ইউজিসি
ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি: স্বপ্ন নাকি অধরা বাস্তব?
রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সাত কলেজ নিয়ে `ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ (ডিসিউ) প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও অনিশ্চয়তা-অনৈক্য যেন কাটছেই না।
দীর্ঘ আন্দোলনের পর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় পেলেও ক্লাস শুরু না হওয়া, অধ্যাদেশ জারি, প্রস্তাবিত নতুন বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামোয় বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকদের অন্তভুক্তি, নারী শিক্ষার্থীদের কাঠামোগত শঙ্কা, ঐতিহ্যবাহী উচ্চ মাধ্যমিক স্তর নিয়ে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাত্রা
ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ— জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকা এই ৭ কলেজকে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। বর্তমানে এসব কলেজে শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি তোলেন।
২০২৪ সালের ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে’ দেশের পট পরিবর্তনের পর সে আন্দোলন আরও বেগবান হয়। পরে, সাত কলেজের জন্য একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর রূপরেখা প্রণয়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানকে প্রধান করে চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে গত ২৭ জানুয়ারি কলেজগুলোর অধিভুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে মঞ্জুরি কমিশন অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে একটি কাঠামো করার প্রস্তাব দেয়।
ওই প্রস্তাব অনুযায়ী, ঢাকার সরকারি সাত কলেজ পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় বা সমকক্ষ হওয়ার আগ পর্যন্ত একজন অধ্যক্ষের নেতৃত্বে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়, এই পুরো কার্যক্রমের ওপর নজরদারির দায়িত্ব রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একজন সদস্য।
এরপর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পর ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনির্ভাসিটি’ নামটি চূড়ান্ত হয়। নাম চূড়ান্ত করার আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ইমেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন অংশীজনের মত নেয়।
চলতি বছরের ১৮ মে অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াসকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসকের হিসেবে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জুলাই মাসে প্রস্তাবিত ডিসিউ স্নাতক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এরপর ২৬ আগস্ট ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে—বিজ্ঞান, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান— ৩ ইউনিটে মোট আসন সংখ্যা ১১ হাজার ১৫০টি। তিন ইউনিটে প্রায় ৭২ হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করেছিলেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত রূপরেখা তৈরি করে। বর্তমানে সংসদ কার্যকর না থাকায়, অন্তর্বর্তী সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অধ্যাদেশ আকারে জারির উদ্যোগ নেয়।
অধ্যাদেশের খসড়া প্রণয়নের দায়িত্ব পড়ে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানের নেতৃত্বাধীন একটি কমিটির ওপর। প্রস্তাবিত প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক কাঠামো নিয়ে অংশীজনদের মতামত জানতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে।
যারা এই সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেই ২০১৯–২০, ২০২০–২১ ও ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
খসড়া অধ্যাদেশের ৫২ (খ) অনুযায়ী, ২০২৩–২৪ ও ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্ররা ঢাকেবির অন্তর্ভুক্ত।
খসড়া অধ্যাদেশে প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনৈক্য চরমে ওঠে।
এক বছরের সেশনজটে ডিসিইউ
প্রস্তাবিত ডিসিইউতে প্রথমবারের মত ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করে ২৩ নভেম্বর থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে ক্লাস শুরু হয়নি। অথচ দেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই শিক্ষাবর্ষের ক্লাস চার-পাঁচ মাস ধরে চলছে। এমনকি ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের দুটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং অন্যান্য স্বায়ত্বশাসিত ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন চলছে।
ফলে প্রস্তাবিত ডিসিইউ’র প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ভর্তি হওয়ার আগেই এক বছরের সেশনজটে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অতি দ্রুত ক্লাস শুরুর দাবিতে গত ৩০ নভেম্বর রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।
বিশ্ব সঙ্গীতশিক্ষাকে গুরুত্ব দিলেও উল্টো পথে হাঁটছে বাংলাদেশ
২২ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ভর্তির তারিখ ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ায়, এবং ৩০ নভেম্বর থেকে ক্লাস শুরুর কথা জানানো হয়। পুনর্নির্ধারিত তারিখেও ক্লাস শুরু না হওয়ায় এদিনই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
স্কুলিং নিয়ে অনৈক্য
খসড়া অধ্যাদেশে বলা হয়, সাতটি কলেজ ক্যাম্পাসকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ, স্কুল অব বিজনেস স্টাডিজ, স্কুল অব ল অ্যান্ড জাস্টিসে বিভক্ত করে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালানো হবে।
ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাস, ইডেন মহিলা কলেজ ক্যাম্পাস ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে পরিচালিত হবে স্কুল অব সায়েন্স।
ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে অ্যাপ্লাইড ম্যথেমেটিক্স, জুলোজি, ড্যাটা সায়েন্স, বায়োকেমিস্ট্রি ও বায়োটেকনোলজি ডিসিপ্লিন চালু করা যাবে।
ইডেন মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে ফিজিক্স, অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি, বোটানি ও ফরেনসিক সাইন্স ডিসিপ্লিন চালু করা যাবে।
বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে সাইকোলজি, এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিন চালু করা যাবে।
স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ স্কুলটি সরকারি বাঙলা কলেজ ক্যাম্পাসে পরিচালিত হবে।
এই ক্যাম্পাসে জার্নালিজম অ্যান্ড কমিউনিকেশন স্টাডিজ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, ইকোনোমিকস, ফিল্ম স্টাডিজ, ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্স ডিসিপ্লিন চালু করা যাবে।
স্কুল অব বিজনেস স্কুলটি সরকারি তিতুমীর কলেজ ক্যাম্পাসে পরিচালিত হবে। এ ক্যাম্পাসে অ্যাকাউন্টিং, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, হোটেল অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস, ব্যাংক অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিন চালু করা যাবে।
মানবপাচার, অস্থিতিশীলতার কারণে বাংলাদেশি পাসপোর্টের প্রতি বৈশ্বিক আস্থা কমছে
স্কুল অব ল অ্যান্ড জাস্টিস স্কুলটি কবি নজরুল সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ক্যাম্পাসে পরিচালিত হবে।
তবে, খসড়া অধ্যাদেশ প্রকাশের পর থেকেই এই হাইব্রিড বা স্কুলিং পদ্ধতির বিরুদ্ধে নানামহল থেকে বিরোধীতা করা হচ্ছে।
ইউজিসি কর্তৃক প্রস্তাবিত সিস্টেমের মাধ্যমে ক্যাম্পাসগুলোর স্বাতন্ত্র্য ক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কায় পদ্ধতিকে প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের একাংশ। এমনকি ঢাকা কলেজের স্বকীয়তা রক্ষায় খসড়া অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন কলেজটির প্রাক্তন ছাত্ররা।
প্রকাশিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ অধ্যাদেশের খসড়া অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান পদ্ধতি হাইব্রিড পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে ৩৫%-৪০% ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে এবং সকল পরীক্ষা সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে।
স্বকীয়তা বনাম নতুন বিশ্ববিদ্যালয়
এমনকি শিক্ষার্থীদের একাংশ এখনো ৭ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় বানানোর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান নি।
৭টি কলেজের অবকাঠামো ও ক্যাম্পাস স্থায়ীভাবে দিনের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এ সময়সীমা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা, বিশেষ করে ইডেন ও বদরুন্নেসা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সাম্য হত্যা নিয়ে ধোঁয়াশা, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হলেও পুরস্কৃত পুলিশ
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) কলেজ ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনে, ইডেন কলেজকে শুধু নারীদের জন্য সংরক্ষিত করার দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু হলে, তা এই প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে বলে মন্তব্য করেন তারা।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ইডেন কলেজের স্বতন্ত্রতা রক্ষায় সকালে সড়ক অবরোধ করেন কলেজটির ছাত্রীরা। পরে ইডেন কলেজ থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা কলেজে আসে ছাত্রীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন ইডেন কলেজের শিক্ষকরাও।
ঢাকা কলেজের দর্শন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রুদ্র শেখ ইউএনবিকে বলেন, ‘৭ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার প্রস্তাবটি বাস্তবতার সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’
এই শিক্ষার্থী বলেন, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, গবেষণাসুবিধা ও স্থায়ী শিক্ষকসংখ্যা এসব মৌলিক শর্ত পূরণ না হলে বিশ্ববিদ্যালয় মর্যাদা শুধু নামেই মূল্য যোগ করবে, শিক্ষার মানে নয়। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত শিক্ষার্থীদের উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি না করে বিদ্যমান কলেজগুলোর শিক্ষার স্থিতিশীলতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। উন্নয়নকে নামের সম্প্রসারণ নয়, মানের নিশ্চয়তা দিয়েই মূল্যায়ন করা উচিত।
শিক্ষকদের আপত্তি
খসড়া অধ্যাদেশের ২ (ফ) অনুযায়ী, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যরা ঢাকেবির শিক্ষক নন, তাই ওই শিক্ষাবর্ষের ক্লাস–পরীক্ষা নেওয়ার এখতিয়ার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের নেই। এদিকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব জনবল নিয়োগ দেয়নি, ফলে প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
কুকি-চিনের উত্থান বনাম বান্দরবানের পর্যটন: ক্ষতির পাহাড়
ঢাকার সরকারি সাতটি কলেজে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের পদ আছে দেড় হাজার। এর মধ্যে বিষয়ভিত্তিক স্থায়ী পদ প্রায় ১১০০। আর ডেপুটেশনের পদ আছে চারশ।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হয় বিষয়ভিত্তিক পদের বিপরীতে। সাতটি সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হলে এ দেড় হাজার পদ শিক্ষা ক্যাডার থেকে বিলুপ্ত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা, যা তাদের ‘নানা জটিলতায় জর্জরিত’ পদোন্নতির প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করবে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) প্রস্তাবিত ইউনিভার্সিটির ‘স্কুলিং’ পদ্ধতি বাতিল এবং একাডেমিক ও প্রশাসনিক সব পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারকে স্থায়ীভাবে অন্তর্ভুক্ত করে আইন করার দাবি জানিয়েছেন কলেজগুলোর শিক্ষকরা। ‘সাত কলেজ স্বাতন্ত্র্য রক্ষা কমিটি’ ব্যানারে তারা এ দাবি জানান।
এর আগের দিন, সোমবার শিক্ষকরা চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারি করলে তাৎক্ষণিকভাবে দেশের সব সরকারি কলেজ ও দপ্তরে অনির্দিষ্টকালের সর্বাত্মক কর্মবিরতির হুশিয়ারি দেন।
উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শঙ্কা
এদিকে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি প্রস্তাবিত কাঠামোতে হলে তা কলেজগুলো ‘স্বকীয়তার’ জন্য হুমকি হবে বলে মনে করছেন কলেজগুলো উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি খসড়া অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও নিউমার্কেট মোড় অবরোধ করে ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা।
যেখানে নায়কেরা শুয়ে আছেন, সেই তিন নেতার মাজার মাদকসেবীদের দখলে
ঢাকা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক বহাল রাখা এবং কলেজের স্বকীয়তা রক্ষার দাবিতে এর আগেও আন্দোলন করেছেন শিক্ষালয়টির উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা। তাদের ভাষ্য, ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি খসড়া আইনে উচ্চ মাধ্যমিক বহাল রাখার কথা বলা হলেও ধীরে ধীরে তা তুলে দেওয়া হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ৭ কলেজের মধ্যে ৫টি— ঢাকা কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ, বদরুন্নেসা কলেজ, কবি নজরুল ও সরকারি বাঙলা কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় চালু রয়েছে।
চূড়ান্ত অধ্যাদেশ ‘সময়সাপেক্ষ’
চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সুধীজনের কাছ থেকে ছয় হাজারের বেশি মতামত পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব মতামত বিবেচনায় নিয়ে অধ্যাদেশ চূড়ান্ত সময়সাপেক্ষ বিবেচনা করে সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানানো হয়।
তবে, এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারির দাবিতে রাস্তা অবরোধ এবং আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) অধ্যাদেশ জারির দাবিতে আন্দোলনরত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের সামনের রাস্তা বন্ধ করে রাখেন। যে কারণে নিউমার্কেট থেকে শাহবাগ ও আজিমপুরমুখী রাস্তায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।
এরপর তারা আগামী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আল্টিমেটাম দেন। এর মধ্যে অধ্যাদেশ জারি না হলে রবিবার থেকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর শিক্ষা ভবনের সামনে টানা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করবেন।
ডাকসু: নজর কাড়ছে লিগ্যাল নোটিশ, ডলারসহ জেন-জি প্রচারণা
ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির প্রশাসক অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, “শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আশা করছি খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।”
ইউজিসির সদস্য ও ৭ কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনে গঠিত কমিটির সদস্য ড. তানজিম উদ্দিন খান বলেন, ৭ কলেজ নিয়ে মন্তব্য করার এখতিয়ার আমাদের নেই। আমাদের টার্মস অব কন্ডিশন অনুযায়ী আমাদের যে দায়িত্ব ছিল, তা আমরা সম্পন্ন করেছি। এরপর আমাদের আর কোন ভূমিকা নেই, বিষয়টি এখন সম্পূর্ণ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে।
এমতাবস্থায়, এখন পর্যন্ত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি স্বপ্ন ও স্থবিরতার মধ্যে আটকে আছে। অবিশ্বাস, প্রশাসনিক শূন্যতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়, স্বায়ত্তশাসন ও শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তর সময়ের হাতেই তোলা।
১৬ দিন আগে
হিটের ১৫১ উপ-প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইউজিসি’র চুক্তি সই
হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট) প্রকল্পের আওতায় নির্বাচিত ১৫১টি উপ-প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশের ৪৩টি পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
বুধবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে চুক্তি এই সই হয়। ইউজিসি সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং উপ-প্রকল্পপ্রাপ্ত পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্বিবিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ।
ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান, অধ্যাপক ড. মাছুমা হাবিব, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম, বিশ্ব ব্যাংকের প্রাকটিস ম্যানেজার কেইকো ইনোউএ, লিড ইকোনোমিস্ট ও টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার টবি লিনডেন, টাস্ক টিম লিডার টিএম আসাদুজ্জামান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সাব-প্রজেক্ট ম্যানেজারগণ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে হিটের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান সাব-প্রজেক্ট নির্বাচন প্রক্রিয়াসহ প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি তুলে ধরেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফায়েজ বলেন, হিটের উপ-প্রকল্প নির্বাচনে উচ্চশিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন ও জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি উপ-প্রকল্পপ্রাপ্ত শিক্ষক ও গবেষকদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি এ কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, ডিনসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনকে তাদের সহযোগিতা করার পরামর্শ দেন।
অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান প্রকল্পপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রকল্পের সকল কাজ সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
তিনি আরও বলেন, গত এক বছরে নানা রকম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের অর্থ জনগণের করের টাকা ও বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে। এই অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে বলে তিনি জানান। অনুষ্ঠানে ইউজিসি’র পরিচালকসহ বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বব্যাংক ও হিট প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, হিট প্রকল্পের অধীনে বিভিন্ন উপ-প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকদের থেকে উন্মুক্ত প্রতিয়োগিতার মাধ্যমে প্রকল্প প্রস্তাব আহ্বান করা হয়। এতে মোট ১ হাজার ৪৮১টি উপ-প্রকল্প প্রস্তাব জমা হয়। যাচাই বাছাই শেষে ১৫১টি উপ-প্রকল্প চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হয়।
দেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে পাঁচ বছর মেয়াদি (২০২৩-২০২৮) হিট প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন এই প্রকল্প ইউজিসি বাস্তবায়ন করছে।
১১৬ দিন আগে
১৮ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ইউজিসি
দেশের ১৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ৩০তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (জিটিআই)।
রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিটিআই শ্রেণিকক্ষে এই প্রশিক্ষণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। আজ থেকে শুরু হয়ে আগামী ২৮ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৩৩ দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণে ২৫ জন শিক্ষক অংশ নিয়েছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জিটিআই পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোজাম্মেল হক। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. জি.এম. মুজিবুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. জি.এম. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষকতা শুধু ক্লাসরুমেই নয় বরং এটি আরও ব্যাপ্তিময়। এই প্রশিক্ষণ অংশগ্রহণকারীদের জীবনে খুবই সহায়ক হবে বিধায় নিয়মানুবর্তিতা ও মনোযোগের সঙ্গে এটি সম্পন্ন করার পরামর্শ দেন।’
১৪৭ দিন আগে
১৮ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে
সরকার বারবার সময় দেওয়ার পরও ১২ বছরের বেশি সময় হয়ে গেছে, এমন ১৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি ইউজিসি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মাসিক সভা থেকে সেই সিদ্ধান্ত আসবে।
১৮ টি বেসরকারি ভার্সিটি- লিমিট ক্রস করে ফেলেছে। যারা ১২ বছরের বেশি সময় পার হয়েছে। কারো ১২, ১৫, ১৮, ২০ বছরের বেশি হয়েছে, এখানে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি।
ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ইউএনবিকে এক সাক্ষাৎকারে জানান, ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সীমা ছাড়িয়ে গেছে। কোনোটির ১২ বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে, কোনো কোনোটির ১৫, ১৮, এমনকি ২০ বছর হয়ে গেছে, এখনও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির অভিযোগ: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ব্যবস্থা নিতে পারে ইউজিসি
ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়া ব্যাপারে বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও যায়নি। এ বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে তিন মাস আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একটা নির্দেশনা দিয়েছে। তবে এই সংখ্যা হবে ১৮টি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সুত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে পাঠানো চিঠিতে ইউজিসি চেয়ারম্যানকে বলা হয়, ১৬ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও শিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করেনি। ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর ধারা ১২ (১) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে ইউজিসির এই সদস্য বলেন, ‘এটি বলা যাবে না। তবে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে মাসিক সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। খুব দ্রুতই মাসিক সভা হবে। সেখানে ১২ বছরের উপরে হয়ে গেছে, কিন্তু স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি—এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
কী কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যেতে পারলে অনুমোদন বাতিলসহ অনেক বিকল্প আছে। তবে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক না কেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশেই তা বাস্তবায়ন করা হবে।’
এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আর কতদিন সময় দেবেন জানতে চাইলে ইউজিসির এই সদস্য বলেন, ‘২/৩ মাসে তো আর যেতে পারবে না। সময় দিলেও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে৩/৪ বছর সময় লাগবে।’
তিনি বলেন, ‘অনেক ভার্সিটির ১২, ১৫, ২০ বছর হয়ে গেছে, এখনও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এসব ক্ষেত্রে ইউজিসির মাসিক সভায় বহু ধরনের সিদ্ধান্ত আসবে। কাউকে সতর্ক, কাউকে সময় দেওয়াসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত আসবে।’
আরও পড়ুন: বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শাখা স্থাপনের অনুমতি দিতে গাইডলাইন হচ্ছে
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘১১৭ ভার্সিটির মধ্যে বেশিরভাগেরই স্থায়ী ক্যাম্পাস নেই। স্থায়ী ক্যাম্পাস সংখ্যা অনেক কম। তারপরও তাদের সময় দেওয়া হচ্ছে।’
এর আগে, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য ১৮ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দিয়েছিল ইউজিসি। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারায় চার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ, দুটির অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাকি ১২ বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে আলাদা সময় দেওয়া হয়েছিল।
স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় যে ১৮ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এর মধ্যে ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ই রাজধানী ঢাকায়।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো ঢাকার সাতমসজিদ রোডের ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, সিদ্ধেশ্বরীর স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, রাজারবাগের দ্য মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি, মোহাম্মদপুরের দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, গুলশানের প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, বনানীর প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি, শ্যামলীর আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, পান্থপথের সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি, মিরপুরের বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস, সিলেটের নর্থ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, কিশোরগঞ্জের ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, ফেনীর ফেনী ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও চিটাগং ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি এবং কুমিল্লার ব্রিটানিয়া ইউনিভার্সিটি।
এদিকে, রাজধানীর সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে গত শনিবার খিলগাঁও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে তাদের অর্ধসমাপ্ত স্থায়ী ক্যাম্পাস উদ্বোধন করেছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে প্রতিষ্ঠার পর প্রথমে সাত বছর, পরে আরও পাঁচ বছর সময় পায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এর মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারলে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে ইউজিসি।
২২৪ দিন আগে
বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শাখা স্থাপনের অনুমতি দিতে গাইডলাইন হচ্ছে
দেশে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শাখা ক্যাম্পাস স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে গাইডলাইন পলিসি তৈরির জন্য কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট ও কঠোর নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করছে ইউজিসির হাই-পাওয়ার কমিটি।
নীতিমালা চূড়ান্ত হওয়ার পর মানসম্পন্ন ও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবেদন বিবেচনা করে অনুমোদন দেওয়া হবে। তবে উচ্চশিক্ষার মান রক্ষা ও বাণিজ্যিকীকরণ রোধে প্রয়োজনীয় সতর্কতাও অবলম্বন করা হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিদেশি (বিশ্ববিদ্যালয়ের) ক্যাম্পাস এলে বাংলাদেশের কতটুকু ভালো হবে—সব দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন পলিসি তৈরির জন্য হাই-পাওয়ার কমিটি কাজ করছে। কমিটিতে প্রফেসররা আছেন। কমিটির প্রধান বুয়েট ভিসি। কমিটি পলিসি তৈরি করছে। পলিসি তৈরি হলে বিদেশি (বিশ্ববিদ্যালয়ের) ক্যাম্পাস অনুমোদনের বিষয়টি নিয়ে বলা যাবে।’
‘এই কমিটি সাব-কমিটি। মেইন কমিটির প্রধান আমি। সেখানে ঢাবি, বুয়েটে, নর্থ সাউথ ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটির মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়েসরদের নিয়ে একটি হাই-পাওয়ার কমিটি করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশি ক্যাম্পাসের অনুমতি দিতে আমরা পজিটিভ। তবে আমরা দেখছি, শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হয় কি না। এছাড়া আমাদের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কী ধরনের প্রেসারে পড়বে, সেটাও দেখতে হবে।’
আরও পড়ুন: দুর্নীতির অভিযোগ: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ব্যবস্থা নিতে পারে ইউজিসি
ইউজিসির এই সদস্য বলেন, ‘প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় একটি অবস্থানে চলে গেছে। তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের জীবনযাত্রার মান, তাদের বেতনকাঠামো, সুযোগ-সুবিধা, গবেষণার সুযোগ খুব যে ভালো, তা দেখছি না। সবদিক থেকে বিবেচনায় নিয়ে বিদেশি ভার্সিটি এলে পাবলিক ও প্রাইভেট ভার্সিটিগুলো আরও শিক্ষক সংকটে পড়বে কি না তা দেখতে হবে। তাছাড়া এই পদক্ষেপ দেশের জন্য লাভজনক কি না, তা দেখে সেইভাবে পলিসি তৈরি করা হবে।’
ইউজিসি থেকে জানা যায়, ইউজিসি বর্তমানে ২০১৪ সালের ‘বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা বা স্টাডি সেন্টার পরিচালনা বিধিমালা’ সংশোধনের কাজ করছে। এই বিধিমালায় কিছু অস্পষ্টতা ও সীমাবদ্ধতা থাকায় তারা এটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। নতুন নীতিমালায় শুধুমাত্র শাখা ক্যাম্পাস স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে, স্টাডি সেন্টার নয়। শাখা ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য নির্দিষ্ট শর্তাবলী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেমন: ২৫ হাজার বর্গফুট জায়গা, পূর্ণকালীন শিক্ষক নিয়োগ, ৫ কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট, অনুমোদনের জন্য ১০ লাখ টাকা ফি। সর্বোপরি, উচ্চশিক্ষার মান নিশ্চিত এবং বাণিজ্যিকীকরণ রোধ করাই এই নীতিমালার লক্ষ্য।
বাংলাদেশে প্রথম বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শাখা ক্যাম্পাস খুলতে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়েছে মালয়েশিয়ার ইউসিএসসি ইউনিভার্সিটি। ইতোমধ্যে তারা ঢাকায় কার্যক্রম শুরু করেছে।
২২৮ দিন আগে
দুর্নীতির অভিযোগ: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ব্যবস্থা নিতে পারে ইউজিসি
দেশের ২০ থেকে ৩০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির (বিওটি) বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও তহবিল তছরুপের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটি ভেঙে প্রশাসক বসানো হতে পারে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটির বিরুদ্ধে যদি গুরুতর অভিযোগ থাকলে তাদের সঙ্গে কথা বলে সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনে প্রশাসক বসানো হবে। প্রশাসক বসানো ছাড়াও যদি আরও বেশি কিছু করা যায় বা সরকারের আরও বেটার বা ইনোভেটিভ আইডিয়া থাকে, প্রয়োজনে সেটিও করা হবে।’
তবে যায় করা হোক না কেন, তা নিয়মতান্ত্রিকভাবেই করা হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সাত কলেজ নিয়ে যৌক্তিক সমাধান আসবে: ইউজিসি চেয়ারম্যান
এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কী ধরনের অভিযোগ রয়েছে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিওটির বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ অর্থ পাচার। এছাড়া তহবিল তছরুপসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে।’
বিওটির এসব অনিয়ম নিয়ে কীভাবে তথ্য পেলেন?—উত্তরে এই ইউজিসি সদস্য বলেন, ‘দুদক, আমাদের নিজস্ব তদন্ত, সংবাদপত্রসহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্নভাবে তথ্য এসেছে আমাদের কাছে। এসব বিষয়গুলো আমলে নিয়ে (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে) একটি সুশৃঙ্খল প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেওয়ার বিষয়ে কাজ হচ্ছে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়মের মধ্যে আনার জন্য যা যা করা দরকার, তা-ই করা হবে।’
কতগুলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির (বিওটি) বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘২০ থেকে ৩০টির মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম তদন্তে কমিটিও করে দিয়েছি; সেটি সাধীন ভাবে কাজ করছে। কাজ শেষ করে রিপোর্ট দিলে সিদ্ধান্তের জন্য তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযুক্ত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা আলাদা কমিটি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্ট চলেও এসেছে। যেমন: সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি; তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখানে প্রশাসক নিয়োগের জন্য আমার সুপারিশ করে প্রতিবেদনটি সরকারকে পাঠিয়েছি, সরকার সিদ্ধান্ত দিলেই প্রশাসক বসানো হবে।’
তদন্ত কমিটিতে কারা কারা আছে, এ ব্যাপারে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অধিকাংশ কমিটির কনভেনার (আহ্বায়ক) বাইরে থেকে নেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইউজিসি থেকে সদস্য নেওয়া হয়েছে আবার বাইরে থেকেও নেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিটি কমিটিতে আমাদের সংশ্লিষ্ট শাখার ডিলিং অফিসারকে (দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) রাখা হয়েছে, যিনি সেই ভার্সিটির দায়িত্ব পালন করছেন।’
