কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়া গড়াই নদে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর গড়াই নদে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মোছা. শেফা (১৩) ও শাহাজাদা (৭) নামে দুই ভাই-বোনের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের জয়নাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত মোছাম্মাৎ শেফা উপজেলার শেরকান্দি এলাকার শামিম ইসলামের মেয়ে ও শাহজাদা ওই উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের জয়নাবাদ এলাকার আলমগীর হোসেনের ছেলে। তারা সম্পর্কে মামাতো ফুফাতো ভাই-বোন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা ১২টার দিকে মামাতো ভাই শাহাজাদাসহ পাঁচজন মিলে বাড়ির পাশের গড়াই নদে গোসল করতে যায়। এ সময় নদের পাড় থেকে ড্রেজিং করা গভীরস্থানে পাঁচজন একসঙ্গে লাফ দেয়। অন্যরা ভেসে থাকলেও সাঁতার না জানায় শেফা ও শাহাজাদা দুইজনেই পানিতে তলিয়ে যায়।
এ সময় স্থানীয়রা দুইজনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক মন্জু জানান,মেয়েটি নানা বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম দুই ভাই-বোনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
কুষ্টিয়ায় রেঁস্তোরায় ঢুকে ম্যানেজারসহ ৩ জনকে ছুরিকাঘাত
কুষ্টিয়া শহরের একটি রেস্তোরায় ঢুকে ম্যানেজারসহ ৩ জনকে ছুরিকাঘাত করেছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে থানাপাড়া বাঁধ সংলগ্ন শেখ রাসেল কুষ্টিয়া-হরিপুর সেতুর নিচে অবস্থিত রিভার ভিউ ফুড কর্ণারে এ ঘটনা ঘটে।
ছুরিকাঘাতে আহতরা হলেন- রেস্তোরার ম্যানেজার তুষার (২৩), প্রধান বাবুর্চি শিমুল (২৫) ও সহকারী বাবুর্চি শুভ (২২)।
আহতদের কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে রেঁস্তোরার ম্যানেজার তুষারের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
আরও পড়ুন: উখিয়ায় ছুরিকাঘাতে রোহিঙ্গা খুন
ছুরিকাঘাতে আহত রেঁস্তোরার সহকারী বাবুর্চি শুভ বলেন, ‘আমি রেঁস্তোরার রান্না ঘরে কাজ করছিলাম। এ সময় অপরিচিত ৪-৫ জন যুবক রান্নাঘরে জোরপূর্বক ঢোকার চেষ্টা করে। আমি বাঁধা দিলে তারা বকাবকি করতে থাকে। এ সময় মালিকের মুঠোফোন নম্বর চাইলে আমি দিতে অপরাগতা প্রকাশ করি।’
তিনি আরও বলেন, এরপর তারা ম্যানেজার তুষারের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা ম্যানেজারকে মারধর শুরু করে। তখন এক যুবক ম্যানেজারকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় আমি ও শিমুল ঠেকাতে গেলে আমাদেরকেও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় তারা।
রিভার ভিউ ফুড কর্ণারের মালিক আব্দুল খালেক বলেন, ঘটনার সময় আমি রেঁস্তোরায় ছিলাম না। পরে জানতে পারি আমার ৩ স্ট্যাফকে ছুরিকাঘাত করেছে কে বা কারা। আমার জানা মতে তাদের সঙ্গে কারো কোনো খারাপ সম্পর্ক নেই। তবে কী কারণে তাদের উপর এভাবে হামলা সে বিষয়ে এখনো কিছু বলতে পারছি না।
আরও পড়ুন: সুপারি পাড়া নিয়ে দ্বন্দ্ব: ভাতিজার ছুরিকাঘাতে চাচা খুনের অভিযোগ
পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তারা সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার জানান, ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে ৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জন শঙ্কা মুক্ত থাকলেও একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. সোহেল রানা বলেন, জড়িতদের ধরতে পুলিশি অভিযান চলছে।
আরও পড়ুন: স্টেশনে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল ট্রেনযাত্রীর
