অবস্থা
খালেদার অবস্থা এখন স্থিতিশীল: ডা. জাহিদ
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল বলে বুধবার জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন,‘ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল এবং যেদিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তার তুলনায় কিছুটা উন্নতি হয়েছে।’
চিকিৎসক জানান, অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করেন।
‘তারা পরীক্ষার রিপোর্ট এবং তার শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছেন।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ বলেন, খালেদার পরবর্তী চিকিৎসার ধাপ নির্ধারণ করতে বিকালে মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনকে আরও কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হতে পারে।
আরও পড়ুন: গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন খালেদা জিয়া: ফখরুল
হঠাৎ জ্বর ও পেটব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে মঙ্গলবার ভোরে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার হাসপাতালে তার মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় তত্ত্বাবধানে তার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পরীক্ষা করানো হয়।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।
২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে তার মুক্তির পর থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সন কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: গভীর রাতে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের 8 ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করায় খালেদাকে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
পরে, একই বছর দুর্নীতির আরেকটি মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তার সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয় এই শর্তে যে তিনি তার গুলশানের বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ ছেড়ে যাবেন না।
আরও পড়ুন: এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে
খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা এখনও সঙ্কটাপন্ন: চিকিৎসক
একাধিক শারিরীক জটিলতা নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনও সঙ্কাটাপন্ন হলেও তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত এ খবর সত্য নয় বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা.এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তবে তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন কিডনি ও হৃদরোগের পাশাপাশি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন।
রবিবার খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এম জাহিদ হোসেন ইউএনবিকে বলেন, ম্যাডামের অবস্থা আগের মতোই আছে। তার অবস্থার কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি। আমরা একে সামান্য উন্নতিও বলতে পারি না, স্থিতিশীলও বলতে পারি না। এক কথায়, তার শারিরীক অবস্থা এখনও গুরুতর।
আরও পড়ুন: অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া উচিত: রেজা কিবরিয়া
তিনি বলেন, চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। তার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন প্যারামিটার ওঠানামা করছে, আমরা সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল এবং তাকে বেশিরভাগ সময় বিছানায় শুয়ে কাটাতে হচ্ছে। তাকে শুধুমাত্র নরম খাবারের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মৃত ছেলে আরাফাত রহমানের স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিথি হাসপাতালে তার সেবা যত্ন করছেন।
চিকিৎসক বলেন, খালেদা জিয়ার বহুমুখী রোগের সঠিক চিকিৎসার জন্য বিদেশের যে কোনও উন্নত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এখন অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে সোমবার বিএনপির সমাবেশ
খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস সমস্যা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কে জায়েদ বলেন, এটা সত্য যে তিনি লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিস, হার্ট এবং অন্যান্য জটিলতায় ভুগছেন। কিন্তু আমি জানি না মিডিয়া কোথা থেকে তথ্য পেল যে তার সিরোসিস ধরা পড়েছে।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার ছয়দিন পর গত ১৩ নভেম্বর পুনরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চক্ষু ও দাঁতের জটিলতায় ভুগছেন।
তারা আরও বলেছে যে তিনি এখন একটি গুরুতর কার্ডিয়াক সমস্যায় ভুগছেন। তার রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে, খালেদার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ১১ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন জমা দেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে জীবন থেকে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে সরকার: ফখরুল