পরিবেশ
প্লাস্টিক দূষণে বছরে দেড় লাখ কোটি ডলারের স্বাস্থ্যঝুঁকি
বিশ্ব এখন প্লাস্টিক দূষণের সংকটে রয়েছে, যা মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত একটি পর্যালোচনার বরাতে রোববার (৩ আগস্ট) ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সংকটের কারণে জন্ম থেকে শুরু করে বার্ধক্য পর্যন্ত মানুষের স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং এর ফলে প্রতি বছর অন্তত ১.৫ ট্রিলিয়ন (দেড় লাখ কোটি) ডলারের সমপরিমাণ স্বাস্থ্যব্যবস্থার ক্ষতি হচ্ছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৫০ সাল থেকে প্লাস্টিক উৎপাদন ২০০ গুণেরও বেশি বেড়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, ২০৬০ সালের মধ্যে এটি তিনগুণ বেড়ে বছরে এক বিলিয়ন টনে পৌঁছাবে। সবচেয়ে দ্রুত বেড়েছে একবার ব্যবহারযোগ্য (ওয়ান-টাইম ইউস) প্লাস্টিকের ব্যবহার—যেমন পানির বোতল ও ফাস্টফুডের প্যাকেট।
বর্তমানে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট থেকে শুরু করে গভীর সমুদ্রে পর্যন্ত ৮০০ কোটি টনের বেশি প্লাস্টিক ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে পুনর্ব্যবহার হয় মাত্র ১০ শতাংশেরও কম।
বিশেষজ্ঞরা জানান, প্লাস্টিক শুধু ব্যবহারের সময়ই নয়, বরং এর কাঁচামাল (তেল, গ্যাস ও কয়লা) উত্তোলন, উৎপাদন, ব্যবহার ও বর্জনের প্রতিটি ধাপে মানবদেহ ও পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এতে বায়ুদূষণ, বিষাক্ত রাসায়নিকের সংস্পর্শ এবং মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশের ঝুঁকি তৈরি হয়। এমনকি প্লাস্টিকে জমে থাকা পানি মশার প্রজননস্থল হওয়ায় রোগবাহী মশার সংখ্যাও বাড়ছে।
পড়ুন: দেশীয় প্রযুক্তিতে পরিবেশবান্ধব ছত্রাকনাশক উদ্ভাবনের দাবি বাকৃবি গবেষকদের
এই পর্যালোচনার প্রধান লেখক ও বস্টন কলেজের শিশু ও মহামারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ফিলিপ ল্যান্ডরিগান বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে শিশু ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর ওপর। এর বিপুল পরিমাণ অর্থনৈতিক খরচ রয়েছে। তাই এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।’
প্লাস্টিকশিল্প ও পেট্রোস্টেট (জ্বালানিনির্ভর দেশ) গোষ্ঠীগুলোর দাবি, প্লাস্টিকের উৎপাদন নয় বরং পুনর্ব্যবহারই হওয়া উচিত মূল লক্ষ্য। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাগজ, কাচ বা ধাতুর তুলনায় প্লাস্টিক সহজে পুনর্ব্যবহারযোগ্য নয়। তাই কেবল রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান সম্ভব নয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের ৯৮ শতাংশ প্লাস্টিক জীবাশ্ম জ্বালানি—তেল, গ্যাস ও কয়লা থেকে উৎপাদিত হয়। এতে বছরে ২ বিলিয়ন টনের সমপরিমাণ কার্বন ডাই–অক্সাইড নিঃসরণ হয়। পাশাপাশি উন্মুক্ত স্থানে পুড়িয়ে ফেলা প্লাস্টিক থেকেও মারাত্মক বায়ুদূষণ ঘটে।
বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্যে ১৬ হাজারেরও বেশি রাসায়নিক উপাদান থাকে—যার মধ্যে আছে রং, ফিলার, ফ্লেম রিটারডেন্ট ও স্ট্যাবিলাইজার।
দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত পর্যালোচনায় বলা হয়, এসব রাসায়নিকের অনেকগুলোই মানুষের জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। গর্ভাবস্থায় এসব উপাদানের সংস্পর্শে গর্ভপাত, অপরিণত বা মৃত সন্তানের জন্ম, জন্মগত ত্রুটি, ফুসফুসের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হওয়া, শৈশবের ক্যানসার এবং পরবর্তী জীবনে প্রজনন সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে।
পড়ুন: টেকসই বিনিয়োগে বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি জরুরি: পরিবেশ উপদেষ্টা
প্লাস্টিক বর্জ্য ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়, যা পানি, খাবার ও বাতাসের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এসব কণা মানুষের রক্ত, মস্তিষ্ক, বুকের দুধ, গর্ভনালির প্লাসেন্টা, শুক্রাণু ও অস্থিমজ্জায় পর্যন্ত পাওয়া গেছে।
গবেষকদের মতে, এসব ক্ষুদ্র কণা স্ট্রোক ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই এখনই সতর্ক হওয়া জরুরি।
অত্যন্ত ব্যয়বহুল এই ‘সস্তা’ উপাদান
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্লাস্টিককে সাধারণত সস্তা উপকরণ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও এর স্বাস্থ্যগত ক্ষতি বিশ্লেষণ করলে এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
একটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শুধু তিনটি রাসায়নিক—পিবিডিই, বিপিএ ও ডিইএইচপি—ব্যবহারজনিত কারণে ৩৮টি দেশে স্বাস্থ্যক্ষতির বার্ষিক আর্থিক ক্ষতি দাঁড়ায় প্রায় ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার।
চুক্তি নিয়ে টানাপোড়েন
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্লাস্টিক সংকট মোকাবেলায় একটি বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক চুক্তি নিয়ে শেষ ধাপের আলোচনা চলছে। যদিও ১০০টির বেশি দেশ প্লাস্টিক উৎপাদন সীমিত করার পক্ষে, তবে সৌদি আরবসহ কিছু তেলনির্ভর দেশ এতে বাধা দিচ্ছে।
পড়ুন: আমরা ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছি: ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর আর্তনাদ
এই বিষয়ে পর্যালোচনার সহলেখক ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মার্গারেট স্প্রিং বলেন, ‘এই প্রতিবেদনগুলো বিশ্বের নীতিনির্ধারকদের জন্য নিরপেক্ষ ও তথ্যনির্ভর উৎস হয়ে উঠবে, যা কার্যকর নীতিমালা তৈরিতে সহায়তা করবে।’
১২৩ দিন আগে
বায়ুদূষণে আজও শীর্ষ পাঁচে লাহোর, ঢাকার উন্নতি
বেশ কয়েকদিন পর গতকাল সকালে দূষিত বায়ুর শহরগুলোর তালিকার শীর্ষ পাঁচ থেকে বের হয়েছিল পাকিস্তানের লাহোর। তবে এক দিন পরই বায়ুমানে ফের অবনতি হয়েছে শহরটির। অন্যদিকে, কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে ঢাকার বাতাসের।
শুক্রবার (৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টায় লাহোরের বাতাসের একিউআই সূচক ছিল ১৫৩, দূষণের এই মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত।
কণা দূষণের এই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর ১৫১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
দীর্ঘদিন একিউআই স্কোর ১৫০ বা তার ওপরে থাকা লাহোরের বাতাসের মান গতকাল সকালে ১২৪-এ নামে। সেইসঙ্গে দূষিত শহরগুলোর তালিকার শীর্ষ পাঁচ থেকেও বের হতে সক্ষম হয় শহরটি। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই তা আবারও পুরনো জায়গায় ফিরে গেছে পাকিস্তানের এই শহর।
আজ বায়ুদূষণে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ শহর হয়েছে লাহোর। ১৫৬ একিউআই স্কোর নিয়ে তার ঠিক উপরে রয়েছে মিসরের কায়রো। আর ১৮৯ একিউআই স্কোর নিয়ে আজ সকালে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাস বিরাজ করছে চিলির সান্তিয়াগোতে।
কেমন আছে ঢাকা
এদিকে, বর্ষার কারণে বেশ কয়েকদিন ধরে ঢাকার বায়ুমান ‘মাঝারি’ অবস্থায় রয়েছে। গতকালও তা-ই ছিল, তবে আজ বাতাসের মানে তার চেয়ে কিছুটা উন্নতি হয়েছে ঢাকার।
আজ সকালে ৭১ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকার ৩১তম স্থানে অবস্থান করছে ঢাকা। গতকাল সকালে এই স্কোর ছিল ৭৯।
সাধারণত বায়ুদূষণের সূচক (এইকিআই) শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। তারপর থেকে ১০০ পর্যন্ত একিউআই স্কোর ‘মাঝারি’।
এই সময়ে ভারতের রাজধানী দিল্লির বায়ুমানও ‘মাঝারি’ শ্রেণিতে ছিল, তবে গতকাল সকালের মতোই তা ঢাকার চেয়ে কিছুটা খারাপ। একই সময়ে দিল্লির বাতাসের সূচক ৮৯ এবং দূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় অবস্থান ছিল ২০তম।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
১৫৪ দিন আগে
পরিবেশ রক্ষায় পাঁচ পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি: তারেক রহমান
আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পরিবেশ রক্ষার জন্য সবুজ ও পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বিএনপি পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫-এর প্রাক্কালে বুধবার(৪ জুন) নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘আজকের বৈশ্বিক জলবায়ু সঙ্কট এবং শিল্প দূষণের মারাত্মক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে একটি বাস্তবসম্মত এবং ভবিষ্যতমুখী জাতীয় কৌশল তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়ে গেছে। ‘যদি বিএনপিকে আবারও সরকার পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়—তাহলে আমরা বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
আরও পড়ুন: বাজেটকে 'একতরফা, অকার্যকর' অভিহিত করল বিএনপি
পাঁচটি প্রধান পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে—১. একটি ন্যাশনাল গ্রিন রিকভারি পরিকল্পনা, যার মধ্যে থাকবে নবায়ণযোগ্য শক্তি, বনাঞ্চল পুনঃস্থাপন (আগামী পাঁচ বছরে ২৫ থেকে ৩০ কোটি গাছ লাগানো), এবং টেকসই কৃষি।২. ক্ষতিকারক প্লাস্টিক ও বিষাক্ত রাসায়নিকের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা এবং শিল্প এবং গৃহস্থালিতে বায়োডিগ্রেডেবল বিকল্পগুলোর উন্নয়ন।৩. জলাবদ্ধতা মোকাবিলায় নদী ও খালের ড্রেজিং এবং পুনঃস্থাপন প্রোগ্রাম শুরু করা, যাতে জলজ বাস্তুতন্ত্র সুরক্ষিত রাখা যায়।
৪. দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জলবায়ু-প্রতিরোধী কৃষি ও অবকাঠামোকে সমর্থন করা—যাতে স্থানীয় সম্প্রদায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।৫. স্কুলের পাঠ্যক্রমে পরিবেশ শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা- যাতে পরিবেশ সচেতন নাগরিকদের নতুন প্রজন্ম তৈরি হয়।
তারেক রহমান বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং পারিপার্শ্বিক বৈচিত্র্যে পূর্ণ। ‘তাই, আমাদের জন্য এটি একটি গুরুতর দায়িত্ব হলো এই সমৃদ্ধ পরিবেশকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা।’
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের পর জাতীয় নির্বাচন পেছানোর যৌক্তিকতা নেই: সালাহউদ্দিন
তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পরিবেশবান্ধব দল হিসেবে পরিচিত। ‘বছরের পর বছর আমরা বৃক্ষরোপণ, খাল খনন এবং রক্ষণাবেক্ষণ, এবং ক্ষতিকারক প্লাস্টিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রচারণা চালিয়ে এসেছি।’
তারেক রহমান আরও বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প শুরু করেছিলেন, যা পরে পরিবেশ অধিদপ্তরে পরিণত হয়। এই ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৫ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন করেন এবং দেশে প্রথম পরিবেশ আদালত প্রতিষ্ঠা করেন- যা পরিবেশ সুরক্ষার জন্য আইনি ব্যবস্থার পথপ্রদর্শক।
পরিবেশ সংরক্ষণ বিলাসিতা না, বরং প্রয়োজনীয়তা হিসেবে উল্লেখ করে তারেক রহমান সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘একটি টেকসই বাংলাদেশ গড়তে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে, এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে হবে যেখানে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি সবুজ, বাসযোগ্য ও স্থিতিস্থাপক দেশ পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসুন, আমরা আশার বীজ বপণ করি। আমাদের বায়ু, পানি ও মাটি সুরক্ষিত রাখি এবং সবার জন্য ভবিষ্যত রক্ষা করি।’
১৮৪ দিন আগে
ঢাকার বাতাসের মান আজ ‘মাঝারি’
বিগত কয়েক দশকে ঢাকার গাছপালার পরিমাণ কমেছে অস্বাভাবিকভাবে। তবে বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা, যা বায়ু দূষণের অন্যতম উপাদান কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এসব কারণে ঢাকা প্রায়ই দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার শীর্ষে থাকে। তবে আজ সকালে ঢাকার বাতাসের মানে কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) সকাল ৮টা ৪৪ মিনিটে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ৭৯। আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী যা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ।
কর্মব্যস্ত শহরটির মানুষ; যারা সকাল হতেই ছোটে নিজ নিজ কর্মস্থলে কিংবা যারা এককাপ চা নিয়ে হয়তো একটু বিশুদ্ধ বাতাসে শ্বাস নিতে এসে ব্যালকনিতে দাঁড়ান, তারা আজ চাইলে একটু প্রাণ ভরে শ্বাস নিতেই পারে।
সাধারণত বৃষ্টি শুরু হলে বাতাসের মানে কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। গতকাল (রবিবার) সকালে রাজধানীর বেশকিছু জায়গায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হওয়ার পর দুপুরের দিকে শহরটির বাতাসের একিউআই স্কোর ৫৬ তে নেমে আসতে দেখা গেছে।
একিউআই স্কোর নিচের দিকে নেমে আসার এই ধারা অব্যাহত থাকলে ঢাকার বাতাসও ‘ভালো’ হয়ে উঠতে পারে।
কারণ কণা দূষণের একিউআই মান যখন শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকে, তখন তাকে ‘ভালো’ বলে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
একিউআই সূচক ৫১ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ এবং ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: দুপুর পড়তেই ঢাকার বাতাসের মানে লক্ষণীয় উন্নতি
সূচক ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এখানকার বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে বেশি অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণের ফলে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার ও শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
১৯৩ দিন আগে
করদাতাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে এ খাতে সংস্কার জরুরি: গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা
দেশের রাজস্ব আদায় বাড়ানোর পাশাপাশি করদাতাবান্ধব পরিবেশ তৈরির জন্য খাতটিতে জরুরি সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বক্তারা। একই সঙ্গে তারা বলেছেন, এ সংস্কার হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বাস্তবতার নিরিখে অংশীজনের মতামত গ্রহণের মাধ্যমে। বুধবার (৫ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, সংস্কার কার্যক্রম অন্তর্ভুক্তিমূলক না হলে তা মোটেই টেকসই হবে না। অথচ অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা না করেই বিপুল সংখ্যক পণ্য ও সেবায় কর বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে সংকটের মুখে পড়েছে বিভিন্ন শিল্প ও সেবাখাত।
প্রভাব পড়ছে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে। এতে সরকারের রাজস্ব আদায় না বেড়ে বরং কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
’কর নীতির কাঠামো পরিচালনা: গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর জন্য প্রভাব ও অগ্রাধিকার’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. মাশরুর রিয়াজ অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে কৃষি-প্রক্রিয়াকরণ, জ্বালানি ও ভোগ্যপণ্য খাতে সাম্প্রতিক কর নীতির পরিবর্তন ও এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা। তারা বলেন, বিভিন্ন খাতে সাম্প্রতিক কর বৃদ্ধি সরকারের রাজস্ব আদায়, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিদেশি বিনিয়োগের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও রাজস্ব আদায় বাড়ানোর স্বার্থে অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি প্রণয়নের ওপর জোর দেন তারা।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘সরকার এমন একটি কর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যেটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সহায়তা করবে ও আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কর নীতির লক্ষ্য হলো রাজস্ব আহরণ ও ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করা। আমরা শিল্প নেতাদের উদ্বেগ বুঝতে পারছি। বিনিয়োগ ও রাজস্ব আদায় বাড়ানো এবং দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে আমরা একটি সুষ্ঠু কর কাঠামো তৈরির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘কর নীতিতে পরিবর্তনশীল অর্থনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন থাকা প্রয়োজন। এ সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশীজনদের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: দেশের মাটি ও মানুষকে ভালোবাসতেন মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর: চট্টগ্রামে স্মরণসভায় বক্তারা
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ঢাকার সভাপতি কামরান টি. রহমান কর নীতিতে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনার আগে নীতি-নির্ধারক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে গঠনমূলক সংলাপের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘একটি টেকসই কর কাঠামো তৈরি করতে এনবিআর এবং শিল্পখাতের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা প্রয়োজন। আলোচনা বা মতামত গ্রহণ ছাড়া নীতি পরিবর্তন অর্থনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।’
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী উল্লেখ করেন, ‘করহারে ঘন ঘন পরিবর্তনের কারণে আগ্রহ হারাচ্ছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। দেশি-বিদেশি সব ধরনের বিনিয়োগকারীই চান একটি বিনিয়োগবান্ধব কর কাঠামো ও নীতির ধারাবাহিকতা। সেটি নিশ্চিত করা গেলে অর্থনীতিতে স্বস্তি আসার পাশাপাশি প্রবৃদ্ধিও ত্বরান্বিত হবে।’
এনবিআরের সাবেক সদস্য ও এনবিআর সংষ্কার কমিটির সদস্য ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘কমিটি অংশীজনদের সাথে কথা বলেছে। আমরা যে তথ্য পেয়েছি তা সবার কাছে তুলে ধরব। আমরা বেশ কিছু সুপারিশও দিয়েছি।’
২৭৫ দিন আগে
মেছো বিড়াল রক্ষা করা পরিবেশের জন্য জরুরি: পরিবেশ উপদেষ্টা
মেছো বিড়াল সংরক্ষণ শুধু প্রাণী অধিকার নয়, এটি পরিবেশ রক্ষার জন্যও জরুরি বলে জানিয়েছেন পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণীর ভূমিকা আছে। তাই তাদের রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।’
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) মেছো বিড়াল দিবস উপলক্ষ্যে বন অধিদপ্তরে বিশ্ব এক আলোচনা সভায় পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
শুধু মুরগি খাওয়ার অভিযোগে মেছো বিড়াল মারা অন্যায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এদের রক্ষা করতে হবে। এদের হত্যা চলতে থাকলে এটি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়বে। এদের হত্যা না করে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসকরা মেছো বিড়াল রক্ষায় সচেতনতা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও কাজে লাগানো হবে। তবে প্রকৃত প্রেমীদের সম্পৃক্ত করাই বেশি কার্যকর হবে। এছাড়া গণমাধ্যম শুধু দুঃখপ্রকাশ নয়, মেছো বিড়ালের পরিবেশগত গুরুত্বও তুলে ধরতে হবে।’
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণ কমানো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার: পরিবেশ উপদেষ্টা
জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ান। তিনি আরও বলেন, ‘শুধু মেছো বিড়াল নয়, সব বিপন্ন প্রাণী রক্ষায় নিষ্ঠুরতা বন্ধ করতে হবে। অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আইনের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। একেইসঙ্গে প্রকৃতির প্রতি দায়িত্ববোধ বাড়াতে হবে। কার্যকর বনায়ন পরিকল্পনা নিলে সংকট কাটানো সম্ভব।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। এছাড়া আরও বক্তব্য দেন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম. মনিরুল এইচ. খান, ফজলে রাব্বী, প্রভাষক, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রমুখ।
৩০৭ দিন আগে
পরিবেশ সুরক্ষায় বিশেষ কমিশন গঠনের পরামর্শ অধ্যাপক রেহমান সোবহানের
অতি মুনাফা ও বাজার অর্থনীতি পরিবেশ ধ্বংসের মূল কারণ বলে মন্তব্য করে পরিবেশের সুরক্ষায় বিশেষ কমিশন গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক রেহমান সোবহান।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী বিশেষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে বাপা ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন)।
অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ‘আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের অভাবে পরিবেশ সুরক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এজন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ প্রয়োজন। তবে সবার আগে এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে বিশেষ কমিশন গঠন করতে হবে।’
বাজার অর্থনীতি পরিবেশ ধ্বংসের জন্য দায়ী— এ কথার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘বাজার অর্থনীতির কারণে জমির অস্বাভাবিক মূল্য বেড়েছে। যে কারণে নদ-নদী, জলাভূমি ও বনভূমি দখল করে আবাসন নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কালোটাকার প্রভাবও দায়ী।’
পরিবেশ সুরক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবে বলে আশা প্রকাশ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা নিজেই একজন পরিবেশবিদ। তিনি পরিবেশ সুরক্ষায় ইতোমধ্যে ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে, বিভিন্ন ইস্যুতে সরকার কমিশন ও বিশেষ কমিটি গঠন করলেও পরিবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।’
এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় পরিবেশ সুরক্ষায় বাংলাদেশের নাগরিকদের সম্পৃক্ততার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘নাগরিক সম্পৃক্ততা থাকলেও অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে থেকে আন্দোলন করছে। ফলে দেশে অনেক অত্যাধুনিক আইন থাকলেও তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। সুফল পেতে চাইলে সবাইকে একই মঞ্চে আনতে হবে। এর মাধ্যমে সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি সহজ হবে।’
অতীতের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প দেশের জ্বালানি সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে তা পূরণ হয়নি; বরং ওই অঞ্চলের বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। আমাদের পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। পরিবেশ ধ্বংস করে—এমন প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বেনের প্রতিষ্ঠাতা ও বাপার সহসভাপতি নজরুল ইসলাম।
ধারণাপত্র উপস্থাপনকালে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গত ২৫ বছরের কাজের মধ্য দিয়ে বাপা ও বেন দেশের পরিবেশের সমস্যাবলি সম্পর্কে এক বিপুল জ্ঞানভান্ডার গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশের আর কোনো সংস্থার কাছে, এমনকি সরকারের কাছেও এ দেশের পরিবেশের সমস্যাবলি সম্পর্কে এরূপ তথ্য, বিশ্লেষণ ও সুপারিশের সম্ভার আছে কিনা সন্দেহ। এসব গ্রন্থ এখন বাংলাদেশের পরিবেশবিষয়ক গবেষণা ও আলোচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উৎস হিসেবে কাজ করছে।’
তবে বাপাকে এখনও উজানে নৌকা বাইতে হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘স্ব-অর্থায়ন ও স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে পরিবেশ রক্ষামূলক কাজের সংস্কৃতি অব্যাহত রাখা কঠিন হচ্ছে। এই কাজে সম্মিলিত উদ্যোগ ও সহযোগিতা প্রয়োজন।’
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাপা সভাপতি ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ২৫ বছরের পথচলায় বাপার অনেক অর্জন থাকলেও সারা দেশে কার্যকর পরিবেশ আন্দোলন গড়ে ওঠেনি। সারা দেশে স্থানীয় পরিবেশ সমস্যা নিয়ে ভুক্তভোগী জনগণ আন্দোলন করছেন, যাদের অনেকের কাছে আমরা পৌঁছাতে পারেনি। অনেকে এখনও বাপার খোঁজখবর রাখে না। তাদের কাছে আমাদের পৌঁছাতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন— শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আব্দুল লতিফ, বেনের বৈশ্বিক সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. মো. খালেকুজ্জামান, বাপা সহ-সভাপতি ড. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম ও খুশী কবির, বাপা সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, কোষাধ্যক্ষ জাকির হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ।
সম্মেলনের প্রথম দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রথম অধিবেশনে ‘রাজনীতিবিদদের দৃষ্টিকোণ থেকে বাপা ও পরিবেশ রক্ষার সংগ্রাম’, দ্বিতীয় অধিবেশনে ‘নদ-নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা’ এবং তৃতীয় অধিবেশনে ‘বায়ু, শব্দ ও দৃষ্টি দূষণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’ নিয়ে আলোচনা হয়।
শনিবার দ্বিতীয় দিনে সম্মেলনের চতুর্থ অধিবেশনে ‘স্থায়িত্বশীল নগরায়ণ’, পঞ্চম অধিবেশনে ‘জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও জলবায়ু পরিবর্তন’ এবং ষষ্ঠ অধিবেশনে ‘বন, পাহাড়, উপকূল ও আদিবাসী অধিকার’ নিয়ে আলোচনা হবে।
এরপর সবার মতামতের ভিত্তিতে সম্মেলনের প্রস্তাব গৃহীত হবে। সেই প্রস্তাব আগামীকাল (শনিবার) বিকেল ৫টায় সমাপনী অধিবেশনে তুলে ধরা হবে।
সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
৩২২ দিন আগে
বাগেরহাটে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাগেরহাটে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পূজামন্ডপগুলোতে মহাষ্টমী তিথিতে নানা উপকরণ দিয়ে দেবী দুর্গাকে পূজা আর আরধনা করছেন ভক্তরা।
শুক্রবার সকাল ৭টায় মহাষ্টমীতে পুস্পঞ্জলি দিতে বাগেরহাট শহরের শত বছরের প্রাচীনতম শ্রী শ্রী হরিসভা মন্দিরে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ ভক্তের ঢল নামে।
ভক্তরা দেবী দুর্গার কাছে সব ধরণের অশুভ শক্তি বিনাশ করে দেশবাসীর জন্য শান্তিকামনা করেন। ঢাকের বাজনা, শঙ্ক আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে পূজামন্ডপগুলো। চন্ডিপাঠ আর পূজারমন্ত্র ধ্বনিত হচ্ছে মন্ডপগুলোতে।আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা: অনলাইনের কার্যক্রম মনিটরিং করছে র্যাবের সাইবার ইউনিট
পুস্পাঞ্জলি শেষে মা দুর্গার কাছে তারা সব ধরণের অশুভ শক্তি বিনাশ করে দেশবাসীর জন্য শান্তিকামনা করেছে।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল আরিফ জানান, পূজামন্ডপগুলোতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জেলায় এবছর মোট ৫৯৭টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে ১৫৩টি পূজামন্ডপকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাগেরহাটে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বাগেরহাট জেলায় এবছর ৫৯৭টি পূজামন্ডবে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পূজামন্ডবগুলোতে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে। সেনাবাহিনী, র্যাব এবং জেলা প্রশাসনের মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক পুজামন্ডপগুলোতে টহল দিচ্ছে। একই সঙ্গে মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে নিজস্ব সেচ্ছাসেবক বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা: নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়
৪২০ দিন আগে
নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজন কম শব্দযুক্ত পরিবেশ: রিজওয়ানা হাসান
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, অনেক চালক হর্ন বাজিয়ে বিরক্ত করেন। তাই নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজন কম শব্দযুক্ত পরিবেশ।
তিনি বলেন, নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়তে কম শব্দযুক্ত দেশে থাকতে হবে। আমরা যদি বাস, ট্রাক বা গাড়িতে অপ্রয়োজনীয় হর্ন না বাজাই, তাহলে অনেক মানুষের স্বাস্থ্যহানি রোধ করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করে তুলতে পারিনি: উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পরিবেশ অধিদপ্তরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির প্রশিক্ষকদের শব্দ সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, রেড লাইট থেকে গ্রিন লাইটে আসলেই সব গাড়ি হর্ন বাজানো শুরু করে। এটা উচিত নয়। হর্ন বাজানোর আগে ভাবতে হবে, এটি জরুরি কি না। সকল ড্রাইভারকে হর্ন না বাজানোর জন্য সচেতন করতে হবে। বিশেষ করে, বাচ্চাদের স্কুলে নেওয়ার সময় রিকশায় যে শব্দ হয়, তাতে অনেক সময় কানের সমস্যা হতে পারে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ইসলাম ধর্মে উচ্চস্বরে নয়, নিচু করে কথা বলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমনভাবে কথা বলতে হবে যাতে মানুষের বিরক্তির কারণ না হয়। আমরা মনে করি যে যত জোরে কথা বলতে পারি, সে তত শক্তিশালী। কিন্তু আসলে যুক্তিপূর্ণ কথা বলাই আসল ক্ষমতা। আমাদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে পরিবর্তন আনলেই সমাজে ও রাষ্ট্রে পরিবর্তন আনা সম্ভব।
বক্তব্য দেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের পরিচালক।
আরও পড়ুন: সাশ্রয়ী মূল্যে ডিম ও মুরগি ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হবে: উপদেষ্টা
৪৩৩ দিন আগে
পরিবেশ সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়নে যুব সমাজের অংশগ্রহণ অপরিহার্য: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, পরিবেশ সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নে সক্রিয় নাগরিক অংশগ্রহণ, বিশেষত যুবকদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রবিবার (২ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘সাসটেইনেবল বিয়ন্ড কনফ্লিক্ট: ফর্জিং ইকুইট্যাবল পিস থ্রু ইউনিফাইড অ্যাকশন’ প্রতিপাদ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাশনাল মডেল ইউনাইটেড নেশন্স ২০২৪ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় নিরলসভাবে কাজ করতে আহ্বান পরিবেশমন্ত্রীর
তিনি বলেন, জাতিসংঘের তিনটি গুরুতর সমস্যা হলো- জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি ও দূষণ সমাধান। এই সমস্যা সমাধানে যুবকদের নিজেদের নিয়োজিত করতে হবে।
পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, যুব সম্প্রদায়কে যোগাযোগের দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা শিখতে হবে।
তিনি বলেন, প্রকৃতিকে সুরক্ষা করে তার সঙ্গে সহাবস্থান করতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নে সরকারের প্রচেষ্টায় অংশীদার হতে হবে।
তিনি বলেন, সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে পারলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র্য মুক্ত সোনার বাংলা গড়া সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস.ওয়াই. রমাদান, সংসদ সদস্য জারা জাবিন মাহবুব ও বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ সৈয়দ রাশেদ আল-জায়েদ।
আরও পড়ুন: সেচ পাম্পের জ্বালানি নবায়নযোগ্য করলে সাশ্রয় হতে পারে ৫০০০ মেগাওয়াট: পরিবেশমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
৫৫১ দিন আগে