কুষ্টিয়ায় আগুনে পুড়ল রেস্তোরাঁ
কুষ্টিয়ায় আগুনে পুড়ে গেছে একটি রেস্তোরাঁসহ দুটি দোকান।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের এন এস রোডের বাটারফ্লাই মোড়ে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
এসময় আগুন ছড়িয়ে পড়লে পাশে থাকা আরও দুইটি দোকান পুড়ে যায়। তবে অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ফোম কারখানায় আগুনে ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি
মাসুদ রানা নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হঠাৎ কালো ধোঁয়া দেখতে পাই। এরপর দেখি রেস্তোরাঁর ভেতর দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কুষ্টিয়ার ওয়্যার হাউস ইনস্পেক্টর আব্দুস সালাম জানান, বিকালে কাবাব স্টেশন নামের একটি রেস্তোরাঁর চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এসময় আগুনের তাপে পাশে থাকা বড় গ্যাস সিলিন্ডার পাইপ ফুটো হয়ে গ্যাস বের হলে আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে আগুনে কাবাব স্টেশন ছাড়াও জুস ওয়ার্ল্ড ও খানাপিনা নামের আরও দুইটি দোকান পুড়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত জুস ওয়ার্ল্ডের মালিক মো. তানিম বলেন, কয়েক মাস আগেই বিভিন্ন ফল দিয়ে বানানো জুসের দোকানে নতুন করে বিনিয়োগ করেছিলাম। সব পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। আমার পাঁচ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: মিরপুরের ঝিলপাড় বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে
মিরপুরের ঝিলপাড় বস্তিতে আগুন
কুষ্টিয়ায় প্রবাসীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, স্বজনদের দাবি হত্যা
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আমবাগান থেকে মো. হযরত নামে এক প্রবাস ফেরত যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়া গ্রামের সাধু মো. টুটুল ভেরোর আমবাগান থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
প্রবাস ফেরত ওই ব্যক্তি উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের দক্ষিণ ভবানীপুর গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে। প্রায় মাসখানেক আগে তিনি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেন।
আরও পড়ুন: ‘ভিডিও কলে স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ দেখায় জামাই’
তবে নিহতের স্বজনদের ভাষ্য, হযরতকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আমবাগানে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
নিহতের বাবা আব্দুল হান্নান বলেন, আমার ছেলে মাস খানেক আগে দেশে ফিরে শ্বশুর বাড়িতে উঠেছিল। পারিবারিক কলহের কারণে ছেলে আমার বাড়ি থাকে না। তেমন যোগাযোগও ছিল না। সকালে খবর পেয়ে টুটুল সাধুর আমবাগানে লাশ পেয়েছি।
তার ভাষ্য, শ্বশুর বাড়ির লোকজন ও স্থানীয়রা মিলে তার ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে।
কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইমদাদুল হক জানান, ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে ছাত্রলীগ নেত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
কুষ্টিয়ায় বাবা-ছেলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
কুষ্টিয়ায় বাবা-ছেলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
কুষ্টিয়ায় বাবা-ছেলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা শহরের মঙ্গলবাড়িয়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
