আবেদ আলী
ফাঁস হওয়া প্রশ্নে নিয়োগ প্রমাণিত হলে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: জনপ্রশাসনমন্ত্রী
সরকারি কর্মকমিশন থেকে ফাঁস হওয়ার প্রশ্নে কর্মকর্তাদের নিয়োগ পাওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
গাড়িচালক আবেদ আলীর ফাঁস করা প্রশ্ন নিয়ে নিয়োগপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে সরকার কী ব্যবস্থা নেবে- জানতে চাইলে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, 'পিএসসি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তারা তাদের নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা থেকে করবে। সংসদে তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় হচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে তারা ব্যবস্থা নেবেন বলে চেয়ারম্যান জানিয়েছেন। বিষয়গুলো প্রমাণ হতে হবে এবং সেটার জন্য প্রচেষ্টা চলছে।'
সরকার এ বিষয়ে কঠোরভাবে নজরদারি করছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'এটি খুবই শক্তভাবে সরকার দেখছে। সিআইডি এটার ওপর স্পেশাল ফোকাস করছে।’
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের চাকরিবিধি অনুযায়ী কেউ যদি শঠতা বা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই কিন্তু চাকরিতে আসতে হবে। পিএসসি ও কিছু নিয়মকানুন রয়েছে সেগুলোর ব্যাপার আছে। বিষয়টি কিন্তু সবার মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। গভীর মনোযোগের সঙ্গে আমরা বিষয়টি দেখছি।'
বিষয়টি আগে প্রমাণিত হতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আগে বিষয়টি প্রমাণিত হতে হবে, যে এটি আদৌ সঠিক কি না। যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রমাণিত হবে- যে ড্রাইভার এ কথা বলছে, সে সত্য বলছে নাকি মিথ্যা বলছে। ততক্ষণ কিছু প্রমাণিত নয়।’
ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, 'যে ড্রাইভার এ কথা বলছেন, সেই ড্রাইভারকে দেখলাম অন্য একটা দলের স্লোগান দিচ্ছেন। সে একটি দলের ষড়যন্ত্রের ইন্সট্রুমেন্ট হিসেবে কাজ করছে কি না। সে তো একটা দলের হয়ে কাজ করছে, সরকারের ইমেজ নষ্ট করার জন্য। অনেকগুলো বিষয় কিন্তু এখানে আছে। অনেকদিন আগে সে কাজের কারণে চাকরিচ্যুত হয়েছে।'
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘যারা মাঠে সরকার পতনের আন্দোলন করে তেমন একটা দলের হয়ে, সে সরকারের উন্নয়নের কাজে বাধা দিতে চায়, তাদের হয়ে স্লোগান দিচ্ছে। আসলে সে কোন এজেন্ডা নিয়ে কথা বলছে, সেটি একটি বিষয়। তবে সত্য না মিথ্যা সেটি সরকারের পক্ষ থেকে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে অনুসন্ধান চলছে।'
৫১২ দিন আগে
কুয়াকাটায় আবেদ আলীর কথিত ‘হোটেল সান মেরিনা’ টক অব দ্য টাউন
'হেটেল সান মেরিনা' পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় অবস্থিত। এ হোটেলটির নির্মাণ কাজ এখনো শুরুই হয়নি। তবুও এখন হোটেলটি টক অব দ্য টাউন। নিজের মালিকানা উল্লেখ করে সামাজিক মাধ্যমে সৈয়দ আবেদ আলী একটি পোস্ট দেওয়ার পরই আলোচনায় এসেছে হোটেলটি।
সৈয়দ আবেদ আলী বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ( বিসিএস) পরীক্ষাসহ অন্তত ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত। তিনি পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক।
সোমবার(৮ জুলাই) দুপুর থেকে এ হোটেলটি নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি নিয়ে নানা রকমের পোষ্ট দিয়েছেন কুয়াকাটাসহ সারাদেশের মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবেদ আলীর বাড়ি মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলায়। তার বাবার নাম আবদুর রহমান মীর। ডাসার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার জন্য তিনি ইতোমধ্যে এলাকায় পোস্টার-ব্যানার টানিয়েছেন।
গত ১৮ মে আবেদ আলী তার ফেসবুক পেজে এ হোটেল নিয়ে স্ট্যাটাস দেন। তবে গত দু'দিন ধরে এ বিষয়টি কলাপাড়া-কুয়াকাটাসহ উপকূলীয় এলাকার মানুষের চোখে পড়ে। সান মেরিনা হোটেল নিয়ে আবেদ আলী তার ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘আমাদের নতুন হোটেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম আজ। সমুদ্রকণ্যার পাড়ে আজীবন নিজের জন্য একটা থাকার ব্যবস্থা ও একই সঙ্গে একটা হোটেলের মালিকানা অর্জন করতে আপনিও শেয়ার কিনতে পারেন। শেয়ার কিনতে যোগাযোগ করুন।’
সান মেরিনা হোটেলটি এখনও নির্মিত হয়নি। নির্ধারিত জায়গাটিও খালি পড়ে আছে। সামনের অংশে ৭ থেকে আটটি টিনশেড দিয়ে তৈরি রুম আছে। এ ছাড়া হোটেলটি কোন ডিজাইনে হবে তার ছবি দিয়ে একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো রয়েছে হোটেলের নির্ধারিত জায়গার সামনের অংশে।
২০১০ সালে এ হোটেলের মূল মালিক দাবিদার মো. মোশারফ হোসেন আবাসিক হোটেল নির্মাণ করার জন্য কুয়াকাটা পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের পাঞ্জুপাড়ায় ৪০ শতাংশ জমি কেনেন।
সান মেরিনা হোটেলটির বিস্তারিত তথ্যের অনুসন্ধান করে জানা যায়, এ হোটেলটির মালিক মো. মোশাররফ হোসেন। তিনি লিবার্টি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এই গ্রুপটি পিডিবি (পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড), পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি), রুরাল ইলেট্রিফিকেশন বোর্ড (আরইবি), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ঠিকাদার হিসেবে সাবস্টেশন ও ট্রান্সমিশন লাইনের নিয়মিত কাজ করে থাকে।
আরও পড়ুন: প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পেলেই রেলওয়ের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল: পিএসসি চেয়ারম্যান
সান মেরিনা হোটেলে কর্মরত মো. ফারুক হোসেন বলেন, আমি মোশাররফ স্যারের অধীনে অদ্যাবধি ৮ বছর যাবৎ চাকরি করছি। সৈয়দ আবেদ আলী নামে কাউকে আমি দেখিনি। তবে তিনি কয়েকমাস আগে এখানে এসে হোটেলের শেয়ার নেওয়ার জন্য আলোচনা করেছেন। তখন আমি তাকে মোশাররফ স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলছি। তখন একটা ছবি তুলতে দেখছি আমাদের হোটেলের বিজ্ঞাপনের সঙ্গে।
সান মেরিনা হোটেলের মালিক মোশাররফ হোসেন বলেন, গত দুই-তিন মাস আগে সৈয়দ আবেদ আলী আমার হোটেলটির সামনে অপর একটি হোটেলে এসে উঠেন। পরদিন সকালবেলা আমার হোটেলের জায়গায় গিয়ে শেয়ার ক্রয় করবেন বলে জানায়। তখন সে আমার লোকের কাছ থেকে শেয়ার ক্রয়ের বিস্তারিত জেনে যায়। এ পর্যন্তই। আসলে আমি কখনও তাকে দেখিনি এবং চিনিও না।
তিনি আরও বলেন, আবেদ আলীকে একজন টাউট প্রকৃতির লোক বলে মনে হয়েছে। আমি এ জন্য ঢাকার গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করব।
আরও পড়ুন: গাড়িচালক থেকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ও দানশীল আবেদ আলী, যা বলছেন গ্রামবাসী
৫১৪ দিন আগে
গাড়িচালক থেকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ও দানশীল আবেদ আলী, যা বলছেন গ্রামবাসী
পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী ও তার ছেলে সোহানুর রহমান সিয়ামসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিসিএস পরীক্ষাসহ ৩০টির বেশি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের পেছনে এই সিন্ডিকেটের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই কেলেঙ্কারির ঘটনায় সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর একটি সিন্ডিকেটের পরিচয় প্রকাশ হয়েছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীর বাড়ি মাদারীপুরের দাসার উপজেলার বটলা গ্রামে। স্থানীয়ভাবে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত হলেও আবেদ আলীর কথিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড তার এলাকাবাসীকে হতবাক করেছে।
আরও পড়ুন: প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পেলেই রেলওয়ের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল: পিএসসি চেয়ারম্যান
বটলা গ্রামের বাসিন্দারা জানান, দরিদ্র পরিবারের চার সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় আবেদ আলী আট বছর বয়সে ঢাকার সদরঘাটে কুলির কাজ শুরু করেন। পরে তিনি গাড়ি চালানো শেখার পর পিএসসিতে একটি চাকরি পেয়েছিলেন। আর এর মাধ্যমে সম্পদ আহরণের সূচনা করেছিলেন তিনি।
এই কেলেঙ্কারি মাদারীপুর এবং এর বাইরেও বেশ আলোচনার সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হক (৪৫) বলেন, ‘সৈয়দ আবেদ আলী দান-খয়রাতের জন্য বেশ পরিচিত। গত ঈদে তার ছেলে সিয়াম একটি বিলাসবহুল গাড়িতে করে এলাকার বাসাবাড়িতে গরুর মাংস বিতরণ করেন। তাদের এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না। সুষ্ঠু তদন্তের পর ন্যায়বিচার হওয়া উচিত।’
সিয়াম নিজেকে 'বড় ব্যবসায়ীর ছেলে' বলে পরিচয় দিতেন।
আবেদ আলী কোটি কোটি টাকা খরচ করে নিজ গ্রামে বানিয়েছেন বিলাসবহুল বাড়ি। তিনি গবাদি পশুর খামার ও বাজার প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দখল করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মাসুদ পারভেজ বলেন, 'জনগণের উচিৎ তাদেরকে প্রশ্ন করা, যারা সন্দেহজনকভাবে সম্পদ অর্জন করে।’
আরও পড়ুন: প্রশ্নফাঁস: পিএসসি চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালকসহ ১৭ জন গ্রেপ্তার
৫১৪ দিন আগে