আয়ারল্যান্ড
আয়ারল্যান্ডকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বন্ধু হিসেবে দেখা উচিত বাংলাদেশের: আইরিশ মন্ত্রী
আয়ারল্যান্ডের এন্টারপ্রাইজ, ট্রেড অ্যান্ড ইমপ্লয়মেন্ট বিষয়ক মন্ত্রী সাইমন কোভনি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) বন্ধু হিসেবে আয়ারল্যান্ডকে পাবে বাংলাদেশ এবং দুই দেশ বৃহত্তর ক্ষেত্রে 'ঘনিষ্ঠ ও আরও কাঠামোগত সহযোগিতা' গড়ে তুলতে ইচ্ছুক।
চলতি সপ্তাহে ঢাকায় দুই দিনের সরকারি সফর শেষ করার আগে ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
কোভনি বলেন, 'আমি যেটি বলতে চাই তা হলো বাংলাদেশের উচিত আয়ারল্যান্ডকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বন্ধু হিসেবে দেখা। যদি তারা ইউরোপীয় কমিশনের সঙ্গে কিছু কঠিন বিষয় নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করে, তাহলে আয়ারল্যান্ড তাদের জন্য সমস্যাগুলো উত্থাপন করতে পারে এবং সম্ভাব্যভাবে তাদের সঙ্গে কাজ করতে পারে।’
আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে অন্তর্বর্তীকালীন সময় এবং এরপর বাংলাদেশ জিএসপি প্লাস সুবিধা চাইবে, যা শুল্ক ও বাণিজ্যের সুযোগের ক্ষেত্রে কার্যকরভাবে অগ্রাধিকারমূলক অবস্থান।
কোভনি বলেন, ‘আমি মনে করি ইইউ এ ব্যাপারে উন্মুক্ত। অবশ্যই, কিছু শর্ত থাকবে যা ইইউ বাংলাদেশের কাছ থেকেও চাইবে, শ্রম আইন, শ্রমিক অধিকার, পরিবেশগত বিষয়গুলোর সামগ্রিক আধুনিকীকরণ। ইইউর জন্য এটাই স্বাভাবিক। এটি প্রতিটি দেশের জন্য।’
তিনি বলেন, তারা সবসময় পরিবেশগত উন্নতি, কাজের পরিবেশ ও শ্রম উন্নয়নে জোর দেওয়ার চেষ্টা করেন। ‘আমি মনে করি যে এসব পুরণ করা সম্ভবপর।’
কোভেনির সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলডিসিতে উন্নীত হওয়ার সময়ে ২০২৯ সাল পর্যন্ত ইইউর বাজারে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা উপভোগে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় আয়ারল্যান্ডের সমর্থন কামনা করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী বলেন, আয়ারল্যান্ড ও বাংলাদেশের অংশীদার হতে পারে এমন ক্ষেত্রগুলো নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটু কথা বলেছেন।
বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে, তিনি বলেছিলেন, প্রযুক্তি, বিমানচালনা, খাদ্য ও পুষ্টি এবং ফার্মাসিউটিক্যালের মতো ক্ষেত্রে আইরিশ সংস্থাগুলোর জন্য এখানে অবশ্যই সুযোগ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে কোভনি বলেন, এই সম্পর্ককে ঘিরে কীভাবে পরিকল্পনা তৈরি করা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'তিনি (সালমান) পরিষ্কার করেছেন যে, তিনি কয়েকজন মন্ত্রী ও ব্যবসায়ীকে নিয়ে আয়ারল্যান্ড সফর করতে চান, যাতে আমরা আয়ারল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার চেষ্টা করতে পারি।’
মন্ত্রী কোভনি বলেন, তারা অন্যান্য উপায়গুলোও দেখেছেন যাতে তারা এখানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সম্ভাব্য ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে।
এখানে তৈরি করা অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে অন্য দেশগুলোর কোম্পানিগুলোকে আসতে এবং মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান ও আয়ের ব্যবস্থা করতে উৎসাহিত করার বিষয়ে কথা বলেছেন তারা।
দুই দিনের সফরে কোভেনি নিম্ন আয়ের দেশ থেকে উচ্চতর আয়ের দেশে পরিণত হওয়া বাংলাদেশের অবস্থা এবং ইইউতে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে এটি কীভাবে সম্পর্কের পরিবর্তন করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে আয়ারল্যান্ড এমন একটি দেশ যারা ইইউতে বাংলাদেশের বন্ধু হতে চায়। ইইউ যাতে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝে তা নিশ্চিত করতে তারা ভবিষ্যতে তাদের সঙ্গে কাজ করতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, 'আমি এখানে ইইউ দূতাবাসের উপপ্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক কখনোই এখনকার চেয়ে ভালো ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলতে চাচ্ছি কোনো সম্পর্কই নিখুঁত নয়, তবে বর্তমানের সম্পর্কটি একটি ইতিবাচক, দৃঢ় সম্পর্ক।’
আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রীকে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার অনুরোধ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বাংলাদেশে বিশেষ করে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, ওষুধ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আইরিশদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি কয়েক হাজার বাংলাদেশিকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য আয়ারল্যান্ডকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি আরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের পেশাদারদের আয়ারল্যান্ডে উচ্চতর পড়াশোনা এবং কাজ করার জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে দেশটির এন্টারপ্রাইজ, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী সাইমন কোভেনিকে অনুরোধ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করতে বাংলাদেশ সফরে আসার জন্য আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে পণ্য ও সেবায় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেন এবং ২০৩২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) বাণিজ্য অগ্রাধিকার ও ২০৩২ সালের পর জিএসপি+ সুবিধার জন্য আয়ারল্যান্ডের সমর্থন কামনা করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল সংগ্রহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে ইউএনডিপির প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
সোমবার (১৮ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মন্ত্রী সাইমন কোভেনি।
আয়ারল্যান্ডের এই মন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার নতুন নিয়োগের জন্য অভিনন্দন জানান।
বাংলাদেশের টেকসই উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি প্রযুক্তি, ওষুধ ও জ্বালানি খাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও সহযোগিতার ওপর বিশেষ মনোযোগ দিয়ে প্রতিনিধি দলের সফর বিনিময়ের পরামর্শ দেন।
তিনি ২০৩২ সাল পর্যন্ত ইবিএ সুবিধা এবং ২০৩২ সালের পর জিএসপি+ সুবিধা সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশের আবেদনের পক্ষে আইরিশ সমর্থনের আশ্বাস দেন।
আয়ারল্যান্ড সরকারের অভিবাসনবান্ধব নীতির কথা উল্লেখ করে সাইমন আরও বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের আয়ারল্যান্ডে স্বাগত জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পরও ইবিএ-জিএসপি প্লাস সুবিধা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য অতিরিক্ত ১৫ লাখ ইউরো মানবিক সহায়তা দেওয়া হবে।
দুই মন্ত্রী গাজায় যুদ্ধ নিয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন এবং সাধারণ মানুষ বিশেষ করে নারী ও শিশু হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান ওই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি বয়ে আনতে পারে বলে তারা একমত হন।
এর আগে আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকায় আয়ারল্যান্ডের প্রথম অনারারি কনস্যুলেট উদ্বোধন করেন। এই পদক্ষেপকে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি 'গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক' হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ঢাকার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আয়ারল্যান্ড সম্প্রতি কসমস গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ জামিল খানকে বাংলাদেশে তাদের অনারারি কনসাল হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভারতে নিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত কেভিন কেলি ও মাসুদ জামিল খান।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুই দিনের সরকারি সফরে রবিবার ঢাকায় আসেন আইরিশ মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ঢাকায় প্রথম অনারারি কনস্যুলেট উদ্বোধন করলেন আইরিশ মন্ত্রী সাইমন কোভেনি
২০৩২ সাল পর্যন্ত ইইউর জিএসপি সহায়তা পেতে আয়ারল্যান্ডের সহায়তা প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর
উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সময়ে ২০২৯ সালের পরিবর্তে ২০৩২ সাল পর্যন্ত ইইউর বাজারে অগ্রাধিকারমূলক ব্যবসায়িক সুবিধা- জিএসপি পাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় আয়ারল্যান্ডের সমর্থন প্রত্যাশা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার গণভবনে আয়ারল্যান্ডের শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানবিষয়ক মন্ত্রী সাইমন কোভেনির নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের আয়ারল্যান্ড প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ সমর্থন চান।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও অংশীদার এবং ইইউ সদস্য দেশটি সব সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের পাশে থাকে।
আরও পড়ুন: দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী
ইইউ প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশের আগ্রহের বিষয়ে বাংলাদেশকে সমর্থন দিতে আয়ারল্যান্ডের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
নজরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আয়ারল্যান্ডের সমর্থন কামনা করেন, যাতে বাংলাদেশের জন্য ব্যবসায়িক সুবিধা বিশেষ করে জেনারালাইজড স্কিম অব প্রেফারেন্সেস (জিএসপি) ২০৩২ সাল পর্যন্ত বাড়ায় ইইউ।
আইরিশ ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিন-চার বিলিয়ন ভোক্তার জন্য বাংলাদেশ সম্ভাবনাময় বড় বিপণন হাব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়ারল্যান্ডের উদ্যোক্তাদের জন্য আইসিটি, ওষুধ ও কৃষিভিত্তিক শিল্পের মতো বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগের প্রচুর সুযোগ রয়েছে।
শ্রমিক ইস্যুতে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের শ্রমনীতি নিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে জানতে ইইউভুক্ত দেশগুলো সরাসরি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে কোনো ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থাকবে না।
আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী বলেন, আয়ারল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করতেই তিনি বাংলাদেশে এসেছেন।
ঢাকায় আয়ারল্যান্ডের প্রথম অনারারি কনস্যুলেট আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করতে তিনি এখানে এসেছেন উল্লেখ করে কোভেনি বলেন, এই কার্যালয় দু'দেশের জনগণের মধ্যে ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে সহায়তা করবে।
কোভেনি বলেন, আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতে কারিগরি এবং খাদ্য শিল্পে (কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প) সহায়তা দিতে চায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আয়ারল্যান্ড জাতিসংঘ ও ইইউ ফোরামে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে পড়াশোনা করছে উল্লেখ করে সফররত মন্ত্রী আশ্বাস দেন, ইউরোপীয় দেশটি বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী নেবে।
আরও পড়ুন: শিশুদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে অভিভাবকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আয়ারল্যান্ডের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
তবে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তা জোরদার করা, তাদের আয়বর্ধক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ী ও আরও উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন।
জবাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এরপরও সেখানে মাঝে মাঝে হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটছে। কারণ তারা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, শরণার্থীদের জন্য স্থায়ী ঘর নির্মাণ করা হয়েছে এমন নজির পৃথিবীতে নেই। তারপরও ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানসম্মত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ।
তারা সেখানে যেতে চাইলে আমরা ভাসানচরে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গার আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভাসানচরে আবাসন প্রকল্পটি কিছু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বেসরকারি সংস্থা ও দেশের বিরোধিতার কারণে সফল হচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, ভারতে নিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত কেভিন কেলি এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনসাল মাসুদ জামিল খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আয়ারল্যান্ড সরকারের সেন্ট প্যাট্রিক দিবসের অংশ হিসেবে ভারত ও বাংলাদেশে সাত দিনের সরকারি সফরের দ্বিতীয় পর্যায়ে রবিবার ঢাকায় আসেন দেশটির মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
১৭ মার্চ ঢাকায় আসছেন আয়ারল্যান্ডের এন্টারপ্রাইজ, বাণিজ্য, কর্মসংস্থানমন্ত্রী সাইমন কোভেনি
বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে জোরদারে একযোগে কাজ করার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নবনিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনসাল মাসুদ জামিল খান।
রবিবার ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ অত্যন্ত দ্রুত প্রবৃদ্ধির দেশ এবং আয়ারল্যান্ড উন্নত ও শিক্ষিত দেশ। উভয় পক্ষ একসঙ্গে খুব ভালো কাজ করতে পারে।’
তিনি বলেন, আয়ারল্যান্ডের এন্টারপ্রাইজ, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী সাইমন কোভেনি টিডির ১৭ মার্চ ঢাকায় আসার কথা রয়েছে এবং সম্পর্ক জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে বেশ কয়েকটি বৈঠক করবেন।
আরও পড়ুন: মাসুদ জামিল খান আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনসাল নিযুক্ত
মাসুদ বলেন, ‘মন্ত্রী সাইমন বাংলাদেশে আসছেন বলে আমরা সম্মানিত। দিল্লিতে আমার রাষ্ট্রদূত (ভারতে নিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত কেভিন কেলি) এই বিষয়কে সমর্থন করেছেন। আমি মনে করি, এটি একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সফর।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সঙ্গে বৈঠক করবেন কোভেনি।
সফরকালে সেন্ট প্যাট্রিক দিবস, আয়ারল্যান্ডের জাতীয় দিবস এবং 'বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনস্যুলেট'র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন তিনি।
ঢাকায় অবস্থানকালে আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড সম্পর্ক নিয়ে একটি সংলাপে অংশ নেবেন।
১৯৭২ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশকে আয়ারল্যান্ডের স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিরাজ করছে।
কসমস গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাসুদ বলেন, 'আয়ারল্যান্ড প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে কাউকে নিয়োগ দিয়েছে। সম্পর্ক উন্নয়নে উভয় পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত ও উচ্ছ্বসিত।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত ২৬ বছরে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশের রপ্তানি বার্ষিক ১৬.৩ শতাংশ হারে বেড়েছে। রপ্তানির এ পরিমাণ ১৯৯৫ সালে ৬.৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২১ সালে ৩৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ‘সুতরাং, এটি বিশাল আকারের রপ্তানি বৃদ্ধি।’
মাসুদ বলেন, আয়ারল্যান্ডকে এখন ইউরোপের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি হাব হিসেবে দেখা হয়। এটি হাবস্পট অ্যান্ড ইনডিড সহ বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ইএমইএ সদর দপ্তরও।
