চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন
বাংলাদেশের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বিনিয়োগ ও সমর্থন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি চীনের
বাংলাদেশে চীনা কোম্পানিগুলোর বৃহত্তর বিনিয়োগ এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে চীনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
বুধবার (৩ এপ্রিল) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনায় আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততা এবং সহায়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন রাষ্ট্রদূত ইয়াও।
এই সহায়তার লক্ষ্য হলো- বাংলাদেশের 'রূপকল্প ২০৪১' বাস্তবায়ন এবং 'স্মার্ট বাংলাদেশ' অর্জনের যাত্রাকে ত্বরান্বিত করা।
বৈশ্বিক ইস্যু এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রত্যাবাসনসহ বিভিন্ন পারস্পরিক উদ্বেগের বিষয়েও কথা বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত। এই সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা উভয় দেশের নাগরিকদের জন্য যথেষ্ট সুবিধা বয়ে এনেছে।
আরও পড়ুন: দেশে শিশু-মাতৃমৃত্যু কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, চীন ও বাংলাদেশ উভয়ই তাদের নিজ নিজ উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবনের সন্ধানে যে গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে।
বর্তমান আন্তর্জাতিক জলবায়ুর চ্যালেঞ্জ স্বীকার করেন এবং সুশাসনের অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সমন্বিত সহযোগিতা আরও সংহত করতে চীন প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
এছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং বাস্তব সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ইয়াও।
তিনি বলেন, এই সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা উভয় দেশের নাগরিকদের জন্য যথেষ্ট সুবিধা বয়ে এনেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সহায়তা চাইলেন শেখ হাসিনা
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, চীন ও বাংলাদেশ উভয়ই তাদের নিজ নিজ উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবনের সন্ধানে যে গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক জলবায়ুর ঝুঁকিগুলো স্বীকার করে সুশাসনের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও বাংলাদেশের সঙ্গে সমন্বিত সহযোগিতা আরও সংহত করতে চীন প্রস্তুত বলেও জানান চীনা রাষ্ট্রদূত।
উভয় দেশের নেতাদের নির্দেশনা ও আগ্রহে চীন-বাংলাদেশ কৌশলগত অংশীদারিত্বের অব্যাহত সমৃদ্ধির কথা পুনর্ব্যক্ত করে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস। এটি সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ও লাভজনক ফলাফল অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: বস্ত্র-পাট খাতে চীনের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সহায়তা চাইলেন শেখ হাসিনা
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৩ এপ্রিল) গণভবনে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এই সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি চাই চীন এ অঞ্চলের আরও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করুক।’
প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে পিছিয়ে আছে।
আরও পড়ুন: রূপপুর দ্বিতীয় পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণে রোসাটমকে প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে জানান, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো সরকার এই এলাকার উন্নয়নে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু দিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
সহযোগিতার বিষয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উপস্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।
নজরুল ইসলাম আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী আগামী জুলাই মাসে চীন সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি বাংলাদেশের জন্য আজরাইল: সংসদে শেখ হাসিনা
আগামী নির্বাচনের পর স্থিতিশীলতা ও বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: আশা চীনা রাষ্ট্রদূতের
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জনগণই নির্ধারণ করবেন।
তিনি যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমাদের নীতি খুবই পরিষ্কার। আমরা হস্তক্ষেপ করি না। আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচনের পর স্থিতিশীলতা আসবে এবং আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, 'সংবিধান ও আইনের' ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত 'বিআরআই@১০: আশরিং ইন নেক্সট গোল্ডেন ডিকেড' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নির্দিষ্ট একটি দেশ নিজেকে বাংলাদেশের বন্ধু দাবি করলেও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয় : চীনা রাষ্ট্রদূত
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিইএবির প্রেসিডেন্ট কে চ্যাংলিয়াং। ডিকাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েস অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা স্থিতিশীলতা চাই। আমরা আশা করি, চীনের জনগণ ও সম্পত্তি সুরক্ষিত থাকবে। এখন পর্যন্ত আমরা নিরাপদ বোধ করছি। যে প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ।’
তিনি বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের প্রাক-নির্বাচনের বছর। গণমাধ্যমের অনেক বন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করতে আসেন বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে চীনের পর্যবেক্ষণ কী। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’
তিনি বলেন, পররাষ্ট্রনীতির বিষয় হিসেবে চীন অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি মেনে চলে এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপকারী যে কোনো শক্তির বিরোধিতা করে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের জনগণ। চীন বাংলাদেশের উন্নত ভবিষ্যতের পাশাপাশি চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।’
আরও পড়ুন: জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বেইজিং ঢাকাকে সমর্থন করে: চীনা রাষ্ট্রদূত
ঢাকা-বেইজিং বন্ধুত্বে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ‘আশার সেতু’: চীনা রাষ্ট্রদূত
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, তরুণ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা দুই দেশের বন্ধুত্বের ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ‘আশার সেতু’।
এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের বর্তমানকে লালন করতে এবং নিয়মিত অধ্যয়ন করতে উৎসাহিত করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘তাদের কেবল পেশাদার কোর্সই নয়, চীনা ইতিহাস ও সংস্কৃতিও শিখতে হবে। তাদের কেবল বিভিন্ন লেকচারে অংশ নিলেই হবে না, বরং বিভিন্ন ক্ষেত্র ঘুরে দেখতে হবে এবং তাদের আরও চীনা বন্ধু তৈরি করা উচিত।’
আরও পড়ুন: ঢাকায় চীনা বিশেষ দূত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত