শিল্পবিপ্লব
দেশে ৫জি চালুর পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে: টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেছেন, দেশে ৫জি সেবা চালু করার জন্য দেশে যে পরিবেশ থাকা দরকার, সেটি ইতোমধ্যেই নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের মহাসড়কের নাম ৫জি। ৫জি সেবা চালু করার জন্য দেশে যে পরিবেশ থাকা দরকার সেটি ইতোমধ্যেই নিশ্চিত করা হয়েছে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ (টিআরএনবি) এবং রবির যৌথ উদ্যোগে ‘৫জি প্রযুক্তি: সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক এক গোলেটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে ৫জি সেবাকে ঘিরে টেলিযোগাযোগ খাতের সকল অংশীদারদের নিয়ে এ আয়োজন সত্যিই সময়োপযোগী। ৫জি'র ব্যবসায়িক দিকের সঙ্গে সঙ্গে তা যেন সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার বাস্তব সমস্যা সমাধান করতে পারে সেদিকেও আমাদের প্রত্যেককে সচেষ্ট হতে হবে। এটি করা সম্ভব হলেই ৫জি বাণিজ্যিকভাবে সফল হবে।’
আরও পড়ুন: মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান বাড়ানোর আহ্বান মোস্তফা জব্বারের
মোস্তফা জব্বার বলেন, মোবাইল ফোন অপারেটর রবির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান টিআরএনবি সভাপতি রাশেদ মেহেদী সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন টিআরএনবির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সন্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’র সহযোগী অধ্যাপক ড. খালেদ মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, ‘৫জি চালুর বিষয়ে আমরা সবাই মানসিকভাবে প্রস্তুত। এখন প্রয়োজন একটি সমন্বিত বাজার সমীক্ষা করা যাতে আমরা বুঝতে পারি কীভাবে আমরা ৫জি সেবা বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে পারি, অ্যামটব এখানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।’
বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ বলেন, ‘৫জি স্পেকট্রাম রোলআউট করতে হবে, আমাদের ৭০০ ও ৩.৫ স্পেকট্রাম রেডি আছে। নীতিমালা আছে, প্রয়োজনে সবার কল্যাণে নীতিমালা পরিবর্তন করা হবে। স্পেকট্রাম শেয়ার করার প্রয়োজন হলেও তার উদ্যোগ নেয়া হবে। মানুষ কেন ৫জি নেবে কতটুকু লাভবান হবে এসব বিষয়ে সার্ভে করার প্রয়োজন রয়েছে। নেটওয়ার্কগুলো কোথায় কোথায় প্রয়োজন আছে, গ্রাহকরা ৫জি সেবায় কতটা উপকৃত হবেন তা স্টাডি করে বুঝতে হবে।’
রবি’র চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, ‘আমরা ৫জি নিয়ে প্রস্তুত আছি। নিয়ন্ত্রক কমিশনের দিক নির্দেশনায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। খাদ্য-বস্ত্রের পাশাপাশি এখন সবাই চায় কানেকটিভিটি। দ্রুত ৫জি কানেকটিভিটি দেয়ার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বৈদেশিক মুদ্র্রায় বিপুল পরিমাণ সফটওয়্যার এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমদানি কমিয়ে স্বনির্ভর হতে আমাদের নিজস্ব মেধা কাজে লাগানোর জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।’
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে ফাইভ-জি চালু হবে: মোস্তফা জব্বার
রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডে (বিটিসিএল)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. রফিকুল মতিন বলেন, ‘আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোকে কানেক্ট করছি। আমরা চেষ্টা করছি ৫জি যখন আসবে ওই সংযোগ যেন কাজে লাগাতে পারি। সব অপারেটরেদর সঙ্গে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি এবং অবকাঠামো শেয়ারিং করা হলে আমরা এগিয়ে যাব।’
গ্রামীণফোনের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার হোসেন সাদাত বলেন, ‘৫জির শুরুতে আমাদের ইকোসিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে, টাওয়ারগুলোতে প্রচুর বিদ্যুৎ লাগবে। আমরা বিটিআরসির নির্দেশনায় কাজ করছি। ৭০টি দেশ ৫জি চালুর কাজ শুরু করেছে। আমাদেরও পরীক্ষামূলকভাবে ৫জি সেবা শুরু করতে হবে।’
বাংলালিংক’র রেগুলেটরি অপারেশন’র ডেপুটি ডিরেক্টর মুখলেসুর রহমান বলেন, ‘অনেক কিছুই আমাদের ৫জি নিয়ে শিখতে হচ্ছে। সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করে অভিজ্ঞতা নিয়ে ৫জি শুরু চালু করতে হবে।’
টেলিটকের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (৫জি) রেজাউল করিম রিজভী বলেন, ‘৫জি নিয়ে এমন একটি আলোচনা সভা আয়োজন করার জন্য আমি টিআরএনবি ও রবিকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা ইতোমধ্যে ৫জি নিয়ে কাজ শুরু করেছি যার ধারাবাহিকতায় কিছুদিন আগে আমরা সফলভাবে ফাইভজি ট্রাইল পরিচালনা করেছি। এই আলোচনার ফলে এই খাতে উন্নতির নতুন নতুন ধারা উদ্ভাবন করতে পারবো যা ৫জি বাস্তবায়নে আমাদের আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) ইমদাদুল হক বলেন, ‘৫জি প্রত্যান্ত অঞ্চলে পৌঁছে দিতে ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক সহজলভ্য ও অ্যাকটিভ শেয়ারিং থাকতে হবে।’
অনুষ্ঠানে অ্যামটব মহাসচিব এস এম ফরহাদসহ টেলিযোগাযোগ খাত সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে দেশের সার্বিক উন্নয়ন: মোস্তফা জব্বার