মামলা
পাবনায় আট কুকুরছানা হত্যায় মামলা: সেই নারী গ্রেপ্তার
পাবনার ঈশ্বরদীতে ৮ কুকুরছানা বস্তাবন্দি করে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত নিশি রহমানকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঈশ্বরদী পৌর সদরের রহিমপুর গার্লস স্কুলের পাশের এক বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার আজ (বুধবার) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জানান, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এর আগে, মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে ‘প্রাণী কল্যাণ আইন-২০১৯’-এর ধারা ৭-এ নিশির বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ স ম আব্দুন নূর মামলার বিষয়ে জানান, মামলায় ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী নিশি রহমানকে আসামি করা হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে। যে কারণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ফোন করেছিলেন। তিনি বলেছেন যে এই ঘটনা অমানবিক। এই ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। তাই প্রাণী হত্যায় জড়িতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এ ছাড়া মহাপরিচালক স্যারও ফোন করে তার পক্ষে মামলা করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান জানান, কুকুরছানা হত্যার ঘটনায় হাসানুর রহমান নয়নকে সোমবার (১ ডিসেম্বর) গেজেটেড কোয়ার্টার ছাড়তে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারা মঙ্গলবার বিকেলে বাসা খালি করে অন্যত্র চলে গেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, গত রবিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে ঈশ্বরদী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জীবন্ত ৮টি কুকুরছানাকে বস্তার মধ্যে বেঁধে উপজেলা পরিষদের পুকুরে ফেলে হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়।
২ দিন আগে
নুরাল পাগলার মাজারে হামলা, মসজিদের ইমামসহ গ্রেপ্তার ১৮
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে আলোচিত নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, কবর থেকে লাশ তুলে পোড়ানো, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরসহ হামলায় হতাহতের ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, গোয়ালন্দে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, মাজার ভাঙা, মারামারিতে আহত, নিহত, সম্পদ লুটপাট, কবর থেকে লাশ উত্তোলন ও পুড়িয়ে ফেলার অপরাধে আজ সকাল পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম লতিফ হুজুর, যিনি ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন। আজ ভোরে তাকে মানিকগঞ্জের চর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ছাড়াও দরবার ভাঙা, মারামারিতে আহত, নিহত, সম্পদ লুটপাট, কবর হতে লাশ উত্তোলন ও পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় নিহতের পিতা মো. আজাদ মোল্লা (৫৫) বাদী হয়ে গতকাল (সোমবার) রাতে একটি মামলা করেছেন বলে বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নুরাল পাগলার দরবার থমথমে, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা
গত ২৩ আগস্ট (শনিবার) বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান নুরাল পাগলা। ওই দিন রাতে দরবারের ভেতরে ১২ ফুট উঁচু করে দাফন করা হয়। বিষয়টি শরিয়ত পরিপন্থি বলে অভিযোগ তোলেন ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি।
এরপর গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, ভাঙচুর চালায়। এ সময় নুরাল পাগলার ভক্তদের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন নিহত এবং দুপক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয় ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে ১০ থেকে ১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে নুরাল পাগলার মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয় হামলাকারীরা।
৮৬ দিন আগে
নুরাল পাগলার দরবার থমথমে, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা
রাজবাড়ীতে আলোচিত নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে গতকাল কয়েক দফায় হামলার পর ওই এলাকায় বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। নতুন করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দরবারের ভেতর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ধ্বংসাবশেষ। সেসব থেকে মাঝেমধ্যে ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে। হামলার খবরে সেখানে ছুটে এসেছে উৎসুক জনতা। ধ্বংসস্তুপ এক নজর দেখতে ভিড় করছে তারা।
এদিকে, নুরাল পাগলার দরবারে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলাটি করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আজ সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত দরবার এলাকায় অবস্থান করে দেখা যায়, গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড জুড়ান মোল্লার পাড়ায় অবস্থিত নুরাল পাগলার দরবারের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ রয়েছে। দরবারের ভেতরে একটি তিনতলা এবং অপরটি দ্বিতল ভবন। তিনতলা ভবনে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকতেন নুরাল পাগলা। প্রতিটি ভবনের সবকটি কক্ষ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। দামি দামি আসবাবপত্র সব খোয়া গেছে। অবশিষ্ট জিনিসপত্র ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভবন থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে অবস্থিত নুরাল পাগলার আস্তানা। টিনশেড ওই ঘরটিতে বসে ভক্তদের সঙ্গে সময় কাটাতেন তিনি। তার মৃত্যুর আগেই টিনশেড ঘরসহ সমতল ভূমি থেকে কয়েক ফুট উচুঁ করে বেদি তৈরি করা হয়। বেদির ওপর একপাশে টিনশেড ঘরে বসে তিনি সময় কাটাতেন, আর মৃত্যুর পর অপরপাশে নুরাল পাগলাকে কবর দেওয়া হয়।
৮৯ দিন আগে
গ্রেনেড হামলা: তারেকসহ সব আসামির খালাসের রায় আপিলেও বহাল
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হওয়া মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস করে হাইকোটের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে তারেক রহমান-বাবরের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
এ সময় বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।
গত বছরের ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে ১৯ মার্চ এ মামলায় সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। দীর্ঘদিন শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য ছিল। আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: সব আসামি খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা হয়। নিহত হন আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন। আহত শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতা-কর্মী।
ভয়াবহ এ হামলার তদন্তে নামে বিএনপি–জামায়াত জোট সরকার। হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সে সময় অভিযুক্ত হন ২৮ জন। অভিযোগপত্র দেয় সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। শুরু হয় বিচার।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ নতুন করে তদন্ত শুরু করে। টানা ৪১০ দিন টিএফআই সেলে নিয়ে পুনরায় স্বীকারোক্তি আদায় করা হয় মুফতি হান্নানের। সম্পূরক চার্জশিটে যুক্ত করা হয় তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদসহ আরও অনেককে।
আলোচিত এ মামলায় ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত ফাঁসির দণ্ড দেন বাবরসহ ১৯ জনকে। যাবজ্জীবন হয় তারেক রহমানসহ আরও ১৯ জনের।
তবে ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর ওই রায় বাতিল করে দেন হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়, সম্পূরক চার্জশিট এবং বিচারের পুরো প্রক্রিয়াই ছিল বেআইনি।
বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে এই বিচারপ্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পরিসমাপ্তি হলো। ফলে মুক্তি মিলেছে তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সবার।
৯২ দিন আগে
আশুলিয়ায় ৬ লাশ পোড়ানোর মামলায় ১৬ জনের বিচার শুরু
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা ও লাশ পোড়ানোর মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) আসামিদের অব্যাহতির আবেদনের নাকচ করে দিয়ে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ আজ এ মামলা শুরু করেছেন।
তিন সদস্যের এ ট্রাইব্যুনালের অপর দুই বিচারক হলেন মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
১৬ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা আটজনকে এদিন আদালতে হাজির করা হয়। তারা হলেন—ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল হোসেন ও কনস্টেবল মুকুল। এদের মধ্যে সাতজন তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
অন্যদিকে নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হতে আবেদন করেছেন আসামি সাবেক এসআই শেখ আফজালুল হক। ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী তাকে আবেদন করতে বলা হয়েছে।
এই মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক এসআই বিশ্বজিৎ সাহাসহ আট আসামি পলাতক রয়েছেন। তাদের পক্ষ থেকে দুজন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ট্রাইব্যুনালে মামলা পরিচালনা করছেন।
গত ২ জুলাই প্রসিকিউশন ১৬ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়। অভিযোগ আমলে নিয়ে পলাতক আট আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগের সঙ্গে অন্যান্য তথ্যসূত্র হিসেবে ৩১৩ পৃষ্ঠা নথি, ৬২ জন সাক্ষী, ১৬৮ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণাদি ও দুটি পেনড্রাইভ যুক্ত করা হয়। পরে ট্রাইব্যুনাল ১৬ জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ গ্রহণ করেন। অভিযোগ গঠনের শুনানি ৭ আগস্ট শুরু হয়। ১৩ আগস্ট শুনানি শেষে অভিযোগ গঠনের জন্য ২১ আগস্ট দিন ঠিক করা হয়। সে অনুযায়ী আজ অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন: চানখারপুলে ৬ জনকে হত্যা: প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ৫ জন নিহত হন এবং একজন গুরুতর আহত হন। পরে নিহত ৫ জনের লাশ এবং আহত ব্যক্তিকে পুলিশ ভ্যানে তুলে পেট্রোল ছড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
ওই সময় নিহত হন সাজ্জাদ হোসেন (সজল), আস সাবুর, তানজীল মাহমুদ সুজয়, বায়েজিদ বুসতামি ও আবুল হোসেন; একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়।
১০৫ দিন আগে
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের চার কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
আমেরিকান ও ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে করা মামলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) চার কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই পদক্ষেপ একটি নিরপেক্ষ বিচারিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতার ওপর ‘সুস্পষ্ট আক্রমণ’ বলে নিন্দা জানিয়েছে আইসিসি।
স্থানীয় সময় বুধবার (২০ আগস্ট) আইসিসির ওই চার কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
তিনি জানান, আমেরিকান ও ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে করা মামলায় সংশ্লিষ্ট থাকার কারণে আইসিসির দুই বিচারক ও আইনজীবীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় ওই চার ব্যক্তির যুক্তরাষ্ট্রে কোনো সম্পদ থাকলে তা জব্দ করা হবে।
দ্য গার্ডিয়ান বলেছে, গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত বছর নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সঙ্গে এসব কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন।
তাৎক্ষণিকভাবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ ও আইসিসি। তবে ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপ স্বাগত জানিয়েছে ইসরায়েল।
নেদারল্যান্ডের হেগে অবস্থিত এই আদালত বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর আগে আইসিসির সাবেক প্রধান প্রসিকিউটর করিম খানসহ আরও চার বিচারকের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। গত মে মাসে যৌন অসদাচরণের অভিযোগে তদন্তের মুখে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান করিম খান।
নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছেন আইসিসির বিচারক কানাডার কিম্বারলি প্রোস্ট ও ফ্রান্সের নিকোলা গিলু, এবং ফিজির আইনজীবী নাজহাত শামিম খান ও সেনেগালের মামে মানদিয়ায়ে নিয়াং।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের হামলায় যুক্তরাষ্ট্র জড়িত নয়: ট্রাম্প প্রশাসন
যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের নাগরিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত, গ্রেপ্তার, আটক বা বিচারপ্রক্রিয়ায় এই চারজন সরাসরি যুক্ত ছিলেন বলে দাবি করেন রুবিও।
আলাদা এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে তদন্ত অনুমোদনের রায়ে অংশ নেওয়ার কারণে প্রোস্টকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে, যদিও পরে সে তদন্ত বাতিল করা হয়।
অন্যদিকে, গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে নেতানিয়াহু ও ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্তের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির অনুমোদনের জন্য নিকোলা গিলুর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের তদন্ত চালিয়ে যাওয়া এবং নেতানিয়াহু ও গালান্তের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল রাখার কারণে শামিম খান ও নিয়াংকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।
এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে আইসিসি জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত নিরপেক্ষ বিচারিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতার ওপর সুস্পষ্ট আক্রমণ। তাছাড়া এই আদালতের সদস্য রাষ্ট্রগুলো, আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা ও বিশ্বের লাখ লাখ নিরাপরাধ ভুক্তভোগীর প্রতি এই পদক্ষেপ চরম অবমাননা বলেও মন্তব্য করেছে হেগের এই আদালত।
আইসিসির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে জাতিসংঘ অত্যন্ত উদ্বিগ্ন বলে জাানিয়েছে সংস্থাটির মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিখ। তাছাড়া, আইসিসি তাদের কাজের জন্য জাতিসংঘের পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
১০৫ দিন আগে
রংপুরে জামাই-শ্বশুর হত্যায় ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, মহাসড়কে লাশ রেখে বিক্ষোভ
রংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে জামাই-শ্বশুর নিহতের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া এই ঘটনার বিচার দাবিতে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে লাশ রেখে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
রবিবার (১০ আগস্ট) তারাগঞ্জ থানায় মামলা করেন নিহত রূপলালের স্ত্রী। এরপর সন্ধ্যার দিকে তার লাশ নিয়ে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে বিক্ষোভ করা হয়।
এর আগে শনিবার রাতে তারাগঞ্জ উপজেলার বুড়িরহাট বটতলায় ভ্যান চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে ঘনীরমপুর গ্রামের রূপলাল দাস (৪০) ও তার ভাগনি জামাই প্রদীপ দাস (৩৫) নিহত হয়েছেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে রূপলাল তার মেয়ের জন্য পাত্র দেখতে ভাগনি জামাই প্রদীপকে সঙ্গে নিয়ে ভ্যানে করে ঘনীরমপুর গ্রামে যান।
তারাগঞ্জ-কাজিরহাট সড়কের বটতলায় পৌঁছালে স্থানীয়রা তাদের ভ্যানচোর সন্দেহে আটক করেন। একপর্যায়ে প্রদীপ লালের কালো ব্যাগ তল্লাশি করা হলে ‘স্পিড ক্যানের’ বোতলে দুর্গন্ধযুক্ত পানীয় এবং কিছু ওষুধ পাওয়া যায়। বোতলের ঢাকনা খোলার পর দুর্গন্ধে বুড়িরহাট এলাকার মেহেদী হাসানসহ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে সন্দেহ বাড়লে রূপলাল ও প্রদীপকে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: গাজীপুরের সাংবাদিক তুহিন হত্যা মামলার ৭ আসামির ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
একপর্যায়ে রুপলাল ও প্রদীপের কান দিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করে। তাদের তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক রূপলালকে মৃত ঘোষণা করেন এবং প্রদীপ লালকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠান। সেখানে প্রদীপ লাল ভোর ৪টায় মারা যান।
এ বিষয়ে তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, ‘নিহত রূপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে বিকেলে ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। তদন্ত কার্যক্রম চলছে। কিছু আলামত পেয়েছি, সেগুলো যাছাই-বাছাই চলছে।’
১১৬ দিন আগে
গোপালগঞ্জে সহিংসতা: আরেক মামলায় আসামি সাড়ে ৫ হাজার
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় আরও একটি মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৫ হাজার ৪৪৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক মো. মতিয়ার মোল্লা বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান।
ওসি সাজেদুর রহমান জানান, মামলায় ৪৪৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় পাঁচ হাজারজনকে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান, গোপালগঞ্জের সাবেক পৌর মেয়র শেখ রকিব হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী লিয়াকত আলী লেকু, জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএম মাসুদ রানা, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সাধারণ সম্পাদক বাবুল শেখ, সাবেক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহিদ মাহামুদ বাপ্পি, সাবেক সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিতীশ রায়, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম কবির, সাধারণ সম্পাদক আলিমুজ্জামান বিটু, মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ আলী আশরাফ, শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী নাঈম খান (জিমি), ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মী।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে সহিংসতা: আরও একটি মামলা, আসামির সংখ্যা ছাড়াল ১০ হাজার
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কের উন্মুক্ত মঞ্চে সমাবেশ করার জন্য স্থান নির্ধারণ করে এনসিপি। সমাবেশকে ঘিরে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন এবং সাধারণ মানুষকে স্বাভাবিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখেন। আসামিরা রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংগঠিত করে। সরকারি কাজে বাধাদান ও সরকারি কর্মচারীদের আক্রমণ করে হত্যার উদ্দেশ্যে ককটেল নিক্ষেপ করে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের মারধর ও গুরুতর জখম করে।
এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যার ঘটনায় মোট ১৩টি মামলা হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো করা হয়েছে।
এই মামলাগুলোতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৩৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে, পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন এবং আহত হন অর্ধশতাধিক।
১২৮ দিন আগে
গোপালগঞ্জে সহিংসতা: আরও একটি মামলা, আসামির সংখ্যা ছাড়াল ১০ হাজার
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) গোপালগঞ্জের সমাবেশকে কেন্দ্র করে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় কাশিয়ানী থানায় নতুন করে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১টিতে।
কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নাসির উদ্দীন বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে কাশিয়ানী থানায় এ মামলা করেন।
মামলায় কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী জাহাঙ্গীর আলম এবং কাশিয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী খোকনসহ ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি, আরও ২০০-২৫০ জন অজ্ঞাত নেতাকর্মীকেও আসামি করা হয়।
মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা হয়েছে বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা বাসস্ট্যান্ড ও আশপাশ এলাকার রাস্তাঘাট অবরোধ করা হয়। এতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয় এবং জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে নেতাকর্মীরা মিছিল করতে থাকেন। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে এবং এনসিপির সমাবেশকে নস্যাৎ করতে এ ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয়। এতে সাধারণ জনগণের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
এদিকে থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কাশিয়ানী থানার এই মামলা নিয়ে গোপালগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগ ও হত্যা ঘটনায় মোট ১১টি মামলা করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ জেলার সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় দায়ের হওয়া ওই ১১টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬৮৭ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও প্রায় ৯ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
১৬ জুলাই থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মোট ৩৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক সমাবেশকে ঘিরে সহিংসতার তদন্তে কমিটি গঠন
উল্লেখ্য, ১৬ জুলাই এনসিপির একটি কর্মসূচি শেষে গোপালগঞ্জ থেকে মাদারীপুরে ফেরার পথে দলটির গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিহত এবং অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনার দিন বিকালে প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করেন জেলা প্রশাসক ও ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ কামরুজ্জামান। রাতেই জারি করা হয় কারফিউ। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হলেও রবিবার (২০ জুলাই) রাত ৮টা থেকে কারফিউ শিথিল করা হয়।
১৩১ দিন আগে
৫ মামলায় ইসকন নেতা চিন্ময় দাসের জামিন নামঞ্জুর
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলাসহ ছয়টি মামলার মধ্যে পাঁচ মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র বহিস্কৃত ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন খারিজ করেছেন আদালত।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাসানুল ইসলাম জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বেলা সোয়া ১১টার দিকে শুনানি শেষে বিচারক এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী।
আসামিপক্ষের পক্ষে জামিন শুনানিতে অংশ নেন ঢাকার আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি টিম। এদিন জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালতপাড়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল উপস্থিতি ছিল।
চিন্ময় দাসের বিরুদ্ধে একটি রাষ্ট্রদ্রোহ, একটি আইনজীবী হত্যার, বাকিগুলো—পুলিশের ওপর হামলা, বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা এবং ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগের মামলা।
২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানার মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ এনে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেন। পরে ফিরোজ খানকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
পড়ুন: আলিফ হত্যা মামলা: চিন্ময় দাসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল
এ মামলায় চিন্ময় দাসকে ২০২৪ সালের ২৫ নভেম্বর রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে তার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে আইনজীবীদের দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ওইদিন হামলায় গুরুতর আহত হয়ে নিহত হন তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যা মামলার পাশাপাশি কোর্ট চত্বরে পুলিশ ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, বাধা প্রদান এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। এই ছয় মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৫১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের মধ্যে আইনজীবী হত্যায় জড়িত সন্দেহে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।
১৩৩ দিন আগে