জ্বালানি উপদেষ্টা
ভোলা থেকে গ্যাস সরবরাহের পরিকল্পনা করছে সরকার: জ্বালানি উপদেষ্টা
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেছেন, জ্বালানি সংকট নিরসনে সরকার ভোলা জেলা থেকে প্রতিদিন প্রায় আট কোটি ঘনফুট গ্যাস (এমএমসিএফডি) জাতীয় নেটওয়ার্কে সরবরাহের পরিকল্পনা করছে।
রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) আয়োজিত 'শিল্প খাতে জ্বালানি সংকটের প্রভাব প্রশমন' শীর্ষক সেমিনারে তিনি একথা বলেন।
তৌফিক-ই-এলাহী বলেন, আমরা আশা করি তিন থেকে চার মাসের মধ্যে ভোলা থেকে গ্যাস আনতে পারব।
তিনি ব্যবসায়ীসহ সকলকে বিদ্যুতের ব্যবহার কমানোর আহ্বানও জানান।
তিনি ব্যবসায়ীদের সংকটের তাৎক্ষণিক সমাধান হিসাবে গ্যাস আমদানির দাবির প্রেক্ষিতে বলেন, ‘আপনারা যদি দিনের বেলায় বিদ্যুতের ব্যবহার বন্ধ রাখেন। তবে সেটি বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতিতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করবে।’
বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন, বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসিম উদ্দিন, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, ফরেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সহ-সভাপতি স্বপ্না ভৌমিক, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (এফআইসিসিআই)। বিকেএমইএ) সহ-সভাপতি আফতাব হোসেন অপূর্ব ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ।
বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন এ বিষয়ে একটি উপস্থাপনা করেন এবং অর্থনীতিবিদ জাইদী সাত্তারও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
সঙ্কট মোকাবিলায় এক দশমিক দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে বছরে ৪০০ এমএমসিএফডি গ্যাস আমদানির ব্যবসায়ীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, এটি সম্ভব নয় যে ভবিষ্যতে সম্ভাব্য আর্থিক সংকট মোকাবিলায় সরকারকে বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: পশ্চিমারা আমাদের বিপদে ফেলেছে: প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ‘আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের বিষয়ে খুব সতর্ক থাকতে হবে। কারণ আমরা জানি না রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কখন শেষ হবে।’
বিদ্যুৎ সংকট সম্পর্কে তিনি বলেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে এবং সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কিছু গ্যাস সরিয়ে শিল্পকারখানায় দিতে পারবে।
এছাড়াও, সরকার স্বল্পতম সময়ের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আরও এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে।
ইজাজ হোসেন তার উপস্থাপনায় বলেন, জ্বালানি পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সরকারের কাছে কিছু বিকল্প রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দাম কমতে থাকায় স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করা এবং বিশেষ করে গাজীপুর, সাভার এবং নারায়ণগঞ্জের সিএনজি স্টেশন, গৃহস্থালী গ্রাহক ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শিল্পে গ্যাস সরানো এবং সরকার সার কারখানা বন্ধ করে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানি করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘এগুলো গ্যাস সরবরাহ বাড়াবে, তবে লোডশেডিং বাড়াতে পারে।’
ড. বিনায়ক সেন বলেন, সার কারখানা বন্ধ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানো ভালো বিকল্প হতে পারে না। তিনি বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হচ্ছে খাদ্য উৎপাদনে কৃষিকে সহায়তা করা।
বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম পারভেজ বলেন, তীব্র গ্যাস সংকট ও লোডশেডিংয়ের কারণে অনেক শিল্পকে তাদের উৎপাদন স্থগিত করতে হচ্ছে। ফলে কাঁচামাল আমদানি কমে গেলেও রপ্তানি কমছে।
তিনি বলেন, আমরা যদি পর্যাপ্ত গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাই, তাহলে শিল্প টিকবে না।
বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, সরকারের উচিত টেক্সটাইল শিল্পে কিছুটা বেশি দামে গ্যাস সরবরাহ করা।
তিনি বলেন, ‘অপেক্ষাকৃত বেশি দামে গ্যাস পেলে আমরা টিকে থাকতে পারি। কিন্তু গ্যাস না পেলে আমরা টিকে থাকতে পারি না।’
এ কে আজাদ বলেন, পোশাক কারখানার মালিকদের দিনের বেলা তাদের কার্যক্রম স্থগিত করতে হয় এবং এখন পরিস্থিতি তাদের জনবল কমাতে বাধ্য করছে। ‘কিন্তু আমরা যদি কর্মচারীদের বরখাস্ত করি, তাহলে সমাজ ও অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে? এটি একটি বড় প্রশ্ন।’
