সম্মানি
কিছু না করেও পাওয়া সম্মানি ফিরিয়ে দিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
নার্সিং পরীক্ষার কোনোকিছু না করেও এক লাখ ২০ হাজার টাকা সম্মানি পেয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তবে সম্মানির অর্থ গ্রহণ না করে তা ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২১ এপ্রিল) সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ে হাসপাতালগুলোর সুষ্ঠু ও যৌথ ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার লক্ষ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা নিজেই এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: মা-শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান স্বাস্থ্য উপদেষ্টার
এর আগে, অফিস সময়ে কোন সভায় যোগদানের জন্য সম্মানি না নেওয়ার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা জারি করেছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
এই নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো জিনিস চাপিয়ে দিলেই হয় না। আমি করেছি, নুরজাহান (স্বাস্থ্য উপদেষ্টা) আপা যদি মনে করেন তিনি করবেন।’
এ সময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, বেসরকারি ক্ষেত্রগুলোতে দেখা যায় কোন বোর্ড সভা হলে সেখানে সম্মানিত বোর্ড মেম্বর যারা আসেন, তাদের সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা সম্মানিত দেওয়া হয়। বাইরে থেকে যারা আসবেন তারা সম্মানি পাবেন। আর অন্যান্য ক্ষেত্রে দুপুরের দিকে সভা হলে খাবার দেওয়া হয়, কিন্তু কোনো সম্মানি দেওয়া হয় না।
তিনি বলেন, ‘নিয়মানুযায়ী নার্সদের পরীক্ষার সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত; যারা খাতা দেখেন তারা সম্মানি পাবেন। কিন্তু দেখা গেল নার্সিংয়ের ভাগ হিসেবে আমার কাছেও চলে আসলো এক লাখ বিশ হাজার টাকার মতো। আমি এই টাকাটা ফেরত দিলাম। বললাম, আমি তো এ টাকা নিতে পারি না, আমি তো পরীক্ষার সঙ্গে জড়িত না। এটা হবে কেন?’
আরও পড়ুন: ওষুধে শুল্ক কর কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
নুরজাহান বেগম জানান, বিভিন্ন সভার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বরাদ্দ থাকে। উপদেষ্টা পরিষদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তবে কে সম্মানি গ্রহণ করবেন আর কে করবেন না; এ বিষয়ে কাউকে জোর করার দরকার নেই বলে জানান তিনি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে জানান উপদেষ্টা।
২২৮ দিন আগে
নাট্যকারদের মধ্যে একাত্মতাবোধ নেই: বিদ্যুৎ রায়
তরুণ নাট্যকার বিদ্যুৎ রায়। প্রায় দুই শতাধিক নাটক তার রচনায় প্রচার হলেও এই মানুষ আড়ালেই রয়ে গেছেন। ক্যামেরার পেছনে যারা থাকেন তারা লাইমলাইটের বাইরেইথেকে যান সাধারণত। গ্ল্যামার দুনিয়ার চাকচিক্যের ভিড়ে এই পেছনের মানুষেরা শুধু পেছনেই থেকে যান।
বিদ্যুৎ রায়ের মাথায় নাটকের পোকা ঢুকে প্রয়াত নাট্যজন ড. ইনামুল হকের পরামর্শে। যুক্ত হোন ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন’ দলে। সেই থেকেই শুরু। দলটির ‘সেইসব দিনগুলি’ নাটক দিয়ে প্রথমবার মঞ্চে উঠেন বিদ্যুৎ। এরপর পথটা আরও প্রসারিত হতে থাকে। এক সময় প্রয়াত অভিনেতা দিলীপ চক্রবর্তীর হাত ধরে তিনি স্বনামধন্য নাটকের দল ‘দেশনাটক’ এর সঙ্গে যুক্ত হন।
থিয়েটার চর্চার সঙ্গে টিভি নাটক লেখা শুরু করেন বিদ্যুৎ রায়। তার লেখায় উঠে আসে বাস্তব জীবনের চিত্র। আবার কখনও লেখেন দর্শককে আনন্দ দিতে। তবে অনেকদিন ধরেই টিভি নাটকের বাজেট নিয়ে সংকট চলছে। এরমধ্যে বেশিরভাগ নাটকের চিত্রনাট্যকার পরিচালকরা নিজেই। এমন অবস্থায় শুধু নাট্যকার হিসেবে ক্যারিয়ারকে কীভাবে দেখছেন এই তরুণ নাট্যকার।
আরও পড়ুন: বাপ্পার সংগীতায়োজনে ফিরলেন দেবাশীষ সমদ্দার
এ প্রসঙ্গে ইউএনবিকে বিদ্যুৎ বলেন, ‘নাটক লেখা যাদের একমাত্র পেশা তাদের জন্য সারভাইভ করাটা কঠিন। সবার ক্ষেত্রে না হলেও বেশির ভাগের ক্ষেত্রে এটাই সত্য। কারণ আমরা মুখে যতোই প্রফেসনালিজমের কথা বলি না কেন, সত্যিকার অর্থে ততোটা প্রফেশনাল আমরা হতে পারিনি এখনও। সততার ক্ষেত্রেও ঘাটতি আছে অনেক।’
তিনি বলেন, ‘প্রচুর নাটক হচ্ছে, প্রচুর নাটক লেখার সুযোগও আছে, কিন্তু নাট্যকারের পারিশ্রমিক দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশির ভাগের ক্ষেত্রেই অনিহা লক্ষ্য করা যায়। একটা নাটক তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রথম ইনভেস্টমেন্ট হয় নাট্যকারের গল্প বা চিত্রনাট্য লেখার মাধ্যমে, ‘কিন্তু সব শেষে দেখা যায় তার সম্মানিটা বাকি থেকে যায় বিভিন্ন অজুহাতে। আর সম্মানির পরিমাণটাও তুলনামূলক ভীষণ অল্প। আমরা এই কালচার থেকে এখনও পুরোপুরি বের হতে পারিনি। আবার বেশিরভাগ সময় দুই লাখ টাকা বাজেটের নাটকে নাট্যকারের যে সম্মানি নির্ধারণ করা হয়, নাটকের মূল বাজেট দশ লাখে পৌঁছালেও নাট্যকারের বাজেট একই থাকে। অথচ বড় বাজেটের নাটক লিখতে নাট্যকারের কমপক্ষে কয়েকগুন বেশি মেধা খাটাতে হয়, শ্রম দিতে হয়।’
বিদ্যুৎ আরও বলেন, ‘তবে এই দায় শুধু পরিচালক বা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের উপর চাপানো ঠিক হবে না। এর জন্য তাদের সঙ্গে সঙ্গে নাট্যকাররাও সমানভাবে দায়ী। এর কারণ হচ্ছে, নাট্যকারদের সবার মাঝে একাত্মতা না থাকা। ফলে একটা নাটকে নাট্যকারের সম্মানি যেটা হওয়া উচিত, সেটা চাওয়া হলে, অপর কোনো নাট্যকার সেটা তিন ভাগের এক ভাগ টাকায় করতে রাজি হয়ে যায়। এই সুযোগটাই পরিচালক বা প্রযোজক নিয়ে থাকেন এবং যে কারণে বড় বাজেটের নাটকেও নাট্যকারের বাজেট থাকে তলানিতে। তবে এই ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক ভালো পরিচালক ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আছে, যারা সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন এবং তাদের কাছে নাট্যকাররা কখনো প্রতারিত হন না। তবে আশা রাখি, একটা সময় এই অন্ধকার দূর হয়ে যাবে। নাট্যকাররা তাদের সঠিক সম্মানি ও সম্মান পাবে। আর নাটক লিখেই জীবিকা নির্বাহ করতে হিমশিম খেতে হবে না।’
বিদ্যুৎ রায়ের উল্লেখযোগ্য একক নাটকগুলো সিগন্যাল, টাইমল্যাপস, লক্ষ্মীসোনা, চিৎকার, বাঁচি তোমার খেয়ালে, ভালোবাসার মায়াজাল, সানাই, গ্রামের বন্ধু, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন, সুমি তুমি কোথায়, দায়িত্ববোধ ইত্যাদি।
ধারাবাহিক নাটকের মধ্যে রয়েছে লতিফ ভাইরাস, পণ্ডিতের আখড়া, ফ্যামিলি প্রবলেম উল্লেখযোগ্য। এছাড়া সামনে প্রচারের অপেক্ষায় লেগুনাপ্রেম, হকারের সংসার, হুইল চেয়ার, অনুভবে তুমি, চোরের সুন্দরী বউ, চাকরের ছেলে, আমি কোটিপতি হবই, মিনি ধারাবাহিক সোনার সংসার, মোরগলড়াইসহ আরও অনেক।
গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলায় জন্ম বিদ্যুৎ রায়ের। লেখালেখির আগ্রহ তৈরি হয় শৈশবে। বেড়ে উঠেছেন সংস্কৃতমনা পরিবারে। নাট্যকার হয়ে উঠার প্রথম অনুপ্রেরণা পান বাবার কাছ থেকে। যা তাকে নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে সবচেয়ে সাহস যুগিয়েছে।
আরও পড়ুন: আহমেদ রুবেল: একজন প্রথিতযশা অভিনয়শিল্পী
৬৬৩ দিন আগে