রুহুল কবির রিজভী
খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিএনপির দোয়া ও প্রার্থনা সভা শুক্রবার
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় শুক্রবার দেশের সব মসজিদে দোয়া এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
রিজভী বলেন, ‘মহান দেশপ্রেমিক নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু সুস্থতা কামনায় আগামীকাল শুক্রবার প্রতিটি মসজিদে দোয়া মাহফিল, মন্দির এবং অন্যান্য ধর্ম সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে প্রার্থনা সভা হবে। প্রতিটি মসজিদে মসজিদে দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত হবে।’
তিনি বলেন, অসংখ্য নির্যাতনের মধ্যেও যার অটল মনোভাবকে দমানো যায়নি, তার নাম খালেদা জিয়া। তাকে নির্যাতন করে অসুস্থ করা হয়েছে। দেশবাসী দোয়া করছেন, তিনি যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে মানুষের মাঝে ফিরে আসতে পারেন।
এ সময় তিনি আরও জানান, বিএনপির দেশ গড়ার পরিকল্পনা কর্মসূচি ৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে এবং এতে ভার্চু্য়ালি যুক্ত হবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, যখন ফিরে আসার, সেই সময়েই তিনি ফিরে আসবেন। তার মায়ের চিকিৎসা নিয়ে তিনি (তারেক রহমান) অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। সেই চিকিৎসা নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হয়, অনেক বিষয় রয়েছে। তিনি পরিবারেরও জ্যেষ্ঠ সন্তান। দেশ, মানুষ, রাজনীতি—সবকিছু চিন্তা করেই উপযুক্ত সময়ে তিনি (দেশে ফেরার) সিদ্ধান্ত নেবেন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, তার অবস্থা আগের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে। তিনি এখনো সংকটাপন্ন অবস্থায় এভারকেয়ার হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন।
২৩ ঘণ্টা আগে
আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেশে গভীর চক্রান্ত চলছে: রুহুল কবির রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, বর্তমানে দেশে গভীর এক চক্রান্ত চলছে, যা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, আমি সরকারকে বলতে চাই— আমার দৃঢ় অনুভূতি হচ্ছে, দেশে গভীর এক চক্রান্ত চলছে ।
তিনি এ চক্রান্তের বিষয়ে তদন্ত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানান।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘পাকিস্তান আমলেও মাজার আক্রমণ করা বা লাশ পুড়িয়ে দেয়ার কথা শোনা যায়নি। এখন হঠাৎ করে এসব নৈরাজ্য কেন করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
রিজভী বলেন, সময় এগিয়েছে, আমাদেরও এগোনোর কথা ছিল। হঠাৎ এখন কেন এসব হচ্ছে? এ ধরনের কাজই শেখ হাসিনা করতেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বলতেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে, বিএনপি পাকিস্তানপন্থি দল, বিএনপি ইসলামী জঙ্গিদেরকে প্রশ্রয় দিচ্ছে, এসব অপতথ্য এবং অপপ্রচার করতেন। এই অপতথ্য অপপ্রচার করার পরেও উনি এটা কোনোভাবেই প্রমাণ করতে পারেননি।
জামায়াতকে পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ওই দল বিএনপিকে ভারতপন্থী দল হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, আপনারাই তো ৫ আগস্টের পর বললেন ভারতের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক আছে। অথচ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন আপনারাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, তিনি একসময় মদিনা সনদের ভিত্তিতে দেশ চালানোর অঙ্গীকার করেছিলেন।
তিনি বলেনন, কিন্তু বাস্তবে কী হলো? তার এক মন্ত্রীর লন্ডনে ১৪০টি বাড়ি, তার সন্তানদের নামে পূর্বাচলে ৬০ কাঠা জমি, আবার চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের পাশে সরকারি ৭২ বিঘা জমিতে ৩০টি বাংলো তৈরির পরিকল্পনা— অথচ সাধারণ মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছে।
পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ডাকসুতে ছাত্রদল বিজয়ী হবে: রিজভী
কোভিডের সময় অক্সিজেনের অভাবে অসংখ্য মানুষ মারা গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের ওপর বিপদ আসে, আমরা দেশেই থাকি, আমাদের নেত্রী দেশেই থাকেন, মিথ্যা মামলায় পাঁচ-ছয় বছর তিনি নির্যাতনে কারাবন্দি অবস্থায় থাকেন, আমরা কোনো পন্থি দল নই, বাংলাদেশপন্থি দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল।
প্রবক্তা মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রিজভী বলেন, আজ প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও আমরা সমবেত হয়েছি মহান মানুষকে স্মরণ করতে, যিনি আল্লাহর বাণী বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছেন। যদি আমরা সামান্যতম অনুকরণ করতাম বা আমরা লালন করতাম তাহলে এই দেশ থেকে অন্যায়-অনাচার, কুপ্রবৃত্তি, পাপাচার, হানাহানি রক্তারক্তি সব বন্ধ হয়ে যেত।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, নবীর অনুসারী দাবি করলেও বাস্তবে তাকে আমরা কেউ অনুসরণ করি না। তাকে আমরা কেউ অনুকরণ করি না। এটাই হলো মুসলিম সমাজের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।
রিজভী বলেন, মহানবী (সা.) বিভক্ত আরব সমাজকে একত্রিত করেছিলেন এবং সবার জন্য সমাধান দিয়েছিলেন। আজ আমরা মদিনা সনদের কথা বলি, কিন্তু বাস্তবে কিছুই মানি না।
এই আনন্দ ও প্রার্থনার দিনে আসুন আমরা নবীর জীবন থেকে অনুপ্রেরণা নেই, যিনি আল্লাহর বাণী এনেছিলেন। যদি আমরা তার উদাহরণ অনুসরণ করি, তাহলে সমাজ থেকে দুর্নীতি, লোভ, ঘৃণা দূর হবে। আমরা সৎভাবে বাঁচতে পারব এবং শান্তি ফিরে আসবে।
৮৯ দিন আগে
সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রিজভী
পতিত সরকারের ‘মিত্ররা’ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন— এমন অভিযোগ তুলে দেশে সত্যিকার অর্থে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘এখনো একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে। আসলে কতটা (একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন) করা সম্ভব। কতটা করা সম্ভব? আমরা তাদের (নির্বাচন কমিশন) জিজ্ঞাসা করেছি যে তাদের সেই ক্ষমতা আছে কিনা।’
রবিবার (৩১ আগস্ট) নগরীর নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাসুদ ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে পৃথক বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং সাবেক সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি প্রতিনিধিদলটি বিশেষভাবে নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণের প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকা কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছে।
রিজভী বলেন, তাদের প্রশ্নের জবাবে, ইসি তাদের (একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য) ইসির পূর্ণ প্রস্তুতির আশ্বাস দিয়েছে।
ইসিসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সহযোগী’ হিসেবে পরিচিতদের উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘এই সহযোগীরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত করতে এমনকি এটি অনুষ্ঠিত হতে বাধা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন কৌশল এবং সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’ যদিও ইসি একটি স্বাধীন সাংবিধানিক সংস্থা এবং একটি প্রশাসনও।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানতে চেয়েছিলাম যে 'আওয়ামী লীগের সহযোগীরা' এখানে কী ধরণের ভূমিকা পালন করছে এবং তারা কোনো ধরণের বাধা তৈরি করছে কিনা।’
রিজভী বলেন, জবাবে ইসি তাদের আশ্বস্ত করেছে যে, তারা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য সঠিকভাবে এবং সতর্কতার সঙ্গে এটি তদারকি করছে— যাতে নির্বাচন কোনোভাবেই ব্যাহত ও কলঙ্কিত না হয়। নির্বাচন কমিশন যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তারা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তবে বিএনপির এই নেতা বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে বর্তমান ইসির আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি এই কমিশন সকলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন পরিচালনা করতে সক্ষম হবে। এখন পর্যন্ত, আমি তাদের পক্ষ থেকে কোনো আন্তরিকতার অভাব দেখিনি।’
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির বিষয়ে রিজভী বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে যে, এটি এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। ‘আমাদের নেতারা ইসির কাছে এটি বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে,’ বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, বিএনপি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার সম্পর্কে সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে চেয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম। ইসি আমাদের জানিয়েছে যে তারা তাদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে।’
আরও পড়ুন: রমজানের আগেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা রিজভীর
শুক্রবার দিবাগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের উপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান রিজভী।
বিএনপির এই নেতা বলেন, নূর একজন পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা পালন করেছিলেন।এ কজন দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতার উপর এ ধরনের আক্রমণ একটি গণতান্ত্রিক দেশে নিন্দনীয় এবং অগ্রহণযোগ্য।
৯৫ দিন আগে
রমজানের আগেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা রিজভীর
আগামী রমজানের আগেই দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এতে ষোলো বছর পর দেশের ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতিহা পাঠ শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
দেশের মানুষ এখনো নানাভাবে অধিকারবঞ্চিত উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারীদের দিক থেকে আমরা এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের মধ্যে বাস করছি। আমাদের আন্দোলনের চূড়ান্ত লক্ষ্য গণতন্ত্র এখনো প্রতিষ্ঠা পায়নি। তবে আমাদের বিশ্বাস খুবই দ্রুত রমজানের আগেই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, তাতে এ দেশের ভোটাররা ষোলো বছর ধরে যে ভোট দিতে পারেননি, এবার তারা সেই ভোট দিতে পারবেন।’
‘পাশাপাশি গণতন্ত্রের আরও বিভিন্ন শর্ত, যেমন: এ দেশের মানুষের মনে নিরাপত্তাবোধ তৈরি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা— পূরণ করা সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘আদালত হতে হবে অসহায় মানুষের শেষ ভরসার স্থল। সেই ধরনের একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আর এই লক্ষ্য পূরণে মানুষের অনুপ্রেরণা হচ্ছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি ছিলেন মানবতা, প্রেম ও দ্রোহের কবি। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রাম, স্বাধীনতার লড়াই, নব্বইয়ের গণআন্দোলন এবং বছরখানেক আগে যে দুনিয়া কাঁপানো গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, প্রতিটি জাতীয় অর্জন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে যার গান ও কবিতা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে, দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছে, তার গান গাইতে গাইতে ও তার কবিতা আবৃত্তি করতে করতে আমরা রাজপথে নেমে আসতাম।’
আরও পড়ুন: জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান রিজভীর
রিজভী বলেন, ‘স্বৈরশাসনের তপ্ত বুলেটের সামনে নিঃশঙ্কচিত্তে দাঁড়াতেও দ্বিধা করিনি, কারণ আমাদের কণ্ঠে ছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান ও কবিতা। যখনই এ দেশের মানুষ অধিকারহারা হয়, তখনই তাদের সংঘবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করে অত্যাচারীর শৃঙ্খল ভাঙার প্রত্যয় জেগে ওঠে যার কবিতা ও গানে, তিনি কাজী নজরুল ইসলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে তিনি (নজরুল) তার শানিত কলম চালাতে দ্বিধা করেননি। তার লেখা কবিতা, গান ও সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যে চেতনা তিনি গোটা জাতিকে দিয়েছেন, তা ধারণ করেই আমরা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সংগ্রাম করেছি, জুলাই আন্দোলনে যার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ হয়েছে।’
১০০ দিন আগে
জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান রিজভীর
জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, যদি দেশের স্বার্থে সংবিধানের কোনো পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে সেটা নির্বাচিত সরকারই করবে।
রোববার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘জিয়া পরিষদ রিকশা ও ভ্যানগাড়ি চালকদের মধ্যে বৃষ্টির পোশাক বিতরণ অনুষ্ঠানে’ তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ৫ আগস্টের মাধ্যমে আমরা যে অর্জন করেছি, সেটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। গত ১৬ বছর ধরে একটি দানবীয় সরকারের রোষানল ও নিষ্ঠুর নিপীড়নের মধ্যে এ দেশের মানুষ দিন কাটিয়েছেন। সেই সরকার যাতে আর ফিরে না আসে, সে জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি করে ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার সুযোগ যেন তৈরি না হয়।
তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছরে এই জাতিকে অনেক খেসারত দিতে হয়েছে। তখন দেশে কোনো আইন-কানুন ছিল না, কোনো ন্যায়বিচার ছিল না। শেখ হাসিনার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য তারা আদালত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ একের পর এক রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে।’
‘দেশে এমন এক রাজত্ব কায়েম করা হয়েছিল, শেখ হাসিনা, তার ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয়স্বজন ছাড়া কেউ কথা বলতে পারতেন না। যা ছিল হিংসা ও রক্তপাতের রাজত্ব। আপনারা যদি সেটার পুনরাবৃত্তি না চান, তাহলে সবাইকে অন্তত ন্যূনতম একটা বোঝাপড়ার মধ্যে আসতে হবে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘এটা যদি না করতে পারেন, তাহলে আবারও ভয়ঙ্করভাবে ফ্যাসিবাদ উঁকি দিতে পারে। শেখ হাসিনা কতখানি প্রতারক হলে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন করে ক্ষমতায় এসে নিজেই সেটা বাতিল করে দিয়েছে। এই হচ্ছে শেখ হাসিনা, যার কোনো অঙ্গীকার নেই, যে রাজনীতিকে মনে করে প্রতারণা ও উদ্দেশ্য হাসিলের মাধ্যম। আমরা দেশে সেই রাজনীতি ফেরত আসতে দিতে পারি না।’
রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ। তাদের কাছে মানুষের অনেক দাবি-দাওয়া ও প্রত্যাশা রয়েছে। সেগুলো পূরণে সরকারের আন্তরিকতার অভাব নেই, কিন্তু এখন মুদ্রাস্ফীতি অনেক কমে এসেছে, জিনিসপত্রের দাম না কমলেও অন্তত বাড়ছে না। কিন্তু কর্মসংস্থান তো হচ্ছে না। একের পর এক মিল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কর্মসংস্থান না থাকলে দুর্ভিক্ষের আলামত তৈরি হয়।
‘দুয়েকজন উপদেষ্টা হয়তো হাঁসের মাংস খেতে পারবেন যেকোনো জায়গায়। কিন্তু জনগণ তো আর হাঁসের মাংস খেতে পারবেন না। এমন পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয়।’
আরও পড়ুন: পুলিশ-প্রশাসনে আ. লীগের অনুগতদের রেখে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়: রিজভী
তিনি আরও বলেন, গার্মেন্ট খাত থেকে এক লাখ লোকের চাকরি চলে গেছে। কারণ, ফ্যাসিবাদের পূজারীদের অনেকেই মিলমালিক। আমরা আগেও বলেছি, কলকারখানা যেন বন্ধ না হয়, মানুষের ক্ষুধা যেন না বাড়ে। মানুষের ক্ষুধার সঙ্গে রাজনীতি করা যাবে না। দরকার হলে সরকার এসব কারখানা নিলামে বিক্রি করে দেবে অথবা প্রশাসক দিয়ে চালাবে। কিন্তু কর্মসংস্থান যেন ঠিক থাকে, সরকারকে সেই চেষ্টা করতে হবে।
‘জুলাই সনদের জন্য আইন বা সংবিধান সংশোধন করতে হলে সেটা নির্বাচিত সংসদই করবে। একটি রাজনৈতিক দল বলছে আগেই গণভোট দিতে হবে—কেন? যদি মূলনীতিতে কোনো পরিবর্তন করতে হয়, মূলনীতি একটি অখণ্ড বিষয়। তারপরও সংবিধানের বিধান অনুসারে সংশোধন করা যায়। কিন্তু সেই সংশোধন করবে সংসদ,’ যোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা যেমন গায়ের জোরে চালিয়েছেন যে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তার মতের মিল হয়নি, তাই গোয়েন্দা সংস্থা পাঠিয়ে পিস্তল ঠেকিয়ে তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছেন। সেই ধরনের আলামত এখন কেন থাকবে? আমরা তো এমনটা করতে পারি না। কাজেই সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার তৈরি করুন। তারপর গণতন্ত্রের স্বার্থে যদি সংবিধান পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে তারা সেটা করবে। এটা তাদের দায়িত্ব।
১০২ দিন আগে
সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পেছানোর কোনো বয়ান কাজে লাগবে না: রিজভী
সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পেছানোর নানা বয়ান আমরা শুনতে পাচ্ছি, সেগুলো কোনো কাজে লাগবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছরে দেশে উন্নয়নের যে ফিরিস্তি স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার দিয়েছে তা— এই পাহাড়ে না আসলে দেখতে পেতাম না।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের দুর্গম এলাকায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ফুটবলার ঋতুপর্ণার অসুস্থ মাকে দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার হেলাল, আমরা বিএনপির পরিবারের আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব মো. মিথুন, রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপি সভাপতি দীপন তালুকদার দিপু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুনসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আমি নিজেই এখনো নির্বাচনের তারিখ জানি না: সিইসি
এ সময়, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী ঋতুপর্ণা চাকমার মা ভুজিপুতি চাকমাকে আশ্বস্ত করেন। বলেন, বিএনপি সব সময় ঋতুর মায়ের পাশে থাকবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর পেয়ে ঋতুর মায়ের পাশে দাঁড়ানের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই, এই প্রবল বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দুর্গম এই পথ পাড়ি দিয়ে আমরা তার বাড়িতে এসেছি। আমরা ঋতুর মায়ের সকল চিকিৎসার খরচ বহন করব।
এসময় রিজভী ঋতুপর্ণার মায়ের হাতে ২ লাখ টাকা হাতে তুলে দেন। এছাড়া প্রতি মাসে কেমোথেরাপির ৩০ হাজার টাকা করে বিএনপির পক্ষ থেকে দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
পাহাড়ের গোল্ডেন গার্ল খ্যাত ঋতুপর্ণা চাকমার জোড়া গোলে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।
ঋতুপর্ণা চাকমার মা ভুজোপতি চাকমা ব্রেস্টক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। এরমধ্যে, তিনি তিনটি কেমোথেরাপি দিয়েছেন। প্রতি ২১ দিন পরপর তাকে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে গিয়ে কেমোথেরাপি দিতে হয়।
১৪৮ দিন আগে
চাঁদাবাজ, দখলদারদের বরদাশত করবে না বিএনপি: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপিতে কোনো চাঁদাবাজ বা দখলদারকে বরদাশত করা হবে না। এই দলে (বিএনপি) সমাজবিরোধী কোনো ব্যক্তি, দখলবাজ, চাঁদাবাজদের স্থান নেই।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, কেউ বিএনপির নাম ব্যবহার করে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে, তবে এমন ঘটনা ঘটলে দল কখনও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করে না।
তিনি বলেন, দলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি করে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে লড়াই করে আসছে।
‘এই দল একটি আদর্শ রাষ্ট্র ও সমাজে বিশ্বাস করে, যেখানে নেতৃত্ব দেওয়া উচিত দক্ষ, সৎ, মানবিক ও যোগ্য ব্যক্তিদের হাতে,’ বলেন রিজভী। তিনি আরও বলেন, বিএনপি যখনই ক্ষমতায় ছিল, এই নীতিগুলোকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে সমাজে নানা ধরনের সামাজিক অপরাধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এবং প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণে ‘মব কালচারের’ প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।
রিজভী বলেন, অবৈধ কালো টাকা ও গোপন অপতৎপরতার প্রভাবে ‘মব কালচারের’ নামে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চলছে।
‘অন্যদিকে, একটি সুবিধাভোগী মহল খুবই পরিকল্পিতভাবে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। মানুষ বিশ্বাস করে এই পরিকল্পিত অপপ্রচার, তৎপরতা ও কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি সামাজিক অস্থিরতা গণতন্ত্রের পথে বাধা সৃষ্টি করছে এবং নির্বাচন বিলম্বিত করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ,’ বলেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।
আরও পড়ুন: আমি নিজেই এখনো নির্বাচনের তারিখ জানি না: সিইসি
তিনি বলেন, নির্বাচন বিলম্বিত করার চারপাশে যে প্রচারণা ও আলোচনা চলছে, তা শেখ হাসিনা সরকারের ‘উন্নয়নের অদ্ভুত বয়ানের’ মতোই।
বিএনপির নাম ব্যবহার করে কেউ অসৎ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে দল তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিচ্ছে জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘দলের ভেতর থেকেই যারা অন্যায়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন, তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, অনেক নেতাকর্মীকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার, অব্যাহতি, স্থগিত কিংবা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ‘সন্দেহজনকভাবে শিথিল ভূমিকা’ পালন করছে। তিনি বলেন, দলটির পক্ষ থেকে দফায় দফায় অনুরোধ করা হলেও দুষ্কৃতকারী ও উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
তিনি দাবি করেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পুলিশ প্রশাসন খুব একটা সক্রিয় নয়। বরং কিছু ক্ষেত্রে এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, কেউ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে গোলযোগ সৃষ্টি করছে।
১৪৯ দিন আগে
জামায়াতের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ রিজভীর
জাতীয় নির্বাচনের সময় নিয়ে বক্তব্য দিয়ে জামায়াতে ইসলামী জনমতের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে দ্বিচারিতা করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আপনারা (জামায়াত) নির্বাচন পেছাতে চান কেন? বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হবে ৫ আগস্ট। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে দেড় বছর সময় পাওয়া যাবে। এত সময় কি সংস্কার করার জন্য যথেষ্ট নয়?’
রবিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে এসব কথা বলেন রিজভী।
পরোক্ষভাবে জামায়াতের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘একদিকে তারা নির্বাচন পেছানোর দাবি করছে, অন্যদিকে কিছু আসনে প্রার্থীও দিচ্ছে। এটিই হলো দ্বিচারিতা।’
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে রিজভী বলেন, জামায়াত ৩৩ থেকে ৩৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে, অথচ এখন তারা নির্বাচন পেছাতে চায়। ‘একদিকে মনোনয়ন দিচ্ছে, আরেকদিকে ভোট পেছানোর দাবি করছে।’
রিজভী বলেন, ‘জনগণের মনোভাব বুঝতে জামায়াতের ইতিহাসই ব্যর্থ। ১৯৭১ সালে তারা যদি জনগণের মন বুঝত, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করত না। তারা ১৯৮৬ সালে এরশাদের অধীনে শেখ হাসিনার সঙ্গে নির্বাচনে যেত না। তারা সবসময় জনগণের মতামত উপেক্ষা করেছে। আসলে তাদের কাছে জনগণই কোনো বিষয় নয়।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জামায়াত নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই রাজনীতি করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ‘তাই তো তারা একা নির্বাচন করলে দুই-একটার বেশি আসন পায় না।’
রিজভী বলেন, ‘এই দেশের বেশিরভাগ মানুষ মুসলমান, আর মুসলমানরা কথা রাখে। কিন্তু তারা (জামায়াত) কোনোদিন কথা রাখে না। খালেদা জিয়াই কথা রেখেছেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশবাসী এখন অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা করে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছেন, নির্যাতন সহ্য করেছেন।’
নির্বাচনের সময় পেছানোর যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রিজভী। বলেন, ‘সমতাভিত্তিক পরিবেশ তৈরির জন্য এখনো যথেষ্ট সময় আছে। তাহলে ভোট পেছানোর দরকার কী?’
দেশের বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা রাজনৈতিক নয়, বরং সামাজিক অপরাধ বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা। বলেন, ‘সামাজিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। নির্বাচনের দোষ কী?’
তিনি বলেন, ‘কিছু দল হয়তো নির্বাচনের সময় পিছিয়ে দিয়ে নিজেদের অবস্থান জোরদার বা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে।’
তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার কোনো দল বা ব্যক্তিকে সুবিধা দিতে বাড়তি সময় দেবে না। আমরা চাই তারা নির্ধারিত সময় অনুযায়ী নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুক। কারণ, রাষ্ট্র পরিচালনার অনেক দায়িত্বই নির্বাচিত সরকারের।’
আওয়ামী লীগের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা একসময় অংশ নিয়েছিলেন, এখন তারা নিজের অবস্থান পরিবর্তন করছেন বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন রিজভী।
কারবালার প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘ইমাম হোসাইন অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আজকের কিছু রাজনৈতিক দল সেই ইতিহাস থেকে কিছু শিখেছে কি না, জানি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও তারা (জামায়াত) বলছিল পরিবেশ অনুকূলে নয়। এখন ভোট পেছানোর দাবি করছে। কেন? ১৫–১৬ বছরের আন্দোলন, এত ত্যাগ, গুম, হত্যা—সবই তো অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। তাহলে নির্বাচনই এখন দোষী হয়ে গেল?’
আরও পড়ুন: জামায়াত ‘ঘোলা পানিতে’ মাছ শিকারের চেষ্টা করছে: অভিযোগ রিজভীর
১৫১ দিন আগে
জামায়াত ‘ঘোলা পানিতে’ মাছ শিকারের চেষ্টা করছে: অভিযোগ রিজভীর
জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকার’ করার চেষ্টা করার অভিযোগ তুলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘যে দল স্বৈরাচারী সরকারের অধীনে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল, তারা এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।’
শনিবার (৫ জুলাই) ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব মাঠে এক ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। দলের ঘোষিত মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির ঢাকা উত্তর সিটি ইউনিট এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, বিশ্ব ইতিহাসের নানা পর্বে জনগণ আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমেই নিজেদের অধিকার আদায় করেছে। একটি নির্বাচিত সংসদ ও জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক প্রতিনিধি থাকা রাজনৈতিক অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য।
‘কিন্তু আপনি এমন নির্বাচনকে সমর্থন না দিয়ে রাজনৈতিক বুলি আউড়ে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছেন। আপনি নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, কিন্তু আমরা আপনার অতীত জানি। এক সময় আপনি স্বৈরাচারের অধীনে কোনো দ্বিধা ছাড়াই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, শেখ হাসিনার পথ অনুসরণ করে,’ বলেন বিএনপির এই নেতা।
এর আগে শুক্রবার জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান রংপুরে এক সমাবেশে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান বাস্তবতায় একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব। বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য আগে একটি সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে হবে, আর সে জন্য প্রয়োজন মৌলিক সংস্কার।’
রিজভী বলেন, জামায়াত আমির এমনভাবে কথা বলেছেন যেন তিনি পরিবেশকর্মী, যিনি নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ‘হঠাৎ করে আপনি পরিবেশবাদী হয়ে গেলেন! যদি আপনি পরিবেশ নিয়ে এতই উদ্বিগ্ন হন, তবে বৈশ্বিক পরিবেশ সংকটের বিপর্যয়ের দিকেই মনোযোগ দিন।’
তিনি বলেন, দেশের মানুষের রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার ফিরিয়ে আনতে এখন একটি নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন।
‘এই কারণেই অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি—উপযুক্ত সংস্কার সম্পন্ন করে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করুন এবং সেটা যেন একটি যথাযথ সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন হয়,’ বলেন রিজভী।
১৫২ দিন আগে
দলের যেকোনো পদধারীর অন্যায়ের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ বিএনপি: রিজভী
বিএনপি অনৈতিক ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি বজায় রেখেছে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি সতর্ক করে বলেন, বিএনপির কোনো সদস্যও যদি অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত থাকে— তবে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘যে কেউ যেকোনো ধরণের অবৈধ, অনৈতিক বা সহিংস কার্যকলাপে জড়িত থাকে—তবে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। যেকোনো ঘটনা ঘটার পর আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত করতে এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করি না। কাল ক্ষেপণ না করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
শুক্রবার (৪ জুলাই) বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, দলের ভেতরে, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বা অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যাতে আর কেউ সহিংস আচরণ করার সাহস না করে। ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে আমরা যখনই অভিযোগ পেয়েছি, তখনই আমরা এই ধরণের সমস্ত ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’
তিনি বলেন, দলের নামে কী ঘটছে এবং কী করা হচ্ছে, তা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিয়মিতই পর্যবেক্ষণ করছেন।
আরও পড়ুন: মৌলিক সংস্কার ছাড়া ভালো নির্বাচন সম্ভব নয়: জামায়াত আমির
রিজভী বলেন, ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং অন্যায় কাজে লিপ্ত থাকার জন্য আমরা বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের চার থেকে পাঁচ হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।’
তিনি বলেন, দল এবং এর সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলেই তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছেন। ‘এক্ষেত্রে, বিএনপি এবং এর নেতৃত্ব আপসহীন। তারেক রহমান জিরো টলারেন্স নীতিতে এটি করছেন।’
রিজভী বলেন, যে কেউ অপরাধ করলে—সে দলের নেতা হোক বা সদস্য—তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। ‘দলের মধ্যে কেউ যাতে কোনো সন্ত্রাসী বা বেআইনি কার্যকলাপে জড়িত না হয়—তা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
গণতান্ত্রিক নীতির প্রতি দলের স্থায়ী অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে রিজভী বলেন, বিএনপি গত ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রের জন্য ক্রমাগত সংগ্রাম করে আসছে। ‘গণতন্ত্রকে কবর দেওয়া শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে বিএনপি তার আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। তীব্র দমন-পীড়ন সত্ত্বেও আমাদের দল কখনও তা থেকে পিছু হটেনি।’
অবিলম্বে, অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের জন্য দলের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘কেবলমাত্র একটি সত্যিকারের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনই বিএনপির জনপ্রিয়তা প্রকাশ করবে।’
১৫৩ দিন আগে