আরও পড়ুন: এলএনজি আমদানি অব্যাহত থাকবে, আরও টার্মিনাল স্থাপন হবে: জ্বালানি উপদেষ্টা
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার জ্বালানি আমদানিতে বাধা হবে না: জ্বালানি উপদেষ্টা
পশ্চিমারা আমাদের বিপদে ফেলেছে: প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী দেশের বর্তমান জ্বালানি সংকটের জন্য ‘পশ্চিমাদের’ দায়ী করেছেন।
রবিবার বাংলাদেশ এনার্জি সোসাইটি (বিইএস) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে টেকসই শক্তি নিরাপত্তা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রূপকল্প’- শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এই সঙ্কট আমাদের নিজস্ব সৃষ্টি নয়। পশ্চিমারা আমাদের বিপদে ফেলেছে।’
বর্তমান পেট্রোলিয়াম জ্বালানির দাম ৫০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশই দাম বাড়ায়নি, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশও দাম বাড়িয়েছে।
সেমিনারে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি গ্যালন পেট্রোল পাঁচ ডলারে বিক্রি হচ্ছে, যা লিটার প্রতি ১২০-১৩০ টাকার সমান।
তিনি বলেন, সিস্টেমে যৌক্তিকতা আনতে বিদ্যুতের লোড বদলাতে থ্রি হুইলারের জন্য সোলার-চালিত ফাস্ট চার্জিং স্টেশন ও বৈদ্যুতিক ওভেনের মাধ্যমে রান্নার মতো নতুন উদ্ভাবনী সমাধান চালু করা উচিত।
বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড.তামিম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ইতোমধ্যেই পেট্রোলিয়ামের দাম গ্যালন প্রতি পাঁচ ডলার থেকে কমে তিন ডলারে নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: গণপরিবহন বন্ধে দেশজুড়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ
এক মার্কিন গ্যালন প্রায় চার লিটারের সমান।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার আগেই সরকারের উচিত ছিল দাম কমানো। কিন্তু তা করা হয়নি। এখন আবার বিদ্যুতের দাম একযোগে প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, ‘একটি সুনির্দিষ্ট নীতি থাকা উচিত, দাম কমলে লাভ একটি বিশেষ তহবিল হিসাবে সংরক্ষণ করা উচিত এবং মূল্য বৃদ্ধির সময় পেট্রোলিয়াম আমদানিতে সে তহবিল ব্যবহার করা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, তেলের দাম শিগগিরই কমতে পারে, কারণ এটি সর্বদা চক্রাকারে ঘটে। যে দাম বৃদ্ধির পরে বাজারে সরবরাহ বাড়লে দাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবার কমে যায়।
গ্যাস অনুসন্ধান এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধানের জন্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাপেক্সের ওপর বেশি নির্ভরতা থাকা উচিত নয়। কারণ এটি গত ৫০ বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন বিদেশি কোম্পানিগুলোকে উপকূলীয় ও অফশোর অনুসন্ধানের জন্য চুক্তি প্রদান করা উচিত।’
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ খান, ৭১ টিভির প্রধান মোজাম্মেল বাবু, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ফিরোজ আলম, বিজনেস এক্সিকিউটিভ জাকারিয়া জালাল ও কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও বিইএস-এর সভাপতি আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
মোজাম্মেল বাবু বলেন, রান্নার জন্য ইন্ডাকশন ওভেনের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে উৎসাহিত করা উচিত, কারণ এটি গ্যাস-ওভেনের তুলনায় বেশি কার্যকর।
তিনি বলেন, সরকারের ভিয়েতনামের মতো বৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অগ্রসর হওয়া উচিত। দেশটি ইতোমধ্যে ২০ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করেছে।
আজিজ খান বলেন, বিদেশি তেল কোম্পানিগুলো গ্যাস রপ্তানির বিকল্প না দেয়া পর্যন্ত গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে না।
তিনি বলেন, নীতিমালা পরিবর্তন হলে অনেক স্থানীয় কোম্পানি অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হতে পারে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: বাড়ছে গণপরিবহন ও লঞ্চের ভাড়া
বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে সরকার অফিসের সময় পরিবর্তনের কথা ভাবছে: জ্বালানি উপদেষ্টা
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য নির্দিষ্ট দিনে বাড়ি থেকে কাজ করার নিয়ম চালু করার পাশাপাশি অফিসের সময়সীমা পুনর্নির্ধারণ করা হতে পারে।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্ত সংস্থার উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী এ ইঙ্গিত দেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সরকারকে সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত অফিসের সময় পুনঃনির্ধারণ করার জন্য সুপারিশ করব এবং কর্মকর্তাদের সপ্তাহে দুই বা তিন দিন বাড়ি থেকে কাজ করার অনুমতি দেব।’
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।
তিনি বেশ কয়েকটি কঠোর ব্যবস্থার ঘোষণাও দিয়েছেন যেমন- এরমধ্যে অফিস, বাজার ও মসজিদে এয়ার কন্ডিশনারের শীতলতার মাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখা এবং বিদ্যুৎ খরচ ব্যবস্থাপনার জন্য ঈদের পর থেকে মার্কেট রাত ৮টায় বন্ধের সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে মেনে চলার সুপারিশ করবে।
এছাড়া সন্ধ্যা ৭ থেকে ৮টার মধ্যে এক ঘণ্টার মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে হবে।
আরও পড়ুন: কঠিন সময়ে বিদ্যুৎ ভর্তুকি কমাতে জনগণের সমর্থন কামনা প্রধানমন্ত্রীর
সারাদেশে ক্রমবর্ধমান লোডশেডিং ও গ্যাস সংকটের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা এ বৈঠক ডেকেছেন।
তিনি বলেন, কোভিডের সমযয়ের মতো সবাইকে সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। ‘এখন আবার কোভিড বাড়ছে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি বলে সবাইকে দায়িত্ববান হতে হবে’।
উপদেষ্টা বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হলে দৈনিক লোডশেডিং ৫০০ মেগাওয়াটের মধ্যে রাখা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী কর্মকর্তাদের লোডশেডিং ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নে একটি ন্যায়সঙ্গত নীতি অনুসরণ করতে বলেছেন। যাতে গ্রামীণ ও শহুরে এলাকার মানুষ ন্যায়সঙ্গত ভিত্তিতে বিদ্যুতবিহীন থাকে।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি পুস্তিকা মেনে চলার পুরানো অভ্যাসে ফিরে যাব যুক্তিসঙ্গত উপায়ে লোডশেডিং করার জন্য যেটি ডিজাইন করা হয়েছিল।’
তিনি বলেন, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে রামপাল, পায়রাসহ কয়েকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে এবং ভারত থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেশে আসা শুরু হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তৌফিক এলাহী স্থানীয় গ্যাস উত্তোলনের পরিবর্তে গ্যাস আমদানিকে অগ্রাধিকার দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
ব্রিফিংকালে জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব হোসেন ও বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান নসরুল হামিদের
বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সংকটের কারণে দেশব্যাপী লোডশেডিং বাড়ছে
উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন দেশের জন্য আত্মঘাতী: জ্বালানি উপদেষ্টা
উন্মুক্ত পদ্ধতিতে খনি থেকে কয়লা উত্তোলন দেশের জন্য আত্মঘাতী হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী।
তিনি বলেন,‘ওপেন পিট মাইনিং শুধুমাত্র দেশের বৃহৎ জলাভূমিকে প্রভাবিত করবে না, আমাদের মূল্যবান জমির উপরের মাটিও ধ্বংস করবে।’
শনিবার ‘টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য উপযুক্ত জ্বালানি মিশ্রণ-বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা দেশে কোনো উন্মুক্ত খনির অনুমতি না দেয়ার বিষয়ে সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করেন। যদিও কিছু বক্তা বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: খরচ বেড়েছে মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের
এসময় পরিবেশ রক্ষায় আট হাজার ৪৫১ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলে সরকারের সিদ্ধান্তকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেন ড. এলাহী।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জ্বালানি সচিব মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রকৌশল অনুষদের ডিন ডক্টর মোহাম্মদ তামিম।
জ্বালানি সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, বৈশ্বিক বাজারের অস্থির পরিস্থিতিতে দেশের জ্বালানি খাত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।
বিপিডিবির চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, তরল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যেখানে মোট উৎপাদনের ৩৪ শতাংশ ব্যয় হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, বিপিডিবির পক্ষে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।’
আরও পড়ুন: গ্যাসের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে কাজ করছে সরকার: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী