পরিশোধ
বিদ্যুৎকেন্দ্রের বকেয়া পরিশোধের জন্য বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে সরকারের বন্ড চুক্তি সই
বিদ্যুৎ খাতকে স্থিতিশীল করতে বাংলাদেশ সরকার বিশেষ বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ২ হাজার ৬২ কোটি টাকার ব্যবস্থা করেছে। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বকেয়া পরিশোধের লক্ষ্যে সিটি ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংকের সঙ্গে বন্ড বিষয়ক চুক্তি করেছে সরকার।
বুধবার সচিবালয়ে বিদ্যুৎ খাতের আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে সমন্বিত এ চুক্তি সই করা হয়। সিটি ব্যাংকের অনুকূলে ১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার এবং পূবালী ব্যাংকের অনুকূলে ৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার বন্ড চুক্তি করে সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভর্তুকির টাকা দিতে সরকারের অক্ষমতার কারণে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো তাদের দেনা শোধ করতে পারছে না। যার ফলে কেউ কেউ ঋণখেলাপি হওয়ার পথে চলে গেছে।
আরও পড়ুন: রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের 'গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনি'তে রাশিয়ার রোসাটম থেকে ইউরেনিয়ামের নতুন ব্যাচ গ্রহণ
এ সংকট মোকাবিলায় সরকার ৮ শতাংশ হারে স্পেশাল বন্ড ইস্যু করছে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত রেপো রেটের সমান। ভবিষ্যতে রেপো হারের যেকোনো উত্থান-পতনের সঙ্গে একইভাবে বন্ডের সুদের হার সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হবে।
মেয়াদ শেষে সরকার সুদসহ ব্যাংকের পাওনা মিটিয়ে দেবে এবং পরে এসব বন্ড পুনরুদ্ধার করবে। সাধারণ ১৫-২০ বছর মেয়াদি বন্ডের বিপরীতে, এই বিশেষ বন্ডগুলোর সর্বোচ্চ মেয়াদ ১০ বছর, বিদ্যুৎ খাতের জরুরি প্রয়োজনেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সামিট পাওয়ার, ইউনাইটেড পাওয়ার, কনফিডেন্স পাওয়ার, বারাকা, কুশিয়ারা, ডরিন ও অ্যাক্রন পাওয়ারসহ বিদ্যুৎ খাতের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর পাওনা পরিশোধ করা হবে এই অর্থের মাধ্যমে। অর্থ বিভাগ এ খাতের বকেয়া আরও নিরসনে ব্র্যাক ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়াসহ অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে চুক্তির পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে।
চুক্তির গুরুত্ব নিয়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা আশাবাদী।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত থাকা সত্ত্বেও মেয়াদ বাড়ছে ব্যয়বহুল ভাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের
মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন ১১ নভেম্বর
সরকার তার তিন মেয়াদে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়া বাবদ ১.০৪ লাখ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে
বর্তমান সরকারের তিন মেয়াদে ৮২টি ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার বা আইপিপি এবং ৩২টি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ক্যাপাসিটি চার্জ বা ভাড়া বাবদ মোট ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: সংসদে বাণিজ্য সংগঠন (সংশোধন) বিল, ২০২৩ উত্থাপন
বিরোধীদল গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, এরমধ্যে ৮২টি আইপিপি’র মধ্যে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা এবং ৩২টি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টসকে সর্বোচ্চ ২৩৪১ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী ৮২টি আইপিপি পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং ৩২টি রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের নামের তালিকা এবং তাদের দেওয়া অর্থের একটি তালিকা দেন।
আরও পড়ুন: মামলাজট কমাতে সংসদে অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব (সংশোধন) বিল পাস
একতরফাভাবে আগামী নির্বাচন করতে আরপিও সংশোধন করেছে সরকার: গণতন্ত্র মঞ্চ
ঈদের আগেই বিজিএমইএ আওতাধীন কারখানার মার্চ মাসের মজুরি পরিশোধ: বিজিএমইএ
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) আওতাধীন দুই হাজার ১৫১টি কারখানার সবকটিই ২০২৩ সালের মার্চ মাসের মজুরি পরিশোধ করেছে।
এর মধ্যে দুই হাজার ১৪৫টি কারখানায় (৯৯ দশমিক ৭২ শতাংশ) উৎসব বোনাস দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ।
বাকি ছয়টি কারখানায় গতকালকের মধ্যে বোনাস পরিশোধের কাজ শেষ করার কথা ছিল।
এদিকে এক হাজার ৭৬৮টি কারখানা (৮২ দশমিক ১৯ শতাংশ) এপ্রিল মাসের অগ্রিম বেতন দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বৃদ্ধাশ্রমে ইফতার কর্মসূচির বাজেটে দান করবে বিজিএমইএ
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও শ্রমিকদের বেতন দিয়ে ঈদুল ফিতরের আনন্দ নিশ্চিত করার প্রচেষ্টার জন্য পোশাক শিল্পের সকল উদ্যোক্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
বিজিএমইএ জানিয়েছে, তারা প্রায় ৪৫০টি পোশাক কারখানাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণের আওতায় এনেছে, যারা তাদের শ্রমিকদের বেতন দিতে অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে এবং তাদের সমস্যা সমাধানে সহায়তা করেছে।
ঈদের ছুটি প্রসঙ্গে বিজিএমইএ জানায়, সরকার ও ব্যবসায়ী সংগঠনের অনুরোধে পোশাক মালিকরা পর্যায়ক্রমে ঈদ উপলক্ষে শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া শুরু করেছেন, যা ১৬ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে।
ফারুক হাসান ছুটির দিনে ব্যাংক খোলা রাখা এবং তৈরি পোশাক কারখানায় বেতন-বোনাস প্রদানের ব্যবস্থা করায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের ধন্যবাদ জানান।
তিনি বাস, ট্রেন ও লঞ্চে যাতে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী বহন করতে না পারে সেজন্য নজরদারি বাড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এবং ঈদযাত্রায় অপ্রীতিকর দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রাকে যাতে যাত্রী পরিবহন না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
তিনি পোশাক শ্রমিকরা যাতে আনন্দের সঙ্গে ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, নৌপরিবহন মন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ এবং সাংবাদিকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে হাইকমিশনের সহায়তা চায় বিজিএমইএ
মোবাইল ব্যালেন্স থেকে পরিশোধ করা যাবে সরকারি সেবার বিল
গ্রাহকরা নিজেদের মোবাইল ব্যালেন্স ব্যবহার করে এখন থেকে ৩২টি সরকারি সেবার বিল পরিশোধ করতে পারবেন।
সম্প্রতি নিরাপদ ও সুরক্ষিত পেমেন্ট পরিশোধের মাধ্যম নিয়ে কাজ করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে স্মার্ট বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি পার্টনার গ্রামীণফোন ও অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)। ফলে বিভিন্ন সরকারি সেবার পেমেন্ট ‘ডিরেক্ট অপারেটর বিলিং (ডিওবি)’ এর অন্তর্ভুক্ত হবে।
ডিজিটাল মাধ্যমে গ্রহণ করা যায় এমন সেবা এবং ইউটিলিটি বিলসহ বিভিন্ন ধরনের সেবার বিল পরিশোধের সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি হলো ডিরেক্ট অপারেটর বিলিং (ডিওবি)।
এ পদ্ধতিতে মোবাইল গ্রাহকরা তাদের মোবাইল ব্যালেন্স ব্যবহার করে কয়েকটি সহজ ধাপের মাধ্যমে বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করতে পারবেন। ফলে এখন সহজে ও ঝামেলা ছাড়াই সরকারি সেবা গ্রহণ করা যাবে।
এক্ষেত্রে, বিল পরিশোধে গ্রাহকদের প্রত্যয়ন.জিওভি.বিডি পোর্টালের একপে পেমেন্ট গেটওয়েতে মোবাইল ব্যালেন্স নির্বাচন করতে হবে। মোবাইল নম্বর ও ওটিপি দেয়ার পরে গ্রাহকের মোবাইল থেকে সার্ভিস ফি কেটে নেয়া হবে। এ সেবা ব্যবহারে প্রথমেই গ্রাহককে এনআইডি ভেরিফাই করার মাধ্যমে পোর্টালে প্রোফাইল তৈরি করতে হবে।
আরও পড়ুন: উন্নত দেশগুলোকে প্রতিরক্ষা ব্যয়ের ১০% জলবায়ু তহবিলে বরাদ্দ করা উচিত, মোমেনের প্রস্তাব
এটুআই’র আইসিটি বিভাগের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ একপে’তে সকল ব্যাংক ও এমএফএস সেবা যুক্ত করা হয়েছে, যেনো ২৩টি ইউটিলিটি বিলসহ বিভিন্ন পাবলিক সেবার বিল পরিশোধে পিটুজি (পারসন টু গভর্নমেন্ট) পেমেন্ট নিশ্চিত করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত দশকে এমএফএস সেবার প্রবৃদ্ধি ও এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা সম্প্রসারিত হলেও প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ (বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে) মানুষ ব্যাংকিং সুবিধার বাইরে রয়েছেন। সরকারি ইকোসিস্টেমে পিটুজি পেমেন্টের অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধিতে আমরা মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে নিয়ে ডিরেক্ট অপারেটর বিলিং (ডিওবি) সুবিধা চালু করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, যা সময় ও ব্যয় সাশ্রয় করবে এবং ঝামেলা কমাতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখবে। আমরা নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধিতে আরও বেশি সংখ্যক সরকারি সেবার জন্য এ সুবিধা চালু করতে আগ্রহী।’
গ্রামীণফোনের সিডিও সোলায়মান আলম বলেন, ‘এ সেবার মাধ্যমে সবাই যেনো আমাদের দেশজুড়ে বিস্তৃত নেটওয়ার্ক কাভারেজের মাধ্যমে সহজে সরকারি সেবা গ্রহণের সুযোগ পায়, তা নিশ্চিতেই আমরা কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা এবং আমাদের গ্রাহকদের জীবন সহজ করে তুলতে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করি, যা আমাদের মানুষের ক্ষমতায়ন ও সবাইকে তাদের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে যুক্ত করার লক্ষ্যপূরণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। এ উদ্যোগকে সম্ভব করে তোলার ক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহযোগীতার জন্য আমি এটুআই এর প্রতি কৃতজ্ঞ।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোতে ৩০০ বিলিয়ন ডলার জরুরি তহবিল ধার দিল ফেডারেল রিজার্ভ
সঠিক তদন্তের পর বীমার দাবি পরিশোধ নিশ্চিত করুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীমা খাতের অসঙ্গতি রোধে যথাযথ তদন্ত করে বীমা দাবি পরিশোধ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জাতীয় বীমা দিবস-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। ‘বীমায় সুরক্ষিত থাকলে, এগিয়ে যাবো সবাই মিলে’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘নিশ্চিত করুন যে আপনি যথাযথ তদন্ত ও পরীক্ষার পরে দাবির অর্থ প্রদান করছেন। দাবির অর্থ প্রদানে অসঙ্গতির অভিযোগ রয়েছে, যেখানে অসাধু ব্যক্তিরা তাদের বীমার আইটেমের বিপরীতে মোটা অংকের অর্থ দাবি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বীমা খাতের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের প্রতি আমার অনুরোধ, যে কোনো ঘটনায় প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য তদন্ত নিশ্চিত করতে সজাগ থাকুন।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির বাড়িতে ১৬ পদের মাছে আপ্যায়িত প্রধানমন্ত্রী
তিনি কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির চাপের কাছে নতি স্বীকার করে যথাযথ তদন্ত ছাড়া কোনো টাকা না দেয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বীমার সঙ্গে জড়িত সকল ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষকে আন্তরিকভাবে এই খাতের বিভিন্ন অসঙ্গতি খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দয়া করে কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। অনেক মানুষ আমাদের কাছে, আমার কাছে, মন্ত্রীদের কাছে বা অন্য কোনো ব্যক্তির কাছে আসে আনুকূল্য পাওয়ার জন্য। কিন্তু প্রকৃত ক্ষতিটা আপনাদেরই খুঁজে বের করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, যে কোনো ব্যক্তি তার বীমার পণ্যের জন্য মোটা অংকের অর্থ দাবি করতে পারেন, তবে যথাযথ তদন্ত ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘কেন তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না? তাহলে আমার কি মনে করা উচিত যে তদন্তকারীরাও এর সুবিধাভোগী? আমি সন্দেহ করি যে তারাও এতে জড়িত আছে।’
তিনি উল্লেখ করেন যে তিনি চান না বীমা সংস্থাগুলো খারাপ নাম অর্জন করুক। কারণ তিনিও এই পরিবারের সদস্য। তিনি বলেন, ‘আমাকে এটা রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।’
আইডিআরএ (বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস কে কবির হোসেন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সেলিম উল্লাহ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে দেশের বীমা খাতের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: জাতীয় উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিন মোবাইল কোম্পানিকে পরিশোধ করতে হবে আড়াই হাজার কোটি টাকা
