সংবাদপত্রের স্বাধীনতা
অন্তর্বর্তী সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: শফিকুল আলম
গত বছর থেকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার দায়ী—এমন ইঙ্গিতকে তারা ‘দৃঢ় ও দ্ব্যর্থহীনভাবে’ প্রত্যাখান করে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, তারা(সরকার) স্বচ্ছতা, সুরক্ষা ও স্বাধীনতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একই সঙ্গে এই মৌলিক মূল্যবোধ সংরক্ষণ ও বৃদ্ধির জন্য সকল অংশীজনদের একসঙ্গে কাজ করার আমন্ত্রণ জানান তারা।
তবে তিনি বলেন, তারা সংবাদপত্র মালিক সমিতির (নোয়াব) সাম্প্রতিক বিবৃতিতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং তথ্যের সুবিধাপ্রাপ্তির অবস্থা সম্পর্কে উত্থাপিত উদ্বেগকে স্বীকার করেন।
আলম বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো গণমাধ্যম সংস্থার সম্পাদকীয়, পরিচালনাগত বা ব্যবসায়িক দিকগুলোতে হস্তক্ষেপ করেনি।
তিনি নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘রেসপন্স টু নোয়াব: সেটিং দ্য রেকর্ড স্ট্রেইট' শিরোনামে দেওয়া একটি পোস্টে বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, আমরা ভুল তথ্য এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সম্প্রচারের মুখেও ব্যতিক্রমী সংযম ব্যবহার করেছি।’
প্রেস সচিব বলেন, টেলিভিশন টক শো এবং কলামগুলোতে প্রায়শই এই সরকার সম্পর্কে মিথ্যা এবং উসকানিমূলক দাবি প্রকাশিত হয়েছে।
আলম বলেন, ‘তবুও, আমরা সেন্সর করিনি বা প্রতিশোধও নেইনি। আমরা অভিযোগ করিনি, এমনকি উসকানি দেওয়ার পরেও লাইসেন্স স্থগিত করিনি, বরং অতীতের শাসনামলে জোরপূর্বক বন্ধ করে দেওয়া কিছু গণমাধ্যমের পুনঃপ্রকাশ বা সম্প্রচারে ফিরে আসার পথ প্রশস্ত করেছি।’ আলম বলেন, এটি স্পষ্টতই বাকস্বাধীনতা এবং মুক্ত সংবাদমাধ্যমের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।
সরকারে প্রবেশাধিকার অবাধ রয়েছে
সীমিত প্রবেশাধিকারের অভিযোগের উত্তরে আলম বলেন, সাংবাদিকদের আমাদের উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীদের কাছে উন্মুক্ত ও সরাসরি পৌঁছানোর সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, কোনো সাংবাদিককে তাদের আউটলেট বা সম্পাদকীয় অবস্থানের কারণে সাক্ষাৎকার বা ব্রিফিং থেকে বঞ্চিত করা হয়নি। ‘আমরা স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি এবং আমাদের আচরণ তা প্রতিফলিত করে।’
সচিবালয় প্রবেশ প্রক্রিয়ার সংস্কার
সংশোধিত প্রবেশাধিকার ব্যবস্থার সমালোচনা কেবল ভুলভাবে উপস্থাপন করা নয় বরং ভুল তথ্যও, প্রেস সচিব বলেন।
তিনি বলেন, আগের ব্যবস্থাটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। যার ফলে প্রবেশাধিকারপত্রগুলো এমন ব্যক্তিদের হাতে চলে যায়, যাদের কোনো বৈধ সাংবাদিকতার কাজ নেই। তাদের মধ্যে কিছু রাজনীতিবিদ, লবিস্ট এবং সুবিধাবাদী ছিলেন—যারা বিশেষভাবে প্রাপ্ত প্রবেশাধিকার ব্যবহার করে নীতিকে অন্যায়ভাবে প্রভাবিত করেছিলেন।
আলম বলেন, ‘আমরা সেই ভাঙ্গুর কাঠামো ভেঙে দিয়েছি এবং এটিকে একটি অস্থায়ী পাস ব্যবস্থা দিয়ে প্রতিস্থাপন করেছি, যা প্রতিটি প্রকৃত সাংবাদিকের সচিবালয়ে প্রবেশাধিকার অব্যাহত থাকা নিশ্চিত করবে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘এই সংস্কার প্রবেশাধিকার সীমাবদ্ধ করার জন্য নয়, বরং দুর্নীতিগ্রস্ত প্রক্রিয়ার স্থলে সততা স্থাপন করার জন্য ছিল।’
প্রেস সচিব বলেন, আগের প্রবেশাধিকার নীতিতে স্বীকৃত সাংবাদিকদের সরকারের সুরে গান গাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, আগের নীতিমালায় সাংবাদিকদের সাংবিধানিক অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু অপমানজনক ধারা অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা অন্তর্বর্তী সরকার সংশোধন করেছে।
