বিয়ে
বগুড়ায় বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বিধবাকে ধর্ষণের অভিযোগ
বগুড়ার শাজাহানপুরে ৪২ বছর বয়সী বিধবা এক নারীকে বাসায় ডেকে নিয়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বগুড়া সদর থানায় এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার (১০ মার্চ) ভুক্তভোগী ঐ নারী এসব তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
ভুক্তভোগী ঐ নারী অভিযোগ করেন যে, প্রায় ১৫ বছর আগে তার স্বামী মারা গেলে তিনি এক সন্তান নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত একাকী জীবন যাপন করছেন। কিছুদিন আগে পাশ্ববর্তী মাঝিড়া ইউনিয়নের ডুমুনপুকুর গ্রামের মৃত মোরতাজ উদ্দীনের ছেলে সিরাজুল ইসলাম পিন্টুর (৫৫) সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়।
এমন পরিস্থিতিতে হবু স্ত্রী হওয়ার এই সুযোগ নিয়ে সিরাজুল ইসলাম পিন্টু তাকে বিভিন্ন সময়ে ফোন দিয়ে দেখা করার জন্য বলে। কিন্তু সে একাকী দেখা করতে অপারগতা প্রকাশ করে আসছিল।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সিরাজুল ইসলাম পিন্টুর বোন পরিচয় দিয়ে এক নারী তাকে বলে কয়েকদিন পরেই আমার ভাইয়ের সঙ্গে তোমার বিয়ে হবে। তাই জামা কাপড় তৈরি ও পছন্দমত কসমেটিকস কিনে দেয়ার কথা বলে বগুড়া শহরের কলোনীর বাসায় নিয়ে আসে। বাসায় গেলে সিরাজুল ইসলাম পিন্টু তাকে ধর্ষণ করে, কিন্তু এখন সে বিয়ে করছে না।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার বনানী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুর ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ধর্ষণ মামলা হয়েছে।
এছাড়া তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, মামলা নিতে আদালতের নির্দেশ
চাঁদপুরে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৪
৯৩তম জন্মদিনে প্রেমিকাকে বিয়ে করলেন চন্দ্রজয়ী বাজ অলড্রিন
চন্দ্রজয়ী নভোচারী এডউইন ‘বাজ’ অলড্রিন এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে তিনি তার ‘দীর্ঘদিনের প্রেমিকা’ ড. আনকা ভি ফাউরকে (৬৩) বিয়ে করেছেন।
পোস্টে তিনি জানান, শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) তার ৯৩তম জন্মদিনে তিনি বিয়ে করেন।
আরও পড়ুন: সিটবেল্ট ব্যবহার না করায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে জরিমানা
নীল আর্মস্ট্রং-এর সঙ্গে চাঁদের মাটিতে পা রাখা প্রথম মানুষ হিসেবে অলড্রিনের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।
তিনি লিখেছেন, ‘আমি ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত যে আমার দীর্ঘদিনের প্রেমিকা ও সঙ্গী ড. আনকা ভি ফাউর ও আমি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। আমরা লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বিয়ের আয়োজন করেছিলাম এবং ঘর থেকে পালানো কিশোরের মতোই উত্তেজিত ছিলাম।’
নববধূর বেশ কয়েকটি ছবিসহ দেয়া পোস্টটিতে শনিবারের মধ্যে ফেসবুকে ৫৩ হাজারের বেশি ‘লাইক’ ও ‘লাভ রিয়েক্ট’ পড়েছে।
১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই অ্যাপোলো ১১ মহাকাশযানে করে নভোচারী আর্মস্ট্রং ও অলড্রিন চাঁদের মাটিতে পা রাখেন। মাইকেল কলিন্স ছিলেন এ অভিযানের তৃতীয় সদস্য।
আরও পড়ুন: বুরকিনা ফাসোতে চরমপন্থীদের হাত থেকে ৬৬ নারী-শিশু মুক্ত
তিব্বতের তুষারধসে আরও লাশ উদ্ধার, মৃত্যু বেড়ে ২৮
ঢাকার স্কুলে পরিচয় ও প্রেম, অতঃপর ভারতে বিয়ে!
