পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে বাংলাদেশ-ফ্রান্সের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমিয়ে আনতে বহুপাক্ষিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স।
রবিবার সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে ফরাসি প্রতিনিধি দলের সাক্ষাতে এ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে দুই দেশ । বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহযোগিতা জোরদার ও টেকসই পরিবেশগত চর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা জুলিয়েন ডুয়ার এবং ফ্রান্সের জলবায়ু পরিবর্তন সমঝোতাবিষয়ক রাষ্ট্রদূত স্টিফেন ক্রৌজাত সচিবালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
আলোচনায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন, অভিযোজন কৌশল ও সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগসহ সহযোগিতার মূল ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা হয়। স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে এবং জলবায়ু লক্ষ্য অর্জনে জ্ঞান, প্রযুক্তি ও সম্পদ বিনিময়ের উপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।
আরও পড়ুন: টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: পরিবেশমন্ত্রী
মন্ত্রী সাবের হোসেন ফ্রান্সের অব্যাহত সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্রিয় অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী ও বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষায় সমন্বিত বৈশ্বিক পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে ফ্রান্সের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন ফ্রান্সের জলবায়ুবিষয়ক দূত।
উদ্ভাবনমূলক সমাধান বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।
উভয় পক্ষ যৌথ প্রকল্প, জ্ঞান বিনিময় কর্মসূচি ও নীতি সংলাপের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা আরও গভীর করতে সম্মত হয়েছে।
তারা জলবায়ু কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে উচ্চাশার পক্ষে এবং ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য সহায়তা জোগাড় করতে সিওপি বৈঠকসহ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানোর গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
বাংলাদেশ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য একটি সবুজ ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করার অভিন্ন অঙ্গীকার করা হয়েছে বৈঠকে।
বৈঠকে অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) ইকবাল আবদুল্লাহ হারুন, যুগ্ম সচিব লুবনা ইয়াসমিন ও ফরাসি উন্নয়ন সংস্থার সিসিলিয়া কর্টেজের মেথিল্ডে বোর্ড লরানস, ক্রিস্টোফ বাফেট, প্যাট্রিক ব্লিন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে বায়ুদূষণের অভিযোগে ৪ ইটভাটা বন্ধ
জলাভূমি সংরক্ষণের জন্য ম্যাপ তৈরি করা হবে: পরিবেশমন্ত্রী
আগামী বছরের মধ্যে দেশের জলাভূমি সংরক্ষণের জন্য ম্যাপ তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই ব্যবহারে করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে এই ম্যাপ তৈরি করা জরুরি।
রবিবার (৪ জানুয়ারি) বিশ্ব জলাভূমি দিবস উপলক্ষে বন বিভাগ আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পরিবেশমন্ত্রী।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, জলাভূমি পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জীববৈচিত্র্য রক্ষা, বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এগুলো। সরকার জলাভূমি রক্ষায় বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এ সময় জলাভূমি রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে: পরিবেশমন্ত্রী
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসেন চৌধুরী।
আলোচকদের মধ্যে ছিলেন নেচার অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এনাম উল হক।
অতিথিদের স্বাগত জানান বন ব্যবস্থাপনা উইংয়ের উপপ্রধান বন সংরক্ষক মো. জাহিদুল কবির।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্সেস স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. এম মোখলেসুর রহমান এবং বন অধিদপ্তরের বন সংরক্ষক, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ইমরান আহমেদ।
আরও পড়ুন: সুন্দরভাবে বাঁচতে মানুষকে নদী, জলাশয়ের সঙ্গে চলতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী