রাফিনিয়া
নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে লা লিগার শিরোপা পুনরুদ্ধার বার্সেলোনার
কাগজে-কলমে রিয়াল মাদ্রিদের শিরোপাস্বপ্ন টিকে থাকলেও প্রায় অসম্ভব সমীকরণ মেলাতে হতো দলটির; নিজেদের অবশিষ্ট তিন ম্যাচ জয় এবং বার্সেলোনার তিনটি ম্যাচই হারতে হতো। এ ক্ষেত্রে রিয়াল প্রথম ম্যাচটি জিতলেও নিজেদের ম্যাচ জিতে সব হিসাব চুকিয়ে দিয়েছে বার্সেলোনা। এতে করে ২৮তম লা লিগা শিরোপা নিশ্চিত করেছে হান্সি ফ্লিকের দল।
এক মৌসুম পর শিরোপা পুনরুদ্ধারে তিন ম্যাচে মাত্র দুই পয়েন্ট প্রয়োজন ছিল বার্সেলোনার। তবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এস্পানিওলকে ২-০ গোলে হারিয়ে দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই শিরোপা নিশ্চিত করেছে কাতালান জায়ান্টরা।
কাতালুনিয়া ডার্বিতে এদিন পূর্ণ শক্তি নিয়েই নেমেছিল বার্সেলোনা। অপরদিকে, ম্যাচের আগে ঘরের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে দেওয়া এস্পানিওল কোচের কণ্ঠে বার্সাকেও হারানোর প্রত্যয় ঝরেছিল।
ম্যাচের প্রথমার্ধ অবশ্য ঠিকঠাক খেলে লামিন-রাফিনিয়াদের আটকে রাখে এস্পানিওল। তবে বিরতির পর আর দলটিকে রুখতে পারেনি তারা। ৫৩তম মিনিটে লামিনের বাঁ পায়ের কারিকুরিতে পরাস্ত হয় দলটির রক্ষণভাগ। নির্ধারিত সময়ের দশ মিনিট আগে বার্সেলোনার এই বিস্ময়বালককে অযথা ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন স্বাগতিকদের ডিফেন্ডার লেয়ান্দ্রো কাবরেরা। পরে যোগ করা সাত মিনিটের পঞ্চম মিনিটে লিগ শিরোপা নিশ্চিত করার গোলটি করেন দুর্দান্ত ফেরমিন লোপেস।
আরও পড়ুন: রিয়ালকে ৫ গোল দিয়ে সুপার কাপ জিতল ১০ জনের বার্সেলোনা
এই জয়ে ৩৬ ম্যাচে ২৭ জয় ও চার ড্রয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট হয়েছে ৮৫। আর সমান ম্যাচে দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়ালের পয়েন্ট ৭৮। ফলে দুই ম্যাচে রিয়াল পূর্ণ ছয় পয়েন্ট এবং বার্সেলোনা দুটিই হারলেও তাদের ধরা সম্ভব হবে না গতবারের চ্যাম্পিয়নদের।
এদিকে, হেরে অবনমনের শঙ্কা বেড়েছে এস্পানিওলের। টেবিলের ১৬তম স্থানে থাকলেও অবনমন অঞ্চল থেকে মাত্র পাঁচ পয়েন্ট দূরে আছে দলটি। ফলে পরের দুই ম্যাচের অন্তত একটিতে জিততেই হবে মানোলো গন্সালেসের শিষ্যদের।
২০২২-২৩ মৌসুমেও এস্পানিওলের এই মাঠ থেকেই শিরোপা নিশ্চিত করেছিল বার্সেলোনা। সেবার নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঠে জিতে শিরোপা উদযাপন করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় ও সমর্থকদের রোষের মুখে পড়তে হয় দলটিকে। এবারও বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা যাতে মাঠে উদযাপন করতে না পারে, সে লক্ষ্যে শেষের বাঁশি বাজতেই মাঠের পানির স্প্রেগুলো চালু করে দেওয়া হয়। আর হান্সি ফ্লিকও ছিলেন সতর্ক। খেলা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিষ্যদের ড্রেসিং রুমে ডেকে নেন তিনি।
২০২ দিন আগে
এমবাপ্পের হ্যাটট্রিক ম্লান করে মৌসুমের শেষ এল ক্লাসিকোও জিতল বার্সেলোনা
রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-২, ৫-২ ও ৩-২ গোলে তিনটি ম্যাচ হারিয়ে আগেই দুটি শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছিল বার্সেলোনা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের এবার ৪-৩ গোলে হারিয়ে মৌসুমের সবগুলো এল ক্লাসিকো জিতে নিল কাতালান জায়ান্টরা। সেইসঙ্গে ঘরোয়া ট্রেবল জয়ের বন্দরে প্রায় নোঙর করেই ফেলেছে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
ক্যাম্প ন্যুতে রবিবার লা লিগার দ্বিতীয় ও মৌসুমের শেষ এল ক্লাসিকোতে মাঠে নেমেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের শুরুতে দুই গোলে এগিয়ে গিয়েও ৪-৩ গোলে হেরে গেছে মাদ্রিদ জায়ান্টরা।
এই জয়ে লিগের আর মাত্র তিন ম্যাচ বাকি থাকতে দুইয়ে থাকা রিয়ালের চেয়ে ৭ পয়েন্ট এগিয়ে গেছে বার্সেলোনা। ৩৫ ম্যাচে ২৬ জয় ও চার ড্রয়ে তাদের সংগ্রহ ৮২ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।
লিগ শিরোপা জয়ের জন্য কাতালানদের আর দরকার দুই পয়েন্ট। আগামী বৃহস্পতিবার রাতে কাতালুনিয়া ডার্বিতে এস্পানিওলের মাঠে খেলতে যাবে ফ্লিকের দল। টেবিলের চতুর্দশ স্থানে থাকা নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ওই ম্যাচটি জিতলেই শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলবে তারা।
এদিন রিয়াল মাদ্রিদের তিন গোলের তিনটিই করেছেন এমবাপ্পে। লস ব্লাঙ্কোসদের হয়ে একমাত্র ৮ বা তার বেশি রেটিংয়ের পারফরম্যান্স দিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি তিনি (৮.৮)। বার্সেলোনার দলীয় পারফরম্যান্সের সামনে বৃথা গেছে তার হ্যাটট্রিক।
অবশ্য দল না জিতলেও ব্যক্তিগত একাধিক অর্জন হয়েছে এই ফরাসি তারকার। রিয়ালের জার্সিতে প্রথম মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড গড়েছেন তিনি। চলতি মৌসুমে ৩৮টি গোল করে ফেলেছেন এমবাপ্পে, অভিষেক মৌসুমে যা রিয়াল মাদ্রিদের কোনো খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ। এই রেকর্ড গড়তে গিয়ে ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে ইভান জামোরানোর ৩৭ গোলের রেকর্ড ভেঙেছেন এমবাপ্পে। এমনকি হাতে আরও তিনটি ম্যাচ থাকায় এই রিকর্ডটি তিনি আরও উচ্চতায় তুলতে পারেন।
এছাড়া লা লিগায় ২৫ গোল নিয়ে ম্যাচ শুরু করা এমবাপ্পের লিগে গোল বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮টিতে। চলতি মৌসুমের পিচিচি ট্রফিরে দৌড়ে বার্সেলোনার রবের্ট লেভানডোভস্কিকে (২৬) পেছনে ফেলে দিয়েছেন তিনি।
ম্যাচের শুরুতেই এদিন রক্ষণের ভুলে পেনাল্টি পেয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ, আর তা থেকে সফরকারীদের এগিয়ে নেন এমবাপ্পে। চতুর্থ মিনিটে বল নিয়ে বক্সের ঢোকার আগে কুবারসিকে পরাস্ত করে এগিয়ে যান এমবাপ্পে, এরপর স্টান্সনি এগিয়ে গিয়ে এমবাপ্পের পা থেকে ঝাঁপিয়ে বল কাড়তে গিয়ে তাকে ফাউল করে বসেন। এরপর ভিএআর রিভিউ শেষে ষষ্ঠ মিনিটে সফল স্পট কিক থেকে রিয়ালকে লিড এনে দেন এই ফরাসি তারকা।
চতুর্দশ মিনিটে বার্সার হাইলাইন ডিফেন্স ভেঙে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রিয়ালের ফরাসি স্ট্রাইকার। গোল খেয়ে অবশ্য মাঝমাঠ থেকে লামিনকে ফাউল করে বল কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছিল বার্সেলোনা, তবে রিভিউতে তাদের সে আবেদন জোর পায়নি।
