বাকৃবি
তাপপ্রবাহে বাকৃবিতে ক্লাস অনলাইনে, পরীক্ষা সশরীরে
তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শিক্ষার্থীদের নানাবিধ শারীরিক সমস্যার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) কর্তৃপক্ষ।
এসময় তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক পরীক্ষাগুলোতে সশরীরে উপস্থিত হতে হবে।
আরও পড়ুন: বাকৃবি: একজনও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেই ৬ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য
সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদীয় সভাকক্ষে আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডিন কাউন্সিরের সদস্যরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পশু পালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছাজেদা আখতার।
ড. ছাজেদা আখতার বলেন, প্রবহমান তীব্র্র তাপদাহের (হিটওয়েভ) কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে পরীক্ষা চলমান রেখে শুধু ক্লাসগুলো অনলাইনে নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছে ডিন কাউন্সিল সদস্যরা। তবে সব পরীক্ষা যথারীতি চলবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহের কথা বিবেচনা করে ২৩ থেকে ২৫ এপ্রিল প্রতিদিনের ক্লাসগুলো অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি পরিস্থিতির অবনতি হয় অর্থাৎ এই তাপপ্রবাহ চলমান থাকে সেক্ষেত্রে প্রশাসন এই কার্যক্রমকে আরও বর্ধিত করবে। অন্যথায় ক্লাস আবারও পূর্বের ন্যায় সশরীরে হবে।’
আরও পড়ুন: দেশে কম খরচে ও স্বল্প সময়ে গবাদিপশুর নির্ভুল রোগ নির্ণয় পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি বাকৃবি অধ্যাপকের
বাকৃবিতে এনএসটির অর্থায়নে বিটরুট গবেষণায় দ্বিগুণ ফলন
সর্বজনীন পেনশন প্রজ্ঞাপন বৈষম্যমূলক: বাকৃবি শিক্ষক সমিতি
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে বৈষম্যমূলক বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক সমিতির শিক্ষকরা।
তারা বলেন, প্রজ্ঞাপনে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি। উপরন্তু, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে এর আওতাভুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষকতার পেশাকে রীতিমতো অবমাননা করা হয়েছে। এই প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়িত হলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
আরও পড়ুন: দেশে কম খরচে ও স্বল্প সময়ে গবাদিপশুর নির্ভুল রোগ নির্ণয় পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি বাকৃবি অধ্যাপকের
বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এসব কথা বলেন।
এসময় বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো আসাদুজ্জামান সরকার বলেন, একটি অসাধু মহল দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও জাতিকে মেধাশূন্য করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। প্রজ্ঞাপনটি বৈষম্যমূলক, হতাশাসৃষ্টিকারী ও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে।
অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, প্রজ্ঞাপনটি একটা চক্রান্ত। শিক্ষকদের হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই এই কাজটি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের কোথাও শিক্ষকদের মান-মর্যাদা কখনও নিচু করা হয় না। এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও বাতিলের দাবি জানাই।
শিক্ষক সমিতির অন্যান্য নেতারা ছাড়াও এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী মানববন্ধনে যোগ দেন।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, জুলাইয়ের পর স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থার চাকরিতে যারা যোগদান করবেন, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় প্রত্যয় স্কিমে যুক্ত করা হবে।
হঠাৎ এমন প্রজ্ঞাপনের ফলে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে চরম হতাশা, ক্ষোভ ও অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: নেপাল-বাংলাদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ ও বহুমুখী: বাকৃবিতে নেপাল রাষ্ট্রদূত
বাকৃবিতে তিন দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় অনুষ্ঠিত
বাকৃবিতে তিন দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ, নেপাল ও মালয়েশিয়ার ঐতিহ্যবাহী পোশাক, খাবার, শিল্প, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি)। এ আয়োজনে অংশ নেন তিন দেশের প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (৮ মার্চ) সকাল ৯টায় লায়ন্স ক্লাব অব ঢাকা ময়মনসিংহ হেরিটেজের অর্থায়নে ও বাকৃবি লিও ক্লাবের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাষি ভবনে এই আয়োজনের উদ্বোধন করা হয়।
এদিন বিকেল ৩টায় তিন দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, খাবার, শিল্প, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি প্রদর্শন করে।
আরও পড়ুন: দেশে কম খরচে ও স্বল্প সময়ে গবাদিপশুর নির্ভুল রোগ নির্ণয় পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি বাকৃবি অধ্যাপকের
এ সময় বাকৃবির লিও ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. কে.এইচ.এম নাজমুল হুসাইন নাজির বলেন, ব্যাপক সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশের সংস্কৃতি বহির্বিশ্বে প্রচারের উদ্দেশ্যেই আয়োজনটি করা হয়েছে। এ আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একে অপরের দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে ও শ্রদ্ধাশীল হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশই চায় তাদের সংস্কৃতি অন্যান্য দেশে প্রচার হোক। বাকৃবিতে প্রতি বছরই বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে আসে। ৩০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী আমাদের লিও ক্লাবের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছে। তাদের মাধ্যমে দেশকে বহির্বিশ্বে ভালোভাবে প্রচার করতেই এই আয়োজন করা হয়েছে।
লায়ন্স ক্লাব অব ঢাকা ময়মনসিংহ হেরিটেজের সভাপতি লায়ন ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম এনামুল বলেন, ক্ষুধা, দৃষ্টিশক্তি, শিশু ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও পরিবেশ নিয়ে লায়ন্স ক্লাব সারা বিশ্বে কাজ করে যাচ্ছে। এসব কাজের পাশাপাশি লায়ন্স ক্লাব ও লিও ক্লাবের উদ্যোগে দরিদ্র মানুষদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, গরু ছাগলের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন প্রদান, বয়স্কদের বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু ও পথশিশুদের চিকিৎসা, খাবার ও সাহায্য করা হয়। এছাড়া গর্ভবতী মা ও কিশোরীদের জন্যও সেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে এনএসটির অর্থায়নে বিটরুট গবেষণায় দ্বিগুণ ফলন
তিনি আরও বলেন, দেশের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় লিও ক্লাবেই একমাত্র বিদেশিদের অংশগ্রহণ রয়েছে। তাদের মাধ্যমেই লিও ক্লাব ও লায়ন্স ক্লাবের মানব কল্যাণমূলক কার্যক্রম সহজেই আন্তর্জাতিক আঙিনায় ছড়িয়ে পড়বে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল, ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. তানভীর রহমান, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ , অধ্যাপক ড. বাপন দে, সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. গোলজার হোসেন।
আরও পড়ুন: কেবল দেখতেই সুন্দর নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর রঙিন ফুলকপি: বাকৃবি অধ্যাপক
বাকৃবিতে শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে ৬ দফা দাবি
নারী সহপাঠীকে শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে ছয় দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) অভিযুক্ত সিএনজি অটোরিকশা চালকের বিচারের দাবিতে পশুপালন অনুষদ থেকে একটি মিছিল বের হয়ে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে শেষ হয়। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও ও সকাল থেকেই ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে।
আরও পড়ুন: উদ্যোক্তাবান্ধব গবেষণায় দেশসেরা বাকৃবি
ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা জানান, শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল পশু পুষ্টি মাঠ গবেষণাগারে ব্যবহারিক ক্লাস করতে যাচ্ছিলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এসময় বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) আবাসিক এলাকাসংলগ্ন সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় পেছন থেকে ২০-২৫ বছর বয়সী সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক তার শরীরে হাত দেয় ও গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী চিৎকার দিলে ওই ব্যক্তি সিএনজি নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ছয় দফা দাবি জানায়।
আরও পড়ুন: কেবল দেখতেই সুন্দর নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর রঙিন ফুলকপি: বাকৃবি অধ্যাপক
দেশের প্রথম গয়াল-ইল্যান্ডের কঙ্কাল তৈরি করলেন বাকৃবি অধ্যাপক
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের এনাটমি মিউজিয়ামে প্রথমবারের মতো গয়াল ও আফ্রিকান কমন ইল্যান্ডের কঙ্কাল প্রস্তুত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (বাউরেস) ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার সহযোগিতায় ২০১৯ সাল থেকে এনাটমি মিউজিয়ামের উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে উদ্যোগ গ্রহণ করেন এনাটমি অ্যান্ড হিস্টোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এখন পর্যন্ত বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি, গৃহপালিত ও বন্য প্রাণির ১৪টি কঙ্কাল প্রস্তুত করেছেন। তিনি দেশে প্রথমবারের মতো গয়াল, আফ্রিকান কমন ইল্যান্ডের কঙ্কাল ও দ্বিতীয় হিসেবে জিরাফের কঙ্কাল তৈরি করেছেন।
মিউজিয়ামটিতে হাতি, জিরাফ, শুশুক, হরিণ, অ্যারাবিয়ান হর্স, বানর, খরগোশ, বিড়াল, কুকুর, টার্কি, হাঁস ও মুরগির কঙ্কাল প্রস্তুত সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া জলঢোঁড়া সাপ ও লেঙ্গুরের কঙ্কাল বানানোর কাজ চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাকৃবির মরণ সাগর: সূর্য সন্তানদের অমলিন স্মৃতি
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষমেলা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) টিএসসি মিনি কনফারেন্স রুমে শনিবার (১৮ ই নভেম্বর) বৃক্ষমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাউ প্ল্যান্ট লাভারস অনলাইনভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রথমবারের মতো বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হয়।
এসময় মেলা পরিদর্শন করতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আফরিনা মুস্তারি, সহকারী প্রক্টর মো. শরীয়ত-উল্লাহ ও ড. মো. আরিফ সাকিল।
আরও পড়ুন: বাকৃবির মরণ সাগর: সূর্য সন্তানদের অমলিন স্মৃতি
বাকৃবির মরণ সাগর: সূর্য সন্তানদের অমলিন স্মৃতি
১৯৬১ সালে যাত্রা শুরু পূর্ব পাকিস্তান ভেটেরিনারি কলেজের। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঘোষণা করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। পরবর্তীতে এই নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)।
মূলত এই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টি পাকিস্তানের শোষণ, অবিচার, বাষট্টি’র শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯’র গণ-অভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন বাংলার এক নতুন সূর্যোদয় দেখা সকল কিছুরই স্বাক্ষী।
৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের তালিকায় নাম রয়েছে বাকৃবির কিছু সূর্য সন্তানদের। প্রজন্মের পর প্রজন্ম দল-মত নির্বিশেষে সবার জন্য তাদের স্মৃতি রক্ষার্থেই নির্মিত হয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ’ বা ‘মরণ সাগর’।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে নির্মিত হয় মরণ সাগর, যা পরবর্তীতে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আলী আকবরের (২০১৫-২০১৯ সময়কাল) পৃষ্ঠপোষকতায় এবং মুক্তিযুদ্ধ স্থাপনা সংস্কার সম্পর্কিত কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে বর্তমান রূপে নিয়ে আসেন।
স্মৃতিস্তম্ভটিতে একটি সম্পূর্ণ পরিস্ফুটিত শাপলা ফুলের মধ্য থেকে বেরিয়ে আছে দু’টি হাত, হাতের মধ্যে একটি রাইফেল উঁচু করে ধরা এবং রাইফেলের অগ্রভাগে বাংলাদেশের পতাকা বাধা। যা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশেকে অর্জনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১ গবেষক
স্মৃতিস্তম্ভটির দেয়ালে খোদাই করে লেখা রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া বাকৃবির ১৯ জন শহীদের নাম। মরণ সাগরের লাল রঙয়ের সিঁড়ি ও মেঝে দ্বারা এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে বোঝানো হয়েছে।
বাকৃবি হতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনকারী শহীদদের মধ্যে শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী সকলেই রয়েছেন। শিক্ষকদের (১ জন) মধ্যে রয়েছেন সহকারী অধ্যাপক এ.বি.এম আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া। কর্মচারীদের (৬ জন) মধ্যে মো. আক্কাছ আলী, মধুসূদন বর্মন, মো. নুরুল হক, মো. গাজী ওয়াহিদুজ্জামান, মো. হাসান আলী ও গিয়াস উদ্দিন।
ছাত্রদের (১২ জন) মধ্যে - মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের মো. জামাল হোসেন, আব্দুল মতিন খন্দকার (টিপু) ও মনিরুল ইসলাম আকন্দ; কৃষি প্রকৌশল অনুষদের নাজির আখতার কাশেম ও আ.ন.ম নাজমুল আহসান; কৃষি অনুষদের হাবিবুর রহমান ও খুরশীদ আলম (শিবলী); ভেটেরিনারি অনুষদের আবুল কাশেম, কাজী মো. মঞ্জুর হোসেন ও ইব্রাহীম মোস্তফা কামাল; কৃষি অর্থনীতি অনুষদের মো. শামসুল হক তালুকদার ও মো. তহসীন আলী।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়েরিতে উল্লেখ রয়েছে- তৎকালীন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর শামসুল ইসলাম, সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রফিকুল হক, প্রফেসর আতিয়ার রহমান মোল্লা, প্রফেসর ড. সাখাওয়াত হোসেন, প্রফেসর ড. শেখ জিনাত আলী, প্রফেসর ড. নূর মো. তালুকদার, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাবেক রেজিস্ট্রার মো. নজিবুর রহমানসহ ৮৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম।
শহীদ শিক্ষার্থীদের স্মরণে বাকৃবিতে ছাত্রদের জন্য নির্মিত ৩টি আবাসিক হলের নামকরণ করা হয়েছে। মো. জামাল হোসেনের স্মরণে ১৯৮৮ সালের ১৩ অক্টোবর নির্মিত হয় শহীদ জামাল হোসেন হল। আ.ন.ম নাজমুল আহসানের স্মরণে ১৯৭৩ সালের ২৪ নভেম্বর নির্মিত হয় শহীদ নাজমুল আহসান হল। মো. শামসুল হক তালুকদারের স্মরণে ১৯৭২ সালের ১৯ জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভায় পূর্বের কায়েদে আযম হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় শহীদ শামসুল হক হল।
প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম দেশ সেরা এই কৃষি শিক্ষার বিদ্যাপীঠে হাজার হাজার আগন্তুকদের মাঝে যুগের পর যুগ দেশ স্বাধীন করার কারিগরদের স্মৃতি প্রতিফলিত করবে মরণ সাগর। ধ্বনিত হবে – ‘মরণ সাগর পাড়ে তোমরা অমর তোমাদের স্মরি’।
আরও পড়ুন: নালিয়ার দোলায় হচ্ছে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়