সত্যিই ভৌগলিক সীমা কখনও প্রেমের পথে বাধা হতে পারে না। আরেকবার তা সত্যি করেছেন বন্যা ও অনির্বাণ।
একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ভারত থেকে ঢাকায় পড়তে আসেন বন্যা বড়ুয়া। এসময় তিনি তার সহপাঠী অনির্বাণ চৌধুরীর প্রেমে পড়েছিলেন। দুজনেই তখন রাজধানী ঢাকার মাস্টারমাইন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: আবারও আসিফ-লগ্নজিতার মেলবন্ধন
সে সময়ে বন্যার বাবা গোলাপ বড়ুয়া ওরফে অনুপ চেটিয়া নিষিদ্ধ ভারতীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা) এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি তখন বাংলাদেশের একটি কারাগারে বন্দি ছিলেন।
মূলত ১৯৯৭ সালে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযান থেকে বাঁচতে চেটিয়া বাংলাদেশে লুকিয়ে ছিলেন। এ অভিযোগে তাকে জেলে পাঠানো হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা রাখার অভিযোগও আনা হয়েছিল।
উলফার সাধারণ সম্পাদককে অবশ্য ভারত সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য ২০১৫ সালে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ১ ঘণ্টার পুলিশ সুপার ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী!
এর সাতবছর পর, ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের ডিব্রুগড় শহরের কাছে অনুপ চেটিয়ার আদি গ্রাম জেরাইগাঁওয়ে বন্যা ও অনির্বাণ গাঁটছড়া বাঁধেন।
বিয়ের পর তাদের আরেকটি জমকালো সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হবে ১৫ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে। অনির্বাণ এখন সেখানে কর্মরত আছেন।
চেটিয়া সম্প্রতি একটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমি তখন জেলে থাকার কারণে তাদের সম্পর্কের কথা জানতাম না। কিন্তু আমাদের বিপ্লবে তারা যে ধরনের সাহায্য করেছিল, তার জন্য বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রয়েছে।’
উল্লেখ্য, চেটিয়া এবং কয়েকজন যুবক মিলে ১৯৭৯ সালে উলফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং তারপর থেকে তারা একটি পৃথক অসমীয়া মাতৃভূমির জন্য লড়াই করছেন।
আরও পড়ুন: আরিয়ানকে সিনেমার প্রস্তাব দেন শাকিব খান
মাকে বেঁধে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে কলেজছাত্রীকে বিয়ের অভিযোগ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাকে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে মেয়ের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে জোরপূর্বক কাবিননামায় স্বাক্ষর করিয়ে বিয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (৩১ মে) রাতে উপজেলার পান্টি বাজার এলাকায় নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী ওই তরুণী কুষ্টিয়া সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এ বছর অনার্স সম্পন্ন করেছেন।
অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি তিতাশ (৪০) কুমারখালী উপজেলার পান্টি এলাকার মৃত ইব্রাহিম বিশ্বাসের নাতি ও বরিশাল জেলার বাসিন্দা।
বুধবার সকালে সরেজমিন গেলে ওই তরুণীর মা বলেন, স্থানীয় ওয়াইফাই ব্যবসায়ী রোমান ও লাহোরী ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিতাশসহ বেশ কয়েকজনকে নিয়ে পাকা ও দেওয়ালে ঘেরা বাড়ির পেছন দরজা দিয়ে প্রবেশ করে। এ সময় তাঁদের হাতে আআগ্নেয়াস্ত্র, দা, ডাসা, রশি ছিল। তারা এসেই আমাকে বলে তোর মেয়েকে তিতাশের সাথে বিয়ে দিতে হবে। না হলে মেরে ফেলে হবে। বিয়েতে রাজি না হলে ওরা প্রথমে আমাকে রশি দিয়ে বেঁধে মেয়ের কক্ষে নিয়ে যায়। পরে মেয়ের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে কাবিন নামায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।
পড়ুন: উড়ন্ত বিমানে মাঝ আকাশে বিয়ে!
তিনি বলেন, এ বিয়ে আমরা মানি না। কিন্তু আমরা খুব ভয়ে আছি।
ওই কলেজছাত্রী জানান, প্রায় ৬ বছর আগে থেকেই তিতাশ তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। ওই দিন রাতে হঠাৎ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে বিয়ের কথা বলে। মাকে বেঁধে রেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এক পর্যায়ে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। যে কারণে বাধ্য হয়ে ভয়ে কাবিননামায় স্বাক্ষর করেছি। স্বাক্ষর নেয়ার পর তারা চলে যায়।
ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া রায়হান উদ্দিন জানান, দোকান বন্ধ করে রাত ১০ টার দিকে বাসায় ফিরি। সে সময় রোমান, লাহোরীসহ কয়েকজন তাকে ডাক দেয়। বাইরে আসা মাত্রই মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে একটি রুমে আটকে রাখে। পরে জানতে পারি অস্ত্র ঠেকিয়ে বিয়ে করে চলে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে রোমান ও লাহোরীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পান্টি এলাকার পপি সুপার মার্কেটে যাওয়া হয়। গিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তাঁদের মুঠোফোনে কল দেয়া হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। অভিযুক্ত তিতাশকে কল করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পড়ুন: বিয়ের আশ্বাসে তরুণীকে ধর্ষণ, পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা
১৪ এপ্রিল গাঁটছড়া বাঁধবেন রণবীর ও আলিয়া
বলিউড হার্টথ্রব রণবীর কাপুর এবং তার বান্ধবী অভিনেত্রী আলিয়া ভাট আগামী ১৪ এপ্রিল বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একটি শীর্ষস্থানীয় ভারতীয় বিনোদন নিউজ পোর্টাল ‘বলিউডহাঙ্গামা ডটকম’ এ তথ্য জানিয়েছে।
৩৯ বছর বয়সী রণবীর ও ২৯ বছর বয়সী আলিয়া তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে একে অপরের সঙ্গে প্রেম করছেন।
বলিউডহাঙ্গামা জানায়, মুম্বাইয়ের পশ বান্দ্রা এলাকায় রণবীরের বাড়িতে এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হবে।
অভিনেতা ঋষি কাপুর এবং নীতু সিং-এর ছেলে এবং প্রবীণ অভিনেতা-পরিচালক রাজ কাপুরের নাতি রণবীর ২০০৭ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সঞ্জয় লীলা বানসালির ট্র্যাজিক রোম্যান্স সিনেমা ‘সাওয়ারিয়া’ দিয়ে অভিনয়ে অভিষেক ঘটে। যদিও ছবিটি তেমন ব্যবসা সফল হয়নি।
আরও পড়ুন: শাহরুখপুত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিতে আরও সময় চায় এনসিবি
এরপর ২০০৯ সালে রণবীর ‘ওয়েক আপ সিড’, রোমান্টিক কমেডি সিনেমা ‘আজব প্রেম কি গজব কাহানি’ এবং ‘রকেট সিং: সেলসম্যান অব দ্য ইয়ার’- নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি বলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতাদের একজন। তিনি একাধিক দাতব্য সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
অন্যদিকে, আলিয়া চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ ভাট এবং অভিনেত্রী সোনি রাজদানের মেয়ে। ১৯৯৯ সালে থ্রিলার ‘সংঘর্ষ’-এর মাধ্যমে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়ে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। তবে প্রাপ্তবয়স্ক অভিনেত্রী হিসেবে তার অভিষেক হয়েছিল ২০১২ সালে চলচ্চিত্র নির্মাতা করণ জোহরের বহুল আলোচিত ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’ সিনেমা দিয়ে।
পথচলচ্চিত্র ‘হাইওয়ে’ সিনেমায় অপহরণের শিকার এক কিশোরীর চরিত্রে অভিনয় করে ২০১৪ সালে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছিলেন আলিয়া। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি আলিয়া ভাট তার পোশাক এবং হ্যান্ডব্যাগগুলোতে নিজস্ব ধারার স্বাক্ষর রেখেছেন। এছাড়াও তিনি পরিবেশগত উদ্যোগ কোএক্সজিস্ট এর প্রতিষ্ঠা।
আরও পড়ুন: ঢাকায় পৌঁছেছেন বলিউড অভিনেত্রী সানি লিওন
রুদ্র দ্য এইজ অব ডার্কনেস: ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সুপারস্টার অজয় দেবগন
বিয়ের আগের দিন ছুরিকাঘাতে তরুণী হত্যা: অভিযুক্ত গণপিটুনিতে আহত
শরীয়তপুর সদর উপজেলায় বিয়ের একদিন আগে ১৮ বছর বয়সী এক তরুণীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। এসময় অভিযুক্ত যুবক গণপিটুনিতে আহত হন। শনিবার সদর উপজেলার চর পালং গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
নিহত কাকলী (১৮) শরীয়তপুর সদর আলিয়া মাদ্রাসার একাদশ শ্রেণির ছাত্রী এবং উপজেলার চর পালং গ্রামের নুরুজ্জামান মাদবরের মেয়ে। অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলামও একই মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র ও কাশভোগ ইউনিয়নের মজিবুর রহমানের ছেলে।
জানা যায়, শনিবার নিজের বাড়িতে বসে কাকলী তার হবু স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। এসময় জাহিদুল জানালা দিয়ে ঘরে ঢুকে তাকে ঘরের আড়ালে নিয়ে যায় এবং কাকলীর গলায় ছুরিকাঘাত করে। কাকলীর চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্যরা জাহিদুলকে আটক করলে স্থানীয়রা তাকে মারধরের পর একটি ঘরে আটকে রাখে।
আরও পড়ুন: খুলনায় মোবাইল না পেয়ে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা!
রবিবার ভোর ৩টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাকলী মারা যান। ঘটনার পর স্থানীয়দের হাতে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলাম আহত হওয়ায় রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতার হোসেন জানান, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহতের ভাই ফারুক হোসেনের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ছয় বছরেও তনু হত্যা মামলার অগ্রগতি নেই
ফতুল্লায় নতুন জামার জন্য কিশোরীর ‘আত্মহত্যা’
প্রতিকূলতার মাঝেও শিক্ষা গ্রহণে সাফল্যের পথে উপকূলের নারীরা
উপকূলীয় অঞ্চলে জেডিসি বা এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যাওয়া নারীদের আনেকেই তাদের স্বামীর সহযোগিতা এবং নিজস্ব প্রচেষ্টায় সাফল্যের পথে রয়েছে।
কেউ কেউ গর্ভবতী অবস্থায় দিয়েছেন পরীক্ষা। বিয়ের পর থেকে সংসারের কাজ তো করেই চলেছেন তারা। তবুও অদম্য ইচ্ছায় থেমে নেই উপকূলের এসব নারীরা। এসএসসি/দাখিলের মত এইচএসসি/ আলিমেও সফল তারা।
খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রার নারীরা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতির সম্মুখীন, দারিদ্রতা, বিয়ে, সংসার, স্বামীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায়, সন্তান লালন-পালন, সমাজের বাধাসহ নানা প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে শিক্ষা জীবনে সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে তিন শতাধিক পরিবার
দুই সন্তানের জননী রেদওয়ানা আক্তার মীম। কয়রা উপজেলার দেয়াড়া পশ্চিমপাড়ার মুদি ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিনের দুই মেয়ের মধ্যে বড় তিনি। অষ্টম শ্রেণিতে পড়াবস্থায় পার্শ্ববর্তী শিমলার আইট গ্রামের নাসির হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। স্বামী মৎস্য দপ্তরের একটি প্রকল্পে চাকরি করেন। চাকরির সুবাদে বিয়ের পরে স্বামীর সঙ্গে চলে যেতে হয় ভিন্ন উপজেলায়। বিয়ের পরে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেলেও পরবর্তীতে স্বামীর অনুপ্রেরণা তার পড়ালেখার গতি আরও বাড়িয়ে দেয়। সংসার সামলানোর পাশাপাশি বাসায় বসে লেখাপড়া চালু রাখেন তিনি। শিক্ষিত হওয়ায় বাড়িতে পাঠদানে সহযোগিতা করতেন তার স্বামী । একপর্যায়ে জয়পুর শিমলারআইট দারুচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদরাসা থেকে ২০১৭ সালে জিপিএ-৪.৫৫ নিয়ে জেডিসি পাশ করেন। পরে একই মাদরাসা থেকে ২০১৯ সালে গর্ভবতী অবস্থায় জিপিএ-৪.০৬ নিয়ে দাখিল পাশ করেন তিনি। পরবর্তীতে তার কোল জুড়ে আসে ছেলে সন্তান।
পরে আলিম পরীক্ষার ৩ মাস পূর্বে আরও একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। ৩ মাস বয়সের ছেলেকে কেন্দ্রে নিয়ে এবারের আলিম পরীক্ষায় কালনা আমিনিয়া ফাজিল মাদরাসা থেকে জিপিএ-৪.৩৬ অর্জন করেছেন। সর্বদা স্বামীর একান্ত সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
খুলনার রূপসা উপজেলার তালিমপুর গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী কামাল হোসেনের মেয়ে শামীমা আক্তার। ১০ম শ্রেণিতে পড়াবস্থায় বিয়ে হয় কয়রার দেয়াড়া পশ্চিমপাড়ার নিম্নবিত্ত পরিবারের মুজাহিদ নামের এক অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তার স্বামী দারিদ্রতার কষাঘাতে খুলনা শহরে ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি উভয়ের পড়াশুনার খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। রূপসা উপজেলার নৈহাটী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে জিপিএ-৩.৯৭ নিয়ে বাণিজ্য বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করেন। পরবর্তীতে সন্তানকে লালনপালনের পাশাপাশি পড়ালেখা চালিয়ে যান। তবে অর্থাভাবে গেল বছরের ফরম পূরণ করতে পারিনি। এবার পরীক্ষা দেয়ার ইচ্ছা নিয়ে শেষের দিকে কয়েক মাস কোচিং করেন তিনি, ঋণ নিয়ে করেন ফরম পূরণ। বাণিজ্য বিভাগ থেকে জিপিএ- ৪.৩৩ পেয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী নারীরা: প্রধানমন্ত্রী
খুলনার দাকোপ উপজেলার এক দারিদ্র পরিবারের মেয়ে মর্জিনা। ১০ম শ্রেণিতে থাকাবস্থায় বিয়ে হয় কয়রা উপজেলার বাগালী গ্রামের ইদ্রিস হোসেনের সাথে। দাকোপের নলীয়ান দাখিল মাদরাসা থেকে ২০১৮ সালে জিপিএ- ৪.৬৫ নিয়ে দাখিল পাশ করেন। সন্তান লালন পালন, দারিদ্রতাসহ নানা প্রতিকূলতায় কৃতিত্বের সঙ্গে পাশের পরেও আলিমে ভর্তি হতে পারেননি তিনি। কিন্তু প্রবল ইচ্ছায় পরের বছর স্বামী ও পরিবারের সহযোগিতায় আলিমে ভর্তি হন।এ বছরের আলিম পরিক্ষায় জিপিএ-৪.৩৬ অর্জন করেছেন তিনি। স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞ তিনি।
শুধু মীম, শামীমা, মর্জিনা নয়, উপকূলীয় প্রতিকূলতার সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে টিকে থাকা বহু নারী বিয়ের পরেও সাফল্যের সাথে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেয়াড়া পশ্চিমপাড়ার আরেক নারী বিয়ের পরেও এবছর কয়রা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে জিপিএ-৫ অর্জন করেছেন। তিনি এসএসসিতে জিপিএ- ৪.৬৩ ও জেএসসিতে ৪.৮৩ অর্জন করেছিলেন। তবে অধিকাংশ মেধাবী ছাত্রীরা দারিদ্রতার কষাঘাতে মেধার বিকাশ ঘটাতে পারছেন না।
এইসএসসি পাশের পর বিয়ে হলেও অর্থাভাবসহ নানা প্রতিকূলতায় স্বামী ও পরিবারের সহযোগিতা না পেয়ে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে এমন নারীও রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে বাংলাদেশের নারীরা যোগ্যতার পরিচয় দিচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কয়রা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা আক্তার রুমি বলেন, বাল্যবিবাহের মত সেই বাধাকে টপকিয়ে স্বামী, সন্তান, সংসার সামলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের প্রান্তিক সমাজের অদম্য এসব নারীরা। এসকল অদম্যদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। তাদের জন্য দোয়া রইল যেন আল্লাহর কৃপায় সফলতার চূড়ায় পৌঁছাতে পারে। শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে শুধু নিজেদেরকেই নয় পুরো পরিবার, সমাজ এমনকি বিশ্বকে-ই আলোকিত করবে ইনশাল্লাহ। আমরাও চেষ্টা করব উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদের পাশে থাকার।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ‘উপকূলীয় জনপদের নারীরা পিছিয়ে না থেকে পুরুষের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে যাক এটা সবারই প্রত্যাশা। তবে তারা যাতে বাল্যবিবাহের শিকার না হয়, এ ব্যাপারে সচেতন থাকার জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’