আবদুলায়ে সেক
বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে: বিশ্বব্যাংক
নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে পারে এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের উপর চাপ অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) ঢাকায় আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের (অ্যামচাম) মধ্যাহ্নভোজ সভায় বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, এটি বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং দেশীয় বিনিময় হার, মুদ্রা ও রাজস্ব নীতির উপর নির্ভর করে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, ‘গত দুই মাসের তথ্যে আমরা ইতোমধ্যেই এই পূর্বাভাসটিকে বাস্তবায়িত হতে দেখেছি। রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ হ্রাস পেতে দেখা গেছে।’
তিনি বলেন, আগামীতে নীতির সমন্বয় সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থাকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করতে পারে। অতিরিক্ত বিনিময় হারের নমনীয়তা প্রবাসীদের আনুষ্ঠানিক চ্যানেল ব্যবহার করে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করবে এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধি উৎসাহিত করবে।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ১.৭ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের
সেক বলেছেন, ঋণের উপর সুদের হারের সীমা নির্ধারণ পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করাসহ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে মুদ্রানীতির সংস্কার জোরদার করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘একই সময়ে কার্যকর ব্যাংক তদারকির মাধ্যমে আর্থিক খাতের দুর্বলতাগুলো মোকাবিলা করা প্রয়োজন। সাম্প্রতিক মুদ্রানীতির সংস্কারগুলো একটি সঠিক পদক্ষেপ, তবে এগুলো বাস্তবায়নে গতি বাড়ানো প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, এসব বাস্তবায়ন হলে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে পারে। যেহেতু আমদানি মূল্য মধ্যম মেয়াদে স্থিতিশীল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার অনুমোদন বিশ্বব্যাংকের
বাইরের চাপের মুখে বাংলাদেশের সতর্ক সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন: বিশ্বব্যাংক
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার, বাংলাদেশকে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করার জন্য সংস্থাটির অব্যাহত সহায়তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রমাগত বাহ্যিক চাপের মুখোমুখি হচ্ছে, যার জন্য সতর্ক সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। তবে আরও বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য কাঠামোগত সংস্কারকে আরও গভীর করা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং জলবায়ু বিপর্যয়গুলোর বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপকতা জোরদার করা প্রয়োজন।’
রাইসার মঙ্গলবার বাংলাদেশে তার দুই দিনের সফর শেষ করেছেন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক তার দেশভিত্তিক নতুন কৌশল এবং বিদ্যমান বৃহৎ পোর্টফোলিও দ্রুত বাস্তবায়ন কৌশলের অধীনে সহায়তা দ্বিগুণ করতে প্রস্তুত রয়েছে।
বৈশ্বিক ঋণ সংস্থার তথ্যমতে, রাইসার তার বর্তমান দক্ষিণ এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সফর করেছেন।
সফরকালে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের ৮৫৮ মিলিয়ন ডলার তহবিল পাচ্ছে
তারা ২০২৩-২৭ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংকের নতুন কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক এবং সেইসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা কীভাবে বাংলাদেশকে বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সহায়তা করতে সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করেন।
রাইসার বিশ্বব্যাংক-সমর্থিত প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়ানোর আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা খাতকে শক্তিশালী করতে এবং কোভিড-১৯ মহামারিতে আরও ভালোভাবে সাড়া দিতে ১৯১ মিলিয়ন ডলারের অর্থায়নে স্বাক্ষর করেছে।
উচ্চশিক্ষার দ্রুত রূপান্তর প্রকল্প উচ্চশিক্ষায় আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক সহযোগিতা, গবেষণা এবং উদ্ভাবনে সহায়তা করবে। এটি আরও বেশি নারীকে মানসম্মত শিক্ষা পেতে সহায়তা করবে।
রাইসারের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান এবং বাংলাদেশ ও ভুটানের পক্ষে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক যথাক্রমে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের পক্ষে স্বাক্ষর করেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে পদ্মা সেতুর চিত্রকর্ম উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক ৫ প্রকল্পে সমন্বিত ২.২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ চুক্তি সই