থিম্পু
থিম্পুতে ডি-সুং স্কিলিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন তথ্য প্রতিমন্ত্রীর
ভুটানের ডি-সুং স্কিলিং প্রোগ্রামের (ডিএসপি) প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
গতকাল (২৯ মার্চ) ভুটানের রাজধানী থিম্পুর তাবায় প্রতিমন্ত্রী এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুকের নির্দেশে ২০২১ সালে চালু হয় এ বিশেষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য আইন ও নিয়ম-নীতি দরকার: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
উক্ত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীকে স্বাগত জানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পরে তারা ভুটানে চলমান অন্যতম দুটি দক্ষতা ও সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মসূচি ডি-সুং প্রোগ্রাম এবং ডি-সুং স্কিলিং প্রোগ্রাম সম্পর্কে বাংলাদেশের তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে বিস্তারিত জানান। পরে প্রতিমন্ত্রীকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সুযোগ-সুবিধাগুলো ঘুরিয়ে দেখানো হয়। সেখানে প্রতিমন্ত্রী সিরামিক, মেটাল স্মিথিং ও সোর্ড অ্যান্ড ব্লেড ওয়ার্কশপে প্রদর্শিত কারুশিল্প প্রত্যক্ষ করেন।
ডি-সুং স্কিলিং প্রোগ্রাম হলো ভুটানের রাজার নির্দেশে চালু হওয়া বিশেষ একটি কর্মসূচি যার মূল উদ্দেশ্য সেখানকার যুবকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সামর্থ্য ও দক্ষতা বৃদ্ধি করে অর্থবহ, উৎপাদনশীল এবং নেতৃত্ব দিতে সক্ষম করে গোড়া তোলা, যাতে তারা সমৃদ্ধ জীবনযাপন করতে পারে। এ বিশেষ কর্মসূচির আওতায় নেটওয়ার্কিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ই-কমার্স, কাপেনট্রি, উডওয়ার্কস, লাইটিং ও বিদ্যুতের কাজে ব্যাচভিত্তিক বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুকের আমন্ত্রণে বর্তমানে ভুটান সফর করছেন। ভুটান সফর শেষে রবিবার (৩১ মার্চ) দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: শুদ্ধ রাজনীতি চর্চা করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান তথ্য প্রতিমন্ত্রীর
সাংবাদিককে দণ্ড: তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে অগ্রগতি জানালেন প্রধান তথ্য কমিশনার
বাণিজ্য-যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত ঢাকা-থিম্পু
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের সঙ্গে তার সফরকালীন আবাসস্থলে সাক্ষাৎ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সাক্ষাৎকালে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার বর্তমান চমৎকার স্তর নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে উভয় পক্ষ।
তারা ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, কৃষি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হন।
সোমবার(২৫ মার্চ) সকালে ঢাকায় আসেন ভুটানের রাজা।আরও পড়ুন: চার দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় আসছেন ভুটানের রাজা
গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠনের পর এটিই কোনো বিদেশি অতিথির প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর।
একটি বিশেষ বিমানে রাজা এবং তার প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ঢাকায় অবতরণের পর তাদেরকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এবং ফার্স্ট লেডি।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভুটানের তৃতীয় রাজা টেলিগ্রামের মাধ্যমে স্বীকৃতির বার্তা পাঠানোর মধ্য দিয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেয় ভুটান।
সেই থেকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে একটি বিশেষ বহুমাত্রিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে। স্বাধীনতার পরপরই ভুটান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয় এবং ফলস্বরূপ, ১৯৭৩ সালের ১২ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন ভুটানের রাজা
বাংলাদেশ-ভুটান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক: থিম্পুতে স্থাপিত হবে বিশেষ বার্ন ইউনিট
মানবতার সেবাকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে চিকিৎসা সহযোগিতার নতুন দুয়ার উন্মোচিত হচ্ছে। স্বাস্থ্য কূটনীতির মাধ্যমে ভুটানে মানব সেবার অনন্য নজির স্থাপন করছেন বাংলাদেশের চিকিৎসকরা।
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশ ভুটানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রায় সকল ক্ষেত্রেই নিবিড় কূটনৈতিক সহযোগিতা বিদ্যমান রয়েছে। স্বাস্থ্যখাতেও রয়েছে উল্লেখযোগ্য সহযোগিতা।
