আওয়ামী লীগ
বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের পরিণতি: ফখরুল
সরকারের দুঃশাসনের কারণেই বাংলাদেশের ওপরে ‘গণতান্ত্রিক বিশ্বের নানা চাপ’ দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র ক্ষমতার জন্যে তারা (সরকার) বাংলাদেশের রাষ্ট্রের মানুষে যে আকাঙ্খা ছিলো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, গণতান্ত্রিক সমাজ; তার সব কিছু তারা চুরমার করে দিয়েছে। যার ফলে কি হয়েছে আমরা সব জানি। আজকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি দেয়, নিষেধাজ্ঞা দেয়-এটা আমাদের জন্য খুব আনন্দের কথা নয়, লজ্জার কথা… যে আমরা একটা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের আজকে আমাদের ওপরে আরেকটা দেশ থেকে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। কেনো?’
সোমবার বিকালে এক সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
গুলশানে হোটেল লেকশোরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিএনপির উদ্যোগে ‘বাংলাদেশে বহুদলীয় প্রবর্তক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক এই সেমিনার হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান।
ফখরুল বলেন, ‘কারণ এই আওয়ামী লীগ, এই আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকার আজকে দেশকে এমন জায়গা নিয়ে গেছে তাদের দুঃশাসনের কারণে, তাদের দুর্ব্যৃত্তায়নের কারণে, তাদের লুটের কারণে যে আজকে একটা এই ধরনের ব্যবস্থা ছাড়া গণতন্ত্রে ফিরে আসার আর কোনো পথ আন্তজাতিক ভাবে গণতান্ত্রিক বিশ্ব দেখতে পারছে না।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী নয়, জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে তারা যুক্তরাষ্ট্রে যাবে কি না: বিএনপি
‘জনগণকে জাগিয়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন একমাত্র একটাই পথ আবার জনগণকে জাগিয়ে তুলতে হবে, যেভাবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব জাগিয়ে তুলেছিলেন মানুষকে যুদ্ধের জন্যে, যেভাবে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন, যেভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গ্রামেগঞ্জে চারণ কবির মতো গান গেয়ে মানুষকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নামিয়েছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে সেই একইভাবে আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব বিদেশ থেকে যিনি ১০ দফা দিয়েছেন, ২৭ দফা দিয়েছেন রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সেই দাবিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে সংগঠিত করে, রাজনৈতিক দলগুলোকে সংগঠিত করে গণতন্ত্রকে এখানে আবার প্রতিষ্ঠা করার জন্য, তাকে এখানে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেওয়ার জন্য গণতন্ত্রমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদেরকে একটা সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে… এই শাহাদাত বার্ষিকীকে এই হোক শপথ।’
দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সেমিনার কমিটির আহ্বায়ক ইসমাইল জবিউল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় এই সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, অধ্যাপক লুতফর রহমান বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের অসম্মানজনক ভিসা নীতির জন্য সরকার দায়ী: ফখরুল
মার্কিন ভিসা নীতি: বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা বিএনপির
বাজেট গরিববান্ধব গণমুখী, সমালোচনা গৎবাঁধা: তথ্যমন্ত্রী
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত বাজেটকে গণমুখী ও গরিববান্ধব বলে অভিহিত করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
একইসঙ্গে তিনি বলেন, বাজেটের সমালোচকদের সমালোচনা বরাবরের মতোই গৎবাঁধা ও গতানুগতিক। অনেকে বাজেট ভালোভাবে না দেখেই তাড়াহুড়া করে সমালোচনায় ব্যস্ত।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
ড. হাছান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৫তম বাজেট এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০তম এই বাজেট ২০০৮-৯ সালের তুলনায় প্রায় নয়গুণ বড় এবং পিপিপিতে (পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি) ২০০৯ সালের একশ বিলিয়ন ডলার জিডিপির তুলনায় এখনকার জিডিপি এক ট্রিলিয়ন প্লাস ডলার, অর্থাৎ প্রায় দশগুণ বড়, যা নিঃসন্দেহে দেশের অগ্রগতি সমৃদ্ধির পরিচায়ক।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বময় মন্দা, ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার সংকটের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে শৈথিল্য আসায় বাজেট প্রণয়ন বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো তারপরও এবারের বাজেট গত বছরের তুলনায় প্রায় ১ লক্ষ হাজার কোটি টাকা বেশি।
প্রস্তাবিত এ বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আরও মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে আনার এবং এ খাতে বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই বাজেটের সবচেয়ে বড় উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, এই অর্থ বছরেই প্রথম সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তাপ্রসূত। কোনো রাজনৈতিক দল এ ধরণের সার্বজনীন পেনশন চালুর প্রস্তাব দেয়নি। আপনারা বিএনপির দাবি-দাওয়া জানেন। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য, তার ও তারেক জিয়ার শাস্তি-মুক্তির বাইরে জনমানুষ নিয়ে তাদের কোনো দাবি থাকে না।’
আরও পড়ুন: অনলাইন নিউজ পোর্টাল পরিচালনায় শৃঙ্খলা আনার পরিকল্পনা করছে সরকার: তথ্যমন্ত্রী
১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সের যে কেউ দশ বছরের জন্যে চাঁদা দিয়ে পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আসতে পারবে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পঞ্চাশের বেশি বয়স হলেও দশ বছর চাঁদা দিয়ে পেনশনের সুযোগও রয়েছে।
বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন
আয়কর নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, 'বাংলাদেশের কর ও জিডিপি'র অনুপাত দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। গত ১৪ বছরে দেশের জিডিপি প্রায় দশগুণ, বাজেট প্রায় ৯ গুণ বৃদ্ধি পেলেও আয়কর দেওয়ার হার বেড়েছে মাত্র ৩ গুণ। ২০০৯ সালে ১১ লক্ষ মানুষ আয়কর দিতো, গত বছর ২৯ লক্ষ মানুষ আয়কর দিয়েছে। অথচ দেশে অন্তত ২ কোটি মানুষ আয়কর দিতে সক্ষম। কিন্তু মানুষ কর দেয় না। তাই করের আওতা বাড়ানো অযৌক্তিক নয়।'
বাজেট বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর নয়
'আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে এ বাজেট লুটপাটের'- বিএনপির এমন সমালোচনা খন্ডন করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, 'বিএনপি'র অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে বাজেট দিতে প্রতিবার বাজেটের আগে প্যারিস কনসোর্টিয়ামে ছুটে যেতেন সাহায্যের জন্যে। বর্তমানে বাংলাদেশের বাজেট কোনভাবেই বিদেশি সাহায্যনির্ভর নয়। এ বাজেটে ১ লাখ কোটি টাকার কিছু বেশি বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে। বিএনপি লুটপাটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, তারা পরপর পাঁচবার দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল। তাদের মুখে লুটপাটের অভিযোগ শুনলে হাসি পায়।'
পাণ্ডিত্য ফলাতে গিয়েই সিপিডির সমালোচনা
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বাজেটকে বাস্তববিবর্জিত বলেছে, এ নিয়ে প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, 'গত ১৪ বছরে সিপিডি বাজেটের প্রশংসা করতে পারেনি। এবছর তো বাজেট প্রস্তাব অধিবেশন চলমান থাকা অবস্থায়ই তারা বলেছে, এই বাজেট উচ্চাভিলাষী, বাজেট বাস্তবায়ন হবে না।'
তারা বলেছে, ‘অথচ বাংলাদেশের বাজেট বাস্তবায়নের গড় হার ৯৭ শতাংশ। ডলারের মূল্য না বাড়লে আমাদের মাথাপিছু আয় তিন হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতো। এ সময় দেশের জিডিপি বেড়েছে, দারিদ্র্য ৪১ শতাংশ থেকে কমে ১৮ শতাংশে নেমে এসেছে। এগুলো তাদের চোখে পড়ে না। আসলে সিপিডিকে তাদের পাণ্ডিত্য দেখাতে হয় এবং ভুল ধরাটাই তাদের পেশা। এভাবেই তারা নানা জায়গা থেকে ফান্ড পায়। এ কারণেই তারা প্রশংসা করতে পারে না।'
ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের চলতি বাজেট নিয়ে সমালোচনার প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকবে, ইতিবাচক সমালোচনাকে আমরা সবসময় স্বাগত জানাই।
আরও পড়ুন: সরকারের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ ও মানবিক রাষ্ট্র: তথ্যমন্ত্রী
মার্কিন ভিসা নীতি বিএনপির ওপরই বড় চাপ তৈরি করেছে: তথ্যমন্ত্রী
জ্বালানি তেলে সরাসরি ভর্তুকি দেওয়া হয়নি: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি তেলে সরকার সরাসরি কোনো ভর্তুকি দেয় না।
বুধবার সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে ২০২১-২২ অর্থবছরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, এমনকি সরকার দাম সমন্বয় করার পরেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) প্রায় ২ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা লোকসান করেছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে দিনাজপুরে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন: নসরুল হামিদ
তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছ থেকে কোনো ভর্তুকি না নিয়ে বিপিসি তার আগের লাভ থেকে এই ক্ষতি করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০২২-২৩ অর্থ বছরেও বিপিসির ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বিপিসি এই অর্থ বছরেও সরকারের কাছ থেকে কোনো ভর্তুকি পায়নি, এবং এটি তার আগের লাভ থেকে লোকসান বহন করছে।
চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে নসরুল বলেন, গ্যাস খাতের উন্নয়নে গত ১৪ বছরে সাতটি বিদেশি কোম্পানি বাংলাদেশে ৩ হাজার ৪৮৩ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
আরও পড়ুন: ইলিশা-১ দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র: নসরুল হামিদ
অনেক বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানও অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করছে: নসরুল হামিদ
সংঘর্ষের মামলায় ৩ মাসের আগাম জামিন পেলেন নিপুন রায়
গত ২৬ মে কেরাণীগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি নেতা নিপুন রায় চৌধুরীকে তিন মাসের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ মামলায় বিএনপি নেতার জামিন চেয়ে করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. হাবিবুল গণি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আবেদনের শুনানিকালে নিপুনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী ও ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল।
আগের দিন মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হন নিপুন রায়। তিনি রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গ্রেপ্তার এড়াতে হাসপাতাল থেকে সরাসরি হাইকোর্টে আসেন তিনি।
সংঘর্ষে কয়েক ডজন আহত হওয়ার একদিন পর গত ২৭ মে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানায় জিনজিরা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সুমন মিয়া বাদী হয়ে মামলা করেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরীসহ মোট ১০৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপির পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ
খাগড়াছড়িতে আ.লীগের সঙ্গে সংঘর্ষে বিএনপির ৫ নেতাকর্মী আহত
রাজশাহীতে বিএনপির কার্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ, পদযাত্রা পণ্ড
সুষ্ঠু নির্বাচনে ব্যাপক পরাজয়ের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার: গণতন্ত্র মঞ্চ
কয়েকটি বিরোধী দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি এমন এক সময়ে বর্তমান সরকারকে নাড়িয়ে দিয়েছে,যখন তারা আরেকটি অগ্রহণযোগ্য উচ্ছ্বাস পোষণ করে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে।
রবিবার রাজধানীর মালিবাগে রোডমার্চ কর্মসূচির আগে তারা আরও বলেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ব্যাপক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
তারা বলেন, বর্তমান সরকার ২০১৪ সাল থেকে জোর করে ক্ষমতায় রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি শুধু এই সরকারের কারণেই দেশের মানুষের মুখে চুন ঢেকে দিয়েছে।
জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, এই ভিসা নীতি সরকারের নীতিনির্ধারকদের হৃদয়কে নাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি 'প্রহসনমূলক' নির্বাচন করতে চায়।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, 'আওয়ামী লীগের নেতারা এখন বুকে দুঃখ-বেদনা নিয়ে হাসছেন এবং বলছেন,এই ভিসা নীতি বিরোধীদের জন্য। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিরোধী দলের অংশগ্রহণ ছাড়াই আওয়ামী লীগের প্রার্থী ভরাডুবির সম্মুখীন হয়েছেন।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে আ. লীগ সরকার বাধা: বিএনপি নেতা মোশাররফ
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরসহ ১৪ দফা দাবিতে মালিবাগ রেলগেট থেকে বাড্ডা অভিমুখে পদযাত্রা করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
নেতারা আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের ৭ মাস আগে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, কারণ তারা উপলব্ধি করতে পারে যে আওয়ামী লীগ সরকার আবারও ভোট জালিয়াতির চেষ্টা করছে। 'বিশ্বের কোনো দেশই এখন এই সরকারকে বিশ্বাস করে না'
তারা বলেন, ১৪ দফা দাবি আদায়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আগামী ৪ থেকে ৭ জুন ঢাকা থেকে দিনাজপুর অভিমুখে রোডমার্চ করবে জোট। আগামী ৪ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে এই রোড মার্চ শুরু হবে। ঈদুল আজহার আগে আন্দোলনকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আমরা ধারাবাহিকভাবে আরও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবো।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তাদের চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। 'আমি বিশ্বাস করি আমরা বিজয়ী হব'
মার্কিন ভিসা নীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের কারচুপির চেষ্টা ব্যর্থ করতে গোপনে কাজ চলছে।
মান্না বলেন, ভোট কারচুপি, জালিয়াতি, প্রতারণা ও দমনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। আপনাদের (সরকারকে) এখনই যেতে হবে।
আরও পড়ুন: গাজীপুর নির্বাচন দেশের প্রকৃত ভোটের চিত্র তুলে ধরে: খসরু
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বর্তমান সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির কারণে বিরোধী দলগুলো বিপাকে পড়েছে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের করা মন্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ভেসে যাবে। দেশের জনগণকে বোকা মনে করে তারা এ ধরনের মন্তব্য করছে।
শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৮ সাল থেকে দেশে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করায় বাংলাদেশ গত ১৪ বছরে উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠনকারী তার দল আওয়ামী লীগকে সাফল্যের কৃতিত্ব দেন তিনি।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদানের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ সালে জনগণের ম্যান্ডেট পাওয়ার পর তার সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এর ফলে আমরা দারিদ্র্যের হার ও মাতৃমৃত্যু হ্রাস, সাক্ষরতা ও আয়ু বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি। সুতরাং অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে জনগণের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ টেকসই পরিবেশ প্রয়োজন এবং তা সবাইকে মনে রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন আ. লীগ সরকারের অধীনেই হবে: প্রধানমন্ত্রী
বৈশ্বিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার নিন্দা জানিয়ে তিনি ভারত ও মিয়ানমারের মতো সংলাপের মাধ্যমে সব বিরোধ নিষ্পত্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ‘এখন কেন এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা (চলছে), অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য যে অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে তা ক্ষুধার্ত শিশু ও মানুষের জন্য কেন ব্যবহার করা হবে না। এই অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য সারা বিশ্বে হাজার হাজার শিশু ও নারী মানবেতর জীবনযাপন করছে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের ১০ লাখেরও বেশি নাগরিক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, যারা ১৯৭১ সালে নিপীড়নের শিকার হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি ১৯৭১ সালে বাঙালিদের গণহত্যার কথা স্মরণ করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্বে শান্তি ফিরে আসুক। কোনো ধরনের অস্থিরতা (পৃথিবীতে) থাকবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি তারাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে। প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের তাদের (স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি) বাধা অতিক্রম করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে কোনো ধরনের অস্থিরতা ও সংঘাত চায় না।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বড় আকারের বিনিয়োগ করতে চায় সৌদি আরব: প্রধানমন্ত্রীকে দেশটির দুই মন্ত্রী
কেরাণীগঞ্জে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে ডজনখানেক আহত
ঢাকার কেরাণীগঞ্জে শুক্রবার বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েক ডজন লোক আহত হয়েছে। এ সহিংসতার জন্য দুইপক্ষ পাল্টিাপাল্টি দোষারোপ করেছে।
এদিন কেরাণীগঞ্জে বিরোধী দলের কর্সূচিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষে নিপুন রায় চৌধুরীসহ দলের অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন।
শুক্রবার বিকালে কেরাণীগঞ্জের জিনজিরা এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা আজহার বাঙ্গালীর নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল সমাবেশ চলাকালে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা চালায় বলে দাবি করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন- কেরাণীগঞ্জ যুবদলের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মামুন, ঢাকা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাজ্জেদ হোসেন।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে বিএনপির কার্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ, পদযাত্রা পণ্ড
আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগসহ দলের ১০ দফা দাবি ঘরে তুলতে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
অন্যদিকে, আজহার বাঙালি দাবি করেন যে তিনি ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় বিএনপির লোকজন তার ওপর হামলা চালায়।
স্থানীয় আ.লীগ নেতাদের অভিযোগ, দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে এবং এসময় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উভয় পক্ষের লোকজন বাঁশের লাঠি নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে পুলিশসহ ৩০ জন আহত
খুলনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাসহ ১৩০০ জনের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ১৩
নতুন ভিসা নীতি: রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাষ্ট্রদূত হাসের সাক্ষাৎ
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে আলোচনা করেন।
এসময় আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি। যারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করে, তাদের জন্য ভিসা সীমিত করার নতুন ভিসা নীতি সবার জন্য প্রযোজ্য।’
আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই; আমরা অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা চাই না: মোমেন
মার্কিন ভিসা নীতি: বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা বিএনপির
আওয়ামী লীগের প্ররোচনায় বিএনপির সমাবেশে হামলা করা হচ্ছে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের প্ররোচনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মামলায় জড়ানো হচ্ছে।
বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, গত ছয় দিনে তাদের দলের ৬৫০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে দলের কর্মসূচিতে হামলায় শতাধিক আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঠাণ্ডা মাথায় বিএনপিকে চিরতরে নির্মূল করার হুমকি দেন...তার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ, র্যাব ও সোয়াট বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা হামলা শুরু করে, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার করে।’
মঙ্গলবার বিনা উসকানিতে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ রোডমার্চে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ‘বিশেষ ক্যাডাররা’ হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের হুমকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই বাস্তবায়ন করছে, যারা আওয়ামী চেতনাকে লালন করে।’
এমন আপত্তিকর মন্তব্য করায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কেন মামলা করা হলো না, এমন প্রশ্নও তোলেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে ঠাণ্ডা মাথায় নির্মূল করা মানেই হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার উসকানি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নীরব কেন?" তার বিরুদ্ধে মামলা নেই কেন?’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিমানের এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্তের মূল কারণ কমিশন: ফখরুল
তিনি অভিযোগ করেন, গত ছয়দিনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাদের দলের নির্ধারিত কর্মসূচিতে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের ‘ক্যাডাররা’ হামলা চালালেও, উল্টো এসব ঘটনায় প্রায় ৫ হাজার বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ১৪৮টি মামলা হয়েছে।
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, সরকার অতীতের মতো বাসে আগুন দিয়ে আবারও বিএনপির ওপর দোষ চাপানোর পুরনো নাটক শুরু করেছে।
রিজভী পুলিশ বাহিনীকে দেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান না নেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার দলের ঢাকা দক্ষিণ মহানগরীর রোডমার্চ কর্মসূচির পর সায়েন্স ল্যাব এলাকা থেকে শেখ রবিউল ইসলাম রবি, শাহাদাত হোসেন সৈকত ও রাইসুল ইসলাম চন্দনসহ বিএনপির ৩০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, সরকার আবারও সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় থাকার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে জনগণের বিরুদ্ধে পুলিশ দিয়ে দেশে নৈরাজ্য ও সহিংসতা সৃষ্টি করছে।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার ও পুলিশের হামলা অব্যাহত রাখলে দেশের মানুষ বসে থাকবে না।
মোবাইলে ছবি দেখিয়ে রিজভী অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার সায়েন্স ল্যাব এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার সময় পুলিশ নিজেরাই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড পুড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, এই পুলিশ জনগণের পুলিশ নয়, এরা আওয়ামী লীগের বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’
আরও পড়ুন: আন্দোলন দমন করতে সরকার সহিংসতা ছড়ানোর চেষ্টা করছে: ফখরুল
আসন্ন সিটি নির্বাচনে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই: ফখরুল
আরও কঠোর কর্মসূচি দিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করার ইঙ্গিত মোশাররফের
বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে আগামী দিনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছেন এবং আন্দোলন সফল করতে দলের নেতাকর্মীদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।
শনিবার রাজধানীর এক সমাবেশে বক্তৃতায় তিনি জনগণের ওপর গুলি না চালাতে এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা না দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করে দেন।
এই স্বৈরাচারী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনে অংশ নিতে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের কঠোর কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ বলেন, ‘দুঃশাসন’, লুণ্ঠন ও দমন-পীড়নে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, দেশের জনগণ বর্তমান সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
'মিথ্যা মামলায়' দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ তাদের ১০ দফা দাবি আদায়ের জন্য দলটির দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর কমলাপুর এলাকার পীর জঙ্গী মাজার সড়কে সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ সিটি শাখা।
বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে 'গায়েবি' মামলা দায়ের, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ঘন ঘন বিদ্যুত বিপর্যয় এবং আওয়ামী লীগ সরকারের 'সবক্ষেত্রে' দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলের প্রতিবাদ হিসেবে আরও ২০টি নগর ও জেলায শহরে সমাবেশ করেছে বিএনপি।
শুক্রবার খুলনায় এবং শনিবার লালমনিরহাট, রাজবাড়ী ও পটুয়াখালীতে বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ হামলা ও গুলি চালায় বলে অভিযোগ করেন মোশাররফ।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা প্রশাসন এবং বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী বাহিনীকে মনে করিয়ে দিতে চাই তারা প্রজাতন্ত্রের সেবক…আপনাদের জনগণের সেবা করার কথা। কিন্তু আপনারা এখন দেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে গুলি চালাচ্ছেন।’
তিনি জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের বেআইনি নির্দেশ পালন না করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: দাবি একটাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ: মির্জা ফখরুল
মোশাররফ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় না থাকলে আপনাদের অনেকের (আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী) অনেক সমস্যায় পড়ার আশংকা আছে। তাই আমরা বলছি আপনারা এখনই নিজেদের সংশোধন করুন। আপনারা এখন থেকে জনগণের পক্ষে দাঁড়ান। ভবিষ্যতে যে সরকার আসবে তারা ক্ষমা করবে না।’
তিনি বলেন, যারা জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে তাদের ওপর গুলি চালাবে এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেবে, দেশের জনগণ ও তাদের সরকার তাদের ক্ষমা করবে না।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় বসতে গণতন্ত্রকে বিলুপ্ত করে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, সরকার ব্যাপক লুটপাট ও দুর্নীতি করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ‘আওয়ামী লীগ তাদের ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে দেশবাসীকে চরম সমস্যায় ফেলেছে।’
মোশাররফ বলেন, সরকার রাজনীতিকরণের মাধ্যমে বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে বলে দেশে আইনের শাসন নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ অর্থনীতি ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, তারা তা পুনরুদ্ধার করতে পারবে না। ‘তাই মানুষ এখন এই সরকারের পতন দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। ‘যারা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়ে নিজেদের পকেট ভারী করেছে তারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।’
তিনি বলেন, অতীতের মতো বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারকে উচ্ছেদ করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা বিএনপির দায়িত্ব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ক্ষমতাসীনরা হামলা করলে তাদের দলও পাল্টা হামলা করবে।
তিনি ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপির এই নেতা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমন ও তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিন্দা করেন।
তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘যারা মানুষের ওপর গুলি চালাচ্ছে তাদের মনে রাখতে হবে যে সবসময় আপনার ইউনিফর্ম থাকবে না। যারা বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও হত্যা করছে, তাদের রেহাই দেওয়া হবে না।’
আরও পড়ুন: 'আপনার সময় শেষ': সরকারের প্রতি ফখরুল
রাষ্ট্রদূতদের ‘অতিরিক্ত পুলিশ এসকর্ট’ প্রত্যাহার সরকারের ‘চরম দায়িত্বহীনতা’: ফখরুল