সালাহউদ্দিন আহমেদ
এত আত্মবিশ্বাসী যে সরকারি দল হবেন, নির্বাচনে আসেন না কেন: জামায়াতকে সালাহউদ্দিন
জামায়াতে ইসলামী যদি সরকারি দল হওয়ার বিষয়ে এতটা আত্মবিশ্বাসী হয়, তাহলে নানা টাল-বাহানায় নির্বাচন কেন বাধাগ্রস্ত করছে— দলটির নেতাদের উদ্দেশ্যে এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অপর্ণ আলোক সংঘের আয়োজনে ‘তারুণ্যের রাষ্ট্রচিন্তার তৃতীয় সংলাপ-মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জামায়াত এখন জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছে, অথচ একই সময়ে তারা এমন এক দলের সঙ্গে রাস্তায় আন্দোলন করছে, যে দল ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনার অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল।
তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কালকে কয়েকটা সমাবেশ হয়েছে সারাদেশে, বিভিন্ন বিভাগ পর্যায়ে। পত্রিকায় আজ হেডলাইন দেখলাম, কোথাও বলছে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠন করবে, বিএনপি বিরোধী দলে যাবে।’
জামায়াত নেতাদের উদ্দেশে বিএনপি নেতা বলেন, ‘ভাইসাব আপনারা কি নির্ধারণ করে দিয়েছেন, বিএনপি বিরোধী দলে যাবে নাকি জনগণ তাদের বিরোধী দল করবে? ‘আপনারা যখন এত বেশি আত্মবিশ্বাসী যে, সরকারি দল হবেন, তাহলে নির্বাচনে আসেন না কেন? আজকে এই বাহানা, কালকে ওই বাহানা, পরশু আরেক বাহানা দিয়ে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছেন কেন? উদ্দেশ্য কী, সেটা তো আমরা জানি।’
আরও পড়ুন: বিএনপিকে তরুণদের আস্থা পুনর্গঠন করতে হবে: তারেক রহমান
তিনি জামায়াতের কাছে প্রশ্ন তোলেন, ‘কাদেরকে নিয়ে আপনারা আন্দোলন করছেন এখন যুগপৎ সঙ্গী হিসেবে, সেটা জনগণ দেখছে। তাদের মধ্যে একটি দল আছে, আমি নাম নিলে তো আবার অসুবিধা।’
দলটির নাম নিলেও ২০২৪ সালে ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে তারা অংশ নিয়েছিল বলে উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি আরও বলেন, ‘তারা যদি যুগপৎ এর সঙ্গী হলে নিষ্পাপ হয়, তাহলে বাকি ২৮ টা দল যারা ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গী হয়েছিল তারা কি মহাপাপী?
এই নীতি সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তা ছাড়া শুধু ২০২৪ সালের নির্বাচন অংশ না নিলেও আগের সব নির্বাচনে ‘হাত পাখা’ আওয়ামী লীগের সঙ্গী ছিল বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
তবে মতপার্থক্য থাকলেও আলোচনার টেবিলেই নিষ্পত্তি চান বলে জানিয়েছেন এই বিএনপি নেতা। ইসলামী আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মতপার্থক্য গণতন্ত্রের অংশ এবং যেকোনো দল তাদের দাবি আদায়ের জন্য গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে রাস্তায় নামতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলছিলাম, যে বিষয়গুলো এখনো আলোচনার টেবিলে নিষ্পত্তি হওয়ার অপেক্ষায়, সেজন্য অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করার জন্য কি আপনারা রাস্তায় গেলেন? সেই চাপকে আবার বাতাস শূন্য করার জন্য আমাদেরকেও তো যেতে হবে হবে রাস্তায়।’
তিনি বলেন, আমরা কি সেটা চাই? আমরা চাই আলোচনার টেবিলেই এসব বিষয় সমাধান হোক।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে চর্চার মাধ্যমে এটিকে শক্তিশালী করতে হবে।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন: ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাবে বিএনপি
তিনি বলেন, জাতীয় ইস্যুতে, দেশের স্বার্থে ইস্যুতে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্রের ইস্যুতে, আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো। কিন্তু গণতান্ত্রিক চর্চায় আমাদের মধ্যে বিতর্ক হবে, মতভিন্নতা হবে, বহুমত পোষণ করব কিন্তু সেটার নিষ্পত্তি হবে আলোচনার টেবিলে।
পিআর পদ্ধতির নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পিআর যদি চাইতেই হয় সেটা তো ডিসাইড (নির্ধারণ) করবে জনগণ। আমরা কে কয়টা রাস্তায় মিছিল করলাম, বিভাগীয় পর্যায়ে কে কয়টা সভা করলাম, হাজার দুই-তিনেক লোক নিয়ে মিছিল করলাম তাতে কি পিআর প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল?’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আপনারা নির্বাচনী ইশতেহারে আপনাদের দাবিগুলো উল্লেখ করে নির্বাচনে আসুন। জনগণ যদি আপনাদের পক্ষে রায় দেয়, ইশতেহারের পক্ষে রায় দেয়, আপনারা সেটা বাস্তবায়ন করবেন। এটিই তো গণতান্ত্রিক রীতি।’
৭৫ দিন আগে
জুলাই সনদ একটি সামাজিক চুক্তি, কোনো পক্ষ এটি ভাঙবে না: সালাহউদ্দিন
ঢাকা, ৩০ জুলাই (ইউএনবি): জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ একটি মহান বাধ্যতামূলক সামাজিক চুক্তি হিসাবে বর্ণনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কোনো দল এটি অমান্য করার সাহস করবে না, কারণ এটি একটি স্বচ্ছ জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা আবশ্যক।
বুধবার (৩০ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (এনসিসি) আয়োজিত দ্বিতীয় দফা সংলাপের ২২তম অধিবেশনে চা বিরতির সময় সালাউদ্দিন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল কি এটি ভঙ্গ করার সাহস করবে? কোনো দল কি সেই ঝুঁকি নেবে? আমি মনে করি না এর চেয়ে বড় ঐকমত্য, সমঝোতা স্মারক বা সামাজিক যোগাযোগ বা চুক্তি হতে পারে। এটি জাতি, জনগণ, রাজনৈতিক দল এবং সকল অংশীদারদের মধ্যে একটি চুক্তি। এবং আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে এটি বাস্তবায়নের একমাত্র স্থান হলো জাতীয় সংসদ।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সনদের তাৎক্ষণিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য একটি আইনি কাঠামোর দাবির বিষয়ে বিএনপির অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন এটি একটি আইনি দলিল হওয়া উচিত। কিন্তু আমি বলব এই পুরো প্রক্রিয়াটি—দীর্ঘ, স্বচ্ছ, সরাসরি সম্প্রচারিত আলোচনায় অনেক রাজনৈতিক দলকে জড়িত করা—একটি উন্মুক্ত আদালতের বিচারের মতো। জাতি দেখেছে কে কী বলেছে। এখন যখন প্রধান উপদেষ্টা, সংস্কার কমিশনের প্রধান, এনসিসির সদস্য, জাতীয় নেতা এবং সকল দলের প্রতিনিধিদের সই নিয়ে একটি সনদ প্রস্তুত করা হয়—এবং এটি অনলাইনে এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়—তখন কি কোনো দল এটি লঙ্ঘনের সাহস করতে পারে? আমি তা মনে করি না।’
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র অভ্যুত্থানের পর সনদ জাতির সম্মিলিত চেতনাকে প্রতিফলিত করে। ‘কোনো রাজনৈতিক দল কি জাতির আকাঙ্ক্ষা এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক নেতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করতে পারে... আমি বিশ্বাস করি না যে এটি সম্ভব,’ বলেন তিনি।
পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারকে ভুল পদক্ষেপ, গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্তের বিষয়ে সতর্ক করলেন তারেক
সালাউদ্দিন জোর দিয়ে বলেন, বিএনপি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছে এবং সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন করা উচিত সে বিষয়ে এনসিসির প্রস্তাবগুলোর সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জাতীয় সংসদই এই সনদ বাস্তবায়নের একমাত্র স্থান।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, সনদের একটি ধারা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে সম্মত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে। ‘আমরা সেই অনুভূতি এবং প্রস্তাবের সাথে শতভাগ একমত।’
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, সনদ সই হওয়ার আগেই অধ্যাদেশ এবং উপদেষ্টা পর্যায়ের পদক্ষেপের মাধ্যমে অনেক সংস্কার বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে।
বিএনপি সংস্কার গ্রহণ করে না এমন অভিযোগের বিষয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কমিশনের মোট ৮২৬টি প্রস্তাবের মধ্যে আমরা মাত্র ৫১টির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছি। এত বিশাল ঐকমত্য গঠনের প্রক্রিয়ার পরে কেউ কীভাবে বলতে পারে যে বিএনপি সংস্কারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়?’
