ডায়াগনস্টিক
অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, দেশের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠা সব ধরনের অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগস্টিক সেন্টারসহ অবৈধ স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ করে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে বনানী কবরস্থানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বাল্যবন্ধু শেখ কামালসহ অন্য শহীদদের কবর জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চেয়েছি দেশে কতগুলো অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। যতগুলোই থাকুক, সব বন্ধ করে দিতে আমাদের অভিযান শিগগিরই শুরু করা হবে।
আরও পড়ুন: অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ডায়াগনসিস সেন্টার, ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা নিজেরাই যদি বন্ধ করে দেন ভালো, নাহলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এবার স্বাস্থ্যসেবাকে গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে দিতে কাজ করব। ঢাকা মেডিকেলে যে মানের ডাক্তার চিকিৎসা দিচ্ছে সেই মানের ডাক্তার জেলা-উপজেলা হাসপাতালে পাঠানো গেলে তো কাজটি সহজ হয়ে যায়। আর ডাক্তারদের সুযোগ-সুবিধা ভালো করলে তারাও নিশ্চয়ই জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কাজ করতে আগ্রহী হবেন। সব মিলিয়ে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে কাজ করা এবং সেটা আমরা করব।
আরও পড়ুন: প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বাল্যবন্ধু জাতির পিতার বড় ছেলে শেখ কামাল প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার বড় ছেলে শেখ কামাল বেঁচে থাকলে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার হাত নিঃসন্দেহে আরও অনেক বেশি শক্তিশালী হতো। শেখ হাসিনা সেই শক্ত হাতে বাংলাদেশকে আরও দ্রুততম সময়ে উন্নত দেশে পরিণত করতে পারতেন। কিন্তু ঘাতকরা অনেক বড় ক্ষতি করে দিয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্মৃতিচারণা করে বলেন, শেখ কামাল দেশকে নিয়ে অনেক ভাবতেন। আমরা কয়েকজন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলাম। আমরা দেখেছি, তিনি (শেখ কামাল) খেলাধুলার উন্নতির প্রতি খুবই আগ্রহী ছিলেন। বাংলাদেশ যেন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেলতে পারেন, সে জন্য তিনি খেলাধুলায় উৎসাহ দিতেন এবং পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। আজ তিনি বেঁচে থাকলে খেলাধুলাসহ সব দিকে বাংলাদেশ আরও দ্রুত এগিয়ে যেত।
আরও পড়ুন: নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন
বরিশালে ৩টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সীলগালা
বরিশালে তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সীলগালা করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হুমায়ুন শাহীন খানের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
বন্ধ করে দেয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো হলো- রয়েল সিটি সেন্টার, বরিশাল সিটি সেন্টার ও সাইন্স ল্যাব।
অভিযানের প্রথম দিনে বরিশাল নগরীর বান্দরোডস্থ শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে চারটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে কাগজপত্র বিহীন দুটি সিটি স্ক্যান সেন্টারসহ তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সীলগালা করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হুমায়ুন শাহীন খান জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে মঙ্গলবার সকাল থেকে আমরা অভিযান শুরু করেছি। বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় প্রায় আটশ’র মতো ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। আমরা বরিশাল নগরীতে অভিযান করছি। এছাড়া জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করছেন।
আরও পড়ুন: লাইসেন্স নেই, খুলনার ২৬টি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তালা
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে আমরা শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের মোট পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। এর মধ্যে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাগজপত্র সঠিক থাকায় সেটার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তবে রয়েল সিটি স্ক্যান নামের প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের বৈধ কোন কাগজপত্রই নেই।
তিনি বলেন, বরিশাল সিটি সেন্টার নামের যে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সেটির লাইসেন্স আছে ‘সি’ ক্যাটাগরির। কিন্তু সেখানে সিটি স্ক্যান করা হয়। সিটি স্ক্যানের জন্য ‘এ’ ক্যাটাগরির লাইসেন্স থাকতে হবে। সেটা দেখাতে না পারায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বরিশাল সিটি সেন্টারে অভিযানকালে দেখা গেছে, ‘হাসপাতালে ভর্তি রোগীকে একটি স্লিপ ধরিয়ে দিয়ে সিটি স্ক্যান করার জন্য বরিশাল সিটি সেন্টারে পাঠিয়েচেন চিকিৎসক। স্লিপে চিকিৎসকের সিল ও সই রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
অপরদিকে, সুলতানা ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি ‘সি’ ক্যাটাগরির হলেও সেখানে হরমন টেস্ট করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী হরমন পরীক্ষার জন্য ‘এ’ ক্যাটাগরির লাইসেন্স থাকতে হবে। সেটা না থাকায় সুলতানা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়া হাসপাতালের পূর্ব পাশে সাইন্স ল্যাব নামক ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির কোন কাগজপত্রই নেই। সে কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাসহ পুরোপুরিভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে ৩ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালকে জরিমানা
মাগুরায় নিবন্ধনবিহীন ৭ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ
গাজীপুরে ২০৬ হাসপাতাল-ক্লিনিক কেনো বন্ধ হবে না, জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
গাজীপুর জেলায় পরিবেশগত ছাড়পত্রবিহীন ২০৬টি বেসরকারি হাসপাতাল,ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে,তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো.মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো.কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে কেন গাজীপুর জেলায় পরিবেশগত ছাড়পত্রবিহীন ২০৬টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দেয়া হবে না,তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সাত জন বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কাওছার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো.রাসেল চৌধুরী।
আরও পড়ুন:সন্তানের অভিভাবকত্ব সংক্রান্ত সব মামলা ৬ মাসে নিষ্পত্তির নির্দেশ হাইকোর্টের
গত ৭ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের বাসিন্দা মেহেদী হাসান এ রিট দায়ের করেন। আইনজীবী কাওছার হোসেন জানান, আবেদনকারী মেহেদী হাসান তার স্ত্রীকে গাজীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। কিন্তু ওই হাসপাতালের হাইজেনিক পরিবেশ ছিল না। এই পরিবেশ না থাকায় হাসপাতালের রোগীরা মেডিকেল বর্জ্য-ময়লা আবর্জনার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এ পরিস্থিতিতে গত ৪ এপ্রিল গাজীপুরের জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের অফিসে সব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের পরিবেশ ছাড়পত্রের তথ্য চেয়ে আবেদন করেন।
তার আবেদনের প্রেক্ষিতে গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গাজীপুরে মোট ২৩০টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে। এর মধ্যে মোট ২৪টির ছাড়পত্র রয়েছে। বাকি ২০৬টির পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই।
এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা চেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরকে আইনি নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু নোটিশের জবাব পেয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। শুনানি শেষে আদালত রুলসহ আদেশ দেন বলে জানান আইনজীবী কাওছার হোসেন।
আরও পড়ুন:ডেসটিনি গ্রুপের পরিচালকের জামিন প্রশ্নে বিভক্ত আদেশ হাইকোর্টের
ঋণখেলাপির আইনি অধিকার থাকতে পারে না: হাইকোর্ট