দ.কোরিয়া
বাংলাদেশের রোহিঙ্গাদের জন্য ৩ মিলিয়ন ডলার মানবিক সহায়তা দেবে দ.কোরিয়া
কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের সরকার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তার জন্য ২০২৩ সালে তিন মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
বুধবার (২৬ জুলাই) ঢাকায় কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের দূতাবাস জানিয়েছে, এ বছরের মানবিক সহায়তা বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন- ইউএনএইচসিআর, আইওএম, ডব্লিউএফপি ও ইউনিসেফের মাধ্যমে দেওয়া হবে।
২০১৭ সাল থেকে কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের সরকার বাংলাদেশ সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের এবং তাদের স্বাগতিক সম্প্রদায়গুলোকে বার্ষিক তিন থেকে পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন একমাত্র সমাধান: দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান (জেআরপি) সমর্থনে এলপিজি, শিক্ষা ও খাবারের ব্যবস্থাসহ গত ছয় বছরে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থায়ন বিভিন্ন মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।
দূতাবাস বলেছে, কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের সরকার শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের মধ্যে সংলাপ সমর্থন করে এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের নিজ দেশে নিরাপদ, স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তন সমর্থন করে।
আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে সহযোগিতায় বাংলাদেশ ও দ. কোরিয়ার সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দ. কোরিয়ার ‘আরও উদ্যোগ’ চায় বাংলাদেশ
২০২২ সালে রেকর্ড ৫ হাজার ৮৯১ বাংলাদেশি কর্মী দ.কোরিয়ায় গেছেন
২০২২ সালে রেকর্ড পাঁচ হাজার ৮৯১ বাংলাদেশি কর্মী দক্ষিণ কোরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। বর্তমানে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাছে একটি ‘জনপ্রিয় ও পছন্দের’ গন্তব্য।
বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসের মতে, গত বছর তারা এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস) প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ‘নিম্ন ও মাঝারি’ দক্ষ কর্মী নিয়েছে।
আরও পড়ুন: জর্ডানে আগামী বছর ১২ হাজার বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছর বিদেশি ইপিএস কর্মীদের ভর্তি স্থগিত করার পর, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে দ. কোরিয়ার সরকার আবার কর্মী নেয়া শুরু করে।
দক্ষিণ কোরিয়া ২০০৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ইপিএস এর মাধ্যমে ২৮ হাজার ৬৯৭ জন বাংলাদেশি কর্মী নিয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে যে এই বছর প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১০০ থেকে ১২০ কর্মী নেবে দ. কোরিয়া।
বাংলাদেশে কোরিয়ান মিশন সোমবার জানিয়েছে, পূর্ব এশিয়ার দেশটি বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য, কারণ সেখানে তারা মাসে ন্যূনতম এক হাজার ৪২০ ডলার উপার্জন করতে পারে। যা দক্ষিণ কোরিয়ার আইনত গ্যারান্টিযুক্ত ন্যূনতম মজুরি।
এতে আরও বলা হয়েছে, ওভারটাইম পেমেন্ট মিলে মাসিক বেতন দুই থেকে তিন হাজার মার্কিন ডলারের বেশি হতে পারে।
বাংলাদেশে কোরিয়ান মিশন আরও জানায়, ‘এছাড়াও, দক্ষিণ কোরিয়া বিদেশি কর্মীদের দুর্ঘটনা বীমাসহ চার ধরণের সামাজিক নিরাপত্তা বীমা গ্রহণে উৎসাহিত করে।’
মিশন জানায়, ২০০৭ থেকে ২০২২ পর্যন্ত প্রায় ৩২০ জন কর্মী বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন, যারা প্রস্থান (দেশে ফিরে আসা) গ্যারান্টি বীমা এবং বিমান ভাড়ার বীমার টাকা না নিয়েই বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন। যা ব্যক্তিভেদে ৩০ হাজার টাকা থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
কোরিয়ান সরকার অবশ্য ঢাকায় ইপিএস সেন্টারের মাধ্যমে দেশে ফিরে আসা বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবস্থান ও যোগাযোগের তথ্য শনাক্ত করতে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের অর্থ ফেরত দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে।
যেসব কর্মী বীমার টাকা পাবেন তার মৃত্যু হলে, উপযুক্ত নথি উপস্থাপন করলে তার স্ত্রী, সন্তান বা বাবা-মা ওই টাকা পেতে পারেন।
এ বছরের প্রবাসী শ্রমিকদের প্রথম ব্যাচ আজ রাতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কোরিয়ান এয়ার কোম্পানির চার্টার্ড ফ্লাইটে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশে রওনা হবে।
প্রথম ব্যাচে ৯২ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের মধ্যে ৬৯ জন নতুন এবং ২৩ জন পুনরায় ভর্তি হয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি কর্মী নেবে মলদোভা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ থেকে ১২ হাজারের বেশি পোশাক শ্রমিক নেবে জর্ডান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায় দ.কোরিয়া: রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের দক্ষতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে দু’দেশের ‘দৃঢ় সম্পর্ক’কে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান বলে ঢাকায় নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং কিউন জানিয়েছেন।
২০২৩ সালে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী দু'দেশের শক্তিশালী সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুই দেশকে এখন সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোকে বৈচিত্র্যময় করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত অ্যাম্বাসেডর লেকচার সিরিজের ‘বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ক: ভবিষ্যতের পূর্বাভাস’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান। প্রখ্যাত কূটনীতিক এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ক নিয়ে কসমস ফাউন্ডেশনের ওয়েবিনার বৃহস্পতিবার