট, সৌর সেচ পাম্প, লিথিয়াম ব্যাটারি, জলবিদ্যুৎ, আঞ্চলিক বিদ্যুৎ বাণিজ্য, নেট মিটারিং ও ছাদে সৌর, সবুজ বিল্ডিং, বিদ্যুৎ ও শক্তির দক্ষ ও সাশ্রয়ী ব্যবহার, জ্বালানি, তেল শোধনাগার ও ভূমিভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল নিয়েও আলোচনা হয়।
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সক্ষমতা বৃদ্ধি, আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে মনোযোগ খুবই আশাব্যঞ্জক।
তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র অনুসন্ধানে বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের শীর্ষে এই নির্বাহী দক্ষতার উন্নতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং ক্রস বর্ডার পাওয়ার ট্রেড সংক্রান্ত বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বৈঠকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক পরিচালক (অবকাঠামো) গুয়াংজে চেন এবং ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর দন্দন চেন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে নববধূ হত্যা মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন
অর্থ আত্মসাত: অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জালালের ১২ বছর কারাদণ্ড
হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রাত ১০টার পর বন্ধ থাকবে: ডিএসসিসি
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য শপিংমল, সব ধরনের দোকানপাট, ব্যবসায়িক বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, কাঁচাবাজার, মার্কেট ও স্থাপনা রাত আটটায় বন্ধ করতে বলেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এছাড়া খাবার দোকান ও রেস্টুরেন্ট রাত ১০টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। তবে রাত ১১টা পর্যন্ত খাবার সরবরাহ করা যাবে।
সোমবার ডিএসসিসি এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সিনেমা হল ও চিত্তবিনোদনমূলক প্রতিষ্ঠান রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
আরও পড়ুন: ২৪ বছর ধরে হোল্ডিং ট্যাক্স না দেয়ায় গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ডিএসসিসির অভিযান
এছাড়া, সাধারণ ওষুধের দোকান রাত ১২টা পর্যন্ত এবং হাসপাতাল সংলগ্ন নিজস্ব ওষুধের দোকান রাত দুইটা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
উল্লেখ্য, এর আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে গত ১৬ জুন দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে রাত আটটার মধ্যে শপিংমল ও কাঁচা বাজার বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়য়ের মহাপরিচালক (প্রসাশন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী রাত আটটার মধ্যে দোকানপাট, শপিং মল, খাবারের দোকানসহ স্থাপনাগুলো বন্ধ রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ডিএসসিসির অভিযান
সংসদে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি বিল’ পেশ
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০২১ বুধবার সংসদে পেশ করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ নির্বিঘ্ন করতে আরও পাঁচ বছর বাড়াতে বিলটি পেশ করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিলটি পেশ করেন। বিদ্যমান আইনের মেয়াদ ২০২১ সালে শেষ হয়ে যাবে।
এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন, ২০২১’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
২০১০ সালে প্রণীত আইনটির মেয়াদ সর্বশেষ তিন বছর বাড়িয়ে ২০২১ সাল পর্যন্ত করা হয়েছিল। প্রস্তাবিত আইনে সময় বাড়ানো ছাড়া অন্য কোন পরিবর্তন করা হয়নি।
আরও পড়ুন: জীবনমানের উন্নয়নে সংসদীয় কার্যক্রম গতিশীল করতে হবে: স্পিকার
সংসদে ‘হাইওয়ে বিল-২০২১’ পেশ