১২৭ দিন আগে
জামায়াতের সঙ্গে জোটের সুযোগ নেই, তবে এনসিপির জন্য আলোচনার দরজা খোলা: সালাহউদ্দিন
দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনি জোট গঠনের সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচন ঘিরে যে দাবিদাওয়া তুলছে, তা তাদের বৃহত্তর কৌশলের অংশ। পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনাকে দ্রুত শেষ করার তাগিদ দিয়ে তিনি সতর্ক করেছেন যে, অপ্রয়োজনীয় দীর্ঘসূত্রতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘জামায়াত ইসলামীকে নিয়ে নির্বাচনি জোটের কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না। অতীতে কৌশলগত কারণে আমরা জামায়াতের সঙ্গে জোট করেছি, কিন্তু এবার তাদের সঙ্গে জোট গঠনের প্রয়োজন অনুভব করছি না।’
তিনি জানান, বিএনপি এখন মূলত সেই দলগুলোর সঙ্গে জোট ও জাতীয় সরকার গঠনে মনোযোগী, যারা একযোগে আন্দোলনে এবং গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশ নিয়েছে। তার কথায়, ‘এখন এর বাইরে কিছু ভাবা হচ্ছে না।’
এনসিপির সঙ্গে সম্ভাব্য জোট গঠন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত রাজনৈতিক জোট নিয়ে আলোচনা চলবে। কী হয় তা সময়ই বলে দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব গণতান্ত্রিক দলই নির্বাচনের আগে নানা কৌশল গ্রহণ করবে। বিএনপি শেষ পর্যন্ত কী কৌশল অবলম্বন করে এবং কার সঙ্গে জোট করে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ আলোচনার প্রতি অসন্তোষ জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমার মনে হয়, এই আলোচনা অপ্রয়োজনীয়ভাবে দীর্ঘায়িত হচ্ছে। যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যেই আলোচনা শেষ হওয়া উচিত ছিল।’
‘ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক পরিচালনায় কিছু ঘাটতি রয়েছে, যা পুরো প্রক্রিয়াকে সময়সাপেক্ষ করে তুলছে। আশা করি, এই আলোচনা আর বেশি দিন চলবে না। এখন একটা সারসংক্ষেপ ও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো দরকার।’
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যত পুনর্প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন কেবল সুপ্রিম কোর্টের রিভিউ রায়ের অপেক্ষা। আমরা আশা করি, আপিল বিভাগ রিভিউ আবেদনে ইতিবাচক রায় দেবে।
বাংলাদেশের জনগণ নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন চায় জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এই কাঠামোর রূপ কিংবা সাবেক প্রধান বিচারপতিকেই প্রধান উপদেষ্টা রাখার বিষয়টি নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়েছে। এই বিষয়ে বিকল্প নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। বিএনপিসহ অন্যান্য দল এবং সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাব দেবে। যদি আরও ভালো কোনো বিকল্পে একমত না হওয়া যায়, তবে বর্তমান কাঠামোই বহাল থাকবে।’
আসন্ন নির্বাচনে অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এই রাজনীতিক বলেন, বাংলাদেশে এই ব্যবস্থার জন্য উপযোগী রাজনৈতিক, সামাজিক ও নির্বাচন সংস্কৃতি নেই।
বিষয়টির তিনি ব্যাখ্যা করেন এভাবে, ‘পিআর ব্যবস্থায় ভোটাররা সরাসরি তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন, ভোটদানে নিরুৎসাহিত হন এবং সংসদে স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’
‘আমাদের ভোটাররা তাদের পরিচিত ও স্থানীয় প্রার্থীকে ভোট দিতে পছন্দ করেন। কিন্তু পিআর ব্যবস্থায় এমনও হতে পারে যে, একটি এলাকায় কোনো দল বেশি ভোট পেলেও অন্য এলাকার কাউকে নির্বাচিত করা হয়। এটি জনগণের রায়কে প্রতিফলিত করে না, বরং গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয়।’
‘যেসব দেশে পিআর ব্যবস্থা কার্যকর, সেখানে স্থানীয় সরকারগুলোও শক্তিশালী। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। এখানে সংসদ সদস্যরা সরাসরি উন্নয়ন প্রকল্পে যুক্ত থাকেন। তাই এখানে পিআর কার্যকর হবে না।’
তার মতে, বাংলাদেশে এমন একটি রাজনৈতিক কাঠামো দরকার, যেখানে জনগণ সরাসরি প্রার্থীকে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে। বাংলাদেশ পিআর ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত নয়। এটি কখনো এখানে প্রয়োগ হয়নি; জনগণও এই পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত নয়।
এই নির্বাচন পদ্ধতির আরেকটি সমস্যা তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘পিআর ব্যবস্থায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনের সুযোগ হারাবেন। কেউ যদি খুব জনপ্রিয়ও হন, কিন্তু কোনো দলে না থাকেন, তাহলে তিনি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন না। এটি অন্যায় এবং অগণতান্ত্রিক।’
তার মতে, ছোট দলগুলো পিআর চায়, কারণ এতে তারা কম ভোট পেয়েও বেশি আসন পেতে পারে। কিন্তু এর ফলে দুর্বল জোট সরকার গঠিত হয় এবং দেশে শক্তিশালী নেতৃত্ব গড়ে ওঠে না।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করা এই নেতা বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন কোনো অবস্থাতেই বিএনপি মেনে নেবে না।’
‘কিছু দল বিভিন্ন দাবি করছে। কেউ সংস্কার চায়, কেউ বলছে বিচার ছাড়া নির্বাচন নয়, কেউ পিআর চায়। এসব বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে। তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী, সংবিধান অনুযায়ী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন হবে। কথা বলার অধিকার সবাই রাখে, তবে সেসব বক্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতও হতে পারে।’
আরও পড়ুন: অধস্তন আদালত বিকেন্দ্রীকরণে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্মান করি এবং তাদের জন্য শুভকামনা রাখি। কিন্তু প্রকৃত রাজনৈতিক ওজন আসে জনসমর্থন থেকে। ছোট ছোট কিছু দল বড় বড় কথা বললেও তারা খুব অল্পসংখ্যক মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। রাজনীতিতে জনমতের মূল্য সবচেয়ে বেশি।’
বিএনপির জোটসঙ্গী দলগুলোর মধ্যেও মতপার্থক্য দেখা দিতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি আসলে দর কষাকষির কৌশলেরই অংশ হতে পারে, যেমন ধরুন আসন ভাগাভাগি।’
আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মতে, আওয়ামী লীগ আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়। তারা বহু আগেই তাদের আদর্শ ও চরিত্র হারিয়েছে। তারা এখন একটি অগণতান্ত্রিক, ফ্যাসিবাদী শক্তিতে, এক ধরনের মাফিয়া সংগঠনে পরিণত হয়েছে। ১৯৭৫ সালের আগ থেকে আজ পর্যন্ত তাদের ইতিহাসে কখনো গণতন্ত্র চর্চা হয়নি। গণতন্ত্র তাদের রক্তে নেই।’
আরও পড়ুন: জুলাই ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন: সংবিধান কোনো ‘সাহিত্য’ নয়
১৪৭ দিন আগে
মেধাপাচার রোধ ও শিক্ষা পুনর্গঠনের অঙ্গীকার বিএনপির
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘তাদের দল এমন একটি বৈষম্যহীন পরিবেশ গড়ে তুলতে চায়, যেখানে শিক্ষা ও গবেষণা একযোগে অগ্রসর হবে এবং মেধাপাচার রোধ করা সম্ভব হবে।’
রবিবার (২২ জুন) রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘তারুণ্যের রাষ্ট্রচিন্তা প্ল্যাটফর্ম’ আয়োজিত ‘শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন’ শীর্ষক এক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা শিক্ষা খাতকে এমনভাবে গড়ে তুলতে চাই, যাতে গবেষণা ও শিক্ষায় সমান অগ্রগতি হয় এবং সেখানে কোনো বৈষম্য না থাকে।’
এমন পরিবেশ গড়ে তুলতে হলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনগুলোর সম্মিলিত ভূমিকা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি। সালাহউদ্দিন বলেন, ‘রাজনীতিবিদ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত ভূমিকার মাধ্যমেই একটি উন্নত রাষ্ট্র গঠন সম্ভব।’
‘রাজনীতিবিদদের মতোই শিক্ষকদেরও দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। একই সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থী ও তাদের সংগঠনগুলোর সমর্থনও প্রয়োজন। এই তিনটি শক্তির সমন্বয়েই একটি কার্যকর রাষ্ট্র গঠন সম্ভব,’ বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, দেশে যদি গুণগত গবেষণার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়, তাহলে বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে যাওয়া মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে আসতে আগ্রহী হবেন।
‘মেধাপাচার কমে আসবে এবং তারা দেশে থেকেই অবদান রাখতে চাইবেন।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমাদের অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ও পেশাজীবী বিদেশে গিয়ে আর ফেরেন না। কারণ দেশে এমন একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যেখানে তারা ফিরে আসতে আগ্রহী হন না।’
আরও পড়ুন: তিন সাবেক সিইসিসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে বিএনপির মামলা
অন্যদিকে, চীন ও ভারত তাদের দক্ষ জনগোষ্ঠীর ফিরে আসার ফলে লাভবান হয়েছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা বিদেশে থাকেনি, বরং দেশে ফিরে এসেছে এবং প্রযুক্তির দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে উঠেছে। কিন্তু বাংলাদেশে এমনটি হচ্ছে না।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেসসচিব ফয়েজ আহমেদ, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মাওদুদ আলমগীর পাভেল ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থীরাও সংলাপে অংশ নেন এবং শিক্ষা বিষয়ে তাঁদের মতামত ও প্রশ্ন তুলে ধরেন। অতিথিরা এসব প্রশ্নের উত্তর দেন এবং সেরা তিনজন প্রশ্নকারীকে পুরস্কৃত করা হয়।
১৬৫ দিন আগে
এনসিসি গঠনের বিরোধিতা করে বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমেদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিএনপি কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদ ও সংস্থায় নিয়োগের জন্য জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবকে সমর্থন করে না, কারণ প্রস্তাবিত কাউন্সিলের কোনো জবাবদিহিতা নেই।
তিনি বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আমরা এমন কোনো প্রতিষ্ঠানকে সমর্থন করতে পারি না—যার কর্তৃত্ব, ক্ষমতা ও কাজ আছে, কিন্তু জবাবদিহি নেই। এই ধরনের কাজসহ একটি পৃথক সংস্থা তৈরি করা ভারসাম্যহীন পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে।
বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কার আলোচনার দ্বিতীয় দফার অধিবেশনের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে সালাহউদ্দিন এই মন্তব্য করেন।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, এনসিসি সংস্কার কমিশনের একটি প্রস্তাব, যাতে রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি কাউন্সিল গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কাউন্সিলে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ উভয়ের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, বিরোধীদলের মনোনীত দুইজন ডেপুটি স্পিকার এবং উভয় কক্ষের একজন করে সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এনসিসি কার্যকর থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পর নির্বাচনকালীন সময়ে প্রধান উপদেষ্টা, দুইজন উপদেষ্টা, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত পাঁচ সদস্যের একটি সংস্থা দায়িত্ব গ্রহণ করবে।
পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে, আশা রিজভীর
এনসিসির কার্যাবলী ও কর্তৃত্ব প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার, অ্যাটর্নি জেনারেল, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, প্রস্তাবিত স্থানীয় সরকার কমিশন, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং সাংবিধানিক আইনে নির্ধারিত অন্যান্য পদসহ গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ব্যক্তিত্বদের নিয়োগকে অন্তর্ভুক্ত করবে।
প্রস্তাবিত কাউন্সিল রাষ্ট্রপতির কাছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের জন্য নামও সুপারিশ করতে পারবে।
সালাহউদ্দিন বলেন, তারা (বিএনপি) আগে ব্যাখ্যা করেছেন কেন তারা এই এনসিসি ধারণার সঙ্গে একমত হতে পারে না এবং পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে এই এনসিসির জন্য প্রস্তাবিত কার্যাবলী এবং দায়িত্বগুলো ইতোমধ্যেই বিভিন্ন আইন এবং সাংবিধানিক বিধানের মাধ্যমে নির্বাহী বিভাগের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা জিজ্ঞাসা করতে পারি, অথবা আপনারা (সাংবাদিকরা) জিজ্ঞাসা করতে পারেন -- এত দায়িত্ব ও ক্ষমতার মধ্যে এবং এত নিয়োগ (সম্পাদনা) করার পরেও জবাবদিহি কোথায়? জবাবদিহি আছে কি? কেউ নেই। জবাবদিহি ছাড়া আমরা কোনো প্রতিষ্ঠানকে সমর্থন করতে পারি না।’
এনসিসির পক্ষে এই যুক্তি খণ্ডন করে যে, এই নিয়োগগুলো প্রধান নির্বাহী (সরকারের) করে, তাই দেশে অরাজকতা তৈরি হয়।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমাদের যা দরকার তা হলো একটি সুষম রাষ্ট্রীয় কাঠামো, সামাজিক ব্যবস্থা এবং শাসন ব্যবস্থা। ‘যদি একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকত—তাহলে এইভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হত না।’
তিনি বলেন, পুরো সংসদ বিলুপ্ত করা যাবে না বা পুরো নির্বাহী বিভাগকে এই সমস্যার জন্য দায়ী করা যাবে না।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, যদি নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও সাংবিধানিকভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়—তাহলে নির্বাহী বিভাগ ও সংসদ স্থায়ীভাবে তাদের কর্তৃত্ববাদী নিয়ন্ত্রণ হারাবে। যদি (এই ব্যবস্থাগুলোতে) কোনো ত্রুটি থাকে—তবে তা একটি স্বাধীন বিচার বিভাগের মাধ্যমে সমাধান করা হবে। এই কারণে, বিএনপি বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতার প্রস্তাব করে।
পড়ুন: মঙ্গলবারের ঐকমত্য বৈঠকে না আসায় জামায়াতের তীব্র সমালোচনা ফখরুলের
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি কিছু আদালতের রায়, সাংবিধানিক সংস্কার ও অনুমোদনের মাধ্যমে সত্যিকারের স্বাধীন বিচার বিভাগের দিকে ধীরে ধীরে অগ্রগতি হবে। ‘তাহলে এই ব্যবস্থাগুলো সুসংরক্ষিত থাকবে।’
বুধবার ঐক্যমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে সংস্কার আলোচনায় বিএনপি, এনসিপি এবং জামায়াতসহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল যোগ দেয়। বুধবার এনসিসি গঠন এবং রাষ্ট্রপতির কর্তৃত্ব নিয়ে আলোচনা হয়।
তবে, অধ্যাপক আলী রীয়াজ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো সাংবিধানিক পদে নিয়োগ পরিচালনার জন্য একটি সাংবিধানিক সংস্থার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। ‘যদিও কয়েকটি দল কিছু নীতিতে ভিন্নমত পোষণ করে, তবুও সকলেই একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠার পক্ষে মত দিয়েছে।’
তিনি বলেন, কমিশন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পর্কিত দুটি প্রস্তাব বিবেচনা করছে—একটি সাংবিধানিক সংস্কার কমিশন থেকে এবং অন্যটি নির্বাচনী সংস্কার কমিশন থেকে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কর্তৃত্বের ভারসাম্য নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে, বলেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
বৃহস্পতিবার, সংস্কার আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ এবং রাষ্ট্রের মৌলিক নীতিমালা, রাষ্ট্রপতির নিয়োগসহ আলোচনা হয়নি এমন বিষয়গুলো নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
১৬৯ দিন আগে
সংসদে চারটি স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদ বিরোধী দলের: সালাহউদ্দিন
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ের সভার মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে সাংবাদিকদের বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদে ৫০টি স্থায়ী কমিটির মধ্যে চারটি বিরোধী দলের জন্য ধার্য হয়েছে এবং সব রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে একমত।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মঙ্গলবারের (১৭ জুন) সভায় চারটি গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পাবলিক অ্যাকাউন্ট, প্রিভিলেজ, ইস্টিমেশন এবং পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটির সভাপতি পদ বিরোধী দল থেকে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সবাই একমত বলে জানিয়েছে তিনি।
বাকি স্থায়ী কমিটি প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘শুধু এই চারটি কমিটি না, সংখ্যাধিক্যের ভিত্তিতে বাকি কমিটিতেও আনুপাতিক হারে বিরোধীদলের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা থাকবে।’
আরও পড়ুন: বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে শুধু জাতীয় নির্বাচন চায়: সালাহউদ্দিন
‘এছাড়া সংবিধানের ৭০ নং অনুচ্ছেদ যেখানে নিজ দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলে সদস্য পদ বাতিলের বিধান আছে, সে বিষয়ে আস্থা ভোট এবং অর্থ বিল বাদে অন্য কোনো বিষয়ে ভোটদানে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে সবাই একমত,’ বলেন তিনি।
তবে বিএনপির পক্ষ থেকে যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং জাতীয় নিরাপত্তা এই দুই বিষয়েও দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া যাবে না এমন মত দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে এই দুই বিষয়ে অটল থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা নির্বাচিত হলে ৭০নং অনুচ্ছেদে এ দুটি বিষয়ও যুক্ত করা হবে।’
নারীদের ১০০ সংরক্ষিত আসন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই এ বিষয়ে একমত। তবে নির্বাচন পদ্ধতি কেমন হবে তা নিয়ে মতানৈক্য আছে। আশা করছি, আজকের আলোচনা শেষে এ বিষয়ে সমাধানে আসা যাবে ‘
এছাড়া জুলাই সনদের পাশাপাশি প্রতিটি রাজনৈতিক দলের আলাদা আলাদা ইশতেহার গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির এ নেতা।
১৭০ দিন আগে
সংস্কারের নামে কলা দেখাচ্ছে সরকার: সালাহউদ্দিন আহমেদ
অন্তর্বর্তী সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নিয়ে ‘সংস্কারের’ নামে কেবল ‘কলা দেখাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কৃষক দল।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘সংস্কারের এই নাটক কতবার উদ্বোধন করবেন? প্রথম দফায় উদ্বোধন, তারপর দ্বিতীয় দফায় আবার। এখন তৃতীয় দফায় আরেকটা উদ্বোধন! এটি আসলে সংস্কারের নামে ‘কলা দেখানো’ ছাড়া কিছু নয়।’’
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ২ জুন আরেক দফা সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। ‘আমরা আগেই বলেছি—যা আলোচনা হয়েছে, সব একত্র করে জাতির সামনে উপস্থাপন করুন। কিন্তু আপনারা শুধু আনুষ্ঠানিকতা করছেন, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ২ জুন আবার নতুন করে আলোচনার কী প্রয়োজন?’
তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কারের চেয়েও বড় অগ্রাধিকার হওয়া উচিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা—ফ্যাসিস্টদের বিচারের দাবিই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।’
আরও পড়ুন: দেশে পদে পদে গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হচ্ছে: খালেদা জিয়া
সালাহউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে সরকারের আগের প্রতিশ্রুতি থেকে তারা সরে এসেছে। ‘আপনারা বলেছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হবে। এখন আবার পিছু হটলেন—এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
২০১৫ সালের ১০ মার্চ উত্তরার বাসা থেকে গোয়েন্দা পরিচয়ে অপহরণের শিকার হওয়া সালাহউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীরা রক্ত দিয়েছে, নির্যাতনের শিকার হয়েছে, কারাবরণ করেছে, ‘আয়নাঘরে’ বন্দী হয়েছে। এসব কিছু কি শুধু গল্প? আমরা এসব ভোগ করেছি এমনি এমনি।’
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা এবং বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার লক্ষ্যেই বিএনপি আন্দোলন করছে বলে মন্তব্য করেন দলটির এই নেতা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি ইঙ্গিত করে সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের কথা বললেই যদি আপনি অস্বস্তি বোধ করেন, তবে সেটা অত্যন্ত হতাশাজনক। সংস্কারের নামে কতদিন আর নির্বাচন বিলম্ব করবেন?’
নির্বাচন পেছানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বিলম্ব করার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। আপনার (ড. ইউনূস) কোনো যুক্তি নেই। ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজন না করার একটি কারণও যদি থাকে—তা জাতির সামনে তুলে ধরুন।’
সংস্কারকে একটি চলমান প্রক্রিয়া বলে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, সংস্কারকে অজুহাত বানিয়ে নির্বাচন পেছানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ‘সংস্কার কখনও সম্পন্ন করার মতো কাজ নয়, সময় ও দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী তা বিকশিত হয়। কিন্তু তাই বলে এর অর্থ এই নয় যে, আপনি এটিকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দিতে পারেন।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের সঙ্গে সংস্কার ও আ.লীগের বিচার মেলানোর সুযোগ নেই: বিএনপি
কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদি আমিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালসহ কৃষক দলের নেতারা।
১৮৭ দিন আগে
অন্তবর্তী সরকারে এনসিপি-বিদেশি ও ফ্যাসিবাদের দোসর রয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমেদ
অন্তর্বর্তী সরকারকে এনসিপি মার্কা সরকার আখ্যা দিয়ে বিদেশি নাগরিককে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করার সমালোচনা করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
শনিবার (১৭ মে) খুলনায় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় খুলনা ও বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক ড. ইউনুসকে উদ্দেশ করে বলেন, অন্তবর্তী সরকারের একমাত্র ম্যান্ডেট ছিল দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্ত অন্ততকাল জুড়ে বিচার ও সংস্কারের বাহানা দিয়ে গণতন্ত্রকে কন্টকাকীর্ণ করবেন না।
তিনি বলেন, ‘আপনার সরকারে এসসিপির প্রতিনিধি আছে। বিদেশি নাগরিককে আপনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করেছেন। আপনার উপদেষ্টা পরিষদে ফ্যাসিবাদের দোসর রয়েছে। অবিলম্বে তাদেরকে পদত্যাগ করতে বলুন অথবা আপনি তাদেরকে অপসারন করুন।’
জনগণের সঙ্গে কথা না বলেই অন্তবর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, নির্বাচনের দাবিতে যদি সরকার ঘেরাও করি সেটা হবে দুর্ভাগ্যের। নিজেকে অসীম ক্ষমতার অধিকারী ভাববেন না। বিদেশে গিয়ে কি চুক্তি করে এসেছেন জানতেও চান তিনি।
খুলনা নগরীর সার্কিট হাউজ মাঠে সাম্প্রতিক সময়ের বৃহত্তম এই সমাবেশে খুলনা বিভাগের ১০ জেলা ও বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার লক্ষাধিক নেতাকর্মী অংশ নেয়। দিনের শুরু থেকেই সমগ্র নগরীজুড়ে ছিল নেতাকর্মীদের পদচারণা। তবে জৈষ্ঠ্যের তীব্রতর খরতাপ ও গরমে নাজেহাল হয়েছেন তারা। তবে বিকাল ৪টার পরে তাপদাহ কিছুটা কমে এলে সমাবেশস্থল সার্কিট হাউজ মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ণ হওয়ার পর আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় আগত কর্মীরা ছড়িয়ে পড়েন। এ কারণে সার্কিট হাউজ মাঠ ছাড়াও আশেপাশের সড়কে বিদ্যুতের খুটিতে কয়েক শত মাইক টানানো হয়। তবে দূর দূরান্ত থেকে নেতাকর্মী আসায় দিনভর নগরী জুড়ে ছিল তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বরিশাল থেকে বড় লঞ্চেও বহু কর্মী খুলনা আসেন।
আরও পড়ুন: ফ্যাসিবাদবিরোধী বাংলাদেশে সবার আগে প্রয়োজন জাতীয় ঐকমত্য: সালাহউদ্দিন আহমেদ
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের সময় যাদের বয়স ১৮ বছর ছিল তারা কেউই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন সালাহাউদ্দিন আহমেদ। বলেন, চার থেকে সাড়ে চার কোটি ভোটার কেউই গণতন্ত্রের স্বাদ পাননি। শেখ হাসিনা খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিল। জতিসংঘের রিপোর্ট বলছে, আন্দোলন দমন করতে মারণাস্ত্র ব্যবহার করে ১ হাজার ৪০০ ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্ত এই গণহত্যা চালিয়েও আওয়ামী লীগের ভেতরে কোনো অনুশোচনা নেই।
আওয়ামী শাসনামলে লুটপাট, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির নানা পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, এগুলো আমার তথ্য না, এগুলো দুর্নীতি সংক্রান্ত শ্বেপত্র কমিটি প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে ঢাকায়, আর দাফন হয়েছে দিল্লিতে। বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক, মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং আজকের তরুণ ছাত্র-যুবককে সেই ৩১ দফার অ্যাম্বাসেডর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সমাবেশ শেষে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাসের শিল্পীরা সমাবেশ মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না।
আরও পড়ুন: কোনো দলের স্বার্থে নির্বাচন বিলম্বিত করা উচিত নয়: বিএনপি নেতা নজরুল
স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন নাসিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, বাগেরহাটে আততায়ীর গুলিতে নিহত তানু ভূঁইয়ার বিধবা স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক ফখরুল ইসলাম রনি, যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তারেক ও ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান।
২০১ দিন আগে
আইসিইউতে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ
বিএনপির বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অবস্থার অবনতি হলে আজ রাত ৩টার দিকে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) থেকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে সালাহউদ্দিন আহমেদকে বিএসএমএমইউ’র সিসিইউতে ভর্তি করা হয়।
শামসুদ্দিন দিদার আরও বলেন, এছাড়া গতকাল সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে তার হার্ট ফেইলিওর হয়েছে এবং তার রক্তচাপ ওঠানামা করছে।
আরও পড়ুন: সালাহউদ্দিন আহমেদকে বিনা চিকিৎসায় কারাগারে বন্দি রেখেছে: রিজভী
নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন বিএনপির সাবেক এই সংসদ সদস্য।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো.মাহাবুবুল আলম বলেন, চিকিৎসকদের পরামর্শে গত ৪ অক্টোবর তাকে বিএসএমএমইউর সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে হাসপাতালের কারাকক্ষে স্থানান্তর করা হয়।
৩ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। যাত্রাবাড়ীতে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ গ্রেপ্তার
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়েছে: অভিযোগ ছেলের
৭৪৪ দিন আগে
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ গ্রেপ্তার
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও দলের বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদকে বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গত ২৯ জুলাই রাজধানীতে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সহিংসতার ঘটনায় করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সালাহউদ্দিনের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন জানান, আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় হানিফ ফ্লাইওভারে সালাহউদ্দিনসহ ছয়জনকে ডিবি পুলিশের একটি দল গ্রেপ্তার করে।
তিনি বলেন, ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় শনিবারের অবস্থান কর্মসূচিতে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা বিভিন্ন মামলায় তার বাবাকে সর্বোচ্চ আদালত আগাম জামিন দিয়েছেন।
যোগাযোগ করা হলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, তারা যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে সালাউদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি বলেন, গত ২৯ জুলাই বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচি চলাকালে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদলসহ বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো পুলিশের ওপর হামলা চালায় এবং তিনটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
হারুন বলেন, এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় চারটি মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়েছে: অভিযোগ ছেলের
তিনি আরও বলেন, চারটি মামলার মধ্যে দুইটিতে সালাহউদ্দিন এক নম্বর আসামি, অন্য দুটি মামলারও আসামি। এসব মামলায় ডিবি (ওয়ারী বিভাগ) তাকে গ্রেপ্তার করেছে এবং আমরা তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, সরকারের চলমান দমন-পীড়ন ও গ্রেপ্তারের সর্বশেষ শিকার সালাহউদ্দিন আহমেদসহ বিএনপির ছয় নেতাকর্মী।
তিনি বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) ডিবি পুলিশ তাদের অন্যায়ভাবে তুলে নিয়েছে। অবৈধ সরকার তাদের অপকর্ম ঢাকতে চায় গ্রেপ্তার ও হামলা দিয়ে।’
অন্য গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা এম শাহিন, শাহআলম মুন্সি, আবির হোসেন, নিয়ামুল হক, ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড ইউনিটের সদস্য নয়ন ও সালাহউদ্দিনের গাড়িচালক এম কাজল।
রিজভী বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির মহাসমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ২৮ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ৪০৬ বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে সরকার।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে ফেরার জন্য বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে সরকার
বিএসপিএ'র কাজী সালাহউদ্দিনের সাম্মানসূচক সদস্যপদ স্থগিত
৮৫৪ দিন আগে