জালি কাবাব
ঢাকার কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজার
বছর ঘুরে প্রতিবার পবিত্র রোজার মাসে জমে ওঠে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজারগুলো। কেবলমাত্র ধর্মীয় দিকটিকে গুরুত্ব দিয়ে ইফতারের জন্যই যে এগুলোতে ভীড় হয় তা নয়। জিবে জল আনা খাবারের দোকানগুলোতে শহরের বিভিন্ন প্রান্তের ভোজন রসিকদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। কেউ বা নিয়ম মেনে প্রতি বছরই ইফতার কিনতে চলে আসেন, কেউ বা আসেন স্বাদ বদলানোর আশায়। তাছাড়া বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে ইফতারের টেবিলের সুন্দর মুহুর্তগুলোকে যেন দ্বিগুণ বাড়িয়ে তোলে এই জনপ্রিয় খাবারগুলো। ঢাকার কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজারের বিস্তারিত নিয়ে এবারের ফিচার।
ঢাকার কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজার
চকবাজার ইফতার পাড়া
ঢাকার সবচেয়ে বড়, বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং জনপ্রিয় ইফতার বাজার হলো পুরান ঢাকার চকবাজার। দুপুরের পর থেকেই শায়েস্তা খা-এর আমলের নির্মিত শাহী মসজিদের সামনের রাস্তাতে বসতে শুরু করে ইফতারের হাট। প্রায় ১০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই ইফাতারিপাড়ার বিশেষ আকর্ষণ হলো বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙায় ভইরা লইয়া যায়। প্রায় ৭৫ বছর ধরে সুখ্যাতি অক্ষুন্ন রেখেছে স্থানীয় রন্ধনশিল্পী মোহাম্মদ কামাল মাহমুদের তৈরি করা এই খাবারটি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এটি সিক চূড়ায় ভর্তা নামে পরিচিত ছিলো।
চকবাজারের লোকারণ্য রাস্তায় ফুটপাতের উপর গড়ে ওঠা দোকানগুলোতেই এই খাবার পাওয়া যায়। অস্থায়ী হলেও রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে যথেষ্ট প্রস্তুতি থাকে এই দোকানিদের। এগুলোতে বিশেষ আকর্ষণের মধ্যে থাকে খাসির গোসতের রানের কাবাব, সুতি কাবাব, মুঠি জালি কাবার, জালি কাবাব, নারগি চাপ, টিকা কাবাব, শাক ফুলুরি, ডিম চপ, দই বড়া, কবুতর ও কোয়েলের রোস্ট, হালিম, নুরানি লাচ্ছি, পেস্তা বাদামের শরবত, পরোটা, পেঁয়াজু, আলুর চপ, ছোলা বুট, ঘুগনি, বেগুনি, বোম্বে ও শাহী জিলাপি।
বেইলি রোড-এর অভিজাত ইফতার
চকের পরেই ইফতারের জন্য নামকরা জায়গাটি হলো বেইলি রোড। রোজার এই একটি মাস পুরো বদলে যায় খাবার পাড়া নামে খ্যাত জায়গাটি। বেইলি রোডের ইফতার ৮০-এর দশক থেকে পরিচিতি লাভ করেছে। এখানকার অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলোর পাশাপাশি স্কুল-কলেজের সামনের রোডে ফুটপাতের উপর অস্থায়ী দোকানগুলোতেও শোভা পায় নানান ইফতারের পসড়া।