‘বর্ধিত নবায়ন সময়সীমার সঙ্গে নতুন স্বীকৃতিপত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে,’ উল্লেখ করেন আলম।
চাকরির নিরাপত্তা
আলম বলেন, ‘এটি স্পষ্টভাবে বলা উচিত, যেসব সাংবাদিককে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তারা সরকারি নির্দেশে নয়। বরং গণমাধ্যম মালিকদের নেওয়া সম্পাদকীয় এবং কৌশলগত করপোরেট পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্তের ফলে তা করেছেন।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘এগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো নির্দেশ বা চাপ নয়, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক হিসাব-নিকাশের প্রতিফলন ঘটায়।’
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা: একটি পারস্পরিক দায়িত্ব
আলম বলেন, তারা সাংবাদিকসহ সকল নাগরিকের শারীরিক নিরাপত্তা এবং মর্যাদার প্রতি সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা একটি অগ্রাধিকার। তবে এই দায়িত্ব গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং সরকার ও এর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে ভাগ করা হয়েছে।
নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশের প্রতি তাদের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে আলম বলেন, এই বছরের শুরুতে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন একটি নতুন ‘সাংবাদিক সুরক্ষা আইন’ সহ সংস্কারের প্রস্তাব করেছে, যাতে আইনি সুরক্ষা বৃদ্ধি করা যায় এবং সরকার বা নিরাপত্তা বাহিনীর ভয়ের কারণে সৃষ্ট স্ব-সেন্সরশিপ কমানো যায়।
প্রেস সচিব বলেন, ‘সরকার প্রস্তাবিত আইনটি জারি করার কথা বিবেচনা করছে।’
শিল্পের মধ্যে প্রতিফলনের আহ্বান
আলম বলেন, ‘যদিও আমরা গঠনমূলক সমালোচনার জন্য উন্মুক্ত, তবে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি নোয়াব দোষারোপ করার আগে নিজেরাই দেখুক।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘তাদের অবশ্যই তার নিজস্ব সদস্যদের কর্মকাণ্ড যাচাই করতে হবে এবং সাংবাদিকদের উপর নির্যাতনের জন্য তাদের জবাবদিহি করতে হবে। বিশেষ করে যখন মজুরি শোষণ, শ্রম অধিকার অস্বীকার, পর্যাপ্ত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম ছাড়া প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করা এবং অসহনীয় কর্মপরিবেশের অভিযোগের ক্ষেত্রে।’
পড়ুন: রাষ্ট্রীয় সংকটময় পরিস্থিতিতে ড. ইউনূসের নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক সমর্থন পেয়েছিল: শফিকুল আলম
আলম বলেন, একটি সূক্ষ্ম সংকটকালীন সময় তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসন হিসেবে তারা গণমাধ্যম যাতে ভয় বা হস্তক্ষেপ ছাড়াই কাজ করতে পারে—তা নিশ্চিত করার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়ানো বজায় রেখেছে।
প্রেস সচিব বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা আমাদের কাছে কেবল একটি স্লোগান নয়; এটি এমন একটি নীতি, যা আমরা মেনে চলি।’
তিনি বলেন, নোয়াবের উদ্বেগগুলো যদি তথ্যের উপর ভিত্তি করে সঠিক পক্ষগুলোকে লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়, তাহলে তা আরও বেশি গুরুত্ব পাবে।
আলম বলেন, ‘ঘটনার ত্রুটিপূর্ণ ব্যাখ্যার ভিত্তিতে করা অভিযোগগুলো সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে এগিয়ে নেয় না, তারা কেবল বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বাস্তব চ্যালেঞ্জগুলো থেকে মনোযোগ সরিয়ে দেয়।’
১১৮ দিন আগে
সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় খুবই আন্তরিক: সংসদে হাছান মাহমুদ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বৃহস্পতিবার সংসদে বলেছেন, বর্তমান সরকার কোনোভাবেই সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে না।
তিনি বলেন, ‘সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের স্বাধীনতা রক্ষায় বর্তমান সংবাদপত্র ও সাংবাদিকবান্ধব সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। এই সরকার প্রিন্ট মিডিয়াতে অবাধ সংবাদ প্রচারে কোনোভাবেই হস্তক্ষেপ করছে না।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার (ঢাকা-৪) প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষের সামনে সরকারের সাফল্য তুলে ধরুন: ড. হাছান
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব উপস্থাপন করা হয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার এ খাতের গুণগত মান উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটুর (টাঙ্গাইল-৬) এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন যে কোনো সংবাদপত্র বা অনলাইন পোর্টালে দেশবিরোধী সংবাদ প্রচার বা মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচারের অভিযোগ পেলে তা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর (নারায়ণগঞ্জ-২) এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন যে গণমাধ্যমবান্ধব সরকারের উদার সম্প্রচার নীতিমালার কারণে বর্তমান সরকার বেসরকারি খাতে ৪৮টি টেলিভিশন চ্যানেল, ১৪টি আইপিটিভি ও ৩৬৭টি নিউজ পোর্টালকে অনুমতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: শত ব্যস্ততার মধ্যেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিচ্ছেন ড. হাছান
জামায়াতকে দিয়ে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রতিহত করার বিষয়ে বলিয়েছে বিএনপি: হাছান মাহমুদ
৯০৩ দিন আগে
বাক স্বাধীনতা কিংবা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের জন্য আইসিটি আইন করা হয়নি: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাক স্বাধীনতা কিংবা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়নি।
তিনি বলেন, আমি একটা কথা আগেই বলে রাখি যে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট কিন্তু কারও বাক স্বাধীনতা কিংবা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য করা হয় নাই। পেনাল কোডে আমাদের অপরাধগুলো লিপিবদ্ধ করা আছে। চুরি করলে কি শাস্তি হয়, তা সেখানে লেখা আছে। এছাড়া প্রযুক্তির বিস্তার এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এখন চুরি আর ফিজিক্যালি করতে হয় না, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সবোর্চ্চ উদাহরণ।
সোমবার (৬ মার্চ) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও-এ ‘শেপিং অব থার্ড সেক্টর-ল অ্যান্ড পলিসিস’- শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: আবেদন পেলে খালেদার মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, ডিজিটাইজেশন এবং অ্যাডভান্স কম্পিউটারাইজেশনের ফলে যেসব অপরাধ নতুন মাধ্যম করা যাচ্ছিল সেগুলোকে অপরাধ স্বীকৃতি দিয়ে একটা আইনের প্রয়োজন ছিল। এছাড়া আমার সঙ্গে সারা বিশ্বে নানা অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে যত আলাপ-আলোচনা হয়েছে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের প্রয়োজনীয়তা নাই, এই কথা কিন্তু কেউ বলে নাই।
