আতঙ্ক
খুলনায় খুন-লাশ উদ্ধারের ঘটনা বাড়ছে, জনমনে আতঙ্ক
খুলনায় নদ-নদী থেকে একের পর এক অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক বাড়ছে। অধিকাংশ লাশের হাতের টিস্যু পচে যাওয়ায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেও পরিচয় শনাক্ত করতে পারছে না পুলিশ। ফলে এসব লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করতে হচ্ছে।
জেলা পুলিশের তথ্য অনুসারে, গত ৪৭ দিনে খুলনায় ১৮টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্যে ৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে নদী থেকে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌ-পুলিশ ও র্যাবের সমন্বয়ে যৌথবাহিনীর অভিযানও চলছে। অভিযানে শীর্ষ সন্ত্রাসী, তাদের সহযোগী এবং কথিত কিশোর গ্যাং সদস্যরা ধরা পড়লেও থামছে না হত্যার ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের বরাতে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণে খুলনার পরিস্থিতির ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।
গত ৯ জুন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রূপসা উপজেলার আঠারোবেকী নদী থেকে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয়রা শ্রীফলতলা ইউনিয়ন পরিষদ-সংলগ্ন নদীতে কচুরিপানার মধ্যে লাশটি ভেসে থাকতে দেখে থানায় খবর দেয়।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে বটগাছ থেকে ট্রাকচালকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
নৌ-পুলিশ রূপসার ইনচার্জ মো. ফারুক হোসেন জানান, ঘটনাস্থল পাইকগাছা নৌ-ফাঁড়ির আওতায় পড়লেও এখনও পর্যন্ত নিহতের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। সিআইডি ও পিবিআইয়ের বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে গেলেও হাতের টিস্যু পচে যাওয়ায় পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি।
তার আগে ৮ জুন দুপুরে শ্রীফলতলা গ্রামের দাউদ মার্কেটের পাশের কলাবাগান থেকে ভ্যানচালক রবিউল মোল্লার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সেই দিন সকালেই রূপসা উপজেলার আইচগাতি উত্তরপাড়ায় প্রবাসীর স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন জান্নাত (২৩) শ্বাসরোধে খুন হন। রাতের কোনো একসময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা গলায় গামছা পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে।
৪ জুন সকালে সদর থানার মতিয়াখালী স্লুইচগেট খালে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে নৌ-পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। এর আগে, ২ জুন দিবাগত রাতে ময়লাপোতা হরিজন কলোনিতে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে সবুজ হাওলাদার (৩০) নামের এক যুবক নিহত হন।
আরও পড়ুন: মাছের ঘেরে যুবকের গলাকাটা লাশ, পুলিশ হেফাজতে ২
সদর নৌ-পুলিশের ওসি বাবুল আক্তার জানান, ৪ জুন অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধারের পর প্রযুক্তির সহায়তায় পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। পরে লাশটি বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। এখন একজন এসে ওই লাশ তার আত্মীয়ের দাবি করায় ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিতের প্রক্রিয়া চলছে।
এ ছাড়া, গত ১০ মে বিকালে খানজাহান আলী থানার ভৈরব নদ থেকে অজ্ঞাত (৪০) এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। ১১ মে রাতে হিরনের ঘাট এলাকা থেকে আরও এক অজ্ঞাতনামা (৪২) ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনার বিষয়ে রূপসা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল খায়ের জানান, রাত ৮টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
৭ মে হরিণটানায় পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর নির্যাতনে জান্নাতি আক্তার (২০) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়। ২৩ মে ভোরে লবণচরা থানাধীন শিপইয়ার্ড মেইন রোডে মোশারফের বাড়ির পাশে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অজ্ঞাত আরও এক এক যুবকের লাশ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ নিশ্চিত করে, মৃত ব্যক্তির নাম নাঈম মোল্লা।
২৬ মে রাতে রূপসা উপজেলার মোছাব্বরপুর গ্রামে দুর্বৃত্তদের গুলিতে কালো রনি (৩৬) নামে এক যুবক নিহত হন। একই রাতে সোনাডাঙ্গা ২২ তলা এলাকায় ছুরিকাঘাতে নিহত হন গোলাম (২৫)। ১৭ মে দুপুরে মীরেরডাঙ্গা খেয়াঘাট এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় ১৩ বছর বয়সী এক অজ্ঞাত কিশোরের লাশ।
২৯ মে খালিশপুর থানাধীন ৬ নম্বর মাছ ঘাট এলাকা থেকে আরও একটি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, মৃতের পরনে ছিল নীল রঙের গেঞ্জি ও কালো প্যান্ট। পচে যাওয়া মুখ ও হাতের কারণে পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি। ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনার আঠারো বেকী নদী থেকে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার
২৭ মে কয়রা নদীর চর থেকে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে শিকলে বাঁধা অবস্থায় আব্দুল মজিদ সানার (৬০) লাশ উদ্ধার হয়। ২২ মে টুটপাড়া দারোগার বস্তির একতলা ভবন থেকে নিলু বেগম (৫৬) নামের এক নারীর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এলাকাবাসীর ধারণা, লুটেরারাই তাকে হত্যা করেছে।
২৩ মে রূপসায় স্ত্রীর প্রেমের ঘটনায় প্রতিবেশী আবদার শেখকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করেন স্বামী মনি শেখ। ওই ঘটনায় স্ত্রী তানজিলাও গুরুতর জখম হন। ৩১ মে কয়রায় পারিবারিক কলহের জেরে ছোট ভাইকে হত্যা করে বড় ভাই শহীদুল গাজী গ্রেপ্তার হন।
সার্বিক বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সহকারী কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড সিপি) খোন্দকার হোসেন আহমদ বলেন, ‘খুলনায় প্রতিটি ঘটনার তদন্ত চলছে এবং আসামিরাও গ্রেপ্তার হচ্ছে। শহরে টহল টিম, সিটিএসবি ও ডিবি সক্রিয় রয়েছে। পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতে সুধী সমাবেশও করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
১৬৯ দিন আগে
কবরস্থান থেকে ৫ কঙ্কাল চুরি, এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক
মানিকগঞ্জের একটি কবরস্থান থেকে পাঁচটি মানবকঙ্কাল চুরির অভিযোগ উঠেছে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে। এদিকে কঙ্কাল চুরির খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবসীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস. এম. আমান-উল্লাহ। এর আগে দিবাগত রাতে বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নের বাংগরা কবরস্থানে চুরির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, কবরস্থানের পানির ট্যাংকের নির্মাণকাজ করতে গিয়ে শ্রমিকরা দেখতে পান যে কবরস্থানের প্রধান গেট খোলা। এরপর তারা ভেতরে গিয়ে লক্ষ্য করেন যে, কয়েকটি কবর খোঁড়া অবস্থায় রয়েছে। পরে তারা বিষয়টি কবরস্থান পরিচালনা কমিটিকে জানান।
আরও পড়ুন: পাবনায় কবরস্থান থেকে আরও ৫ কঙ্কাল চুরির অভিযোগ
কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিশ্চিত হন যে খোঁড়া কবরগুলোর ভেতরে কোনো কঙ্কাল নেই।
বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাকির হোসেন বলেন, ‘গত ৫ থেকে ৭ মাসের মধ্যে যেসব মৃত ব্যক্তিকে দাফন করা হয়েছিল, সেই কবরগুলো থেকেই কঙ্কাল চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া কঙ্কালগুলোর মধ্যে চারজন পুরুষ একজন নারী ছিলেন।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস. এম. আমান-উল্লাহ বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন ও আইনগত ব্যবস্থার প্রক্রিয়া চলমান।’
১৯৭ দিন আগে
চলন্ত ট্রেনে আগুন: আতঙ্কে দম্পতির লাফ, কোলের শিশুর মৃত্যু
কক্সবাজারগামী ট্রেন প্রবাল এক্সপ্রেসে চলন্ত অবস্থায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ট্রেনে আগুন লাগার খবরে আতঙ্কিত হয়ে এক দম্পতি তাদের ছেলেশিশুসহ লাফ দেন। এ ঘটনায় মো. হামদান নামের ৮ মাস বয়সী ওই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন শিশুর মা-বাবা।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত পৌনে ৮টার দিকে ট্রেনটি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা এলাকায় পৌঁছালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়লে ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে এক দম্পতি তাদের এক ছেলে শিশুসহ ট্রেন থেকে লাফ দেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে মো. হামদান নামের ৮ মাস বয়সী শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
