বিশ্ব শরণার্থী দিবস
শরণার্থীদের বোঝা সবচেয়ে বেশি বহন করতে হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর: গুতেরেস
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘উন্নয়নশীল দেশগুলোকেই অধিকাংশ সময় শরণার্থীদের বোঝা বহন করতে হচ্ছে। এটি মোটেও উচিত নয় এবং বিষয়টি টেকসইও নয়।’
শুক্রবার (২০ জুন) বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গত আট বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে আসছে, যারা মিয়ানমারে সামরিক শাসনের কারণে দেশ ছেড়ে পালিয়ে এসেছে।
গুতেরেস বলেন, ‘বিশ্ব যখন ব্যর্থ, তখনও শরণার্থীরা অসাধারণ সাহস, সহনশীলতা ও দৃঢ়তা দেখিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, সুযোগ পেলে তারাও অর্থনীতিকে শক্তিশালী, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি ও সামাজিক বন্ধনকে দৃঢ় করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
বিশ্ব শরণার্থী দিবসে সংহতির বিষয়টি কেবল কথায় সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এর অর্থ হবে মানবিক ও উন্নয়ন সহায়তা বৃদ্ধি, নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের মতো স্থায়ী সমাধানের সম্প্রসারণ এবং আশ্রয়প্রার্থীর অধিকার রক্ষা, যা আন্তর্জাতিক আইনের অন্যতম ভিত্তি।’
‘এ ছাড়াও শরণার্থীদের কথা শোনা ও নিজেদের ভবিষ্যৎ গঠনে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা উচিত। আর এর মানে হচ্ছে শিক্ষার সুযোগ, মর্যাদাপূর্ণ কাজ ও সমান অধিকার নিশ্চিত করে দীর্ঘমেয়াদি সংস্থানে বিনিয়োগ।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদারের দাবি তারেক রহমানের
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘কেউই শরণার্থী হতে চায় না। তবে আমরা কীভাবে সাড়া দেব, সেটি আমাদের সিদ্ধান্ত। তাই আসুন আমরা সংহতির পক্ষে দাঁড়াই। সাহসের পক্ষে দাঁড়াই। মানবতার পক্ষে দাঁড়াই।’
গুতেরেস বলেন, যুদ্ধ, নিপীড়ন ও দুর্যোগের কারণে শরণার্থী হওয়া লাখো মানুষের প্রতি তারা সম্মান জানাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক শরণার্থীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে একেকটি গভীর বেদনার গল্প—উচ্ছেদ হওয়া পরিবার ও ভেঙে যাওয়া ভবিষ্যতের গল্প।’
অনেকেই সীমান্তে বন্ধ দরজা ও বর্ণবিদ্বেষের মতো সমস্যার শিকার হচ্ছেন উল্লেখ করে জাতিসংঘ আরও মহাসচিব বলেন, ‘সুদান থেকে ইউক্রেন, হাইতি থেকে মিয়ানমার—বেঁচে থাকার জন্য পালিয়ে বেড়ানো মানুষের সংখ্যা এখন রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে, অথচ সহায়তা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে।’
১৬৮ দিন আগে
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আহ্বান জানিয়েছে দাতা সংস্থাগুলো
বিশ্ব শরণার্থী দিবসে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও অন্যান্য দেশসহ দাতা সংস্থাগুলো।
এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘আমরা সংঘাত, সহিংসতা ও নিপীড়নের কারণে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়া ১২ কোটি মানুষ, অর্থাৎ বিশ্বের প্রতি ৬৯ জনের মধ্যে ১ জনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি। এদের মধ্যে রয়েছে ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা, যারা মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।’
রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনের সময় সমর্থন দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানায় দাতাসংস্থাগুলো।
আরও পড়ুন: শরণার্থীদের পুনর্বাসনে পৃষ্ঠপোষক দেশগুলোর সহায়তা প্রয়োজন: জাতিসংঘ মহাসচিব
প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা জনগণের অবিশ্বাস্য স্থিতিশীলতা ও আত্মবিশ্বাস সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করে দাতা সংস্থাগুলো।
দাতাসংস্থাগুলোর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাংলাদেশের স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা দিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। উদীয়মান নতুন সংকট এবং ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক মানবিক চাহিদার মাঝে এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের জন্য বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।
শরণার্থী শিবিরগুলোতে শিক্ষা ও জীবিকার সুযোগ বাড়ানো, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দারিদ্র্য এবং সেই চক্র কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় আত্মনির্ভরশীলতা তৈরি করতে পারে।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য তাদের স্বেচ্ছায় নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে আশা প্রকাশ করে তারা।
দাতা দেশগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘মিয়ানমারে ক্রমবর্ধমান সংঘাত এবং মানবিক অবস্থার অবনতির অর্থ হলো, এটি নিকট ভবিষ্যতে অসম্ভব। আমরা রাখাইন রাজ্যের ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি এবং সীমান্তের ক্রসবর্ডারে এর প্রভাব নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা সব নাগরিকের সুরক্ষার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করছি।’
এর আগে ২০২৩ সালে ডিসেম্বরে গ্লোবাল রিফিউজি ফোরামে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির জটিলতা মোকাবিলার জন্য বৈশ্বিক দায়িত্ব এবং অংশীদারিত্ব বাড়াতে একটি যৌথ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি যুক্তরাষ্ট্রের
দাতাসংস্থাগুলো জানায়, বাংলাদেশে অবস্থানকালে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি উন্নত এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য টেকসই সমাধানের দিকে আঞ্চলিক সমন্বয় এবং যৌথ প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে চান তারা।
এই গণমাধ্যম বিবৃতিটি ইউরোপীয় ইউনিয়নও তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করেছে। অন্যান্য দাতা দেশগুলো হলো- যুক্তরাজ্য, জাপান, জার্মানি, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক, স্পেন, সুইডেন, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে ও ইতালি।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের সহায়তা অব্যাহত রাখতে অংশীদার ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: রাষ্ট্রদূত প্রেসকট
৫৩৩ দিন আগে
অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘আমরা রোহিঙ্গা’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে ‘আমরা রোহিঙ্গা’ শীর্ষক একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী সোমবার উদ্বোধন করা হবে।
ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অস্থায়ী প্রদর্শনী হলে সকাল ১১টায় প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করা হবে।
বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে, এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে ১০ জন রোহিঙ্গার কাজ উপস্থাপন করা হয়েছে যারা কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী মানুষদের জীবন চিত্র তুলে ধরেছেন।
আরও পড়ুন: ১৯ দফা দাবিতে রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভ
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর থেকে ডেভিড পালাজন ও আমেনা খাতুনের করা কিউরেটে ডিসপ্লেটিতে ৫০টি ফটোগ্রাফ রয়েছে যা মিয়ানমারের সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের সংস্কৃতি, পরিচয়, আশা ও স্বপ্নকে তুলে ধরে।
প্রদর্শনীতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সংরক্ষণাগার থেকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ১১টি আলোকচিত্রও রয়েছে যা বাংলাদেশি নাগরিকদের জীবন ও গল্প তুলে ধরে।
ইউএনএইচসিআর বলছে,এই প্রদর্শনীটি দেখায় কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের সময় উৎখাত হওয়া লাখ লাখ বাংলাদেশি তাদের অবস্থান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের প্রতি সাহায্য প্রসারিত করেছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
১২৬৫ দিন আগে