তিন মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন, বাংলালিংক ও রবির কাছে পাওনা দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এছাড়া সরকার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এই টাকা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: বিচারকের বিরুদ্ধে অশ্লীল স্লোগান: ২১ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব
মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রায়ে গ্রামীণফোনের এক হাজার ৪০০ কোটি, রবির ৫০০ কোটি ও বাংলালিংকের ৬৫০ কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধের আদেশ দেয়া হয়।
আদালতে সরকারের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, বিটিআরসির পক্ষে ব্যারিস্টার রেজা-ই রাকিব ও মোবাইল কোম্পানির পক্ষে ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান শুনানি করেন।
আদালতের আদেশের বিষয়টি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংকের জন্য সরকার যে তরঙ্গ বরাদ্দ করে তার ওপর চার্জ করা হয়। এর সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত করা হয়। এই ভ্যাটযুক্ত করার কারণে তারা (তিন কোম্পানি) হাইকোর্টে এসে মামলা ফাইল করে। হাইকোর্ট তাদের রিট খারিজ করে দেয়। এর বিরুদ্ধে তারা আপিলে আবেদন করা হলে আদালত শুনানি নিয়ে তাদের আপিল আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। এর ফলে এখন এসব প্রতিষ্ঠান থেকে এনবিআর এবং বিটিআরসি ভ্যাটসহ তরঙ্গ বরাদ্দ ফি হিসেবে পাওনা আদায় করবে।
এর আগে, ২০১২ সালে সরকার বেশি ভ্যাট-ট্যাক্স নিচ্ছে মর্মে হাইকোর্টে রিট করে তিন মোবাইল অপারেটর কোম্পানি। তবে ওই তিন কোম্পানির রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
এরপর কোম্পানিগুলো আপিল বিভাগে আবেদন করে। দীর্ঘ শুনানি শেষে মঙ্গলবার আপিল বিভাগও তাদের আবেদেন খারিজ করে দেয়।
আরও পড়ুন: এফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেডের এমডির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর পরোক্ষ করের বোঝা কমাতে সংস্কার আবশ্যক: বক্তারা
নিম্ন আয়ের গোষ্ঠীর জন্য পরোক্ষ করের বোঝার কারণে বাংলাদেশে আয় বৈষম্য বাড়ছে, অন্যদিকে ধনী ব্যক্তিরা তাদের আয় ও সম্পদের তুলনায় কম পরিশোধ করছে।
বুধবার রাজধানীর ব্র্যাক ইনে আয়োজিত ‘বৈষম্য মোকাবিলা এবং রাজস্ব বৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষ করের ব্যবহার’ শীর্ষক নীতিগত সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নতুন রাজনৈতিক জোটের ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট’ আত্মপ্রকাশ
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) এর চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক এ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সংলাপে বক্তব্য দেন, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আবদুল মজিদ, বিসিএস (ট্যাক্স) একাডেমির মহাপরিচালক এম এম ফজলুল হক, ঢাবির অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ, অর্থ বিভাগের (বাজেট) যুগ্ম সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, ইআরডি যুগ্ম সচিব মো. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. রাজ্জাক মূল প্রবন্ধে ব্যাখ্যা করেন যে একটি অন্যায্য কর ব্যবস্থার কারণে উৎপাদন, কৃষি ও অন্যান্য খাতে প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও সমাজে আয় বৈষম্য বাড়ছে।
দেশের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে কর ব্যবস্থার সংস্কার না হলে এই আয় বৈষম্য আরও বাড়বে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য অনেক অর্থনীতি ক্ষুদ্র জিডিপির সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশ তার রাজস্বের মাত্র ৩৫ শতাংশ আয় করে প্রত্যক্ষ কর থেকে। যার ৬৫ শতাংশ অপ্রত্যক্ষ কর। অন্যান্য দেশের মতো দেশের (বাংলাদেশ) অর্থনীতির আয়তন বিবেচনা করে এটি সরাসরি কর থেকে ৭০ শতাংশ রাজস্ব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
ড. রাজ্জাক বলেন, সম্প্রতি এনবিআর মোট রাজস্বের প্রত্যক্ষ করের অংশ ৩৫ থেকে ৭০ শতাংশে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে। যা একটি স্বাগত উদ্যোগ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চালিত করবে এবং জনসেবা প্রদানে সরকারের প্রয়োজনীয় সক্ষমতা জোরদার করবে।
তবে লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বলে জানান তিনি।
আবদুল মজিদ বলেন, এনবিআরকে সরকারি সংস্থা নয়, রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই এনবিআরকে সরকারের ওপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। বরং, এটি রাষ্ট্রের পক্ষে একটি স্বাধীনভাবে পরিচালিত হওয়া উচিত।’
তিনি কর ব্যবস্থা ও এনবিআর সংস্কার করে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ওপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি শুরু করেছে টিসিবি
সাংবাদিকদের আয়কর কর্তৃপক্ষকেই পরিশোধ করতে হবে: হাইকোর্ট
সংবাদপত্রের সাংবাদিক ও কর্মচারীদের নবম ওয়েজবোর্ডের গ্র্যাচুইটি ও আয়কর সংক্রান্ত মস্ত্রিসভার সুপারিশ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এতে ‘আয়কর’ ও ‘আনুতোষিক’ সংক্রান্ত দুটি সুপারিশের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রবিবার রায় দেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি সোহরাওয়ারদীর বেঞ্চ।
এর ফলে সাংবাদিক ও কর্মচারীদের আয়কর আগের মতোই কর্তৃপক্ষকে পরিশোধ করতে হবে।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কাজী আকতার হামিদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী দিদারুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। পরে আইনজীবী দিদারুল আলম জনান, এ রায়ের ফলে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সাংবাদিক-কর্মচারীদের আয়কর আগের মতোই মালিকপক্ষকে দিতে হবে। আর বছরে মূল বেতনের সমান দুটি গ্র্যাচুইটি পাবেন সাংবাদিক-কর্মচারীরা।
আরও পড়ুন: বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণ: খুলনার বার সমিতির সভাপতিসহ ৩ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব
২০১৮ সালের ২৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হককে প্রধান করে ১৩ সদস্যের নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করা হয়। পরে বিচারপতি নিজামুলহক ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কাছে সংবাদকর্মীদের বেতন-ভাতা সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন। এরপর সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে আহ্বায়ক করে ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি মন্ত্রিসভায় এ নবম ওয়েজ বোর্ড রোয়েদাদ বাস্তবায়ন সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। যাচাই-বাছাইয়ের পর ২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা করে সরকার।
সে প্রজ্ঞাপনের সপ্তম অধ্যায়ের ৩ নম্বর শর্তে বলা আছে, ‘সকল শ্রেণির সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্মরত সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক এবং প্রশাসনিক কর্মচারীদের বেতনের ওপর আরোপিত আয়কর সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদেয় হবে। ’
একই অধ্যায়ের ৭ নম্বর শর্তে বলা হয়েছে, ‘সকল শ্রেণির সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্মরত সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক এবং প্রশাসনিক কর্মচারীরা প্রত্যেক বছরে অথবা তার অংশ বিশেষ ছয় মাস বা এর অধিক সময় চাকরির জন্য সর্বেশেষ প্রাপ্ত বেতনের ভিত্তিতে নির্ধারিত দুই মাসের মূল বেতনের সম পরিমাণ অর্থ গ্র্যাচুইটি হিসেবে প্রাপ্য হবেন। ’
অথচ প্রজ্ঞাপনে ‘সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, কার্যকরণ ও প্রয়োগ’ শিরোনামের দ্বাদশ অধ্যায়ের ৪ নম্বর শর্তে মন্ত্রীসভা কমিটির সুপারিশ তুলে ধরে বলা হয়, সাংবাদিক, কর্মচারীদের নিজেদের আয় থেকে আয়কর পরিশোধ করবেন এবং বছরে মূল বেতনের সমান একটি গ্র্যাচুইটি পাবেন।
নবম ওয়েজবোর্ডের মন্ত্রীসভা কমিটির এই সুপারিশ চ্যালেঞ্জ করে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুজ্জামান। তখন রিটটির প্রাথমিক শুনানির পর ২৫ নভেম্বর আদালত রুল জারি করেন। রুলে আয়কর ও গ্র্যাচুইটি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়েছেন। মন্ত্রী পরিষদ সচিব, তথ্য সচিব ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রুলের জাবাব দিতে বলা হয়। সে রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর সুপারিশ দুটিকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: বিপিসির এসএওসিএল-এ ৪৭২ কোটি টাকা অনিয়মের ব্যাখ্যা চেয়েছে হাইকোর্ট
চট্টগ্রামে কুকুর লেলিয়ে হিমাদ্রী হত্যা: ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড হাইকোর্টে বহাল