মৃতরা হলেন- কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মঙ্গলবাড়িয়া এলাকার সেলিমের বাসার ভাড়াটিয়া মধু এবং তার একমাত্র ছেলে মুগ্ধ। রেজাউল করিম মধু শহরের আলফা মোড় এলাকার বিষ্ণুপদ রায়ের ছেলে।
আরও পড়ুন: মেসের কক্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরের দিকে পারিবারিক কলহের কারণে ছেলেকে হত্যা করে নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে মধু আত্মহত্যা করেন ধারণা করা হচ্ছে।
এসময় তার স্ত্রী শেফালী আলফার মোড় এলাকায় বাবার বাড়িতে ছিলেন। দুপুরের দিকে বাবার বাড়ি থেকে ভাড়া বাসায় এসে ঘরে দুইজনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মধুর স্ত্রী শেফালী খাতুন জানান, আমার স্বামী শনিবার সকালে আমার বাবার বাড়ি থেকে ছেলে মুগ্ধকে স্কুলে ভর্তি করার কথা বলে নিয়ে আসে। এরপর দুপুরে অনেকবার কল করলেও সে রিসিভ করেনি।
তিনি আরও জানান, পরে বিকালের দিকে বাবার বাড়ি থেকে ভাড়া বাসায় এসে দেখি দরজা জানালা বন্ধ। পরে স্থানীয়রা জানালা ভেঙে দেখে দুইজনের লাশ ঝুলছে। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে তা জানি না।
কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, ছেলেকে হত্যার পর মধু আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে সঠিক তথ্য জানানো যাবে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: ‘ভিডিও কলে স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ দেখায় জামাই’
সিলেটে যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজার ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতির গোড়াপত্তনের এক বিরাট অংশজুড়ে রয়েছে গীতিকাব্য, লোকগীতি ও পালাগান। এই সৃজনশীলতা চর্চার এক মজবুত বুনিয়াদ গড়ে উঠেছিল অতীন্দ্রিয় বাউল সংগীতের মুক্তাঙ্গনে। বাংলা ভাষাভাষি বাউল সংগীতের মঞ্চে সর্বাধিক সমাদৃত নামটি হচ্ছে লালন শাহ। একাধারে ফকির সাধক, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক- এই শিল্পীর গানগুলো যুগে যুগে প্রভাবিত করেছে মানুষকে। এখনো তার সৃষ্টিগুলোকে ঘিরে রচিত হয় গান, কবিতা, ও উপন্যাস; নির্মিত হয় নাটক ও চলচ্চিত্র। তার জীবনচরিতের অনুসারী ও ভক্তরা এখনো তার মাজার দর্শনে ছুটে যান কুষ্টিয়ায়। লোকজ সংস্কৃতির প্রবাদ পুরুষ ফকির লালন শাহের মাজার নিয়েই আজকের ভ্রমণকড়চা। চলুন, ঘুরে আসা যাক আধ্যাত্মিকতার এক অচীন দেশে।
লালন ফকিরের মাজারের অবস্থান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া জেলার একটি প্রশাসনিক অঞ্চল হচ্ছে কুমারখালী উপজেলা। এই উপজেলার অন্তর্গত ছেউড়িয়া গ্রামেই অবস্থান জগদ্বিখ্যাত লালন ফকিরের মাজার।
আরও পড়ুন: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিলাইদহ কুঠিবাড়ি যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাউল সাধক লালনের আখড়ার ইতিহাস
এই ছেউড়িয়াতেই ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর শুক্রবার মৃত্যুবরণ করেন বাউল গুরু লালন। কিন্তু তারপরেও জায়গাটিকে ছেড়ে যাননি তার শিষ্যরা। বরং বছরের পর বছর ধরে বাড়তে থাকে দর্শনার্থীদের সংখ্যা, যা উৎপত্তি ঘটিয়েছিল এই মাজারের।
এই জায়গাটিতে সাধক লালন জীবন ও আধ্যাত্মিকতার দীক্ষা দিতেন তার গুনমুগ্ধ স্থানীয় লোকজন ও ভক্তদের। শিষ্যরা ভক্তি ভরে তাকে ‘সাঁই’ বলে ডাকতেন।
প্রতিবছর শীতের সময় এখানে মহোৎসবের আয়োজন করতেন লালন। এই উৎসবে হাজার হাজার ভক্তরা গুরুর সঙ্গে বাউল গান ও দেহতত্ত্ব নিয়ে আলোচনায় শামিল হোতেন।
গুরুর প্রয়াণের পরেও থেমে যায়নি বৈঠক, বরং নিয়ম মেনে প্রতিবছরই এই সময় আয়োজন হয় উৎসবের। আর এভাবেই গড়ে ওঠে লালন অনুসারীদের আখড়া। তার শিষ্যদের মধ্যে শুধু দেশীয়রাই ছিল না। দেশের বাইরে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে অগণিত বাউল ও ভক্তকুল সমবেত হতো এই আখড়ায়।
গুরুর পাশাপাশি তার প্রিয় শিষ্যদেরও সমাহিত করা হয়েছে এই মাজারে।
বর্তমান যে মাজারটি দেখা যায়, সেটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৬৩ সালে। উদ্বোধন করেছিলেন সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর মোনায়েম খান। তারও ৪ দশক পর ২০০৪ সালে মাজারটির আধুনিকায়ন করা হয়। পাশেই বিশাল জায়গাজুড়ে নির্মিত হয় অডিটোরিয়াম ও একাডেমি ভবন।
আরও পড়ুন:ঢাকার পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়ক: কীভাবে যাবেন, কী দেখবেন
কি কি দেখবেন লালনের আখড়ায়
আকর্ষণীয় অবকাঠামোগুলোর মধ্যে অডিটোরিয়াম ও একাডেমি ভবনটি ছাড়াও রয়েছে লালনের জাদুঘর, আবক্ষ ম্যুরাল এবং একতারার ভাস্কর্য। জাদুঘরে পরম যত্নে সংরক্ষিত রয়েছে লালনের ব্যবহৃত জলচকি, একটি দরজা, ভক্তদের ঘটি-বাটি ও বেশ কিছু ছবি। জাদুঘর ঘুরে দেখতে ২ টাকা প্রবেশমূল্য দিতে হবে।
লালন মেলা
লালনের মাজারের মূল আকর্ষণ হচ্ছে এখানকার পরিবেশ, যা প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে লালন মেলার সময়ে। প্রতি বছর দুইবার এই মেলাটি হয়- একবার, ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিকে কেন্দ্র করে দোলযাত্রা উৎসবের সময়, যেটি মূলত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে- লালন সাঁইজির প্রয়াণ দিবস তথা পহেলা কার্তিক বা ১৬ অক্টোবর উপলক্ষে।
এই দ্বিতীয়টি হচ্ছে সবচেয়ে বড় মেলা, যেটি ৩ দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়। মেলা উপলক্ষে গোটা আখড়াবাড়ী সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। প্রধান ফটক আর মূল মাজার ভরে যায় রঙিন আলোকসজ্জায়। সম্মুখে নির্মাণ করা হয় বিশাল তোরণ। মাজারের বাইরে কালী নদীর ভরাটকৃত অংশে লালন মঞ্চের সামনে টাঙানো হয় বিশাল সামিয়ানা।
আলোচনা মঞ্চের চারপাশে মাজারের প্রধান রাস্তা ছেয়ে যায় গ্রামীণমেলায়। এখানে বিক্রি হয় নানান ধরনের গৃহসামগ্রী, গেঞ্জি, কাঠের তৈরি সাংসারিক জিনিসপত্র এবং লালনের গানের সিডি। এছাড়াও পাঁপড় ভাজা, গরম জিলাপি, শন পাঁপড়ি, আখের রস ও খই-বাতাসাসহ বসে হরেক রকম খাবারের পসরা। উৎসবের প্রতিদিন সারা রাত ধরে চলে লালন গানের আসর।
এমন জাঁকজমক উৎসবে পুরো মাজার প্রাঙ্গণ পরিণত হয় দেশ-বিদেশের দর্শনার্থীদের মিলনমেলায়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের শীর্ষ ১৫টি ঐতিহ্যবাহী স্থান
ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ার লালনের আখড়ায় যাওয়ার উপায়
রাজধানী ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া যেতে হলে পাড়ি দিতে হবে ২৪৮ কিলোমিটার স্থলপথ। পাড়ি দিতে হবে স্থলপথে ২৪৮ কিলোমিটার, যা অতিক্রম করতে সময় লাগে প্রায় ৬ ঘণ্টা। বাসে করে এই পথ অতিক্রম করতে হলে কল্যানপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে উঠতে হবে কুষ্টিয়ার বাসে। এগুলো ৬ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে দিবে কুষ্টিয়ার মজমপুর গেটে। এই যাত্রায় বাস ভাড়া পড়তে নন এসির জন্য জনপ্রতি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা এবং এসির ক্ষেত্রে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা।
সেখান থেকে রিকশা বা অটোরিকশা করে ৬০ থেকে ৭০ টাকা ভাড়ায় পৌঁছা যাবে ৩ কিলোমিটার দূরত্বে ছেউরিয়া।
