যমুনা সেতু
যমুনা সেতুর রেলপথ অপসারণ কাজ শুরু, প্রশস্ত হবে সড়ক
যমুনা রেলসেতু চালু হওয়ার পর যমুনা সেতু থেকে পরিত্যক্ত রেলপথ অপসারণের কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) যমুনা সেতুর পূর্ব পাড় থেকে রেললাইন অপসারণের প্রাথমিক কাজ নাট-বল্টু খোলা শুরু করা হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) ও যমুনা রেলসেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, প্রায় ৩ মাস আগে ১৮ মার্চ যমুনা রেলসেতু চালু হওয়ার পর যমুনা সেতুতে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় ওই পরিত্যক্ত রেলপথটি অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। এজন্য সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ সেতুর উপরের পরিত্যক্ত ওই রেলপথের অপসারণ চেয়ে সেতু বিভাগে পৃথক দুটি চিঠি দেওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ৫ মে যমুনা সেতুর পরিত্যক্ত রেলপথ অপসারণ করে সড়ক বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
পড়ুন: যমুনা রেলসেতুর উদ্বোধন, ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলবে ট্রেন
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, যমুনা সেতুর পরিত্যক্ত রেলপথের প্রস্ত যেহেতু সাড়ে ৩ মিটার। পরিত্যক্ত ওই রেলপথ অপসারণের পর মূল সেতুর সঙ্গে সংযোগ করা হলে সেতুর প্রশস্ততা আরও সাড়ে ৩ মিটার বাড়বে। এতে উভয় লেনে ১ দশমিক ৭৫ মিটার জায়গা আরও বাড়বে। এ ধরনের সেতুর আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড হলো ৭ দশমিক ৩ মিটার। কিন্তু বর্তমানে যমুনা সেতুর প্রতি লেনের প্রশস্থতা রয়েছে ৬ দশমিক ৩ মিটার করে। এ কারণেই গাড়ির চাপ বাড়লে সেতুর ওপর দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে চালক ও যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হন। রেললাইন অপসারণের পর প্রতি লেনের প্রস্থ হবে ৮ মিটার।
তিনি বলেন, যেহেতু প্রকল্পের মাধ্যমে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে তাই এটি বাস্তবায়নে সময় লাগতে পারে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা সেতু উদ্বোধন করা হলে রেলপথ না থাকায় জনতার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ওই সেতুর ওপর উত্তরপাশে তৈরি করা হয় রেলসেতু নিরাপত্তার জন্য লাগানো হয় লোহার অ্যাঙ্গেল। সেতু উদ্বোধনের প্রায় ৫ বছর ২ মাস পর ২০০৪ সালের ১৫ আগস্ট যমুনা সেতুতে আনুষ্ঠানিকভাবে রেল চলাচল শুরু হয়। ট্রেন চলার কারণে ২০০৬ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দিলে ট্রেন চলাচলের গতিসীমা কমিয়ে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার করা হলে সেতু পার হতে একটি ট্রেনের সময় লাগতো ২২ মিনিট। এ কারণে সেতুর দুই প্রান্তের ট্রেনগুলোর জট বেঁধে যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হতো।
এই সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা সেতুর উজানে আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ওই বছরের ২৯ নভেম্বর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করা হয়। এরপর ২০২১ সালের মার্চ মাসে নির্মাণ কাজ শুরু করে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় দেশের দীর্ঘতম এই রেলসেতুটি।
প্রথমবারের মতো চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি যাত্রী নিয়ে এ রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল শুরু করা হলে যমুনা সেতুতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দেশের বৃহত্তম এই রেলসেতুটি ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় এবং পরিত্যক্ত রেলপথ অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
১৬০ দিন আগে
যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা টোল আদায়
স্বজনদের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করতে কর্মস্থল থেকে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ উৎসবমুখর হয়ে বাড়ি ফিরছে। এজন্য উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার যমুনা সেতুতে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি যানবাহন পারাপার হচ্ছে।
