৬ ডিসেম্বর
৬ ডিসেম্বর ফেনীতে উড়েছিল মুক্ত বাংলার পতাকা
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর। মুক্তিযোদ্ধারা সম্মুখ সমরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ফেনীর মাটিতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছিলেন। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনীর নৃশংস বর্বরতায় ক্ষত-বিক্ষত ফেনী শহরে স্বাধীনতাকামী বাঙালিরা বিজয়ের নিশান উড়িয়ে উল্লাস করেছিলেন আজকের দিনেই।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় ফেনী। সেই থেকে এ দিনটি ফেনী মুক্ত দিবস হিসেবে পরিচিত। বছর ঘুরে এলেই নানা আনুষ্ঠানিকতায় পালিত হয় দিবসটি।
দিনটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন আয়োজন করেছে নানা আয়োজন। ফেনী মুক্ত দিবস উপলক্ষে কলেজ রোডের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে র্যালি বের হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটি উদযাপনের নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভোর থেকে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারা ফেনীর পূর্বাঞ্চল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ২ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের নেতৃত্বে ফেনী শহরে প্রবেশ করতে থাকেন। পরে শহরের রাজাঝির দীঘির পাড়ে ডাকবাংলোর সামনে স্বাধীন বাংলাদেশের ফেনীতে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেখানে জড়ো হওয়া মুক্তি সংগ্রামীরা মিছিল থেকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে স্লোগানে শহর প্রকম্পিত করে।
মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই ফেনী প্রেসক্লাবের সামনে মিছিল দেখে উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন। বিকেল নাগাদ সেখানে বিএলএফ কমান্ডার জয়নাল আবেদিনের নেতৃত্বে যুক্ত হন মুক্তিযোদ্ধারা। সেখানে ‘ফেনীর রাজা’ খ্যাত খাজা আহম্মদ সব মুক্তিযোদ্ধাদের দেশ গড়ার কাজে নেমে পড়তে আহ্বান জানিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
একপর্যায়ে সাধারণ মানুষ মিছিলে অংশ নিতে শুরু করে। স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধের লক্ষণ দেখে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাক বাহিনী আর তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আল-শামস বাহিনী ফেনীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ফেনী শহর হয়ে চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়। এভাবেই দীর্ঘ ৯ মাসের বজ্রকঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মুক্তিকামীরা ফেনীর জমিনে লাল-সবুজের এক টুকরো পতাকা ওড়ান।
মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য ফেনীর ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় খেতাবে ভূষিত করা হয়। খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে চারজন বীর উত্তম, সাতজন বীর বিক্রম এবং ২০ জন বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত হন।
সেদিনের বিবরণ দিতে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা সকালেই ফুলগাজীর বন্দুয়া থেকে এসে ফেনী সার্কিট হাউজে (বর্তমান ফেনী সড়ক ও জনপথ বিভাগের রেস্ট হাউজ) প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। বিকেলের মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক জয়নাল আবেদীন ভিপির নেতৃত্বে মুজিব বাহিনী রাজাপুর, কোরাইশ মুন্সী ও সোনাগাজীর নবাবপুর থেকে ট্রাংক রোডে চলে আসেন। সন্ধ্যায় সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা সমাবেশ করেন।
ফেনী মুক্ত দিবস সম্পর্কে বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ভিপি বলেন, ডিসেম্বরের শুরুতেই গেরিলা যুদ্ধের নীতি ‘হিট অ্যান্ড রান’ প্রয়োগ করে যুদ্ধ করতে করতে আমরা পাঁচগাছিয়া এলাকার কাছাকাছি চলে আসি। রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এদিকে এসে হিট (হামলা) করে আবার চলে যাই। ৫ ডিসেম্বর আমরা ঠিক ফেনীর কাছাকাছি যখন আসি, তখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রণে ভঙ্গ দিয়ে শেষ রাতের দিকে শুভপুর ও বারইয়ারহাট হয়ে চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়।
ফেনী জেলা প্রশাসক মনিরা হক বলেন, ‘৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এদিন বীর মুক্তিযোদ্ধারা ফেনীকে হানাদারমুক্ত করেছিল। দিনটিকে আমরা নানা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করে থাকি। সেদিন ফেনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা যে অসামান্য বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন, সেটিকে আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করব।’
৯ ঘণ্টা আগে
করোনায় আরও ৮ জন আক্রান্ত, মৃত্যু নেই
দেশে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এ সময় নতুন করে ৮ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৪৬ হাজার ১০৮ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ৫ জন, মৃত্যু নেই
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এ সময়ে শনাক্তের হার ১ দশমিক ০৩ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ১০ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৩ হাজার ৮০৬ জনে।
শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ৩ জন, মৃত্যু নেই
করোনায় আরও ৪ জন আক্রান্ত, মৃত্যু নেই
৭৩১ দিন আগে