এছাড়া কমলাপুর রেল জংশন থেকে ট্রেনে করেও যাওয়া যাবে। এখান থেকে কুষ্টিয়ার ট্রেনগুলো ছাড়ে সকাল সোয়া ৮ টা, সন্ধ্যা ৭ টা এবং রাত সোয়া ১১ টায়। আসন ভেদে এগুলোতে সিট ভাড়া পড়তে পারে জনপ্রতি ৩৬০ থেকে সর্বোচ্চ ৮২৮ টাকা।
কুষ্টিয়া শহরের আগেই পোড়াদহ বা ভেড়ামারা স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে পড়তে হবে। স্টেশনেই পাওয়া যাবে শহরে যাওয়ার বাস বা সিএনজি। তারপর অটোরিকশায় চড়ে সোজা লালন গ্রাম ছেউরিয়া।
আরও পড়ুন: সিলেটের জাফলং ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও যাবতীয় খরচ
কুষ্টিয়ায় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
কুষ্টিয়ায় থাকার জন্য মোটামুটি ভালোমানের আবাসিক হোটেল পাওয়া যাবে শাপলা চত্বর, মজমপুর গেট, চৌড়হাস মোড়, এন এস রোড, এবং বড় বাজার এলাকায়। এগুলোতে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে রাত্রি যাপনের জন্য। এছাড়া অনুমতি নিয়ে থাকা যেতে পারে শিলাইদহ ডাকবাংলোতে।
খাবারের হোটেলের জন্য কোর্ট স্টেশন এলাকার রেস্তোরাঁগুলো বেশ ভালো। দেশ ও দেশের বাইরে থেকে আগত পর্যটকরা এখানকার বিখ্যাত তিলের খাজা ও কুলফি মালাইয়ের স্বাদ নিতে একদমি ভোলেন না।
আরও পড়ুন: মনপুরা দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় এবং আনুষঙ্গিক খরচ
আশেপাশের কিছু দর্শনীয় স্থান
কুষ্টিয়া শহরের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখার জন্য একটা ডে-ট্যুরই যথেষ্ট। তাই লালনের আখড়ার দর্শনার্থীরা আনন্দ পুষিয়ে নিতে ঘুরে দেখেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি, মীর মোশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা এবং গড়াই নদীর তীরে রেনউইকের বাধ।
এছাড়াও পরমাণু শক্তিকেন্দ্র ও ঐতিহাসিক হার্ডিঞ্জ ব্রিজের মাঝে লালন শাহ সেতুর দৃশ্যটাও ভোলার নয়।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় দৃষ্টিনন্দন ‘সাত গম্বুজ মসজিদ’
পরিশিষ্ট
কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজার ভ্রমণ নিঃসন্দেহে এক ভিন্ন আমেজের অভিজ্ঞতা দিবে। শুধু তাই নয়, মানুষের যাপিত জীবন যে কতটা বিচিত্র হতে পারে তা লালন মেলায় না গেলে বোঝা যাবে না। আর এজন্য লালন আখড়ায় যেতে হবে কার্তিক মাসের শুরুতে অথবা ফাল্গুনের শেষার্ধে।
এক্ষেত্রে বাউল সাধক লালন শাহের আখড়া ঘুরে দেখার সময় অবশ্যই শ্রদ্ধার সঙ্গে সেখানকার পরিবেশের ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখা উচিৎ। অনেক বিদেশি পর্যটকদেরও তীর্থস্থান হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থানটি অনায়াসেই প্রভাবিত করতে পারে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে। এই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ভ্রমণের সময় একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করা দেশীয় দর্শনার্থীদের জাতীয় ও নৈতিক দায়িত্ব।
আরও পড়ুন: মিরসরাই খৈয়াছড়া ঝর্ণা: যাওয়ার উপায় ও ভ্রমণ খরচ
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিলাইদহ কুঠিবাড়ি যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার পেছনে এক বিরাট অবদান রয়েছে দেশের কবি-সাহিত্যিকদের। সেই সূত্রে দেশীয় ও বিদেশি সাহিত্যপ্রেমী পর্যটকদের কাছে নিতান্ত ভালো লাগার স্থান হচ্ছে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ি। জায়গাটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনধারা এবং সাহিত্যকর্ম। রবীন্দ্র ভক্তসহ অন্যান্য ভ্রমণপ্রিয় মানুষগুলোও রোমাঞ্চিত হন বিখ্যাত সাহিত্যকর্মগুলোর জন্মস্থানকে কাছে থেকে দেখার সময়।
চলুন, ঐতিহাসিক জায়গাটিতে ভ্রমণবিষয়ক অনুসন্ধানের পাশাপাশি এর বিশেষত্বের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির অবস্থান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা কুষ্টিয়ার একটি উপজেলা কুমারখালী। এর অন্তর্গত শিলাইদহ ইউনিয়নের পর্যটন গ্রাম হিসেবে স্বনামধন্য এলাকা শিলাইদহ গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রমত্তা পদ্মা নদী কুষ্টিয়া থেকে আলাদা করেছে নদীর পাবনা জেলাকে। কুষ্টিয়া জেলা শহর থেকে ১৫ দশমিক ৪১ কিলোমিটার দূরত্বে অবিস্থত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি।
আরও পড়ুন: ঢাকার পূর্বাচলে ১০টি মনোরম রিসোর্ট: সারাদিনের খরচ
১০ দিনেও খোঁজ মিলেনি কুমারখালীর নিখোঁজ ব্যাংক কর্মকর্তার
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নিখোঁজের ১০ দিনেও সন্ধান মিলেনি রাজিব আহমেদ (৪০) নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার।
স্বজনদের দাবি, গত ২২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুমারখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শেরকান্দি এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়েছেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তা।
নিখোঁজ ব্যাংক কর্মকর্তা রাজিব আহমেদ পূবালী ব্যাংকের কুমারখালী শাখার সিনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।
তিনি জেলার ভেড়ামরা উপজেলার বামনপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম আলীর ছেলে। এ ঘটনায় ২২ ডিসেম্বর রাতে কুমারখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ওই কর্মকর্তার স্ত্রী রায়হানা পারভীন।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ৪ ইউপিডিএফ নেতা-কর্মী নিহত, নিখোঁজ ২
রায়হানা জানান, দুই সন্তান নিয়ে তিনি মাসখানেক ধরে তার বাবার বাড়ি খোকসায় আছেন। তার স্বামী কুমারখালী শেরকান্দি এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে নিয়মিত ব্যাংকে যাওয়া আসা করে। গত ২১ ডিসেম্বর রাতে তার স্বামী মুঠোফোনে তাকে জানিয়েছিল শুক্রবার ( ২২ ডিসেম্বর) তিনি ( রাজিব) গ্রামের বাড়ি ভেড়ামারা যাবেন। এরপর ২২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার সঙ্গে কথা বলে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু বের হওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর থেকে স্বামীর ফোন বন্ধ পান তিনি।
তিনি আরও জানান, ওই দিন বিকাল থেকেই তিনি তার স্বামীকে স্বজন, বন্ধুসহ সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাননি। পরে থানায় জিডি করেছেন তিনি।
রায়হানা বলেন, স্বামী রাজিবের কোনো শত্রু ছিল না। তবে তাদের সংসার জীবনে কিছুটা পারিবারিক কলহ ছিল।
ব্যাংক কর্মকর্তার বড় ভাই সাইদুল ইসলাম সান্টু জানান, নিখোঁজের খবর পেয়ে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করছেন তারা। থানায়ও গিয়েছেন। তবুও ভাইকে পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে তার ভাইয়ের পারিবারিক কলহ ছিল।
রাজিব আহমেদকে তার স্ত্রী রায়হানা মারধর করতেন বলে অভিযোগ করেন সান্টু।
পূবালী ব্যাংক কুমারখালী শাখার ব্যবস্থাপক আব্দুল হামিদ জানান, রাজিব খুব ভদ্র, নম্র ভালো মানুষ। অফিসে কারো সঙ্গে কোনো মনোমালিন্য ছিল না। গত ২০ ডিসেম্বর শেষ অফিসে এসেছিলেন রাজিব।
জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। এখনই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: বগুড়ার বিএনপির নিখোঁজ দুই নেতার অবস্থান জানাতে হাইকোর্টের নির্দেশ
