৬ মাস
খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর মত আইন মন্ত্রণালয়ের
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের দুইটি শর্তেই (বিদেশে যাওয়া যাবে না এবং দেশে চিকিৎসা নিতে হবে) মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত আবেদনে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর বিষয়ে মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। মতামত দিয়ে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হচ্ছে। এ নিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ নির্বাহী আদেশে আটবারের মতো বাড়ানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসছেন ৩ চিকিৎসক
বুধবার (২০ মার্চ) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার ভাইয়ের যে আবেদন ছিল ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা মতে তার সাজা স্থগিত রেখে দুইটি শর্তে যে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, সেটা সাতবার বাড়ানো হয়েছে। বুধবার একই শর্তে সাজা স্থগিত রেখে মুক্তির আদেশ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হচ্ছে। আমি এ মতামত দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এখনই ফাইল পাঠিয়ে দিচ্ছি।’
বেগম জিয়ার পরিবারের আবেদনে ছিল তার স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে দুইদিন আগেও আপনাদের বলেছি। যেহেতু ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় যে আবেদন ছিল সেটি নিষ্পত্তি হয়েছে। এখন সেই আবেদনের ওপরে আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই, শুধু মেয়াদ বাড়ানো ছাড়া। ঠিক সেই কারণে আমি মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলে সুপারিশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফাইল পাঠাচ্ছি।’
মানবিক কারণে তাকে বিদেশে পাঠানো যাবে কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, যাই করতে হবে আইনের মাধ্যমে করতে হবে। যে আইনে তাকে বের করা হয়েছে, সেই আইনে এ (বিদেশে পাঠানো) সুযোগ নেই।’
গত ৬ মার্চ খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ৬ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন।
আরও পড়ুন: সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হবে
২ বছর ৬ মাস কারাভোগ শেষে ২ বাংলাদেশি কিশোরকে দেশে ফেরত
ভারতে আড়াই বছর কারাভোগের পর দুই বাংলাদেশি কিশোরকে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় দেশে ফেরত পাঠিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছে।
ফেরত আসারা কিশোররা হলো- সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা থানার পারুলিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে কামাল হোসেন (১৬) এবং ঢাকার শ্যামপুর পশ্চিম জুরাইন এলাকার হামিদ ফরাজির ছেলে সুলতান ফরাজি (১৭)।
আরও পড়ুন: ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরল ৫০ কিশোর-কিশোরী
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বিশ্বাস জানান, দেশে ফেরত আসা এই দুই বাংলাদেশি কিশোর আড়াই বছর আগে চোরাইপথে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যায়। কলকাতা রেলস্টেশন এলাকায় সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরির সময় পুলিশ তাদের আটক করে। পরে পুলিশ তাদের কোলকাতা আদালতে পাঠালে আড়াই বছরের সাজা হয় তাদের।
সাজা শেষে কলকাতার লিলুয়া নামের একটি এনজিও সংস্থা তাদের শেল্টার হোমে আশ্রয় দেয় তাদের। ভারত-বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দীর্ঘদিন চিঠি চালাচালির এক পর্যায়ে রবিবার সন্ধ্যায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়। পরে ভারত সরকারের দেওয়া বিশেষ ‘রিপেট্রিয়েশন’ পারমিটের মাধ্যমে তাদের দেশে ফেরত আনা হয়।
তিনি আরও জানান, দুই কিশোরকে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। সেখানে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের নিজ নিজ অভিভাবকের হাতে তুলে দেবেন পুলিশ।
আরও পড়ুন: ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ১০ বাংলাদেশি
ভারতে ৩ বছর কারাভোগের পর দেশে ফিরলেন ১৬ বাংলাদেশি
রানা প্লাজা ধস: ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ
সাভারে রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা হত্যা মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
একই সঙ্গে ভবন মালিক সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিতের আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিনসংক্রান্ত আপিল বিভাগের আদেশ বহাল থাকবে।
আরও পড়ুন: রানা প্লাজা দুর্ঘটনার ৮ বছর
জামিন স্থগিত থাকায় সোহেল রানা মুক্তি পাচ্ছেন না বলে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন (লিভ টু আপিল) শুনানির নির্ধারিত দিন সোমবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
আরও পড়ুন: ‘রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি’ নিয়ে দৃক গ্যালারিতে চলছে প্রদর্শনী
সোহেল রানার পক্ষে শুনানি করেন- আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী মুনমুন নাহার।
এর আগে গত বছরের ১০ জুলাই আপিল বিভাগ রানার জামিন আবেদনের বিষয়টি (স্ট্যান্ডওভার) মূলতবি করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার সেটি শুনানি হয়।
গত বছরের ৮ মে ঢাকার অদূরে সাভারে রানা প্লাজা ধসে হতাহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় ভবন মালিক সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন (লিভ টু আপিল) শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলা শুরু
একই সঙ্গে এই সময় পর্যন্ত সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
এই মামলায় সোহেল রানার জামিন মঞ্জুর করে (রুল অ্যাবসলিউট) গত ৬ এপ্রিল রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা গত ৯ এপ্রিল চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য উঠে।
সেদিন চেম্বার আদালত সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি ৮ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
আরও পড়ুন: রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: সোহেল রানার জামিন আদেশ আরও ৬ মাস স্থগিত
তারই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১০ জুলাই আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ রানার জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের বিষয়টি (স্ট্যান্ডওভার) মূলতবি করেছিলেন।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৫ জন শ্রমিক নিহত হন। গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেন ১ হাজার ১৬৯ জন।
ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় একই বছরের ২৯ এপ্রিল বেনাপোল থেকে সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর থেকে তিনি কারাগারে।
আরও পড়ুন: রানা প্লাজা ধসের ৯ বছর আজ
৬ মাসে রেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৩১: এসসিআরএফ
চলতি বছরের (২০২৩ সালের) প্রথম ৬ মাসে ১৩৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৩১ জন নিহত হয়েছেন। এ সময়ে আহত হয়েছেন আরও ১১০ জন।
শনিবার (৫ আগস্ট) শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন: আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক যাত্রা
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এর মধ্যে জানুয়ারিতে সবচেয়ে কম ১২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৫ জন নিহত ও ৭ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, ফেব্রুয়ারিতে সর্বাধিক ৪৪টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হয়েছেন ৩৭ জন এবং আহত হয়েছেন ৮ জন।
এসসিআরএফ’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মার্চে ১৮টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত এবং ৫ জন আহত হয়েছেন।
এ ছাড়া এপ্রিলে ১৭টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২০ জন এবং আহত হয়েছেন আর ৬৯ জন।
এদিকে মে মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৪টি। এতে ২৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৮ জন।
আরও পড়ুন: ছয় মাসে রেলপথে দুর্ঘটনায় নিহত ১১৩: জিসিবি ও জাতীয় কমিটির যৌথ প্রতিবেদন
অপরদিকে, জুন মাসে ২২টি রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত হয়েছেনে ১৯ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ১৩।
এসসিআরএফ জানায়, রেলপথ দুর্ঘটনার উপর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ চালিয়ে এবং ১২টি বাংলা জাতীয় দৈনিক, ৫টি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক, ৯টি অনলাইন নিউজপোর্টাল ও সংবাদ সংস্থা ও ৬টি আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে রেল পরিবহন ব্যবস্থা ও দুর্ঘটনার উপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে দুর্ঘটনার ৯টি কারণ চিহ্নিত করেছে এসসিআরএফ।
আরও পড়ুন: রেল কর্মীদের অবরোধ: ৫ ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
দুর্ঘটনার ৯টি কারণ হলো-
কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, সিগনালিং ব্যবস্থায় ত্রুটি, ঝুঁকিপূর্ণ রেলক্রসিং, ইঞ্জিনের সক্ষমতার অতিরিক্ত বগি সংযোজন, রেললাইনে পাথরের স্বল্পতা, ঝুঁকিপূর্ণ রেলসেতু, আধুনিক প্রযুক্তির অভাব, জনবল সংকট এবং নড়বড়ে ট্র্যাক তথা রেললাইনে নিম্নমানের স্লিপার ও ফিশপ্লেটসহ বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়-
সরকার রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। উন্নয়ন বাজেটেও অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
রেলপথ বাড়লেও দীর্ঘদিনের পুরোনো লাইনগুলো ঠিকমতো সংস্কার না করায় দ্রুতগতির ট্রেন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না।
আরও পড়ুন: ছয় মাসে রেলপথে দুর্ঘটনায় নিহত ২০৯: এসসিআরএফ