বঞ্চনা
চা শ্রমিকদের সংগ্রাম: শতাব্দীর বঞ্চনার মাঝে ক্ষীণ আশার আলো
ভোর হতেই লবণ দিয়ে এক মগ লাল চা আর সঙ্গে দুই মুঠো চাল ভাজা খেয়ে ছুটে যান তারা চা বাগানে। অথচ যাদের শ্রমে দেশজুড়ে এই চায়ের খ্যাতি, তারা নিজেরাই দুধ-চিনি মেশানো এক কাপ চা পান করার সামর্থ্য রাখেন না। কাঠফাটা রোদে মাইলের পর মাইল হাঁটতে হাঁটতে তারা সংগ্রহ করেন চা পাতা। দুপুরে ক্ষণিকের বিরতিতে যদি কপালে থাকে, কাঁচা মরিচ আর পাতার চাটনি দিয়ে খান ভাত। আবার অনেক সময় মুড়ি কিংবা একটু চানাচুর দিয়েই মধ্যাহ্নভোজ সারতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই নিভৃতে কঠিন এক জীবন সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে চলেছেন তারা।
চায়ের শেকড়ে ঔপনিবেশিক শেকল
প্রায় দেড়শ বছর আগে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকদের প্রলোভনে ভারতে বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা থেকে এসব চা শ্রমিকদের সিলেটে আনা হয়। তাদের অধিকাংশই ছিলেন নারী।
‘গাছ নাড়লেই টাকা পড়ে’ কিংবা ‘মাটি খুঁড়লেই সোনা মেলে’র মতো অবাস্তব ও অলীক কথায় ‘আরকাট্টি’ নামে পরিচিত নিয়োগ এজেন্টরা তাদের মন ভুলিয়েছিলেন। আর তারপর থেকেই শুরু হয় শোষণের ইতিহাস; যার ফলে আজও দুঃখ, সংগ্রামের ভারী শৃঙ্খল বয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাদের।
১৮৬৩ সালের শ্রম অভিবাসন আইন এই নিয়োগকে আনুষ্ঠানিক করে, তবে বাস্তবতা ছিল অনেক কঠিন। শ্রমিকরা কঠোর পরিস্থিতি, বিষাক্ত সাপ, বন্যপ্রাণী ও বাগান মালিকদের নিদারুণ শোষণের মুখোমুখি হয়।
এই শোষণের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯২১ সালের ‘মুলুকে চলো’ আন্দোলনে হাজার হাজার শ্রমিক ঘরে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ব্রিটিশ বাহিনীর তোপের মুখ থেকে রেহাই পাননি তারা। চাঁদপুরে ব্রিটিশ বাহিনীর হাতে ঘটে এমনই এক ভয়াবহ গণহত্যা, যেখানে শত শত মানুষ নিহত হন। ফলে ঘরে আর ফেরা হয় না তাদের, আর নিয়তি মেনে নিয়ে চায়ের শেকড়ের সঙ্গেই নিজেদের শেকড় রচনা করতে হয় শ্রমিকদের। তার ধারাবাহিকতায় সিলেটের চা শ্রমিকরা কম মজুরি, দুর্বিষহ জীবনযাত্রা, পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ, সীমিত ডিজিটাল সংযোগ ও সন্তানদের জন্য সীমিত শিক্ষার সুযোগের মতো সমস্যার মধ্যে জীবনধারণ করে চলেছেন।
মজুরির নামে অবজ্ঞা
চা শ্রমিকদের সবচেয়ে বড় বঞ্চনার জায়গা তাদের মজুরি। ২০২২ সালে আন্দোলনের মুখে তাদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ১৭০ টাকায় উন্নীত হয়। কিন্তু ২০২৫ সালেও তাদের ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরির দাবি পূরণ হয়নি। তার ওপর মজুরি বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি যেমন অপূর্ণ, তেমনি অর্থপ্রদানে বিলম্বও নৈমিত্তিক ঘটনা। কখনো কখনো ২০ সপ্তাহ পর্যন্ত বেতন না পেয়ে তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হন।
আরও পড়ুন: বকেয়া মজুরির দাবিতে রবিবার সড়ক অবরোধের ঘোষণা চা শ্রমিকদের
চা শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, ‘১২০ টাকা দৈনিক মজুরি দিয়ে পরিবার চালানো প্রায় অসম্ভব।’
১৮৯ দিন আগে
বাংলাদেশের মানুষের বঞ্চনার ইতিহাস দূর হয়ে গেছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে; বাংলাদেশের মানুষের বঞ্চনার ইতিহাস দূর হয়ে গেছে। এটি দূর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অনেকের জন্য এটা মনোকষ্টের কারণ হয়েছে।
শুক্রবার(২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ডিআরইউতে রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতির, ঢাকার বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দেশ যাতে স্বাধীন না হয় সেজন্য অনেকেই বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে ছিল, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দিকে তাকিয়ে ছিল। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, করোনা মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে অনেকেই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দিকে তাকিয়ে আছে। অন্যদের ইঙ্গিতে, ইশারায় চলছে। দেশকে ওই জায়গায় নেওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন:নদী রক্ষায় ডিসিদের জোরালো ভূমিকা প্রয়োজন: নৌ প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, চিলমারী নদী বন্দরের উন্নয়ন করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে রেল ও সড়কপথের উন্নয়ন করা হচ্ছে।
সংগঠনের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য উন্মে কুলসুম স্মৃতি, সংগঠনের সিনিয়র সদস্য শামসুল হক দুররানী, সংগঠনের সিনিয়র সদস্য আনন্দ আলোর সম্পাদক রেজানুর রহমান, সদস্য মশিউর রহমান, সংগঠনের সাবেক আহ্বায়ক ও নর্থ বেঙ্গল ফোরামের সভাপতি নজমুল হক সরকার এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়সার ইমন।
আরও পড়ুন: আগামী দিনে নৌবাণিজ্যে মোংলা বন্দর নেতৃত্ব দিবে:নৌ প্রতিমন্ত্রী
৭৯৭ দিন আগে