অনির্বাচিত সরকার
অনির্বাচিত সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা উচিৎ নয়: ফখরুল
অবিলম্বে নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটি অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা উচিত নয়।
তিনি বলেন, ‘সংস্কার করতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা বাংলাদেশের বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীলতা। নির্বাচিত সরকার থাকলে এসব সমস্যা অনেকাংশে লাঘব হবে।’
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) একাংশ এ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, জনগণের ম্যান্ডেট থাকায় একটি নির্বাচিত সরকার কার্যকরভাবে সমস্যা মোকাবিলায় তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে। ‘এটা আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে। আমরাও সংস্কারের পক্ষে। তবে আমরাও মনে করি, অনির্বাচিত সরকারের বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা উচিত নয়।’
ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কাজ হচ্ছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা এবং জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।
আরও পড়ুন: দেশে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক চর্চাই হয়নি: ফখরুল
বিএনপির এই নেতা আশ্বস্ত করে বলেন, তার দল এখনো অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ণ সমর্থন করে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাফল্যের আকাঙ্ক্ষাও প্রকাশ করে এর সাফল্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিতে তারা প্রস্তুত বলেও উল্লেখ করেন বিএনিপির এই নেতা।
ফখরুল বলেন, তারাও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সফল করতে চান এবং এর সাফল্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিতে তারা প্রস্তুত রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার সবচেয়ে বড় অনুরোধ দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করার। অন্যথায় চলমান সংকট, সমস্যা, নাশকতা, সীমান্ত ইস্যু নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।’
তিনি বলেন, সংস্কার কোনো নতুন ধারণা নয়, বরং একটি চলমান প্রক্রিয়া। তিনি বলেন, 'আপনারা (সরকার) সংস্কারের জন্য বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছেন, তারা কাজ করছে, ভাল। কিন্তু এসব কমিশন কাদের সঙ্গে কাজ করছে? তারা কিছু পন্ডিতকে নিয়ে এসেছেন... আমরা তাদের ভালো করে চিনি এবং সম্মান করি। তবে একই সঙ্গে জনগণ কী চায় তা বোঝার জন্য তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন: সচিবালয়ের অগ্নিকাণ্ডে সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি চান মির্জা ফখরুল
৩৪২ দিন আগে
বাংলাদেশকে তারা শ্মশান করে দিয়েছে: চট্টগ্রামে মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকার অনির্বাচিত সরকার। এদেশের মানুষ কিন্তু তাদের মেনে নেয়নি। বাংলাদেশকে তারা শ্মশান করে দিয়েছে। এই শেখ হাসিনা সব লুট করে বিদেশে পাচার করছে। তাই এই স্বৈরাচার সরকারকে হঠিয়ে আমরা আমাদের গণতন্ত্র ফিরে পেতে চাই। জনগণের বাক স্বাধীনতাসহ আমাদের সব অধিকার ফিরে পেতে চাই। তাই এ লড়াই অনেক বড় লড়াই, শক্ত লড়াই। এ লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে। আমরা হয় জিতবো, না হয় মরে যাব। তাই আমরা মাথা উচু করে দাঁড়াতে চাই।’
তিনি বুধবার (১২ আক্টোবর) বিকালে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, পুলিশের গুলিতে পাঁচ নেতাকর্মী নিহত ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির আয়োজনে বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এদিকে জনগণ না খেয়ে মরছে। প্রতিটা তরকারির দাম তিন থেকে পাঁচ গুণ বেড়েছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির দাম বাড়িয়েছে। শুনছি, বিদ্যুতের দাম আবার বাড়াবে। এরা লুটপাট করে কানাডার বেগমপাড়ায় বাড়ি বানায়। আর জনগণ কষ্টে দিনাতিপাত করছে। দুমুঠো খাবার পায় না মানুষ। মানুষের নিরাপত্তা নেই, দিনদুপুরে ডাকাতি, ছিনতাই হয়।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির এই সমাবেশ আর সমাবেশ নেই, তা এখন মহাসমাবেশে পরিণত হয়েছে। আজকে আমরা এমন একটা জায়গা থেকে কথা বলছি যার অদূরে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র। সেখান থেকে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন জিয়াউর রহমান। আমি চট্টগ্রামের মানুষকে বলব, এই সমাবেশকে আপনারা সফল করেছেন।’
আরও পড়ুন: অচিরেই দেশব্যাপী সরকার পতন আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে: মির্জা ফখরুল
তিনি আরও বলেন, আজ জাতিসংঘ পরিষ্কারভাবে বলেছে, এখানে গুম হয়। ৭৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার নাই। এখানে হত্যা হয়, গুম হয়। আমাদের সব নেতার ওপর মিথ্যা মামলা দিয়েছে।
বিএনপির নেতাকর্মীদের আসতে পদে পদে বাধা দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে দলের এ নেতা বলেন, আজ জনসভায় আসার আগে আপনাদের গাড়ি আটকে দিয়েছে। কিন্তু আপনারা এখানে এসেছেন সব বাধা পেরিয়ে। ঠিক একইভাবে সব বাধা ডিঙিয়ে আমরা শেখ হাসিনাকে গদি থেকে সরিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব। নিরপেক্ষ সরকার, তত্ত্বাধায়ক সরকার ছাড়া আমরা কোন নির্বাচন মানি না। মানব না।
খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেত্রী আজ বন্দি। তিনি ঠিকমত চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তারা আমাদের ভয় দেখান আমাদের নেত্রীকে আবার জেলে পাঠাবেন। খালেদা জিয়া জেলকে ভয় পান না। আপনাদের নেতা আসলাম চৌধুরী ছয় বছর ধরে জেলে আছেন। এরা বিচারবিভাগ, প্রশাসন, পুলিশ, র্যাবকে দলীয়করণ করেছেন। আজ সারাদেশের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ আর ছাত্রলীগের কর্মীরা জনগণের পকেট কেটে বিদেশে পাচারে সহযোগিতা করছে।’ তারা বলছে, দেশে দুর্ভিক্ষ আসছে। তেল কম খান, বিদ্যুৎ কম জ্বালান। আর আমরা বলি, তাহলে আপনারা ক্ষমতায় আছেন কেন? আজই পদত্যাগ করেন।’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. খন্দকার মোশারফ হোসেন, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মো. শাহজাহান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ঢাকা উত্তর সভাপতি আমানুল্লাহ আমান, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি এম এ সালাম, উপদেষ্টা জয়নাল আবেদিন ফারুক গোলাম আকবর খন্দকার, জয়নাল আবেদীন ভিপি, এসএম ফজলুল হক, বিএনপি'র যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, যুবদলের সভাপতি সালাউদ্দিন টুকু, মৎস্যজীবী নেতা, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক উদ্দিন মজুমদার হারুনুর রশিদ বিএনপি নেতা বেলাল আহমেদ উপদেষ্ঠা আবুল খায়ের ভূঁইয়া সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী ও ওয়াদুদ ভূইয়া প্রমুখ।
এদিকে দুপুরের আগেই বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন থানা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে শ্লোগান ও ব্যান্ড দলের বাদ্য বাজিয়ে সমাবেশস্থলে যোগ দেন। নেতাকর্মীদের ভীড়ে একপর্যায়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয় চট্টগ্রামের বিশাল পলোগ্রাউন্ড মাঠ।
সমাবেশ পরিচালনা করেন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।
এদিকে বিএনপির বিভাগীয় এ সমাবেশকে ঘিরে নগরীতে উত্তেজনা বিরাজ করলেও। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ছাড়াই শেষ হয় সমাবেশ।
তবে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, সমাবেশে যোগ দিতে আসার পথে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, ফেনী মিরসরাই, সীতাকুণ্ডসহ বিভিন্নস্থানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এতে বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: পুলিশ ‘অবৈধভাবে’ বিরোধীদের তথ্য সংগ্রহ করছে: মির্জা ফখরুল
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য হাস্যকর: মির্জা ফখরুল
১১৫০ দিন আগে