করোনা মহামারির সময়ে বাংলাদেশ ভুটানকে ওষুধ ও স্যানিটারি সামগ্রী প্রদান করে। ভুটানের শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশে এমবিবিএস ও বিডিএস পড়াশোনার জন্য প্রতি বছর স্কলারশিপ প্রদান করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক বিভিন্ন বৈঠকে ভুটানের রাজা এবং প্রধানমন্ত্রীকে ভুটানের স্বাস্থ্যখাতে সম্ভাব্য সকল রকম বিষয়ে সহযোগিতা সম্প্রসারণের আশ্বাস দিয়েছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর ৭৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভুটানের থিম্পুতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক সার্জারি ক্যাম্প’।
এ উপলক্ষে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ১২ জন চিকিৎসক ভুটানের জিগমে দর্জি ওয়াংচুক ন্যাশনাল রেফারেল হাসপাতালে বিশেষ সার্জারি ক্যাম্প পরিচালনা করছেন।
আরও পড়ুন: শিগগিরই থিম্পু-ঢাকা জলবিদ্যুৎ সহযোগিতা চুক্তি সই: ভুটানের রাষ্ট্রদূত
চিকিৎসকদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডা. সামন্ত লাল সেন। বাংলাদেশের চিকিৎসকরা ভুটানের অগ্নিদগ্ধ এবং প্লাস্টিক সার্জারি সংক্রান্ত জটিল অপারেশনের মাধ্যমে মানবিক সেবা প্রদান করছেন।
ভুটানের জনগণের জন্য মানবিক সহযোগিতার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ২৭ সেপ্টেম্বর বিশেষ বৈঠক করেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক।
এ উপলক্ষে ভুটানের রাজা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং দু’দেশের জনগণের কল্যাণে স্বাস্থ্যসেবাসহ মানবিকতার সকল দিক ব্যবহারের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন নতুন মাইলফলক উন্মোচিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
রাজা ওয়াংচুক এই মানবিক আয়োজনের জন্য থিম্পুতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস, ভুটানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শিবনাথ রায়, চিকিৎসকদলের প্রধান ডা. সামন্ত লাল সেন এবং বাংলাদেশের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান।
‘বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক সার্জারি ক্যাম্প’ উপলক্ষে ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে থিম্পুস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: শুরু হচ্ছে ৩ দিনব্যাপী প্রথম ভুটান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা
শিগগিরই থিম্পু-ঢাকা জলবিদ্যুৎ সহযোগিতা চুক্তি সই: ভুটানের রাষ্ট্রদূত
ভুটান এবং বাংলাদেশ দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে জলবিদ্যুতে সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের কাছাকাছি রয়েছে।
মঙ্গলবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কেনসি।
আরও পড়ুন: আগামী মাসে পিটিএ সই করবে ঢাকা-থিম্পু: ভুটানের রাষ্ট্রদূত
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, জলবিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার বিষয়ে একটি দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক সইয়ের ফলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।
রাষ্ট্রপতি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভুটানের জনগণের অটল সমর্থনের কথা স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ঢাকা ভুটানের সঙ্গে সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। কারণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের আগেই প্রথম দেশ হিসেবে ১৯৭১ সালেন ৬ ডিসেম্বর ভুটান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।
তিনি বলেন, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক আগামী দিনে আরও নতুন উচ্চতায় উন্নীত হবে।
এছাড়া সমগ্র অঞ্চলের সুবিধার জন্য বিদ্যমান সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে দুই দেশ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় ফোরামে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
তিনি সম্ভাবনাগুলি অন্বেষণ করতে দুই দেশের মধ্যে সংযোগ বাড়ানোর ওপরও জোর দেন।
ভুটান বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, হিমালয় রাজ্যের বাজারে পোশাকসহ অনেক বাংলাদেশি পণ্য প্রদর্শন করা হয়।
এছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবরা।
আরও পড়ুন: সৌদি সহায়তায় ৮ বিভাগে নির্মিত হবে আট ‘আইকনিক মসজিদ’: প্রধানমন্ত্রী
১৫ দিনের বিদেশ সফর শেষ করে দেশের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী