জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস
শান্তির সংস্কৃতি ও মানবতার চর্চায় বিশ্বাসী বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার প্রতি দেশের অবিচল অঙ্গীকারের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশ শান্তির সংস্কৃতি, সহনশীলতা ও মানবতার চর্চায় বিশ্বাস করে বলেও মত দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৯) উদযাপিত হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আশা করি, আমাদের শান্তিরক্ষীরা তাদের পেশাগত উৎকর্ষতা, অসাধারণ সাহস, মানবতা, আত্মত্যাগ ও সততার মাধ্যমে বিশ্বে শান্তিপ্রিয় জাতি হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।’
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে দিবসটি উপলক্ষে একাধিক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে— মহাসচিবের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ১৯৪৮ সাল থেকে প্রাণ হারানো ৪ হাজার ৪০০ জনের বেশি শান্তিরক্ষীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। যাদের মধ্যে গত এক বছরেই প্রাণ হারিয়েছেন ৫৭ জন।
বানীতে গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থান ও পরবর্তী সময়ে দেশের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে এক প্রতীকী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের অভিজ্ঞ সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা সংঘাত প্রতিরোধ, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা, মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন।’
আরও পড়ুন: যুদ্ধের প্রস্তুতির পাশাপাশি শান্তির প্রতিও হাত বাড়াতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
এ সময় ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর সব সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান ড. ইউনূস। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসমূহ যুদ্ধবিধ্বস্ত ও সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বলে মত দেন তিনি।
১৯৮৮ সালে প্রথম শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ। আজ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শান্তিরক্ষা বাহিনী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমাদের শান্তিরক্ষীরা বিভিন্ন সংঘাত কবলিত দেশে শান্তি বজায় রাখা এবং জরুরি মানবিক সহায়তা প্রদানে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।’
তাদের দক্ষতা ও নিষ্ঠা সংঘাত-পীড়িত অঞ্চলের বেসামরিক জনগণের আস্থা অর্জন করেছে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের মর্যাদা আরও উচ্চে তুলে ধরেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
১৯১ দিন আগে
২৯ মে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ
আগামী ২৯ মে (বুধবার) আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হবে।
এদিন সকালে শান্তিরক্ষীদের স্মরণে ‘শান্তিরক্ষী দৌড়-২০২৪’ আয়োজনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে।
সকাল ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শহীদ শান্তিরক্ষীদের স্বজন ও আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ উপস্থাপনার আয়োজন করা হবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে থাকবেন- মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতহাইকমিশনাররা, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, তিন বাহিনী প্রধানরা, সংসদ সদস্যরা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), পুলিশের মহাপরিদর্শক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড।
দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরার লক্ষ্যে বিশেষ জার্নাল ও জাতীয় দৈনিকসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে।
এছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে বিশেষ টকশো প্রচারিত হবে।
ইতোমধ্যে শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের কার্যক্রমের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
৫৫৭ দিন আগে