তিনি বলেন, ‘আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশ থেকে আইটি সেক্টরে দক্ষ পেশাজীবী নিতে পারে। আয়ারল্যান্ডের সহায়তায় বাংলাদেশও হতে পারে আইটি হাব। বাংলাদেশে তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে এবং তারা অত্যন্ত প্রশিক্ষিত।’
আরও পড়ুন: গ্যালারি অন হুইলস: ইউনেস্কোর ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় রিকশা পেইন্টারদের কসমস ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনা
মাসুদ বলেন, দুই দেশই ওষুধ খাতে ভালো করছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে পোশাক রপ্তানি হচ্ছে এবং এটি প্রতি বছরই বাড়ছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা অবশ্যই বিষয়টি দেখতে পারি।’
তিনি বলেন, আয়ারল্যান্ড থেকে কনসেন্ট্রেটেড মিল্ক বাংলাদেশে রপ্তানি হচ্ছে।
মাসুদ আরও বলেন, ‘আমরা আয়ারল্যান্ড থেকে গরু আনতে পারি। একই সঙ্গে আমরা তাদের প্রজননের জন্যও এখানে আনতে পারি। আয়ারল্যান্ড থেকেও মল্ট এক্সট্রাক্ট ও স্ক্র্যাপ আয়রন বাংলাদেশে আনা হচ্ছে। এই ক্ষেত্রগুলোতে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করার উদ্যোগ নিতে পারি।’
তিনি বলেন, শিক্ষা খাতে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে এবং দুই পক্ষ এখানে আয়ারল্যান্ডের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শাখা স্থাপনের বিষয়ে কাজ করতে পারে।
আয়ারল্যান্ডে কিছু শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আয়ারল্যান্ড পড়াশোনার জন্য একটি চমৎকার জায়গা।’
নিয়োগ নিয়ে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে মাসুদ বলেন, 'সম্পর্ক উন্নয়নে উভয় পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত ও উচ্ছ্বসিত।’
মাসুদ বলেন, ‘এটি চমৎকার অনুভূতি। বর্ণনা করা খুব কঠিন। অবশ্যই, এটি অত্যন্ত আনন্দের। আমি এটি অর্জনের চেষ্টা করেছি।’
তার বাবা রোমানিয়ার অনারারি কনসাল এনায়েতুল্লাহ খানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনিও সেই সংস্কৃতির মধ্যে বড় হয়েছেন।
এই দায়িত্ব পালনে সফলতার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'একটি দেশের অনারারি কনসাল হওয়ার ইচ্ছা আমার সবসময়ই ছিল; যাতে সেই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করতে পারি।’
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রদর্শনীর আয়োজন করছে গ্যালারি কসমস
মাসুদ জামিল খান আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনসাল নিযুক্ত
কসমস গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ জামিল খানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকায় আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনসাল ঘোষণা করা হয়েছে।
আয়ারল্যান্ড সরকার গত সপ্তাহে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য মাসুদকে দেশটির অনারারি কনসাল হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
মাসুদ দেশের বৃহত্তম বেসরকারি সংবাদ সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি) এবং একটি স্বাধীন সংবাদভিত্তিক সাময়িকী ঢাকা কুরিয়ার-এর একজন পরিচালকও।
মাসুদ ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সোদের স্কুল অব বিজনেস থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন এবং হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে ফিন্যান্স নিয়ে পড়াশোনা করেন।
আরও পড়ুন: গ্যালারি অন হুইলস: ইউনেস্কোর ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় রিকশা পেইন্টারদের কসমস ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনা
তিনি একজন প্রকৃতিপ্রেমিক, পরিবেশবাদী ও ওয়াইল্ডটিমের সদস্য।
এছাড়াও, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র এবং ভ্যাঙ্কুভার বোর্ড অব ট্রেডের সদস্য।
খান অনেক আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও মিডিয়া সম্পর্কিত ফোরামে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
ঢাকার আমেরিকান স্কুলে তিনি ২০০১ সালে এআইএসডি ট্রায়াথলন চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ব্রজেন দাস সাঁতার প্রতিযোগিতা পুরস্কার অর্জন করেন।
খান শহীদ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদের (বি ইউ) নাতি।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রদর্শনীর আয়োজন করছে গ্যালারি কসমস
একুশে পদক ২০২৩ বিজয়ী কনক চাঁপাকে গ্যালারি কসমসের সংবর্ধনা
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টাইগারদের সিরিজ জয়
চেমসফোর্ডের কাউন্টি গ্রাউন্ডে আইসিসি পুরুষ ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের অংশ। তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ওডিআইতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
শেষ ওভারে মাত্র পাঁচ রানে জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। মুস্তাফিজুর রহমান চার উইকেট নিয়ে টাইগারদের সিরিজ জয়ে দলকে এগিয়ে নেন।
শেষ ওভারে প্রতিরোধের জন্য মাত্র ১০ রানের মধ্যে বোলার হাসান মাহমুদ প্রথম ৩ বলে মাত্র এক রান দেন। সেই ডেলিভারিতে রানআউট সহ ৩ উইকেট পড়ে যায়। শেষ ৩ বলে আর মাত্র ৩ রান করতে পারে আয়ারল্যান্ড।
টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আয়ারল্যান্ড। প্রথম দিকে মাত্র ৪ রানে অভিষিক্ত রনি তালুকদারকে হারিয়ে শুরুটা নড়বড়ে হয়ে যায় বাংলাদেশের।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়, সিরিজে এগিয়ে বাংলাদেশ
তবে, বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল ৮২ বলে ৬৯ রান করে ইনিংসকে স্থির রাখেন, ৯ ইনিংসের পর তার প্রথম ফিফটি।
নাজমুল হোসেন শান্তও৩২ বলে ৩৫ রানের একটি দরকারী স্কোর করেন।, যেখানে লিটন দাস এবং মুশফিকুর রহিম যথাক্রমে ৩৫ এবং ৪৫ রানে অবদান রাখেন। মেহেদি হাসান মিরাজের কিছু দুর্দান্ত আঘাতের কারণে বাংলাদেশের ইনিংস পরবর্তী পর্যায়ে একটি বড় উৎসাহ পেয়েছিল। যিনি মাত্র ৩৯ বলে দ্রুত ৩৭ রান করেন।
তবে ইনিংসের শেষ অংশে মাত্র ১৩ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ৩০০ বা তার বেশি ছুঁয়ে যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেছিল তারা। তারা ৪৮ ওভার পাঁচ বলে ২৭৪ রানে অলআউট করে।
২৭৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে আয়ারল্যান্ডের শুরুটা খারাপ হয়েছিল। মাত্র চার রানে স্টিফেন ডোহেনিকে হারায়। তবে, পল স্টার্লিং এবং অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবির্নি দ্বিতীয় উইকেটে ১০৯ রানের দৃঢ় জুটি গড়েন। স্টার্লিং ৭৩ বলে ৬০ রান আর বলবির্নি ৭৮ বলে ৫৩ রান করেন।
আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান হ্যারি টেক্টরও ৪৮ বলে একটি দরকারী ৪৫ রান করেছিলেন এবং লোরকান টাকার ৫৩ বলে ৫০ রান করেছিলেন। ক্যাপ্টেন অ্যান্ডি বালবির্নিও ৭৮ বলে ৫৩ রান করেন।
এছাড়া, বাংলাদেশের বোলাররা গুরুত্বপূর্ণ বিরতিতে উইকেট নিয়ে ছিটকে যেতে থাকে এবং আইরিশরা তাড়া খেয়ে শেষ পর্যন্ত মাত্র পাঁচ রানে পিছিয়ে যায় এবং৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৬৯ রান করে।
মুস্তাফিজুর কিছুদিন ধরে খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি চার ওভারে ৪৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করে তিনি ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার অর্জন করেছেন। হাসানও ৯ ওভারে ৪৪ রান দেন এবং দুটি উইকেট পান।
এই জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি অবিরাম বৃষ্টির কারণে পণ্ড যায়, দ্বিতীয় ম্যাচটিও বৃষ্টির কারণে সংক্ষিপ্ত হয়।
আরও পড়ুন: ওয়ানডে সিরিজ: উদ্বোধনী ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করছে বাংলাদেশ
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়, সিরিজে এগিয়ে বাংলাদেশ
চেমসফোর্ডের কাউন্টি গ্রাউন্ডে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন বল বাকি থাকতেই তিন উইকেটের রোমাঞ্চকর জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।
এই নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো ৩০০ রানের বেশি রান তাড়া করল বাংলাদেশ।
বৃষ্টির কারণে দেরিতে শুরু হওয়ায় ৪৫ ওভারে ৩২০ রানের কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নাজমুল হোসেন শান্ত'র দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও মুশফিকুর রহিমের দেরিতে হলেও অনবদ্য সহযোগিতায় শেষ ওভারে জয় পায় বাংলাদেশ।
আয়ারল্যান্ডের ৩১৯ রানের জবাবে তামিম ইকবাল মাত্র ৭ রানে আউট হয়ে যাওয়ায় নড়বড়ে শুরু করে বাংলাদেশ। এর পরেই গ্রাহাম হিউমের বলে টাকারের হাতে ক্যাচে ২১ রান পান লিটন দাস।
তবে তৃতীয় উইকেটে ৬১ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের ইনিংসকে স্থিতিশীল করেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান। ক্যাম্পারের বোলিংয়ে ডকরেলের হাতে ধরা পড়ে ২৬ রানে আউট হন সাকিব। দলের হাল ধরার দায়িত্ব আসে শান্তর ওপর।
আরও পড়ুন: ভেজা আবহাওয়ায় টসে বিলম্বের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রথমে বল করছে বাংলাদেশ
এরপর ক্রিজে শান্তর সঙ্গে যোগ দেন তৌহিদ হৃদয় এবং চতুর্থ উইকেটে ১৩১ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন তারা। হৃদয় মাত্র ৫৮ বলে ৬৮ রানের দ্রুত গতির ইনিংস খেলেন, যার মধ্যে ৫টি চার এবং ৩টি ছক্কা ছিল। অন্যদিকে, শান্ত আইরিশ বোলারদের ওপর আধিপত্য বজায় রেখেছিলেন এবং মাত্র ৯৩ বলে দুর্দান্ত ১১৭ রান করেছিলেন। যার মধ্যে ১২টি চার এবং ৩টি ছক্কা ছিল। ওয়ানডেতে এটি তার প্রথম সেঞ্চুরি।
তবে লক্ষ্য কাছাকাছি আসার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ দ্রুত শান্ত ও হৃদয়কে হারিয়ে ফেলে, শেষ ৩ ওভারে ৩৪ রান করার কঠিন কাজ তখনও বাকি।
মাত্র কয়েক বলে শান্ত ও হৃদয়কে হারানোর পরও মুশফিক মাত্র ২৮ বলে ৪টি চারসহ অপরাজিত ৩৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে ৩ বল বাকি থাকতেই জয়ের স্বাদ এনে দেয়।
আয়ারল্যান্ডের পক্ষে ক্যাম্পার ৫ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন।
সিরিজের প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়। আগামী ১৪ মে একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত
ওয়ানডে সিরিজ: উদ্বোধনী ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করছে বাংলাদেশ
চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার শুরু হওয়া ম্যাচের প্রথম ওভারে ওপেনার লিটন দাসকে প্রথম বলে শূন্য রানে আউট করেন জশ লিটল।
আরও পড়ুন: আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি মুশফিক ও সাকিবের
দুই মাসেরও কম আগে, বাংলাদেশ ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আরেকটি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে। যেটি তারা ২-০ ব্যবধানে জিতেছে এবং একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে বাতিল হয়ে গেছে।
এই সিরিজটি বিশ্বকাপ সুপার লিগের অংশ। বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই ভারতে এই বছরের শেষের দিকে বিশ্বকাপে তাদের জায়গা নিশ্চিত করেছে। যেখানে আয়ারল্যান্ডকে তাদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে এই সিরিজে বাংলাদেশকে ৩-০ ব্যবধানে পরাজিত করতে হবে।
বাংলাদেশ একাদশ:
তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), সাকিব আল হাসান, তৌহিদ হৃদয়, মেহেদি হাসান মিরাজ, শরিফুল ইসলাম, এবাদত হোসেন, তাইজুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ।
আয়ারল্যান্ড একাদশ:
পল স্টার্লিং, স্টিফেন ডোহেনি, অ্যান্ড্রু বালবির্নি (ক্যাপ্টেন), হ্যারি টেক্টর, লরকান ট্যাকার, কার্টিস ক্যাম্ফার, জর্জ ডকরেল, অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইন, মার্ক অ্যাডায়ার, গ্রাহাম হিউম, জোশ লিটল।
আরও পড়ুন: অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট: বাংলাদেশের বিপক্ষে সহজ জয়ের পথে পাকিস্তান
রাতেই ইংল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে ৭ উইকেটে জয় বাংলাদেশের
