ঢাবি ক্যাম্পাস
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাবি ক্যাম্পাস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা
জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে জনসমাগম ততই বেড়ে চলেছে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা এবার আগেই নেওয়া হয়েছে। ফলে, বেশিরভাগ শিক্ষার্থী হল ত্যাগ করেছেন, করছেন। শুধুমাত্র তারাই আছেন যারা চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন অথবা খণ্ডকালীন চাকরি করছেন।
স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মোকছেদুর রহমান পলাশ নির্জন ক্যাম্পাস দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এরকমটা শুধু ঈদের ছুটিতেই দেখা যায়। ক্যাম্পাসে আসার পর থেকে এরকম খালি ক্যাম্পাস এর আগে দেখিনি।
তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের কথা স্মরণ করে বলেন, ক্যাম্পাস তখন অনেক বেশি প্রাণবন্ত ছিল।
আরও পড়ুন: ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতিসহ ১১ জনের রিমান্ড
ক্যাম্পাস এভাবে খালি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে যেসব ব্যবসা গড়ে উঠেছে সেগুলোতে বেশ প্রভাব পড়ছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি হলের ক্যান্টিন ও দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের একটি দোকানের মালিক আরিফ উদ্দিন জানুয়ারির শুরুতেই দোকান বন্ধ করে চাঁদপুরে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ক্যান্টিন ম্যানেজার ডালিম সরকার বলেন, ‘শিক্ষার্থী সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে কমেছে। আমরা সাধারণত ৭০০ থেকে ৭৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য খাবার প্রস্তুত করি। এখন, তা ৩০০-এর আশেপাশে নেমেছে।’
তিনিও ভোট দিতে চাঁদপুরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী রাজু শেখ ভালো মানের খাবারের জন্য নির্ভর করা নতুন ক্যান্টিনটি বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং পুরনো ক্যান্টিনে নির্ভর করর চ্যালেঞ্জের কথা জানান। তিনি বলেন, অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি চায়ের স্টল পাওয়াও কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঢাবি ছাত্রলীগের হামলায় ছাত্র ইউনিয়নের ৪ নেতা-কর্মী আহত
বই মেলা, পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস: দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ঢাবি ক্যাম্পাস এলাকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস উদযাপন করতে আসা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ উৎসব আনন্দকে দ্বিগুণ করেছে।
ঢাবি এলাকায় সকাল থেকেই ছাত্রছাত্রী, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বর্ণিল পাঞ্জাবি ও শাড়ি পরে জড়ো হতে শুরু করে। কাছেই বাংলা একাডেমিতে প্রতি বছরের মতো এবারও বই মেলা হচ্ছে। পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস উদযাপনের জন্য ঢাবি ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসারা বই মেলাতেও ঢু মারে।
বকুল তলায় ঢাবির চারুকলা অনুষদের বসন্ত উৎসব উদযাপন কমিটির বিশাল আয়োজনের পাশাপাশি ঢাবি এলাকায় ঐতিহাসিক বটতলায় 'সমগীত বসন্ত উৎসব', রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তিন দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসবের মতো নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
ঋতু রাজ বসন্তকে স্বাগত জানাতে ঢাবির বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ‘সঙ্গীত উৎসব’ এর আয়োজন করে।
বিশেষ দিনটি উপলক্ষে দর্শনার্থীদের চাহিদা মেটাতে ক্যাম্পাস এলাকার প্রায় সর্বত্র ফুল ও খাবারের ভ্রাম্যমাণ দোকান ছিল।
এছাড়া ফুলের দোকানগুলোতে লাল গোলাপ শোভা পাচ্ছিল।
ক্যাম্পাসের ব্যস্ত এলাকায় ঘুরে ঘুরে ফুল বিক্রি করা এগারো বছরের ছেলে আবিদ জানায়, সকালে রাজধানীর মৌচাক থেকে এই এলাকায় আসে ভালো লাভের আশায়।
সে বলে, বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক মানুষ এখানে দিবসটি পালন করতে এসেছে। তাই আমার মা আমাকে এখানে ফুল বিক্রি করতে পাঠিয়েছেন।
এছাড়া অনেকেই আমার কাছ থেকে ফুল কিনেছে। সকাল থেকে আমি প্রায় ৮০০ টাকার ফুল বিক্রি করেছি।
প্রিয়জনের সঙ্গে দিনটি উদযাপনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকাদের জন্য গোলাপ ও তোড়ার বিশাল মজুদ নিয়ে ফুল বিক্রেতারাও এই দিবেসের অপেক্ষায় থাকেন।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত ১০ মডেল
এদিকে শাহাবাগ মোড়ের ফুলের দোকানগুলোতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের ব্যস্ততা ও ক্রেতাদের ভিড়।
অন্যদিকে, সোহরাওয়ার্দীর মুক্তমঞ্চে পহেলা ফাল্গুন উদযাপনের অন্যতম স্থান নির্ধারণ করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পহেলা ফাল্গুন পালন করতে আসা মানুষদের মধ্যে অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ একটি বাড়তি উৎসবের মেজাজ যোগ করেছে।
ফলে শুধু বইমেলায় আসা অধিকাংশ দর্শনার্থী পহেলা ফাল্গুনের অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।
পরীক্ষা স্থগিতের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের নীলক্ষেত অবরোধ
বিনা নোটিশে সরকারের পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজধানীর ব্যস্ততম সড়ক অবরোধ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। শনিবার সকালে তারা নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে এই প্রতিবাদ জানায়।
সকাল ৯ টার দিকে শতাধিক শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে আসে এবং প্রায় দুই ঘন্টা ধরে বিক্ষোভ দেখায়। রাজধানীর ব্যস্ত এলাকায় শিক্ষার্থীদের এই সড়ক অবরোধে যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।
আরও পড়ুন: যুবলীগ নেতা অপহৃত: খাগড়াছড়িতে সড়ক অবরোধ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী ইউএনবিকে বলেন, তাদের পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে আগে জানানো হয়নি। পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর পরই তারা বিষয়টি জানতে পেরেছেন।
সকাল ১১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন শেষে শিক্ষার্থীরা ঢাবি ক্যাম্পাসে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে দেখা করতে যান। পরে তারা নিয়ন্ত্রকের অনুরোধে ইডেন কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে যান।
আরও পড়ুন: চাঁদাবাজির প্রতিবাদে সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
সরকারি বাংলা কলেজের ছাত্রী রাবেয়া বলেন, হঠাৎ করে পরীক্ষা স্থগিত করার প্রতিবাদে ব্যস্ত নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেছিলাম।
এর আগে শুক্রবার দেশে করোনার বিস্তার রোধে ২১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে সরকার।