আইনমন্ত্রী বলেন যে দুঃখজনক হলেও সত্য, এই আইনটা করার পরে অনেক মিস ইউজ এবং অ্যাবিউজ দেখেছি। সত্যকে অস্বীকার করবো না এবং সত্যকে স্বীকার করতেও আমার দ্বিধা নেই। যখন আমি দেখলাম এই আইনটা অপব্যবহার হওয়ার যথেষ্ট প্রবণতা দেখা দিয়েছে, তখন ইমিডিয়েটলি এটা নিয়ে কি করা যায়, তা নিয়ে নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে বসেছিলাম।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে হিউম্যান রাইটস হাই কমিশনের অফিস থেকে আমরা একটা সাজেশন পেয়েছি এবং এই সাজেশনটা আমরা দেখছি। আরেকটি প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ) মামলাটা অনেকেই করেন। যাকে আসামি করা হয় তাকে কিছুদিনের জন্য যেন জেল খাটানো যায়। এইরকম একটা প্রবণতার কারণেই মামলা করা হয় এবং মামলাটা গ্রহণও করা হয়। তখন আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে প্রথমেই যেটা করলাম- সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যদি ডিএসএ আইনে মামলা করা হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে মামলাটা যেন গ্রহণ করা না হয়। যাচাই-বাছাইয়ের জন্য যেন অন্য সেলে পাঠানো হয়।
আনিসুল হক বলেন, অনেকেই হয়তো প্রশ্ন করবেন সাংবাদিক কেন সবাইকে না কেন? সাংবাদিক প্রথমে ছিল এই কারণে যে এই আইনের উদ্দেশ্য যে বাক স্বাধীনতা হরণ করার জন্য নয়, সেটাকে এস্টাবলিস্ট করা। সেই মেসেজটা পুলিশের কাছে পৌঁছে দেয়া। সেটা আমি মনে করি সাকসেসফুল হয়েছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের লাইন মিনিস্ট্রি কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় নয়। যখন এই আইনের ড্রাফট করা হয়েছিল, তখন কিন্তু এর স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা কতটুকু হয়েছিল তা আমি কিন্তু খুব একটা জানি না। এই আইনটা ব্যাটিংয়ের জন্য যখন আমার মন্ত্রণালয়ে আসে যখন আমি জানি, তখন এর স্টেকহোল্ডার তাদের যত বক্তব্য আছে, তাদের সঙ্গে বসেছিলাম।
ডিএসএ আইন করার উদ্দেশ্য নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আপনারা যেরকম এদেশের নাগরিক। আমরাও এদেশের নাগরিক। আপনাদের যেরকম সংবিধানের প্রতি আনুগত্য আছে, আমাদেরও সেরকম আনুগত্য আছে। এছাড়া আমরা চাই না সংবিধান বিরোধী কোনও আইন হোক।
আরও পড়ুন: সরকার মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষায় আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, প্রথমত কারও বিরুদ্ধে এই মামলা গ্রহণ করা হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত এই মামলার জন্য গঠিত সেল সত্যি সত্যিই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই মামলা বিবেচনার জন্য গ্রহণ না করা হবে।
দ্বিতীয়ত, বিচার বিভাগ স্বাধীন তাদের আমি কিছু বলতে পারি না। তবে আমি প্রসিকিউশনকে এই ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও পুলিশকে এই নির্দেশ দেয়া আছে যে, এই ব্যাপারে মামলার রুজু করলেই গ্রেপ্তার করা হবে না, আগে সমন দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সব আইনে কিছু কিছু সিস্টেমিক প্রবলেম আছে, কিছু কিছু আইনে ইমপ্লিমেন্টশনে প্রবলেম আছে। তখন ইম্পিমেন্টেশনে প্রবলেম হয় তখন আইনটা টেবিলে আসে। তখন ইম্পিমেন্টেশন প্রবলেমগুলো কীভাবে রিজলব করা যায় তা দেখা হয়।
ঠিক সেই কারণে আজকেও আমি বলি যে এই আইনটা নিয়ে বসব, যদি রুলসের পরিবর্তন করে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারি, অবশ্যই আমরা সে দিকে যাব। যদি তারপরও আমরা দেখি রুলস না আইনটার কিছু সংশোধন করার প্রয়োজন আছে, আমরা সেটাও করবো।
তিনি বলেন, মনে হয় না যদি ঢালাওভাবে আমরা বলি আইনটা বাতিল করে দেয়া হোক, তাহলে সেটা যুক্তিসঙ্গত কারণ হবে না। আসুন আজকে এখানে এ বিষয়ে আজকে যা বললেন সে বিষয়ে আপনাদের সঙ্গে বসব। সেটা আপনারা চাইলে রোজার আগেও হতে পারে বা রোজার পরেও হতে পারে।
আমার মনে হয় রোজার আগে বসলেই ভালো হবে, কারণ এ বিষয়টি যাতে সামনের বাজেট অধিবেশনেই তুলা যায়।
এর আগে অনুষ্ঠানে আইন সংশোধনের জন্য নাগরিক সমাজ কর্তৃক প্রস্তাব তুলে ধরা হয়, এতে বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন আইন ২০১৬ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর বেশ কয়েকটি ধারা সংশোধনের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
আইন সংশোধনের জন্য নাগরিক সমাজ কর্তৃক প্রস্তাব উপস্থাপন উপলক্ষে ইউএসএইড, ইন্টারন্যাশনাল-সেন্টার-ফর-নট-ফর-প্রফিট ল (আইসিএনএল) ও কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ইউএসএইড এর প্রমোটিং অ্যাডভোকেসি এন্ড রাইটস (পিএআর) এর মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সি আর আবরার, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ।
আরও পড়ুন: খালেদাকে রাজনীতি করতে দিতে বাইরের কোনো চাপ নেই: আইনমন্ত্রী
১০০৪ দিন আগে
আমরা কথা বলতে পারি না, নিঃশ্বাস নিতে পারি না: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রবিবার অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন তাদের ভোট ও অন্যান্য সকল অধিকার হারিয়ে ভয়ানক ফ্যাসিবাদের কবলে পড়েছে।
তিনি বলেছেন, ‘দেশে দমবন্ধ করা এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি। আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি। আমরা কথা বলতে পারি না, নিঃশ্বাস নিতে পারি না।’
এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা বলেন, জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করতে নতুন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে।
‘মানুষ ভয়ঙ্কর ফ্যাসিবাদে বাস করছে। কারণ তাদের অধিকার সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নেয়া হয়েছে…তাদের ভোটের অধিকার এবং জীবনের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। তারা (সরকার) ভিন্ন আড়ালে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে,’ বলেন ফখরুল।
তিনি অভিযোগ করেন, তাদের দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ‘মিথ্যা’ মামলায় সাজা দিয়ে এখন গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। ‘তিনি খুব অসুস্থ, কিন্তু উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যেতে দেয়া হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: জন্মদিনে মির্জা ফখরুল বললেন ‘জীবন সুন্দর’
বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
বিএনপির সাবেক মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমানের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ওবায়দুর রহমান স্মৃতি সংসদ জাতীয় প্রেসক্লাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ফখরুল বর্তমান সরকারকে গণবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী ও স্বাধীনতাবিরোধী বলে আখ্যায়িত করে জনগণকে সতর্ক করে বলেন, আওয়ামী লীগ আরও কিছুদিন ক্ষমতায় থাকলে দেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
তিনি সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য তাদের দলের আন্দোলনে যোগদান ও সফল করার আহ্বান জানান। ‘আমাদের সংগ্রাম তখনই সফল হবে যদি আমরা জনগণকে জাগাতে পারি, রাজপথে আনতে পারি এবং ভয়ঙ্কর স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান গড়ে তুলতে পারি। এটাই আমাদের এখন করতে হবে।’
ফখরুল দেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কে এম ওবায়দুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করেন এবং তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে আইন ও নীতিমালা করা হচ্ছে: ফখরুল
১৩৫৫ দিন আগে