ইয়েমেন
ইয়েমেনের রাজধানীতে পদদলিত হয়ে নিহত ৭৮
প্রত্যক্ষদর্শী ও হুথি বিদ্রোহী কর্মকর্তাদের অনুসারে, ইয়েমেনের রাজধানী সানায় বুধবার রাতে মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসে আর্থিক সহায়তা বিতরণের একটি অনুষ্ঠানে দৃশ্যত গোলাগুলি ও বৈদ্যুতিক বিস্ফোরণে জনতা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, এতে কমপক্ষে ৭৮ জন নিহত ও ৭৩ জন আহত হয়েছে।
ইয়েমেনের দীর্ঘদিনের যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন বিগত বছরগুলোর মধ্যে এই ট্র্যাজেডিটি সবচেয়ে মারাত্মক ছিল এবং এই সপ্তাহের শেষের দিকে রমজানের সমাপ্তি উপলক্ষে মুসলমানদের ঈদ-উল-ফিতরের ছুটির আগে এটি ঘটল।
আবদেল-রহমান আহমেদ ও ইয়াহিয়া মোহসেন নামের দুই প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, সশস্ত্র হুথিরা ভিড় নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় বাতাসে গুলি চালায়, দৃশ্যত একটি বৈদ্যুতিক তারে আঘাত করে এবং এটি বিস্ফোরিত হয়। তারা আরও জানায় যে এতে আতঙ্কের জন্ম দেয় এবং অনেক নারী ও শিশুসহ অন্যান্য মানুষ পদদলিত হতে শুরু হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে কয়েক ডজন মৃতদেহ, কিছু স্থির এবং অন্যরা চিৎকার করতে দেখায় যখন মানুষেরা সাহায্য করার চেষ্টা করেছিল। হুথি সদস্যদের প্রকাশ করা পৃথক ফুটেজে দেখা গেছে, রক্তের দাগ, জুতা ও নিহতদের পোশাক মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তদন্তকারীদের এলাকাটি পরীক্ষা করতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ট্রেনের ধাক্কায় শ্রমিক নিহত
হুথি নিয়ন্ত্রিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সানার কেন্দ্রস্থলে পুরাতন শহরে কয়েকশ’ দরিদ্র মানুষ ব্যবসায়ীদের আয়োজিত একটি দাতব্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে জড়ো হয়েছিল। আর্থিক সহায়তা বিতরণ রমজানের সময় একটি রীতি, যখন মুমিনরা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোজা রাখে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অর্থায়নে পরিচালিত একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ১০ ডলার করে নেওয়ার জন্য লোকজন জড়ো হয়েছিল। ধনী ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা প্রায়শই নগদ অর্থ ও খাবার বিতরণ করেন, বিশেষত রমজান মাসে দরিদ্রদের মধ্যে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার আব্দেল খালেক আল-আঘরি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় ছাড়াই 'এলোমেলোভাবে তহবিল বিতরণের' জন্য পদদলিতের ঘটনাকে দায়ী করেছেন।
বিদ্রোহীদের আল-মাসিরাহ স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের বরাত দিয়ে জ্যেষ্ঠ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোতাহের আল-মারুনি জানিয়েছেন, ৭৮ জন নিহত হয়েছেন। হাসপাতালের উপ-পরিচালক হামদান বাঘেরি জানিয়েছেন, অন্তত ৭৩ জন আহত হয়েছেন এবং তাদের সানার আল-থোরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে ট্রেনে কাটা পড়ে মা-মেয়েসহ নিহত ৪
ইয়েমেনে সর্বশেষ শান্তি পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ঢাকা
ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদ-রাব্বু মনসুর হাদির ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ।
সংকটকালীন সময়ের বাধ্যতামূলক কাজগুলো বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য রাশাদ আল-আলিমির নেতৃত্বাধীন প্রেসিডেন্সিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিলের কাছে তিনি এ ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংবিধান, উপসাগরীয় উদ্যোগ এবং এর নির্বাহী প্রক্রিয়া অনুযায়ী কাউন্সিলে প্রেসিডেন্টের পূর্ণ ক্ষমতা অর্পণের বিষয়ে অগ্রগতির প্রশংসা করেছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: ইয়েমেনের নির্বাসিত প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তর
ঢাকা আশা করছে ইয়েমেনের সংঘাতের অবসানে চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছাতে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার এই সুযোগটি গ্রহণ করবে অংশীজনরা।
ইয়েমেন ও এ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার সব প্রচেষ্টাকে সমর্থনে প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
ইয়েমেনের নির্বাসিত প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তর
ইয়েমেনের নির্বাসিত প্রেসিডেন্ট আবেদ রাব্বো মনসুর হাদি বৃহস্পতিবার দেশটির প্রেসিডেনশিয়াল কাউন্সিলে তার ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন।
সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধান কূটনৈতিক ব্যক্তিরা প্রেসিডেন্ট আবেদ রাব্বো মনসুর হাদির সিদ্ধান্তে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সিদ্ধান্তের পর দ্রুত তিন বিলিয়ন সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এটিকে স্বাগত জানিয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: গণবিক্ষোভের মুখে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের
যদিও নতুন কাউন্সিল প্রধানের সঙ্গে রিয়াদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
হাদির ঘোষণার বিষয়ে হুথিরা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
তবে দেশটির দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের অবসানে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক প্রচেষ্টা দুই মাসের যুদ্ধবিরতির সঙ্গে গতি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।