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের চতুর্থ দিন শুক্রবার মধ্যাহ্নভোজের ঠিক পরেই সাত উইকেটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ৩৬৯ ও ১৩৮/৩ এবং আয়ারল্যান্ড ২১৪ ও ২৯২ রান করে।
প্রথম ইনিংসে ১২৬ রান করা মুশফিকুর রহিম অপরাজিত ৫১ রান করে বাংলাদেশের হয়ে ম্যাচ শেষ করেন মুমিনুল হকের অপরাজিত ২০ রানের সঙ্গে।
পেসার মার্ক অ্যাডায়ারকে ২৩ রানে আউট করার আগে বাংলাদেশকে সাবলীল সূচনা এনে দেন লিটন দাস। অফস্পিনার অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন, যিনি প্রথম ইনিংসে ১১৮ রানে ৬ উইকেট নিয়ে আইরিশ বোলারদের সেরা সংখ্যার রেকর্ড গড়েছিলেন, এরপর নাজমুল হোসেনকে অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নির হাতে ৪ রানে ক্যাচ দেন। সে সময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল দুই উইকেটে ৪৩ রান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড: ঢাকা টেস্ট জয়ে টাইগারদের প্রয়োজন ১৩৮ রান
তবে তৃতীয় উইকেটে ৪৬ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তামিম ও মুশফিক।
আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস ২৯২ রানে শেষ করতে ৩৬ মিনিট সময় নেয় বাংলাদেশ।
এরপর এবাদোট গ্রাহাম হিউমকে ১৪ রানে আউট করেন এবং দাসের হাতে ক্যাচ নিয়ে ৩৭ রানে শেষ করেন।
তৃতীয় দিন সকালে ৫১-৫-এ পতন এবং বাংলাদেশের বহুল আলোচিত স্পিন আক্রমণের কাছে ইনিংস পরাজয়ের পর আইরিশ দল তৃতীয় দিনে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে নিজেদের আশা জাগিয়ে তোলে।
হ্যারি টেক্টর ও অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের ক্যারিয়ারসেরা হাফসেঞ্চুরির সাহায্যে লরকান টাকারের সেঞ্চুরিতে তৃতীয় দিনে আয়ারল্যান্ড ৮ উইকেটে ২৮৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশকে ১৩১ রানে এগিয়ে দেয়।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ১৫৫ রানের লিড নেয় বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: ঢাকা টেস্ট: আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে লড়াইয়ে দ্রুত চার উইকেট নিয়ে শীর্ষে বাংলাদেশ
ঢাকা টেস্ট: আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে লড়াইয়ে দ্রুত চার উইকেট নিয়ে শীর্ষে বাংলাদেশ
ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনে, বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে আয়ারল্যান্ড দ্রুত পরপর চার উইকেট হারিয়ে কঠিন অবস্থায় পড়ে।
বুধবার দিনের শেষে, তারা ১৭ ওভারে চার উইকেটে ২৭ রান করতে পারে, হ্যারি টেকটর এবং পিটার মুর যথাক্রমে ৮ এবং ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা টেস্ট: টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত আয়ারল্যান্ডের
আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ২১৪ রানের জবাবে ৩৬৯ রান পোস্ট করার পর বাংলাদেশ ১৫৫ রানের লিড নেয়।
জেমস ম্যাককলামকে শূন্য রানে আউট করে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন সাকিব আল হাসান। এরপর তিনি কার্টিস ক্যাম্পারকেও ধরাশায়ী করেন। দুই উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন মুশফিকুর রহিম; স্কোরবোর্ডে ৮৭ রান যোগ করেন সাকিব। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ডের হয়ে ছয় উইকেট নিয়েছিলেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন, প্রথম আইরিশ স্পিনার যিনি টেস্ট ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নেন।
তাদের প্রথম ইনিংসে, হ্যারি টেকটর আয়ারল্যান্ডের হয়ে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন, কিন্তু তাইজুল ইসলামের কাছে তারা পরাজিত হয়েছিল, যিনি টেস্টে তার ১১তম পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা টেস্ট: মুশফিকের দশম টেস্ট সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের লিড ১০৩
ঢাকা টেস্ট: তাইজুলের ৫ উইকেট শিকারে ২১৪ রানে প্যাকেট আয়ারল্যান্ড