মোস্তফা মহসিন মন্টু
গণফোরামের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫
রাজধানীতে একটি গ্রুপের কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে গণফোরামের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। শনিবার এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
তবে দলের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন অসুস্থ থাকায় সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
গত বছরের ৩ ডিসেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে বাদ দিয়ে একটি কাউন্সিলের মাধ্যমে মোস্তফা মহসিন মন্টুর নেতৃত্বে দলের ১৫৭ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করায় গণফোরাম বিভক্ত হয়ে পড়ে।
ড. কামাল ও মোকাব্বির খান এমপির নেতৃত্বে আরেকটি দল শনিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে কাউন্সিল করার কথা ছিল এবং মন্টুর নেতৃত্বাধীন গ্রুপ একই সময়ে ক্লাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।
মন্টুর নেতৃত্বাধীন গ্রুপের কিছু নেতাকর্মী মোকাব্বিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে কাউন্সিল ভেন্যুতে প্রবেশ করলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে গণফোরাম থেকে যাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল, তারা 'পরিকল্পিতভাবে' কাউন্সিলে হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মোকাব্বির।
হামলায় তাদের ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
মোকাব্বির বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাউন্সিল আয়োজন করেছি। এটা পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। কিন্তু কিছু দুর্বৃত্ত কাউন্সিলে হামলা করে, এতে আমিসহ আমাদের অনেককে আহত করেছে।’
যোগাযোগ করা হলে মোস্তফা মহসিন মন্টু দাবি করেন, তার অনুসারীদের কেউ কাউন্সিল ভেন্যুতে প্রবেশ করেনি।
তিনি বলেন, ‘সুব্রত চৌধুরী ও আমিসহ আমাদের সিনিয়র নেতারা আজ (শনিবার) প্রেসক্লাবেও যাননি। আমাদের মহানগর কমিটি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে একটি মানববন্ধনের আয়োজন করে এবং তারা তাদের কর্মসূচী শেষে চলে যায়।’
কাউন্সিল আহ্বানকারীদের সাথে ড. কামাল হোসেনের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও মন্টু দাবি করেন।
পড়ুন: ইসি নিয়ে সংলাপ: ৩ দফা দাবি গণফোরাম ও বিকল্পধারার
বিভক্ত হলো গণফোরাম, নতুন অংশের সভাপতি মন্টু
বিভক্ত হলো গণফোরাম, নতুন অংশের সভাপতি মন্টু
গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে বাদ দিয়ে শুক্রবার ১৫৭ সদস্যের আরেক অংশের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে এখন গণফোরাম বিভক্ত হয়ে গেল।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু ও সাবেক নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীকে যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
কাউন্সিল সভা শেষে দলের ১৫৭ সদস্যের নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করেন দলের সাবেক নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ।
তিনি বলেন, কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কামাল হোসেন বা তার অনুগত কাউকেই এই কমিটিতে রাখা হয়নি।
১৫৭ সদস্যের কমিটির মধ্যে সাত সদস্যের নির্বাহী কমিটি এবং ২০ সদস্যের প্রেসিডিয়াম সদস্য রয়েছে।
কার্যনির্বাহী কমিটির সাত সদস্য হলেন- মোস্তফা মহসিন মন্টু, অধ্যাপক আবু সাঈদ, সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মহসিন রশিদ, মহিউদ্দিন আবদুল কাদের ও আইয়ুব খান ফারুক।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে গিয়ে ১৯৯৩ সালে গণফোরাম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
ড. কামাল শুরু থেকেই দলের সভাপতি পদে রয়েছেন।
২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত পঞ্চম কাউন্সিলের পর থেকে দলের নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সেই কাউন্সিলে গঠিত কমিটিতে তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ দলের অনেক নেতা বাদ পড়েছিলেন। একই বছরের ৫ মে দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেন মোস্তফা মহসিন মন্টুকে বাদ দিয়ে ড. রেজা কিবরিয়াকে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক করেন, যা দলের নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: গণফোরাম ছাড়লেন রেজা কিবরিয়া
মন্টুসহ ৪ জনকে ‘শোকজ’ দিল ড. কামালের গণফোরাম