টেলিকম খাত
টেলিকম খাতকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে নতুন নীতিমালা: ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব
বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদ থেকে টেলিকম খাতকে মুক্ত করতেই অন্তর্বর্তী সরকার নতুন নীতিমালা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।
শনিবার (১২ জুলাই) রাজধানীর হলিডে ইন হোটেলে, টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ- টিআরএনবি আয়োজিত ‘টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক এবং লাইসেন্সিং নীতি সংস্কার’ বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রজন্মের দাবি পূরণে কানেক্টিভিটি থেকে জেনারেশন সার্ভিস ট্রান্সফরমেশনের জন্য নতুন পলিসি করা হচ্ছে। অনেক বেশি জঞ্জালের ওপর থেকে এই নীতিমালা করতে যাওয়ায় এটিকে অনেকটা বিবরণমূলক করতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেশের কল্যাণে কারো কারো স্বার্থে আঘাত আসতে পারে। কেননা, আমরা নেটওয়ার্কের জঞ্জাল ছেটে ফেলব।
ফয়েজ জানান, নীতিমালাকে সমৃদ্ধ করতে যৌক্তিক পরামর্শগুলো বিবেচনা করা হবে। একইসঙ্গে সরকারের ভালো উদ্যোগকেও স্বাগত জানানো উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, কোনো ঢালাও অভিযোগ নয়, আমি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে কথা বলব। অপারেটররা ৪০০ কোটি টাকা লভ্যাংশ করলেও তারা সন্তুষ্ট নন। আপনাদের দেশের স্বার্থ দেখা উচিত।
পড়ুন: নতুন টেলিকম নীতিমালায় স্বৈরাচার-মাফিয়াদের সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া হবে: তৈয়্যব
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, এই পলিসির উদ্দেশ্য হলো জেনারেশনাল ট্রান্সফরমেশন (প্রজন্মগত রূপান্তর) এবং আমরা এই রূপান্তর বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছি।
বিশেষ সহকারী আরও বলেন, পলিসিতে লাইসেন্সের সংখ্যা কতগুলো হবে—তা নির্ভর করবে লাইসেন্স অবলিগেশন অ্যান্ড কেপিআই পারফরমেন্সের উপর। তবে বিটিআরসি বেসরকারি গবেষণা সংস্থার মাধ্যমে জানতে পারে কি পরিমাণ লাইসেন্স লাগবে বা কি পরিমাণ লাইসেন্স থাকলে সর্বাধিক উপযোগী (অপটিমাল) হয়। তবে এই লাইসেন্স সংখ্যার নাম করে নতুন বিনিয়োগকারীদের বাধা দেওয়া যাবে না। তাছাড়া টোল কালেক্টর হিসেবে যে লাইসেন্সগুলো বিগত সরকারের সময় দেওয়া হয়েছিল সেগুলো কন্টিনিউ করা হবে না। বিদেশি কোম্পানির দেশীয় প্রতিনিধিদের দেশের বৃহত্তম স্বার্থ রক্ষায় কাজ করার আহ্বান জানান ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, ‘মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান বাড়াতে হবে। না হলে তারা গ্রাহক হারাবে। আমরা নেটওয়ার্ককে সংযোগ থেকে সেবাবান্ধব করতে চাই। পাশাপাশি লোয়ার ব্যান্ডের ফ্রিকোয়েন্সি অবমুক্ত করা এবং এক্সিটিং ইকোসিস্টেমকে রিফর্মের জন্য কাজ করছি ।
বিশেষ সহকারী জানান, নীতিমালাকে সমৃদ্ধ করতে যৌক্তিক পরামর্শগুলো বিবেচনা করা হবে। একইসঙ্গে সরকারের ভালো উদ্যোগকেও স্বাগত জানানো উচিত বলেও তিনি মনে করেন তিন। এক্সপ্রেক্ট্রাম প্রাইজকে রোলআউট কষ্ট হিসেবে পলিসিতে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও বলেন, এর আগে এতো ডেমোক্রেটিক উপায়ে কোনো পলিসি হয়নি। পলিসি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে সবার সঙ্গে কথা বলেছি। নতুন লাইসেন্স নিয়ে যারা আসবে তারা আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে কাজ করবে। লাইসেন্স লিমিটেড হবে না।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, টেলিকম হচ্ছে রিয়েল টাইম সার্ভিস, এটা হুট করে পরিবর্তন করলে সমস্যা হবে। তাই স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে সাসটেইনেবল পরিবর্তন করা হবে। দেশের মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের নিচে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। পলিসিতে মাইগ্রেশন প্ল্যান রয়েছে, তাই লাইসেন্স বাতিল নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই। কোনো লাইসেন্স বাদ হচ্ছে না, এজন্য স্টেক হোল্ডারদের কোলাবরেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্ব ) জহিরুল ইসলাম বলেন, এই পলিসিতে দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হবে।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন আইএসপিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, দেশের মানুষের মোট চাহিদা সাড়ে ৭ টেরাবাইট। এর ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ প্রয়োজন মেটায় আইএসপিরা। এজন্য ১৫ শতাংশ কর দিতে হয়। কিন্তু মোবাইল অপারেটরদের ৩৫ শতাংশ বাজার শেয়ার থাকলেও তাদের কর দিতে হচ্ছে না। এই বৈষম্য দূর করা দরকার।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সভায় মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন এমটবের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ জুলফিকার জানান, ডিজিটাল অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে টেলিকম অপারেটর। সাড়ে ৬ কোটি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী সংযুক্ত। তারপরও দেশের ৯ কোটির মতো মানুষ এখনো নেটওয়ার্কে সংযুক্ত নন। তারা কোনো ডিজিটাল সেবা পাচ্ছেন না। প্রতিবছরই বাড়ছে পরিচালনা ব্যয়। এমন পরিস্থিতিতে প্রস্তাবিত টেলিকম নীতিমালায় বিদেশি বিনিয়োগে শতাংশ বেধে স্থানীয় পর্যায় ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ ও লক্ষ্য পূরণে সময় বেধে দেওয়া রীতিমত ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।
টিআরএনবির সভাপতি সমীর কুমার দে -এর সভাপতিত্বে বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য দেনন টিআরএনবি'র সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন।
গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন এমটবের প্রেসিডেন্ট ও গ্রামীণফোন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান, বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইওহান বুসে, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল মাবুদ, বাংলালিংক, গ্রামীণফোন ও রবির চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার যথাক্রমে তাইমুর রহমান, তানভীর মোহাম্মদ ও সাহেদ আলম, বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, ফাইবার এট হোমের চিফ ইনিফরমেশন অফিসার সুমন আহমেদ সাবিরসহ টেলিযোগাযোগ খাতের কর্তা ব্যক্তিরা।
১৪৫ দিন আগে
টেলিকম খাতের বৃদ্ধির জন্য স্মার্ট ট্যাক্সেশন পলিসি জরুরি: প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী
আগামী ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য বিদ্যমান ট্যাক্সেশন পলিসি উন্নয়ন করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, ‘স্মার্ট ট্যাক্সেশন পলিসি ছাড়া আমাদের টেলিকম সেক্টরে কাঙ্ক্ষিত বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে।’
রবিবার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে টেলিকম খাতের কর পলিসি নিয়ে টিআরএনবি ও এমটব আয়োজিত ‘টেলিকম ট্যাক্সেশন ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
আরও পড়ুন: ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
পলক বলেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সরকার ব্যবস্থা, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সমাজ ব্যবস্থা গড়তে গেলে নীতিমালার উন্নয়ন করা দরকার।’
টেলিকম খাতের সংশ্লিষ্টরা এই খাতের বড় বাধা হিসেবে করপোরেট ট্যাক্স এবং অন্যান্য ট্যাক্স কমানোর প্রস্তাব করেন। জবাবে প্রতিমন্ত্রী পলক, যৌক্তিক পর্যায়ে যাতে করপোরেট ট্যাক্স থাকে সেটির জন্য এবং টেলিকম খাতের ট্যাক্সেশন নিয়ে অর্থমন্ত্রী ও এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান।
তিনি বলেন, এই সেক্টরে দেড় লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এখান থেকে প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকার ট্যাক্স পেয়েছিল। গত বছর গ্রামীণফোন ১২ হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স দিয়েছে। রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে টেলিকম সেক্টর। এটা কিন্তু আমরা অস্বীকার করছি না।
পলক বলেন, মানুষ এখন আর সরকারি অফিসে যেতে চায় না, এখন কেউ দোকানে গিয়েও শপিং করতে চায় না, এমনকি বাড়ির কাছে ব্যাংক বা সরকারি দপ্তরে যেতে চায় না। সবকিছু যেন তার হাতের মুঠোয়, একেবারে মোবাইল ফোনের ভিতর। মোবাইল ফোনই এখন সবকছিুর সোর্স। সংবাদ, বিনোদন, অফিস সবকিছুই।
টেলিকম প্রতিমন্ত্রী অপারেটরদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি একথা সব সময়ই বলি বিটিআরসি যেন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা থেকে উদ্ভাবনী সংস্থায় আবির্ভূত হয়। একইভাবে এখন আমাদের সময়ের দাবি যে এনবিআরকেও রাজস্ব আহরণের পাশাপাশি আরও নতুন নতুন রাজস্বের উৎস তৈরি করা একটা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে। এনবিআরকে একটা স্মার্ট প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে।
সেমিনারে টেলিকম খাতের ট্যাক্সেশন নিয়ে এই খাতের প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন এমটব মহাসচিব লে কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ জুলফিকার।
আরও পড়ুন: মে মাসের মধ্যে ৫০০টি ডাকঘরকে স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্টে রূপান্তর করা হবে: পলক
বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহজাহান মাহমুদ, এফআইসিসিআই’র নির্বাহী পরিচালক টিআইএম নুরুল কবির, গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান, রবি’র চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম, বাংলালিংকের ভারপ্রাপ্ত সিইও তৈমুর রহমান, টেলিকম বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির, টিআরএনবি সভাপতি রাশেদ মেহেদী ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিনসহ মোবাইল অপারেটরের কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।
৬০৬ দিন আগে
টেলিকম খাতকে লাভজনক অবস্থায় উত্তরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে: পলক
আগামী ৩০ জুনের মধ্যে টেলিকম খাতের সব লোকসানি কোম্পানিকে লাভজনক অবস্থায় উত্তরণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
রবিবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন দপ্তর ও সংস্থাসমূহের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মত বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি নির্দেশনা দেন।
আরও পড়ুন: দেশের প্রতিটি ডায়াবেটিস হাসপাতাল ইন্টারনেটের আওতায় আসবে: পলক
তিনি বলেন, টেলিকম খাতকে লাভজনক অবস্থায় উত্তরণে সংশ্লিষ্টদের ছয়টি আই (ইনটিগ্রিটি, ইনক্রিয়েস এফিশিয়েন্সি, ইমপ্রুভ প্রসেস অ্যান্ড পারফরমেন্স, ইনট্রেক উইথ রেগুলেটর্স, ইনভেস্টমেন্ট অ্যাট্রাকশন এবং আইটি অ্যান্ড আইটিস এক্সপোর্ট প্রমোশন) মেনে চলতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন চারটি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত-স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সোসাইটি। গত মেয়াদে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা তৈরি করেছি।
আরও পড়ুন: দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন: চতুর্থবারের মতো বিজয়ী পলক
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রায় ৪০টি প্রকল্প চিহ্নিত করেছি যেগুলো আমাদের যাত্রা শুরু করার জন্য বাস্তবায়ন করা দরকার। এই মেয়াদে আমাদের চ্যালেঞ্জ হলো আমরা দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির সঙ্গে চারটি স্তম্ভের অধীনে সমস্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম তা নিশ্চিত করা।
শক্তিশালী ডিজিটাল অবকাঠামো, সাশ্রয়ী মূল্যের ইন্টারনেট অ্যাক্সেস এবং আইসিটি সেক্টরের বিকাশের ধারাবাহিকতায় স্মার্ট বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: স্মার্ট জীবনযাত্রার জন্য নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ ও ডাকসেবা অপরিহার্য: পলক
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিষ্ঠা, কঠোর পরিশ্রম, সততা, সাহস ও উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা দিয়ে, চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করা সম্ভব।
পরে প্রতিমন্ত্রী এমটব, বাক্কো, আইএসপিএবির নেতা ও মোবাইল ফোন অপারেটরসমূহের সিইও সহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।
আরও পড়ুন: দেশের উন্নয়ন দর্শনের মূল কারিগর বঙ্গবন্ধু: পলক
৬৯০ দিন আগে
টেলিকম খাতের কর ব্যবস্থা ব্যবসা-বান্ধব করার আহ্বান
টেলিকম খাতের কর ব্যবস্থা ও ইকোসিস্টেম ব্যবসা-বান্ধব করার আহ্বান জানিয়েছে এই খাতের নীতি-নির্ধারক ও প্রতিনিধিরা। সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ খাত সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী কাজ করার পরামর্শ দেন তারা।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে এমটব (এসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের) ও বিআইজিএফ (বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভরনেন্স ফোরাম) আয়োজিত টেলিকম ট্যাক্স পলিসি ও ইকোসিস্টেম নিয়ে এক পলিসি ডায়লগে বক্তারা এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন বিআইজিএফের চেয়ারপার্সন ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমাদের তরুণরা এখন ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসা করছে। ডিজিটাল কানেক্টিভিটির অনেক সুবিধা রয়েছে। এ বিষয়ে আমি একমত যে উচ্চ কর দীর্ঘদিন ধরে একটি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি মনে করি, আমরা এনবিআর এর কাছে টেলিযোগাযোগ খাতে উচ্চ করের প্রভাবের বিষয়টি সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারিনি। আমাদের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে চিন্তা করতে হবে, যেখানে যৌক্তিক হারে কর নির্ধারণের দিকে নজর দেওয়া দরকার।’
অনুষ্ঠানে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘বাংলাদেশে টেলিকম খাতে কর খুব বেশি। এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের কোষাগারে অনেক অর্থ দিচ্ছে, তাহলে তাদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে কেন? ট্যাক্স কমানো হলে সরকারের কোন ক্ষতি নেই, কারণ এতে পরোক্ষভাবে সরকারের আয় বাড়ে। মোবাইল খাতে করপোরেট ও ন্যূনতম টার্নওভার কর কমিয়ে অন্যান্য শিল্প খাতের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করা উচিত।’
পলিসি ডায়ালগে টেলিকম করনীতি ও টেলিকম ইকোসিস্টেম নিয়ে দুইটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার শাহেদ আলম এবং এরিকসনের মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, শ্রীলংকার হেড অব নেটওয়ার্ক সল্যুশন এবং এরিকসন বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার আবদুস সালাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘টেলিকম খাতকে সামনে এগিয়ে নিতে আমাদের বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। আমি মনে করি, কিছু কর যৌক্তিক করা দরকার। ট্যাক্স সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধানের মাধ্যমে প্রান্তিক গ্রাহকদের সুবিধা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমি এনবিআরের সাথে আলোচনা করব।’
পড়ুন: ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডের প্রচারের আহ্বান বিজিএমইএ’র
বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, ‘দেশ বিদেশের সকল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান যেন সঠিকভাবে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা অনুসরণ করেই তাদের ব্যবসা করার সুযোগ করে দেয়া হয়। টেলিকম খাত শুধু সেবা প্রদানই নয়, দেশের প্রবৃদ্ধিতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। তাই তাদের প্রতি আমাদের ইতিবাচক মনোভাব সবসময়ই বজায় থাকবে। তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই আমরা বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি।’
রবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সিএফও এম. রিয়াজ রাশিদ বলেন, মার্কেটে যত বেশি প্লেয়ার থাকবে অপারেটরদের কাজের দক্ষতা তত বেশি কমবে। আর শেষ পর্যন্ত এর প্রভাব গিয়ে পড়বে গ্রাহকদের উপর কারণ এতে সেবা প্রদানের ব্যয় বেড়ে যায়। তিনি বিষয়টির উপর নজর দেয়ার জন্য নীতি নির্ধারকদের মনোযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন।
মূল প্রবন্ধে শাহেদ আলম বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশের সাথে তুলনা করলে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের মোবাইল খাতের কর তুলনামূলকভাবে বেশি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অপারেটরদের বিনিয়োগের বিপরীতে রিটার্ন সন্তোষজনক নয়। একদিকে অপারেটরদের গ্রাহকপ্রতি গড় আয় কম অন্যদিকে মোবাইল ভয়েস ও মোবাইল ইন্টারনেটের মূল্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে কম। আমরা আরও নতুন ধরনের সাশ্রয়ী সেবা প্রদান করতে চাই। কিন্তু সেবাদাতাদের যদি করের ভারে জর্জরিত করা হয় তাহলে তাদের টিকে থাকাই কঠিন হয়ে যায়। আমরা এই খাতে যৌক্তিক হারে করারোপের দাবি জানাই। আমাদের মনে রাখা দরকার যে দেশের ৪৫ শতাংশ লোক নেটওয়ার্ক থাকা সত্ত্বেও এখনও মোবাইল ব্যবহার করতে পারে না।’
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান, ‘সরকারের 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' রূপকল্প বাস্তবায়নে টেলিকম অপারেটররা প্রধানতম সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। করের ভার এবং অন্যান্য অনেক চ্যালেঞ্জে থাকা সত্ত্বেও আমরা কোটি কোটি গ্রাহকদের সেবা দিয়ে আসছি। আমরা সরকারের ভ্যাকসিন এবং বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার অংশীদার হতে পেরে গর্বিত। এখনও অনেক পথ যেতে হবে, কিন্তু আমরা জেনে খুশি যে সরকার লং ডিসট্যান্স টেলিকম নীতি নিয়ে কাজ করছে। আমাদের ডিজিটাল ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি এটি আমাদের আরও উৎকৃষ্ট সেবা দিতে সাহায্য করবে।’
গ্রামীণফোনের অ্যাক্টিং সিসিএও হোসেন সাদাত বলেন, ‘আমরা উচ্চ কর সমস্যা সমাধানের জন্য নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছি। আমাদের প্রতি বছর বিপুল বিনিয়োগ করতে হয়। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ এর লক্ষ্য অর্জনের জন্য, আমাদের খুব শিগগিরই টেলিকম খাতের ট্যাক্স ব্যবস্থার বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের অযৌক্তিক করের বৈষম্য দূর করতে হবে। ভালো ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে করের পরিমাণ কম হওয়া উচিৎ। তৃণমূল স্তরে ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির জন্য, আমাদের কর যৌক্তিকীকরণ করতে হবে।’
পড়ুন: ঈদে ২৩০০০ কোটি টাকার নতুন নোট ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক
১৩৩১ দিন আগে