কুষ্টিয়ায় নিখোঁজের ৬ দিন পর স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে নিখোঁজের ছয় দিন পর বাগান থেকে শাহীন আলী নামে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের ডাংমড়কা এলাকার একটি মাঠের মেহগনি বাগান থেকে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে দম্পতির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
নিহত শাহীন আলী উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের তেকালা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী সানেহ আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকালে শাহীন আলী তার দাদার ব্যাটারিচালিত ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়।
অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ওই স্কুলছাত্রকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে পরের দিন মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি জিডি করা হয়।
এবিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, পুলিশ শিশুটির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে। গত ছয় দিন আগে ভ্যান গাড়িসহ শিশুটি নিখোঁজ হয়। রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির পরিচয় নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ঘের থেকে মাছ চাষির লাশ উদ্ধার
নারায়ণগঞ্জে ফ্ল্যাট থেকে রাজমিস্ত্রির হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার
কুমারখালীতে বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে ২ জনের মৃত্যু!
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিষাক্ত অ্যালকোহল পান করে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অসুস্থ হয়ে আরও একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রবিবার (৩ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুরুল ইসলাম (৫০) নামের এক মোটর শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এর আগের দিন শনিবার (২ ডিসেম্বর) রাতে মারা যান কাশেম আলী (৪০)।
নুরুল ইসলাম উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের শালঘরমধুয়া গ্রামের মৃত ইজ্জত আলীর ছেলে এবং কাশেম আলী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার দুর্বাচারা গ্রামের নুর ইসলাম পটলের ছেলে।
এ ছাড়াও, মো. গঞ্জের আলী নামে একজন অসুস্থ হয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি দুর্বাচারা গ্রামের মৃত আনছার আলীর ছেলে।
জানা গেছে, গত শনিবার সন্ধ্যায় নুরুল ইসলাম ও মো. কাশেম আলী অ্যালকোহল পান করেন। এরপর গঞ্জের আলীসহ তিনজনে পুনরায় ওই অ্যালকোহল পান করেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্ত্রী-শাশুড়ি কারাগারে
আনুমানিক রাত সাড়ে ৮টায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়ায় স্বজনেরা তাদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই রাতেই চিকিৎসাধীন কাশেম মারা যান। পরের দিন রবিবার রাত ৮টায় নুরুল ইসলাম মারা যান। গঞ্জের আলী এখনও ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও তাপস কুমার সরকার জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজন মারা গেছেন। এঘটনায় এখনও একজন চিকিৎসাধীন।
তিনি বলেন, মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করায় এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকিবুল ইসলাম জানান, বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। তাই এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ট্রাকের ধাক্কায় নারী নিহত, আহত ৩
কুষ্টিয়ায় চুরির অপবাদে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