তদন্ত কমিটির কনভেনার হিসেবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাবেক বিচারকদের রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকায় কেন এত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
ইউজিসি সুত্রে জানা যায়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। প্রতি বছর শিক্ষার্থী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের সঙ্গে দুর্নীতিও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা ও হিসাব-নিকাশ ঠিকঠাক নেই। আইনের তোয়াক্কা না করে নানা কৌশলে বিপুল অর্থ লুটছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের (বিওটি) সদস্যরা।
নাম না প্রকাশের শর্তে ইউজিসির এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘গত সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিওটি গঠন করা হয়। তারা ব্যবসা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিক। তবে তারা আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পূর্ণ কমিশনের সভায় অভিযোগ ওঠা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
২৩০ দিন আগে
সাত কলেজ সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আহ্বান ইউজিসির
রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজের সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সনদপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের কাছে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আহ্বান করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রস্তাব বিষয়ে একটি অফিস নোট অনুমোদন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার যৌক্তিকতা পাচ্ছে না সরকার: সিনিয়র সচিব
কলেজগুলো হচ্ছে- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজ।
একটি পূর্ণাঙ্গ সনদপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষ্যে সর্বসাধারণের কাছে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আহ্বান করা হচ্ছে। পরবর্তী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে [email protected] (ইমেইল আইডিতে) নাম প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে বলে অফিস নোটে উল্লেখ করা হয়েছে।
৩০৬ দিন আগে
ইউজিসির পূর্ণকালীন সদস্য হলেন মাছুমা হাবিব
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) পূর্ণকালীন সদস্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) এনিম্যাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মাছুমা হাবিব।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজের কাছে ড. মাছুমা হাবিব যোগদান পত্র পেশ করেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ড. মাছুমা হাবিবকে চার বছরের জন্য কমিশনের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এ নিয়োগ তার যোগদানের তারিখ থেকে কার্যকর হয়েছে।
এছাড়া প্রজ্ঞাপনের শর্তানুযায়ী তিনি অব্যবহিত পূর্ব পদে সর্বশেষ আহরিত বেতন-ভাতাসহ প্রচলিত বিধি অনুযায়ী অন্যান্য সুবিধাদি প্রাপ্ত হবেন।
আরও পড়ুন: ইউজিসি ও এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেসের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই
উল্লেখ্য, মাছুমা হাবিব বাকৃবির ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) প্রথম নারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির গ্রাজুয়েট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও সেন্টার অব এক্সিলেন্স ইন টিচিং অ্যান্ড লার্নিংয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ অব সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড মেডিসিন থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি বাকৃবি থেকে ১৯৯২ সালে অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি বিষয়ে বিএসসি এবং ১৯৯৮ সালে অ্যানিম্যাল নিউট্রেশন বিষয়ে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ডিএফআইডি ও ব্রিটিশ কাউন্সিল ফেলোশিপ, অরেঞ্জ নলেজ প্রোগ্রাম ও নেদারল্যান্ডস ফেলোশিপ প্রোগ্রাম প্রাপ্ত হন।
মাছুমা হাবিব বাংলাদেশ মিট সাইন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশন ও কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের আজীবন সদস্য।
আরও পড়ুন: ইউজিসি সদস্য হলেন বুয়েটের অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান
৩৬৮ দিন আগে
ইউজিসি ও এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেসের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এবং এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেসের (ইএমজিএস) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) কুয়ালালামপুরের একটি হোটেলে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ এবং ইএমজিএসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নেইভ তাজউদ্দীন এ সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী ওয়াইবি দাতো সেরি ড. জামব্রি আব্দ কাদিরের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সমঝোতা স্মারক বিনিময় হয়।
আরও পড়ুন: এডিবি-ইডিসিএফের অর্থায়নে একসঙ্গে কৃষি গবেষণা করবে ইউজিসি ও বাকৃবি
এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি ছাত্র, শিক্ষক ও গবেষকদের অধ্যয়ন, গবেষণা, পড়াশুনা ও পাঠদানের অধিকতর সুযোগ সৃষ্টি হবে।
অনুষ্ঠানে ইএমজিএসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নেইভ তাজউদ্দীন স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ এবং মালয়শিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান বক্তব্য রাখেন।
শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে এ সমঝোতা স্বাক্ষর বৃহত্তর সহযোগিতার পথ প্রশস্ত করবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন ইউজিসির চেয়ারম্যান।
এক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশের ব্যাপারে ইএমজিএসের আন্তরিক আগ্রহ ও সহযোগিতার জন্য তাদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
এটি বাস্তবায়নে মিশনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন হাইকমিশনার শামীম আহসান।
সমঝোতা স্বাক্ষরে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য আরও সুযোগ উন্মুক্ত করবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন-ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ইউজিসির সচিব ড. ফখরুল ইসলাম এবং মিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর।
আরও পড়ুন: ইউজিসির সদস্য হিসেবে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান ও ড. আনোয়ার হোসেনের যোগদান
৩৮৮ দিন আগে
এডিবি-ইডিসিএফের অর্থায়নে একসঙ্গে কৃষি গবেষণা করবে ইউজিসি ও বাকৃবি
দেশের কৃষি ও খাদ্যপ্রযুক্তি খাতের গবেষণা ও মানোন্নয়ন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, জলবায়ু ব্যবস্থাপনাসহ কৃষি বিষয়ক উচ্চশিক্ষা শক্তিশালীকরণে গৃহীত স্ট্রেংথেনিং এগ্রিকালচারাল টারশিয়ারি এডুকেশন প্রজেক্টে (এসএটিইপি) যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)।
প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করবে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এবং কোরিয়ার এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ)।
প্রকল্পটির আওতায় বাকৃবি ও কৃষি-শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে।
রবিবার (৩ নভেম্বর) বাকৃবির জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, শনিবার ঢাকাস্থ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল সম্মেলন কক্ষে প্রকল্পটির আওতায় অনুষ্ঠিত কৃষি-শিল্প পরামর্শ কর্মশালায় ওই সমঝোতা চুক্তি সই হয়।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে কৃষকদের বিনামূল্যে টমেটোর চারা ও গাজরের বীজ বিতরণ
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া।
এসময় বাকৃবির সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে বাংলাদেশ এগ্রো-প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ চিংড়ি ও মৎস্য ফাউন্ডেশন এবং ইস্পাহানি এগ্রো লিমিটেডের সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ.কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, গত ৬৩ বছর ধরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা শিক্ষক ও গবেষকরা নিরলসভাবে শিক্ষার্থীদের মাঝে জ্ঞান বিতরণ করে চলেছেন। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের কৃষিতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। প্রকল্পটি দেশের কৃষি খাতে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও আধুনিক কৃষি গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং উচ্চতর কৃষি গবেষণা পরিচালনায় সহায়ক হবে।
উপাচার্য বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে আধুনিক ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে। এখানে কৃষি ও কৃষিপ্রধান ৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং এতদসংশ্লিষ্ট প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণার সুবিধা পাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়েই আমাদের চলতে হবে। আগামীর কৃষি যান্ত্রিক ও প্রযুক্তির কৃষি, সে কথা মাথায় রেখেই সরকার কাজ করছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কৃষির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের নিজস্ব অংশগ্রহণের প্রশ্নে প্রকল্পটি ভূমিকা রাখবে।’
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন এডিবির হিউম্যান অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সেক্টরের সিনিয়র সোশ্যাল সেক্টর ইকোনোমিস্ট রিওতারো হায়াসি, বাকৃবির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক অধ্যাপক গোলাম হাফিজ, বাংলাদেশ এগ্রো-প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবুল হাসেম, বাংলাদেশ চিংড়ি ও মৎস্য ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন সৈয়দ মাহমুদুল হক, ইস্পাহানি এগ্রো লিমিটেডের পরিচালক মিসেস ফৌজিয়া ইয়াসমিন, প্রাণ আরএফএল গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক জনাব নাসের আহমেদ।
প্রকল্পটির অধীনে ‘বাংলাদেশ ইনস্ট্রুমেন্টেশন সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল রিসার্চ’ নামে একটি উচ্চতর গবেষণা সেন্টার গড়ে তোলা হবে। এই প্রকল্পের আওতায় কৃষি শিক্ষার যুগোপযোগী পাঠ্যক্রম প্রণয়নের পাশাপাশি পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এছাড়া প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কৃষক ও কৃষি সম্পর্কিত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করা হবে।
আরও পড়ুন: ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু বাকৃবি প্রশাসনের
৪১৩ দিন আগে