গুরুতর আহত হয়েছেন শিশুটির বাবা আবদুর রাজ্জাক (২৬) এবং মা লিজা আক্তার (২০)। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী আবদুর রাজ্জাকের বাড়ি কক্সবাজারের পিএমখালী ইউনিয়ন এলাকায়। তিনি পরিবার নিয়ে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গুনাগরি শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে পরিবার নিয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের সিআরবি মালিপাড়া বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে
আরও জানা যায়, ঘটনার একটু আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আবদুর রাজ্জাক সাতকানিয়া স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠেন। এরপর ট্রেনটি লোহাগাড়ার পদুয়ায় পৌঁছালে একটি বগিতে আগুন লেগে যায়।
লোহাগাড়া স্টেশন মাস্টার দিদার হোসেন বলেন, ‘বগিতে আগুন লাগার ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে নিভিয়ে ফেলা হয়েছে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
লোহাগাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহেদ হোসেন জানান, আহত তিনজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বাকি দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
২৩৩ দিন আগে
সিসি ক্যামেরা স্থাপনের টাকা নিয়ে হাওয়া, ছিনতাই-ডাকাতি আতঙ্কে ফেনী পৌরবাসী
ফেনী পৌরসভার ১৫০টি স্থানে স্থাপিত ২৪০টি সিসি ক্যামেরার বেশিরভাগই নষ্ট। এতে করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অপরাধীরা, আর ছিনতাইকারী ও ডাকাতের আতঙ্কে তটস্থ থাকতে হয় শহরের ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষকে। অনেক জায়গায় মানুষ সন্ধ্যার পর চলাচল করতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সিসি ক্যামেরা না থাকায় পর্যবেক্ষণ করা যাচ্ছে না অপরাধমূলক বিভিন্ন ঘটনার ভিডিওচিত্র। ফলে অনেক অপরাধীকে শনাক্ত করাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে, পৌরসভার ভেতরে ক্যামেরা স্থাপনের জন্য শহরের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলা ৩ কোটি টাকা চাঁদা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছেন ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ হাজারী। ফলে বিড়ম্বনা আরও বেড়েছে।
ফেনী পৌরসভা সূত্র জানিয়েছে, ২০১৫ সালে ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে ২৪০টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। ইউ-টাচ নামে ফেনীর একটি প্রতিষ্ঠান এগুলো স্থাপনে কাজ করে। তবে দুই বছর চলার পর ক্যামেরাগুলোর বেশিরভাগই অকেজো হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০২২ সালে ঢাকার গোল্ডেন ট্রেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেড় কোটি টাকার চুক্তিতে ক্যামেরাগুলো প্রতিস্থাপন করার উদ্যোগ নেন তৎকালীন পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন ও পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী। কিন্তু কাজ অর্ধেক সম্পন্ন হওয়ার পর আর্থিক জটিলতায় প্রকল্পটি স্থগিত হয়ে যায়।
অবশ্য, পৌরসভার ভেতরে ক্যামেরা স্থাপনের জন্য ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ হাজারীর মাধ্যমে প্রতিটি মার্কেটের মালিক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৩ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হয়েছিল। তবে আওয়ামী লীগঘেঁষা হওয়ায় গত ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় থেকে তিনি গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। ফলে তার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের দেওয়া ওই চাঁদাও হাপিশ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরের হিমাগারে আলু রাখতে বিড়ম্বনা, অপেক্ষায় নষ্ট হওয়ার শঙ্কা
এদিকে, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দেশের টালমাটাল আইনশঙ্খলা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বিপুলসংখ্যক সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। পরে বন্যার পানিতে ক্যামেরার যন্ত্রপাতি ও কন্ট্রোলরুমের সরঞ্জামও নষ্ট হয়ে যায়।
