১০০ জন
হাসনাতের ওপর হামলায় ঘটনায় ১০০ জনের নামে মামলা
গাজীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ১০০ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (৫ মে) সন্ধ্যায় এনসিপির সদর থানার আহ্বায়ক খন্দকার আল আমিন বাদী হয়ে বাসন থানায় এ মামলা করেন।
এ ঘটনায় সোমবার সকাল পর্যন্ত ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গাজীপুর মহানগর ও জেলার এনসিপি নেতারা বাসন থানায় উপস্থিত হয়ে সংগঠনের দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনায় মামলার এজাহার করেন।
পরে সন্ধ্যায় ১০০ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন খান।
মামলায় বলা হয়, রবিবার (৪ মে) সন্ধ্যায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলা হয়। গাড়ির কাঁচ ভেঙে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনায় আটক ২
গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনায় দায়ীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাতভর চান্দনা চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ।’
‘এ সময় ৫৪ জনকে আটক করা হয়। এই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তারা সবাই আওয়ামী ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী বলে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে।’
রবিবার রাতভর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ তাদের আটক করে। সন্ধ্যার পর হাসনাত আবদুল্লাহর ওপর হামলার পর থেকেই জিএমপির থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান চালায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে দুজনকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন—গাজীপুর মহানগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা মো. নিজাম উদ্দিন ও কাশিমপুর থানা শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের সভাপতি মাসুম আহমদ দিপু। এছাড়া অন্যদের পরিচয় নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
গাড়ির চালকের ভাষ্য মতে, পেছন থেকে মোটরসাইকেলে দুর্বৃত্ত এসে গাড়িতে হামলা করে। হামলায় গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়। আব্দুল্লাহ দ্রুত আশ্রয় নেন আইইউটিতে। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে পুলিশি নিরাপত্তায় ঢাকায় যান তিনি। এরপর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক অভিযান শুরু হয়।
২১৪ দিন আগে
দেশে প্রতিদিন যক্ষায় ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা যায়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
গত ১০ বছরে যক্ষায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অর্ধেকে নেমেছে। তবে এখনও যক্ষায় দিনে ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, ১০ বছর আগে দেশে বছরে ৮০ হাজার লোক মারা যেত। এখন বছরে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ যক্ষায় মারা যাচ্ছে।
বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত কমিউনিটি, রাইটস অ্যান্ড জেন্ডার অ্যাকশন প্ল্যান ফর টিবি (২০২১-২৩) শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যক্ষা হলে রক্ষা নেই, এটি এখন টোটালি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। যক্ষায় সচেতন থাকলে ও নিয়ম করে ওষুধ সেবন করলে ৯৭ ভাগ যক্ষা রোগী এখন সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। তবে, স্বাস্থ্যখাতের এই উন্নয়নের সময়েও বছরে ৪০ হাজার যক্ষা আক্রান্ত মানুষের মৃত্যু কোনো ভালো খবর নয়। এর মানে যক্ষায় দিনে ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। করোনায় দিনে ৫০ জন মানুষ মারা গেলে আমরা কত উদ্বিগ্ন থাকি। এখন করোনায় ১/২ জনও মারা যায় না, তবুও আমরা চিন্তায় থাকি। অথচ যক্ষায় দিনে ১০০ জন, ক্যান্সার ও হার্ট এটাকে দিনে প্রায় আড়াই'শ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। এই সংখ্যা শূন্যের কাছাকাছি নামিয়ে আনতে স্বাস্থ্যখাতের পাশাপাশি আমাদের সকল মন্ত্রণালয় মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন:শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই টিকা পাবে শিশুরা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জাহিদ মালেক এ সময় বলেন, বিশ্বে ১৩তম মৃত্যুর কারণ টিবি। পৃথিবীতে এখন প্রায় এক কোটি লোক টিবিতে আক্রান্ত। প্রতিবছর প্রায় ১৫ লাখ লোক মারা যায়। আর দেশে প্রতিবছর ৪০ হাজারের মতো মানুষ মারা যায়, তিন লাখ আক্রান্ত হয়। এই সংখ্যা অনেক।
তিনি বলেন, আমরা অনেক রোগ বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণ করেছি। আমরা দেশকে পোলিওমুক্ত করেছি। কলেরা, ডায়রিয়া দূর করতে পেরেছি। দেশ টিটেনাসমুক্ত হয়েছে। টিবি নিয়ন্ত্রণেও যথেষ্ট কাজ করছি। আমাদেরকে এখন সংক্রামক রোগের পাশাপাশি অসংক্রামক রোগ নিয়েও কাজ করতে হচ্ছে। দেশে ক্যান্সার, কিডনিতে অসংখ্য লোক মারা যাচ্ছে। এগুলো নিয়েও আমরা কাজ করছি।
মন্ত্রী বলেন, টিবিকে আমরা নির্ণয় করতে পারছি এটি বড় পজিটিভ বিষয়। কারণ, আপনি যদি নির্ণয় করতে পারেন, তাহলে এর চিকিৎসাও আছে। এ কারণেই টিবিতে মৃত্যুর হার কমে আসছে। যক্ষ্মায় এখন ৯৫ থেকে ৯৭ শতাংশ লোক সুস্থ হয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীতে যতগুলো দেশ আছে, এরমধ্যে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের তালিকায় বাংলাদেশ ৭ নম্বরে আছে। সেটি কিন্তু অনেক বেশি। আমরা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন করে যাচ্ছি।
আরও পড়ুন:পর্যায়ক্রমে সারাদেশের স্কুলগুলোতে শিশুদের টিকা দেয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
যক্ষা রোগ নিয়ে কিছুটা আশঙ্কা প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যারা টিবি আক্রান্ত হয়ে মাঝপথে চিকিৎসা ছেড়ে দিচ্ছেন, তারা আরও জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এদিকে, অসংখ্য রোগী ডিটেকশনের বাইরে থেকে যাচ্ছেন, তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন না। এমনকি তাদের কারণে সমাজে রোগটি ছড়িয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদেরকে অবশ্যই ডিটেকশনে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। শনাক্তের সংখ্যা বাড়াতে হবে। নয়তো আরও বিপদজনক অবস্থা তৈরি হবে।
সতর্কতায় গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, টিবি আক্রান্ত রোগী যে পাত্রে খাওয়া দাওয়া করে, সেগুলো আলাদা করা এবং চিকিৎসাটা যেন নিয়মিত হয়, রোগী যেন ঠিকঠাক ওষুধ খায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, টিবি রোগটা মূলত ঘিঞ্জি পরিবেশে বেশি হয়। যেসব এলাকায় লোকজন বেশি বাস করে, বিশেষ করে গার্মেন্টস এলাকায় টিবির হার বেশি। একজনের হলে সেটি অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে যায়। কারণ, একসঙ্গে তারা অসংখ্য লোক বসবাস করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, বর্তমানে প্রতি বছরে ৫০ হাজারেরও বেশি রোগী মারা যায়। তিন লাখ বা তার বেশি রোগী প্রতিবছর যুক্ত হচ্ছে। নতুন করে যুক্ত হওয়াটা কমানো না গেলে টিবি নিয়ন্ত্রণে সরকারের যে লক্ষ্য, সেটি বাস্তবায়ন হবে না।
স্বাস্থ্য সচিব বলেন, টিবি রোগটি বিশেষ করে বর্ডার এলাকায় বেশি। কক্সবাজারে মিয়ানমার থেকে আসাদের মাধ্যমে ওই এলাকায় বেশি ছড়াচ্ছে। সরকার এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কাজ করছে। এই রোগের চিকিৎসায় টাইমিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মমাফিক ওষুধ খেতে হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, অধিদপ্তরের পরিচালক ও টিবি-ল্যাপ্রোসি অপারেশন প্ল্যানের লাইন ডিরেক্টর ডা. খুরশিদ আলমসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হেলথ সার্ভিস ডিভিশনের অতিরিক্ত সচিব নিলোফার নাজনীন।
আরও পড়ুন: দেশে দুটি লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
১১৯৯ দিন আগে