যমুনা সেতু দিয়ে শনিবার (২৯ মার্চ) সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ হাজারের বেশি যানবাহন পারাপার হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তুপক্ষ। এতে উভয় টোল প্লাজায় মোট টোল আদায় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। কর্তৃপক্ষ ভাষ্য অনুযায়ী, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এটাই সর্বোচ্চ টোল আদায়ের পরিমাণ।
টোল আদায়ের তথ্য দিয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী লেনে ৩০ হাজার ৩৯৮টি যানবাহন থেকে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯০ লাখ ৯৮ হাজার ৫৫০ টাকা। অপরদিকে, উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী লেনে ১৭ হাজার ৯৩৭টি যানবাহন থেকে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫০ টাকা টোল আদায় হয়েছে।
যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল জানান, স্বাভাবিক সময়ে এই সেতু দিয়ে দিনে ১০ থেকে ১৬ হাজার পর্যন্ত যানবাহন চলাচল করে। তবে ঈদ উপলক্ষে তা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
তিনি জানান, ঈদ উপলক্ষে যানবাহন চলাচল বেড়ে যাওয়ায় সেতুর টোল আদায়ে উভয় টোলা প্লাজায় বুথের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এতদিন প্রত্যেক প্রান্তে ৬টি বুথে টোল আদায় করা হতো, এখন উভয়প্রান্তে ৯টি করে মোট ১৮টি বুথে আদায় করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: উদ্বোধনের পর থেকে পদ্মা সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ১৫০০ কোটি টাকা
সেইসঙ্গে উভয়পাড়ের টোলপ্লাজা এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এই কর্মকর্তা আরও জানান, গত বছর কোরবানির ঈদে যমুনা সেতু দিয়ে ৫১ হাজার ৮৯১টি যানবাহন পারাপারে টোল আদায় হয়েছিল রেকর্ড ৩ কোটি ৬৫ লাখ ৩১ হাজার ৪৫০ টাকা, যা যমুনা সেতুর ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তবে এবার সেই রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে।
যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ইতোমধ্যে মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে। মহাসড়কের কোথাও এখনও তেমন যানজট পরিলক্ষিত হয়নি।’ মহাসড়কজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানান তিনি।
২৫১ দিন আগে
পদ্মা সেতু দীর্ঘ করতে নতুন করে ডিজাইন করতে হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
পদ্মা সেতু দীর্ঘ করতে নতুন করে ডিজাইন করতে হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মার বৈশিষ্ট্য মাথায় রেখে দৈর্ঘ্য বাড়াতে ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর নকশা নতুন করে করতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্ভাব্যতা প্রতিবেদনে সেতু প্রকল্পের বিভিন্ন স্থানে নদীর গভীরতার পার্থক্য পাওয়ায় তিনি সেতুটি নতুন করে করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সু-সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
রবিবার ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিলের প্রথম বৈঠকে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি কোনো ফাঁক রাখতে দেইনি। যদিও এটি সময় নিয়েছে, আমি নকশা পরিবর্তন করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের প্রতিটি বর্ষা মৌসুমে যমুনা ও পদ্মাসহ নদীর প্রবাহ ও তলদেশের মাটির পরিবর্তন হয়। যেহেতু বাংলাদেশের পরিস্থিতি অন্যান্য দেশের মতো নয়, তাই এই পার্থক্য মাথায় রেখে সঠিকভাবে পরিকল্পনা নিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি পদ্মা সেতুকে ছোট করতে দেইনি। আমরা নদীর সঙ্গে বাফার জোন রেখে সেতু নির্মাণ করেছি। যার কারেণে সেতুটি দেশের দীর্ঘতম সেতু হয়ে উঠেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, যারা বঙ্গবন্ধু সেতুর (যমুনা সেতু) বর্তমান দৈর্ঘ্যের নকশা করেছেন তাদের ভুল ছিল। যেহেতু এর নকশা ও পরিকল্পনা আগে করা হয়েছিল, তাই সেখানে আমাদের আর কিছু করার ছিল না। আমি এতে শুধুমাত্র রেললাইন অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছি।’
এসময় কৃষিমন্ত্রী মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সরাসরি বেগম জিয়াকে ‘হত্যার হুমকি’র শামিল: ফখরুল
১২৯৩ দিন আগে