মৌসুমি বৃষ্টিপাত
টানা বর্ষণে পাকিস্তানজুড়ে বন্যা, নিহত বেড়ে ১৮০
পাকিস্তানে তীব্র মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮০-তে পৌঁছেছে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়েছে, গত বছরের তুলনায় পাকিস্তানে এবার মৌসুমি বৃষ্টিপাত ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এ বছর জুলাইয়ের শুরুতেই টানা বর্ষণ শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় দেশজুড়ে প্রাণহানি ও দুর্যোগের আশঙ্কা বাড়ছে। আগামী দিনগুলোতেও আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা।
শনিবার (১৯ জুলাই) পাকিস্তানের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিন্ধ প্রদেশের করাচি, হায়দরাবাদ, সুক্কুর, থাটা, বাদিন, লারকানা, জ্যাকবাবাদ, নবাবশাহ, মিরপুরখাসসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ভারি বৃষ্টি, দমকা হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে।
এদিকে, দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) জাতীয় জরুরি কার্যক্রম কেন্দ্র (এনইওসি) জানিয়েছে, সিন্ধ প্রদেশের নিম্নাঞ্চলগুলোতে প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টির সময় ওইসব অঞ্চলের বাসিন্দাদের ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জলাবদ্ধতা রোধে ড্রেন পরিষ্কার রাখার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
পাঞ্জাব প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) জানিয়েছে, আজ (রবিবার) থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত প্রদেশের বেশিরভাগ জেলায় চতুর্থ দফার বর্ষণ শুরু হবে।
এর মধ্যে রাওয়ালপিন্ডি, মুর্রি, গালিয়াত, আটক, চকওয়াল, মান্ডি বাহাউদ্দিন, হাফিজাবাদ, গুজরাট, ঝেলম ও গুজরানওয়ালায় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। সেই সঙ্গে লাহোর, ফয়সালাবাদ, শিয়ালকোট, নারোয়াল, টোবা টেক সিং, ঝাং, সারগোধা, মিয়ানওয়ালি, মুলতান, ডেরা গাজি খান, বাহাওয়ালপুর ও বাহাওয়ালনগরেও ১৮ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া ২২ জুলাই থেকে পাঞ্জাবের সব বড় নদী ও নদী-সংলগ্ন খালগুলোতে বন্যার আশঙ্কায় উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে পিডিএমএ। এ ছাড়াও চেনাব, ঝেলম, রাভি, সুফ্লজ ও সিন্ধু নদীসহ উপনদীগুলোতে পানিপ্রবাহ বাড়বে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস বিভাগ।
আরও পড়ুন: টেক্সাসে বন্যায় নিহত বেড়ে ৮২, দশ কিশোরীসহ নিখোঁজ বহু
খাইবার পাখতুনখাওয়ায় বর্ষণ ও হিমবাহ গলার কারণে কাবুল, সোয়াত, পাঞ্জকোরা, বারা ও কালপানি নালায় আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। ইসলামাবাদ ও মধ্য পাঞ্জাবেও ২৪ জুলাই পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে, যা নগর বন্যার ঝুঁকি বাড়াবে।
এদিকে, টানা বৃষ্টিতে রাওয়াল বাঁধে পানির উচ্চতা বেড়ে গিয়ে শনিবার সকালে এটি ১ হাজার ৭৪৮ ফুটে পৌঁছায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় সেচ কপাট খুলে দিয়ে পানির স্তর ১ হাজার ৭৪৬ ফুটে নামিয়ে আনা হয়। এ সময় আশপাশের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়।
বর্ষণ বেড়েছে ৬০ শতাংশ, দায় জলবায়ু পরিবর্তনের
এনডিএমএ চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইনাম হায়দার মালিক জানিয়েছেন, এ বছর যে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যে এক মাস আগেই বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে, সেই পূর্বাভাস তারা চার মাস আগেই দিয়েছিলেন। এবারের মৌসুমি বৃষ্টির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন: ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪ স্থানে ভাঙন, ৩০ গ্রাম প্লাবিত
পিটিভি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সামগ্রিক দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এতে সেনাবাহিনী, প্রাদেশিক সংস্থা, এনজিও ও শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ যৌথভাবে কাজ করছে।’
জলবায়ু পরিবর্তন ও হিমবাহ দ্রুত গলার কারণেই এ বছর বৃষ্টি ও দুর্যোগের মাত্রা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
১৩৮ দিন আগে
ঢাকার বাতাসের মান এখন ‘মধ্যম’
দেশের বিভিন্ন স্থানে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে ঢাকার বাতাসের মানের উন্নতি হয়েছে। ঢাকার বাতাসের মান এখন 'অস্বাস্থ্যকর' থেকে 'মধ্যম' বিভাগে উন্নত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ৯৯ রেকর্ড করা হয়েছে। বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা অষ্টম স্থানে রয়েছে।
৫১ থেকে ১০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোর 'স্বাভাবিক' বলা হয়, তবে কিছু মানুষের জন্য 'ঝুঁকিপূর্ণ' বলে বিবেচিত হয়, বিশেষ করে যারা বায়ু দূষণের প্রতি অস্বাভাবিকভাবে সংবেদনশীল।
ভারতের দিল্লি ও আফ্রিকার জোহানেসবার্গ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও পাকিস্তানের লাহোর যথাক্রমে একিউআই ৪৩২, ১৫৬, ১৫২ ও ১৪০ স্কোর নিয়ে প্রথম চারটি স্থান দখল করেছে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মানের উন্নতি
বিশেষ করে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ২০০ হলে 'খারাপ' বলে মনে করা হয়।
একইভাবে, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোর 'খারাপ' বলা হয়, যেখানে ৩০১ থেকে ৪০০ এর স্কোর 'ঝুঁকিরপূর্ণ' বলে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোনো ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মান এখনও ‘অস্বাস্থ্যকর’
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হল, ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে।
১২৭৭ দিন আগে