পৌর শহরের নজরদারি পরিস্থিতি ভেঙে পড়ায় পোয়াবারো হয়েছে দুর্বৃত্তদের। পুলিশের চোখ ফাঁকি দেওয়া আগের চেয়ে সহজ হওয়ায় সম্প্রতি শহরজুড়ে বেড়েছে ছিনতাই, ডাকাতির মতো ঘটনা।
ফেনী জেলা পুলিশের অপরাধ বিভাগ থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ফেনীতে গত জানুয়ারি মাসে চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, নারী নির্যাতন, মাদক কারবারসহ মোট ১৪০টি ও ফেব্রয়ারি মাসে ১২২টি অপরাধ সংঘঠিত হয়েছে। অথচ গত বছরের জানুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ৯৯টি এবং ফেব্রুয়ারিতে ১০৭টি।
শহরের অপরাধপ্রবণ এলাকা হিসেবে বিসিক, রামপুর রাস্তার মোড়, আলোকদিয়া ও ফলেস্বর এলাকাকে গণ্য করা হয় বলে জানিয়েছে ফেনী মডেল থানা সূত্র। তবে প্রশাসনের স্থাপিত ক্যামেরাগুলোর বেশিরভাগ অকেজো হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে বিভিন্ন বাড়ির মালিকদের লাগানো ক্যামেরা ও সাধরণ মানুষের করা ভিডিও ও ছবির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
শহরের এই নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতি থেকে দ্রুত উত্তরণের জন্য নষ্ট ক্যামেরাগুলো দ্রুত প্রতিস্থাপন কিংবা মেরামত করে হলেও সেগুলো কার্যকর করা জরুরি বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পৌরসভার বাসিন্দারা। পাশাপাশি, দীর্ঘদিন ধরে ক্যামেরাগুলো থেকে সেবা পেতে নিয়মিত সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথাও জানিয়েছেন তারা।
এ ছাড়াও, নতুন ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সিসিটিভি ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দরে ১৮৮০০ টন চাল আমদানি, প্রভাব নেই দামে
শহরের ব্যবসায়ী রেজাউল গনি পলাশ বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা না থাকায় জেলায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ বাড়ছে। ঘটছে হত্যার মতো ঘটনাও। সড়কে সিসি ক্যামেরা না ধাকায় অপরাধীরা সহজে পার পেয়ে যাচ্ছে। তাই সিসি ক্যামেরাগুলো ঠিক করে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ফেনীর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘সিসিটিভি ক্যামেরা জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ সৃষ্টি করে এবং অনেক সময় অপরাধীদের অপরাধ থেকে বিরত রাখতে প্রভাব ফেলে। এছাড়া ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও দুর্ঘটনা কমানোর ক্ষেত্রেও এর কার্যকারিতা অনেক।’
‘তবে সিসিটিভির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজন সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও ডেটা সুরক্ষা। এটি প্রযুক্তির মাধ্যমে আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিৎ, জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে যত দ্রুত সম্ভব সিসি ক্যামেরাগুলো ঠিক করা।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফেনী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা অপরাধী ধরার জন্য সবচেয়ে বেশি কাজে আসে। ছবি দেখে গ্রেপ্তারের পর অপরাধীর অস্বীকার করার সুযোগ থাকে না; তাতে পুলিশের তদন্ত কাজের অনেক সুবিধা হয়। তাছাড়া অপরাধীর অপরাধও আদালতে সহজে প্রমাণ করা যায়। তবে বর্তমানে এ বিষয়ে পুলিশকে নির্ভর করতে হচ্ছে ব্যক্তি পর্যায়ে লাগানো ক্যামেরাগুলোর ওপর।’
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে কলেজের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পরীক্ষা কেন্দ্র, ব্যাহত শ্রেণিকার্যক্রম
নানা জটিলতার মাঝে সম্প্রতি অবশ্য স্বল্প পরিসরে হলেও ফের ক্যামেরা প্রতিস্থাপনের কাজ হাতে নিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে তারা ফের দায়িত্ব দিয়েছে সেই ইউ-টাচ নামের প্রতিষ্ঠানটিকে। ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে পুরাতন ক্যামেরাগুলো মেরামত করে নতুন করে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পৌরসভার প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন বলেন, ‘পৌরসভার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই আমরা নতুন করে সিসি ক্যামেরা চালু করার ব্যবস্থা করেছি। শিগগিরই তা কার্যকর হবে।’
২৫৯ দিন আগে
