মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী
‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার আহ্বান ফখরুলের, সংস্কারে ঐকমত্যকে স্বাগত
১২ দফা মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যকে ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবিলম্বে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পথ সুগম করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ভালো কিছু ঘটছে। আমি আজ (মঙ্গলবার) পত্রিকায় দেখেছি, সব রাজনৈতিক দল ১২ দফা সংস্কার প্রস্তাবে একমত হয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।’
তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ ও তার দলের কঠোর পরিশ্রমের জন্য প্রশংসা করেন, যারা সংস্কার ইস্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে কাছাকাছি আনতে কাজ করেছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই—সংস্কারগুলো বিলম্ব না করে সম্পন্ন করুন এবং অবিলম্বে (জুলাই জাতীয়) সনদ ঘোষণা করুন। দয়া করে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যে তারিখে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সেই অনুযায়ী নির্বাচন দিন। জাতি সেখানে আশার আলো দেখেছে, অনুপ্রেরণা পেয়েছে। জনগণকে তাদের ভোটাধিকারসহ অন্যান্য অধিকার ফিরিয়ে দিন।’
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শফিউল বারী বাবু স্মৃতি সংসদ এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, অনেকে বিএনপিকে সমালোচনা করে বলেন, দলটি নাকি সংস্কার চায় না। ‘কিন্তু সংস্কারের ধারণা আমাদের কাছ থেকেই এসেছে—আমরাই এটা শুরু করেছি।’
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাকশালের একদলীয় শাসনব্যবস্থা বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেন এবং গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন, যা ছিল তার রাজনৈতিক সংস্কারের অংশ।
অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসেবে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান রুদ্ধ ও ব্যর্থ অর্থনৈতিক মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেন, যার ফলে মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও প্রবর্তন করেন এবং নারী ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়ন করেন।
‘তাই বিএনপি কখনো সংস্কারকে ভয় পায়নি—আমরা সবসময় সংস্কারকে স্বাগত জানিয়েছি,’ বলেন ফখরুল।
১২টি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ঐকমত্য গঠনে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে কিছু প্রস্তাব নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে, যেমন—আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি। এটি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে অপরিচিত।’
আরও পড়ুন: জনগণের জীবনমান উন্নয়নে রাষ্ট্র সংস্কারের আহ্বান ফখরুলের
তিনি বলেন, ‘সংসদের নিম্নকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মতো প্রস্তাব এসেছে—যা আমাদের জনগণ বোঝে না। তারা এখনো ইভিএম ভোটিং নিয়ে বিভ্রান্ত—তাহলে পিআর পদ্ধতি কীভাবে বুঝবে?’
কিছু রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার শর্ত দেওয়ায় ফখরুল সমালোচনা করে বলেন, ‘এই ধরনের বিভ্রান্তিকর ধারণা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। জনগণকে এমন একটি ভোটিং ব্যবস্থা দিতে হবে, যা তারা বোঝে এবং যা তাদের যথার্থ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিদেশি ধারণা দিয়ে দেশের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত নয়।
১২৯ দিন আগে
ফখরুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে: ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান রবিবার (২৯ অক্টোবর) বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তাকে (ফখরুল) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য (তার বাসা থেকে) নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে কিছু পেলে পরে আমরা (গণমাধ্যমকে) জানাব।’
রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে নিহত পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের নামাজে জানাজা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপি প্রধান এ মন্তব্য করেন।
শনিবার রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় হামলায় আমিরুল নিহত হন।
হাবিবুর রহমান বলেন, শনিবার সহিংসতায় পুলিশের ১১৩ সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তাদের অনেকের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। আমরা কিছুক্ষণ আগে খবর পেয়েছি যে আরেক পুলিশ সদস্যের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। আপনারা (সাংবাদিকরা) জানেন কী ঘটেছে, তা আপনারা সরাসরি দেখেছেন। এই জিনিসগুলো (হামলা) একটি আনুষ্ঠানিক সমাবেশ থেকে করা হয়েছিল।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, সহিংসতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার সঙ্গে অনেকেই জড়িত থাকতে পারে। ‘সুতরাং, আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনেক লোককে খুঁজছি।’
আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশের জন্য ডিএমপির অনুমতি চেয়েছে বিএনপি
তিনি বলেন, সহিংসতার বিষয়ে তাদের তদন্ত চলছে। ‘তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হলে প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা আরও লোককে গ্রেপ্তার করব।’
এর আগে ফখরুলকে গুলশানের বাসা থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
বিএনপির মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপির হরতালের মধ্যেই ফখরুলের গুলশান-২-এর বাসায় গোয়েন্দারা অভিযান চালিয়ে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে তাকে আটক করে।
পরে তাকে ডিবির মিন্টো রোড কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন।
শনিবার নয়াপল্টনে দলের মহাসমাবেশে সহিংসতার প্রতিবাদে বিরোধী দল বিএনপি রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশব্যাপী হরতাল ডেকেছিল বলে আটক করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবলসহ অন্তত দুইজন নিহত এবং কয়েক শতাধিক আহত হওয়ার পর হঠাৎ সমাবেশ স্থগিত করে ফখরুল হরতাল ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশে কেউ সহিংসতার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে পুলিশ : ডিএমপি কমিশনার
অনুমতি ছাড়া ঢাকায় সমাবেশ করা যাবে না: ডিএমপির নতুন কমিশনার
৭৬৮ দিন আগে
অন্যের সহায়তায় যারা ক্ষমতায় আছে তারা বাংলাদেশকে শাসন করতে পারে না: ফখরুল
শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য ভারতের ‘সমর্থন’ চাওয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নিন্দা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা অন্যের দয়ায় ক্ষমতায় থাকে তাদের বাংলাদেশকে শাসন করার অধিকার নেই।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না এবং তারা একের পর এক তার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ যখন নিজেদের স্বাধীন (জাতি) হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে, তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সরকারকে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে সাহায্য করতে বলেন।’
লোডশেডিং, জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও রাজনৈতিক দমননীতির প্রতিবাদে শনিবার ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউটিএবি)-আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে দেয়া বক্তব্যে ফখরুল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের মন্তব্যে প্রতীয়মান হয়েছে যে আওয়ামী লীগ সরকার ভারত সরকারের মদদে ক্ষমতায় এসেছে।
আরও পড়ুন: ভারতের ‘সমর্থন চাওয়া’ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যা চায় বিএনপি
তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তার অবস্থান থেকে সরে আসেননি এবং তিনি আগে যা বলেছিলেন পুনরায় তা নিশ্চিত করেছেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সুতরাং আমাদের পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, যারা অন্যের দয়ায় ক্ষমতায় থাকে তাদের এই দেশ শাসন করার অধিকার নেই। তাদের এদেশের সরকার চালানোর কোনো অধিকার নেই।’
এর আগে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাতে ক্ষমতায় থাকতে পারেন তার জন্য তিনি ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ তুলে ফখরুল বলেন, এই সরকার দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় দেশ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। ‘এটাই আমাদের সমস্ত সংকটের মূল কারণ। আওয়ামী লীগ বিনা ভোটে এবং নির্বাচিত না হয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে বলপ্রয়োগ করে ক্ষমতায় টিকে আছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশকে ধ্বংসকারী এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে অপসারণ করে সত্যিকারের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করা এখন আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।’
আরও পড়ুন: বাম জোটের হরতালে বিএনপির সমর্থন
জ্বালানি সংকটের পেছনে রয়েছে দুর্নীতি, লুটপাট, আত্মঘাতী চুক্তি: বিএনপি
১২০৩ দিন আগে