অর্থনৈতিক সহযোগিতা
অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারে ২৩-২৪ জুলাই বাংলাদেশ সফরে আসছেন জাপানের মন্ত্রী
জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী নিশিমুরা ইয়াসুতোশি দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ২৩ জুলাই ঢাকায় আসছেন।
২৩ জুলাই ঢাকায় বাংলাদেশ-জাপান ট্রেড সামিটে অংশগ্রহণ ছাড়াও তিনি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন।
মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে এ বলেন, ‘এই সফরে অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন যে জাপানের মন্ত্রী ২৪ জুলাই উত্তরা উত্তর মেট্রো স্টেশন থেকে মেট্রোরেল ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন।
আরও পড়ুন: স্পিকারের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের ২৫ থেকে ২৮ এপ্রিল জাপান সফর করেন।
সফরকালে ২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী কিশিদা।
দুই প্রধানমন্ত্রী ২০২৩ সালের এপ্রিলে জাপান-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (ইপিএ) সম্ভাবনা নিয়ে জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপের প্রথম বৈঠক সফলভাবে আয়োজনকে স্বাগত জানান এবং এর ধারাবাহিক অগ্রগতি আশা করেন।
আরও পড়ুন: কৌশলগত অংশীদারিত্বে বাংলাদেশের সঙ্গে বৃহত্তর সম্পর্ক গড়তে চায় জাপান: রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি
তারা সংশ্লিষ্ট কাস্টমস প্রশাসনের মধ্যে আরও সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাস্টমস পারস্পরিক সহায়তা চুক্তি সইকে স্বাগত জানান।
জাপানের মন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবিত ইপিএ সইয়ের বিষয়ে একটি যৌথ গবেষণার ফলাফল নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
নিশিমুরা ঢাকায় জাপানিজ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (জেসিআইএডি) সদস্যদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যে ৪৪তম ওডিএ ইয়েন ঋণচুক্তি সই
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অঞ্চলের জনগণের পারস্পরিক সুবিধার জন্য দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এই অঞ্চলের জনগণের পারস্পরিক সুবিধার জন্য দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে কোরিয়ার বিদায়ী রাষ্ট্রদূত লি জাং-কিউন তার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: ‘আমি আপনাদের সঙ্গে আছি’: সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি প্রজন্মের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশে রূপান্তরের ক্ষেত্রে কোরিয়ার সাফল্যের প্রশংসা করেন।
তিনি উল্লেখ করেন যে এই সাফল্য বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টায় অনুপ্রাণিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ কোরিয়ায় তার দু’টি সফরের কথা স্মরণ করে বলেছেন যে দ্বিতীয় সফরে তিনি সেখানে বিস্ময়কর উন্নয়নের সাক্ষী হয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত লি জাং-কেউন দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, অফিসিয়াল উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ), কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ২০২০ সালে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বর্তমানে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে ২০২০ সালে ওডিএ ছিল ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যেখানে এখন এটি তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, কোরিয়া জাহাজ নির্মাণ খাত থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে আগ্রহী।
তিনি গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশে তার মেয়াদে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তার হৃদয়ে আছে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ইউএনইএসসিএপি’র ৭৯তম অধিবেশনে ৪ দফা সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর
ঢাকা-ব্যাংকক অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে: থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা
থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি পার্মানেন্ট সেক্রেটারি এইচ ই সারুন চারোয়েনসুওয়ান বলেছেন, বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন মডেল এবং থাইল্যান্ডের বায়ো-সার্কুলার-গ্রিন ইকোনমি মডেলের অধীনে দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
শুক্রবার বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের কূটনৈতিক সম্পর্কের সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
সারুন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারটিতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি পার্মানেন্ট সেক্রেটারি এইচ ই সারুন চারোয়েনসুওয়ান এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ব্যাংককস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ ডিঅ্যাফেয়ার্স মিজ মালেকা পারভীন।
আরও পড়ুন: ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বোঝা বাংলাদেশকে একা বহন করতে হবে না’
মিজ মালেকা পারভীন তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, থাইল্যান্ড দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম দেশ, যারা স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করেন।
তিনি দুই দেশের ব্যবসায়ীদেরর মধ্যে আরও বেশি যোগাযোগ স্থাপনের গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই সেমিনারের মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের উভয় দেশের সরকারের আলোচিত সেক্টর ভিত্তিক সুবিধা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে আরও নিবিড়ভাবে জানার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
চারটি সেশনে অনুষ্ঠিত সেমিনারটিতে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক, বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ ও সম্ভাবনা এবং বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে বক্তারা আলোকপাত করেন।
অনুষ্ঠানে চুলালংকর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মি. পিতি শ্রীসঙ্গম, বিনিয়োগ বোর্ড, টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ, থাই হালাল খাবার উৎপাদক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন-এর প্রতিনিধিসহ থাই সরকারি বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর আমন্ত্রণে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ উন্নয়ন অনুবিভাগ এর পরিচালক জনাব মো. আরিফুল হক ভার্চুয়াল মাধ্যমে সংযুক্ত হন।
তিনি থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ, সম্ভাবনা, বিনিয়োগ প্রণোদনা, বিনিয়োগকারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য বাংলাদেশের বিনিয়োগের ক্ষেত্র সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, দূতাবাসের কর্মকর্তারা, অন্যান্য সংশ্লিষ্ট থাই সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ব্যাংকক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিবিএএ গঠনে স্বাগত জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক হৃদয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত: দোরাইস্বামী