সাভারে আবারও দিনে দুপুরে চলন্ত বাসে ছিনতাই
সাভারের একই স্থানে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দিনে দুপুরে যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আবারও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পরিবহনের যাত্রীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
রবিবার (২ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে মহাসড়কের সাভারের পুলিশ টাউন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শুভযাত্রা পরিবহনের বাসে একই ঘটনা ঘটে। এ সময় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে তিন যাত্রী আহত হয়েছিলেন।
ভুক্তভোগী বাসের যাত্রী নাজমুল হোসেন বলেন, ‘দুপুরে আশুলিয়ার শ্রীপুর থেকে রাজধানী পরিবহনের একটি বাসে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেই। বাসটি ২০-২৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পুলিশ টাউন এলাকায় যাত্রী নেওয়ার জন্য থামলে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে। এ সময় ৫-৬ জন ছিনতাইকারী দেশীয় অস্ত্রের মুখে বাসের যাত্রীদের মানিব্যাগ ও মোবাইলসহ মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নেয়।’
আরও পড়ুন: ছিনতাইকারী সন্দেহে গাজীপুরে যুবককে পিটিয়ে হত্যা
ভুক্তভোগী আরেক যাত্রী বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও একই স্থানে চলন্ত বাসে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছিলেন। আজ আমরাও দিনে দুপুরে চলন্ত বাসে ছিনতাইয়ের শিকার হলাম। আল্লাহর রহমতে যাত্রীদের কোনো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এভাবে প্রতিনিয়ত দিনের বেলাতেই যেভাবে ছিনতাইকারীরা বাসে উঠে ছিনতাই করছে, এতে আমরা সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত।’
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, ‘বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনেছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
২৭৭ দিন আগে
কেরু অ্যান্ড কোম্পানিতে ফের বোমাতঙ্ক
তিনদিনের ব্যবধানে চুয়াডাঙ্গার কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড এলাকায় আবারও বোমাসদৃশ বস্তু দেখা গেছে। এর ফলে নতুন করে সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে শুরু হওয়া তল্লাশির একপর্যায়ে দুপুরে কেরু কোম্পানির চিনিকল এলাকায় এই ককটেলসদৃশ বস্তুগুলো দেখা যায়। তারপর থেকে পুলিশ সদস্যরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগের ক্যাডার জয়নাল আবেদিন নফরের কেরু মিলের অফিসের পেছনে ককটেলসদৃশ বস্তুগুলো রাখা হয়। পরে রাজশাহী র্যাব-৫ এর বোম ডিসপোজেল ইউনিটের একটি টিম ঘটনাস্থলে আসার পর সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়।
এর আগে, গত ১৩ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডে অফিস-সংলগ্ন স্থান থেকে ককটেল উদ্ধার করা হয়। রাজশাহী থেকে র্যাব-৫ এর বোম্ব ডিসপোজাল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে ককটেল দুটি নিষ্ক্রিয় করেন। ওই ককটেলগুলো শক্তিশালী বলেও জানান তারা।
কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানান, এ ধরনের ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। ফলে আমরা চরম আতঙ্ক আর অনিশ্চিয়তার মধ্য রয়েছি।
অপরাধীদের শনাক্ত করে যত দ্রুত সম্ভব আইনের আওতায় আনা হোক বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন: টেকনাফে ৬৯টি বোমা ও তৈরির সরঞ্জামসহ আটক ২
কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান বলেন, ‘এলাকায় বারবার বোমাসদৃশ বস্তু উদ্ধারের বিষয়টি উদ্বেগজনক। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।’
দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ তিতুমীর বলেন, ‘লাল রঙের টেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় রবিবার দুপুরে চারটি ককটেলসদৃশ বস্তু উদ্ধার করে যৌথবাহিনী। পরে রাজশাহী র্যাব-৫ এর বোম ডিসপোজেল ইউনিট এসে বোম সাদৃশ্য বস্তু নিষ্ক্রিয় করে।’
তিনি বলেন, ‘যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য এই বস্তুগুলো রাখা হচ্ছে।’
২৯১ দিন আগে
রাজধানীর ইসলামবাগে ভবনে আগুন, আশপাশে ছড়িয়েছে আতঙ্ক
রাজধানীর ইসলামবাগ এলাকার একটি ভবনে আগুন লেগেছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণে আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টা ১৭ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের ৮টি ইউনিট পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মিডিয়া সেল পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে হঠাৎ করে ভবনের মধ্যে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। তবে, অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগুনের তীব্রতা অত্যন্ত বেশি হওয়ায় পুরো ভবন ঘিরে ফেলা হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তালাবদ্ধ ঘর আগুনে পুড়ে শিশুর মৃত্যু
তারা আরও জানান, আগুন লাগার পর আশপাশের এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণকে এ সময় নিরাপদ দূরত্বে থাকতে বলা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসও এখনও কিছু জানতে পারেনি বলে জানান আনোয়ারুল ইসলাম।
২৯২ দিন আগে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। কয়েক হাজার হেক্টর জমির আমন ও শাক-সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এদিকে বেড়েছে ভাঙনের আতঙ্ক।
উপজেলার খুনিয়াগাছ এলাকার কৃষক ছামাদ আলী বলেন, ‘বানের পানি নামছে। পানির নিচে তলিয়ে থাকা শাক-সবজির ক্ষতি নিয়ে অনেক চিন্তিত আমরা। এর মধ্যে পানি নামার পর নদী ভাঙন হতে পারে। ভাঙনে বাপ-দাদার ভিটা হারিয়েছি, এবার যে আবার কপালে কী আছে কে জানে।’
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার পর থেকে তিস্তার পানি কমতে শুরু করে। এতে বন্যার ক্ষতি দৃশ্যমান হতে শুরু হয়।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, রবিবার রাত থেকে তিস্তার পানি নামতে শুরু করেছে। মঙ্গলবারের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপরে, পানিবন্দি ২৫০০০ পরিবার
সোমবার দুপুর ১২টায় পাউবো জানায়, ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইখুল আরিফিন বলেন, তিস্তাপাড়ে বন্যায় আগাম শীতকালীন শাক-সবজির অনেক খেত তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি নেমে না গেলে এসব ফসলের বেশ ক্ষতি হবে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলো থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। মঙ্গলবারের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হতে পারে।
এছাড়া নদীর পানি কমতে শুরু করায় ভাঙনের আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী।
লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে ২৫ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। অনেকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্র,
রাস্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী রক্ষা বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে।
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা এলাকা মনির মিয়া জানান, ঘরের ভেতর নদীর পানি ঢুকে পড়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছি। বাঁধের ওপর পলিথিন মোড়ানো ঝুপড়ি ঘরে থাকতে হচ্ছে।
পাকার মাথা এলাকার বাসিন্দা নবিয়ার রহমান জানান, আকস্মিকভাবে তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। এজন্য অনেক ক্ষতি হয়েছে। বাড়ির ধান চালসহ সবকিছু পানির নিচে। এখন বাঁধে এসে থাকতে হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, বন্যা কবলিত এলাকাগুলো থেকে পানি নামা শুরু হয়েছে। তিস্তাপাড়ে পানিবন্দি পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে জনপ্রতি ১০ কেজি হারে ১৫ টন জিআরের চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বেড়েছে ১৬টি নদ-নদীর পানি, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপরে
ভারী বর্ষণে পানি বাড়ায় খুলে দেওয়া হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ গেট
৪৩০ দিন আগে
বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আতঙ্ক, প্রস্তুত ৩৫৯ আশ্রয়কেন্দ্র
ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’মোকাবিলায় বাগেরহাটের ৯টি উপজেলায় ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে বাগেরহাট জেলা প্রশাসন।
এদিকে উপকূলজুড়ে শঙ্কায় রয়েছে বেড়িবাঁধের পাশে আশ্রয় নেওয়া মানুষেরা। তারা নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে।
তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রেমাল: খুলনায় প্রস্তুত ৬০৪ আশ্রয়কেন্দ্র
বাগেরহাট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে বাগেরহাটের নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে এক থেকে দেড় ফুট পানি বেড়েছে। সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশ জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে উঠেছে।
এদিকে বন্দরে অবস্থানরত সব বাণিজ্যিক জাহাজকে চ্যানেলের বিভিন্ন পয়েন্টে নিরাপদ দূরত্বে নোঙর করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলায় ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৫১ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনা খাবার মজুত রাখা হয়েছে। জেলার সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। সিপিপির ৩ হাজার ১৮০ জন সদস্য এবং রেডক্রিসেন্ট, রোভার, বিএনসিসি, সেচ্ছাসেবক সংগঠনের প্রায় ৫০০ সদস্য প্রস্তত রয়েছে। এছাড়া আবহাওয়া বিভাগের সংকেতের উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ হচ্ছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে এক থেকে দেড় ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হয়েছে।
কোস্টগার্ড মোংলা পশ্চিম জোনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রুপান্তরিত হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। এরূপ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপকূলীয় অঞ্চলের জনগণ, মৎস্যজীবী ও নৌযান সমূহ ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন উপকূলীয় অঞ্চলে জনসচেতনাতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।
জনসচেতনতামূলক বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুন্দরবন উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকায় কোস্টগার্ড স্টেশন এবং আউটপোস্ট সমুহ মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করছে। ঘূর্ণিঝড়ের বিপদজনক পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষার জন্য নিকবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয়ের জন্য সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে: বিএমডি
ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’: আতঙ্কে বাগেরহাটের উপকূলবাসী
৫৫৮ দিন আগে
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দে আতঙ্ক টেকনাফে
মিয়ানমার থেকে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকালে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, ‘শুক্রবার রাতে সীমান্তের ওপারে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। শনিবার সকাল থেকেই গুলির মাত্রা বাড়তে থাকে।’
আরও পড়ুন: নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রোহিঙ্গা ‘ইয়াবা কারবারি’ নিহত
তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যাচ্ছেন এবং মাছ চাষিরা ঘেরে যেতে পারছেন না।
ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে একটি মর্টার শেল এসে পড়ে।
তিনি বলেন, ‘গত দুই দিন ধরে সীমান্ত শান্ত থাকলেও শনিবার থেকে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।’
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে দুই সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তার সশস্ত্র বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তুমুল লড়াই, সংঘর্ষ ও গোলাগুলির মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: ২০১৭ সালের চুক্তির ভিত্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অঙ্গীকারবদ্ধ মিয়ানমার: দেশটির মন্ত্রী
সীমান্তে সংঘাতের আশঙ্কায় বুধবার দুপুর পর্যন্ত মিয়ানমারের তিন শতাধিক সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে, সোমবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপায়তলী গ্রামের আকেটি বাড়ির রান্নাঘরে মিয়ানমারের দিক থেকে আসা মর্টার শেল আঘাত করে। এতে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা পুরুষ নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: বছরের ২য় প্রান্তিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ
৬৬৩ দিন আগে