এর পাঁচ মিনিট পর এরিক গার্সিয়ার গোলে ব্যবধান কমায় বার্সেলোনা। এ সময় বক্সের মধ্যে আসা ক্রসে প্রথমে মাথা দিয়ে বল গোলপোস্টের মাঝ বরাবর পাঠান ফেররান, তাতে সফল হেডারে ঠিকানা খুঁজে নেন এরিক।
এরপর ৩২তম মিনিটে লামিন ইয়ামাল ও ৩৪তম মিনিটে রাফিনিয়ার গোল প্রথমোর্ধেই রিয়ালকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় বার্সেলোনা। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য এমবাপ্পের আরও এক গোলে ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছিল দলটি। তবে তা ম্যাচ জিতে লিগে টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট ছিল না।
একেবারে শেষ মুহূর্তে বার্সেলোনার পক্ষে পঞ্চম গোলটি করেন ফেরমিন লোপেস। তবে অফসাইডে গোলটি কাটা পড়লে ৪-৩ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে কাতালানরা।
এর মাধ্যমে গত সপ্তাহে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ৪-৩ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হওয়া বার্সেলোনার ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ মিলেছে। সেইসঙ্গে লা লিগা জয়ের একেবারে কাছাকাছি পৌঁছে গেছে হান্সি ফ্লিকের দল।
২০৭ দিন আগে
পরীক্ষা-নিরীক্ষার ম্যাচটি জিতে এল ক্লাসিকোর প্রস্তুতি সারল বার্সেলোনা
বেঞ্চের ফুটবলারদের ঝালিয়ে নিতে নিয়মিত একাদশের নয়জন খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দিয়ে শিষ্যদের মাঠে নামিয়েছিলেন হান্সি ফ্লিক। তবে শুরুতেই গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়েছিল তার দল। পরে কয়েকটি পরিবর্তন এনে বার্সেলোনাকে ম্যাচটি জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছের তিনি।
শনিবার রাতে লা লিগায় নিজেদের ৩৪তম রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে নামে রিয়াল ভায়াদোলিদ ও বার্সেলোনা। সবশেষ ইন্টার মিলানের বিপক্ষে খেলা একাদশের ৯ জনকেই এদিন বিশ্রাম দেন ফ্লিক। ওই একাদশ থেকে মাঠে নামেন কেবল পেদ্রি ও জেরার্দ মার্তিন।
তবে ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটেই গোল করে ঘরের মাঠে সমর্থকদের আনন্দের উপলক্ষ এনে দেয় ইতোমধ্যে দ্বিতীয় বিভাগে অবনমন নিশ্চিত করে ফেলা ভায়াদোলিদ। এরপর প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষকে আটকে রাখতেও সক্ষম হয় দলটি।
৩৮তম মিনিটে এই ম্যাচ দিয়ে বার্সেলোনার জার্সিতে অভিষিক্ত দানি রদ্রিগেস চোট নিয়ে মাঠ ছাড়লে খেলতে নামেন লামিন ইয়ামাল। আর তাতে কাতালানদের আক্রমণে ধার বাড়ে। পরে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করার সময় পেদ্রি ও আনসু ফাতিকে বসিয়ে রেখে যথাক্রমে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং ও রাফিনিয়াকে মাঠে নামান ফ্লিক।
এরপর সমতায় ফিরতে বেশি সময় নেয়নি সফরকারীরা। ৫৪তম মিনিটেই রাফিনিয়ার গোলে সমতায় ফেরে তারা। এর সাত মিনিট পর ফেরমিন লোপেসের একটি ব্যাঙ্গারে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা।
আরও পড়ুন: অগ্নিঝরা ফাইনাল জিতে কোপা দেল রের শিরোপা পুনরুদ্ধার করল বার্সেলোনা
পরে অবশ্য আরও কয়েকটি ভালো সুযোগ তৈরি করেও গোলের দেখা মেলেনি দলটির। এছাড়া চোট থেকে সেরে উঠে ২২৪ দিন পর মাঠে নামা বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন পরে আর ভুল না করে বরং তিনটি অসাধারণ সেভ করলে ২-১ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
এই জয়ে ৩৪ ম্যাচে ২৫ জয় ও ৪ ড্রয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে থাকা বার্সেলোনা নিজেদের পয়েন্ট ৭৯-তে উন্নীত করেছে, আর দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়ালের সঙ্গে ব্যবধান আবারও বাড়িয়ে নিয়েছে সাত পয়েন্টে।
নিজেদের ৩৪তম রাউন্ডের ম্যাচটি রিয়াল মাদ্রিদ খেলবে রবিবার। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় সেল্তা ভিগোকে সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে আতিথ্য দেবে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
পরের সপ্তাহে লিগে মৌসুমের দ্বিতীয় ও শেষ এল ক্লাসিকোতে বার্সেলোনার মাঠে মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল। ওই ম্যাচটিই লা লিগার চলতি আসরের ভাগ্য গড়ে দেবে বলে ফুটবল পাড়ায় জোর আলোচনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিরে আসা কাকে বলে, দেখিয়ে দিল বার্সেলোনা
২১৫ দিন আগে
ফিরে আসা কাকে বলে, দেখিয়ে দিল বার্সেলোনা
পিএসজির বিপক্ষে বার্সেলোনার সেই ঐতিহাসিক ‘রেমন্তাদা’র কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। ওই রকম না হলেও উত্তেজনার অন্যরূপ দেখিয়ে, নাটকীয়তার চরমে উঠে আরও একটি ফিরে আসার গল্প লিখল কাতালান জায়ান্টরা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আবহে গত সপ্তাহজুড়ে রিয়াল মাদ্রিদ জগতে চর্চিত ছিল ‘ফিরে আসার গল্প’ বা রেমন্তাদা। কামব্যাকের আরও একটি গল্প লেখার প্রত্যয়ে দলটির খেলোয়াড় থেকে সমর্থক—সবাই মুখে ‘রেমন্তাদা’র ফেনা তুলে ফেললেও শেষ পর্যন্ত আর্সেনালের কাছে হেরে বসে। দুই লেগেই হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে টুর্নামেন্টের ইতিহাসের সফলতম দলটিকে।
ওই ঘটনার তিন দিন পরই কাকতালীয়ভাবে লা লিগায় রেমন্তাদা, অর্থাৎ ফিরে আসার নাটক রচনা করল রিয়ালের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা।
ফুটবলের অপকৌশল খ্যাত রক্ষণাত্মক ফুটবল যে সেল্তা ভিগো খেলতে জানে না, তা অনেক আগে থেকেই সবার জানা। দলটির অধিনায়ক ও ফরোয়ার্ড ইয়াগো আসপাসের ক্ষিপ্রতার কথা কে না জানে! তার ওপর আবার চলতি মৌসুমে আক্রমণে ধার বাড়িয়েছে দলটি। বোরহা ইগলেসিয়াসকে দলে ভিড়িয়েছে তারা। ফলে এই আক্রমণ-শক্তির সামনে বার্সেলোনার হাই লাইন ডিফেন্স ঠিক কতটা কার্যকর হয়, ছিল তা-ই দেখার অপেক্ষা।
মাঠের খেলায় নিজেদের নামের প্রতি সুবিচারে একটুও কমতি রাখেনি সেল্তা। আসপাসকে শুরুর একাদশে না রাখা হলেও ঝলক দেখিয়েছেন ইগলেসিয়াস।
আরও পড়ুন: হারের শঙ্কা জাগিয়েও সাত গোলের থ্রিলার জিতল বার্সেলোনা
ফ্লিকের অফসাইডের ফাঁদ ভাঙতে দলটি যে বিশেষ অনুশীলন করে মাঠে নেমেছে, তা খেলা শুরুর পর তাদের একের পর এক নির্ভুল লং পাস ও সুনিপুণভাবে অফসাইড এড়িয়ে আক্রমণে ওঠা থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। আর এই খেলার কাছেই এদিন দিশেহারা হয়ে যায় তারুণ্যনির্ভর বার্সেলোনা। সেল্তাকে কীভাবে থামাবে তা কোনোভাবেই বুঝে উঠতে পারছিলেন না কুবারসি, কুন্দে, ইনিগো মার্তিনেসরা।
ফলে দ্বাদশ মিনিটে পেদ্রির থ্রু বল ধরে অসাধারণ নৈপুণ্যে ফেররান তোরেস দলকে এগিয়ে নিলেও মিনিট চারেক পরেই সেল্তাকে সমতায় ফেরান বোরহা। এখানেও সেই ডিফেন্সভাঙা কৌশলে সাফল্যস্বরূপ গোলের দেখা পান তিনি।
এ সময় বার্সার ডিফেন্স চিরে সতীর্থের দুর্দান্ত পাস পেয়ে এগিয়ে যান ইকের লোসোদা। এরপর বিপরীত পাশে ইগলেসিয়াসের উদ্দেশে পাস বাড়ান তিনি। এ সময় ভয়চিয়েখ স্টান্সনি এগিয়ে এসে ঝাঁপিয়ে পাসটি নিষ্ক্রিয় করতে চেয়েও ব্যর্থ হন। আর প্রথম ছোঁয়াতেই উন্মুক্ত গোলে বল পাঠান ৩২ বছর বয়সেও ছুটে চলা এই স্প্যানিশ স্ট্রাইকার।
২২৯ দিন আগে
মেসিকে ছুঁয়ে রোনালদোর দিকে ছুটছেন রাফিনিয়া
হান্সি ফ্লিকের ছোঁয়ায় বার্সেলোনার সব ফুটবলারের মধ্যেই এসেছে দারুণ ইতিবাচক পরিবর্তন। তবে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছেন যিনি, তিনি রাফিনিয়া। মৌসুম শুরুর আগে ক্লাবটি যাকে বিক্রি করে দেবে বলে চর্চা চলছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, যিনি নিজেই কাতালুনিয়া ছেড়ে অন্যত্র ঠিকানা খুঁজছিলেন, সেই রাফিনিয়াই এখন বার্সেলোনার একাদশের মধ্যমণি; দলের সবচেয়ে পরিশ্রমী ও ফলপ্রসূ খেলোয়াড়।
লা লিগা, কোপা দেল রে হোক কিংবা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, বার্সার আক্রমণভাগের অপরিহার্য নামে পরিণত হয়েছেন ২৮ বছর বয়সী এই ব্রাজিলীয়। নিজে গোল করে এবং সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়ে ইউরোপীয় ফুটবলের সমালোচকদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন এই ফরোয়ার্ড। আগামী ব্যালন দ’রের জন্যেও তাকে যোগ্যতমদের তালিকার উপরের দিকে স্থান দিচ্ছেন অনেকে। এরই মাঝে একের পর এক রেকর্ড ছুঁয়ে চলেছেন তিনি।
গতরাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ঘরের মাঠে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে সেমিতে এক পা দিয়ে রেখেছেন হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। এই ম্যাচে একটি গোল ও দুটি অ্যাসিস্ট করে দলের জয়ে দারুণ ভূমিকা রাখেন রাফিনিয়া।
এতে করে ইউরোপের এলিট ক্লাবগুলোর ফ্ল্যাগশিপ এই টুর্নামেন্টের চলতি আসরে তার গোলসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২টি। ১১ ম্যাচে ১২ গোল করার পাশাপাশি ৭টি অ্যাসিস্টও করে ফেলেছেন তিনি। আর এতেই বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনের মেসির পাশে লিখিয়েছেন নিজের নাম।
২৩৮ দিন আগে
আতলেতিকো-বার্সেলোনা: অবিশ্বাস্য সব ঘটনার জন্ম দিয়ে ম্যাচজুড়ে যা হলো
চলতি মৌসুমে ইউরোপের বদলে যাওয়া দলগুলোর মধ্যে অন্যতম দুটি নাম আতলেতিকো মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। এক দল বিপুল অর্থ খরচ করে সাজিয়েছে দুর্দান্ত এক দল, অন্যটি টাকার অভাবে একাডেমির কিশোর ফুটবলারদের তুলে দিয়েছে নতুন এক কোচের হাতে।
আতলেতিকোর অর্থ আর হান্সি ফ্লিকের জাদুকরি ছোঁয়ায় দুই দলেই এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন। চলতি মৌসুমে এই দুই দলের আগের দুই ম্যাচেও মিলেছিল ধ্রুপদী লড়াইয়ের দেখা। তবে তৃতীয়বারের দেখায় যা হলো তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য।
দুপক্ষই ম্যাচে অবিশ্বাস্য সব ঘটনার জন্ম দিয়েছে। চলুন দেখে নেই উত্তেজনাকর এই ম্যাচটি শুরু হয়ে কীভাবে শেষ হলো।
এদিন মাঠে নেমেই দুর্লভ এক রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন আতলেতিকো মাদ্রিদ, এরপর বার্সেলোনা এবং পরে আবারও লস রোহিব্লাঙ্কোসদের জার্সি গায়ে চাপানো ফরাসি ফরোয়ার্ড আন্তোয়ান গ্রিজমান। লা লিগায় ৫২০তম ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি। আর এতে করে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা খেলোয়াড় বনে গেছেন সোনালি চুলের এই ফুটবল তারকা।
এই কীর্তি আছে মাত্র আর একজনের। আর্জেন্টিনা থেকে শৈশবে স্পেনে পাড়ি জমিয়ে সে দেশটিকেই নিজের ঘরবাড়ি বানিয়ে ফেলা লিওনেল মেসির। তবে শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও আর এক ম্যাচ মাঠে নামলে মেসিকে ছাড়িয়ে যাবেন গ্রিজমান।
সেইসঙ্গে চলতি মৌসুম তো বটেই আরও কয়েক বছর সিমিওনের অধীনে খেলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না এই আতলেতিকো কিংবদন্তির। সেক্ষেত্রে মেসিকে ছাড়িয়ে বহুদূর এগিয়ে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ী এই ফরাসি তারকা।
২৬৩ দিন আগে
লামিন, রাফিনিয়ার রেকর্ডের রাতে সবার আগে কোয়ার্টারে বার্সেলোনা
প্রথম লেগে একজন খেলোয়াড় কম নিয়ে প্রায় পুরো ম্যাচজুড়ে ভুগতে থাকার পরও কোনোমতে ১-০ গোলে জেতার পর ফিরতি লেগে যেন সব ক্ষোভ উগরে দিল বার্সেলোনা। তাতে পুড়ে অঙ্গার হয়ে শেষ ষোলো থেকে প্রথম দল হিসেবে বিদায় দিল বেনফিকা, আর সবার আগে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করল হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
কাতালুনিয়ার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ফিরতি লেগে পর্তুগিজ দলটিকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। এর ফলে ৪-১ গোলের অগ্রগামিতায় শেষ আটে উঠেছে কাতালান জায়ান্টরা।
ম্যাচের সবগুলো গোলই এসেছে প্রথমার্ধে। বার্সার তিনটি গোল আসে ১১, ২৭ ও ৪২তম মিনিটে। এর মধ্যে প্রথম ও তৃতীয় গোলটি করেন রাফিনিয়া। আর বাকি গোলটি আসে লামিন ইয়ামালের পা থেকে।
অপরদিকে বেনফিকার একমাত্র গোলটি করেন নিকোলাস ওতামেন্দি।
এর ফলে নতুন বছরে অপরাজেয় যাত্রায় অব্যাহত রাখল বার্সেলোনা। টানা ১৭ ম্যাচ হারেনি দলটি।
ম্যাচজুড়ে এদিন মোট ২০টি শট নেয় বার্সেলোনা, যার প্রথমার্ধে নেওয়া ৬টি শট ছিল লক্ষ্যে। অপরদিকে, আটটি শট নিয়ে মাত্র দুটি লক্ষ্যে রাখতে পারে বেনফিকা। বল দখলের লড়াইয়েও ছিল বার্সেলোনার প্রত্যাশিত আধিপত্য। দলটির ৬৫ শতাংশ পজেশনের বিপরীতে বেনফিকার ছিল ৩৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন: অসীম ধৈর্য্য ও স্টান্সনির কৃতিত্বে জিতে ফিরল ১০ জনের বার্সেলোনা
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই কেউ কাউকে ছেড়ে কথা না বলার ইঙ্গিত দিলেও প্রথম শটটি নেয় বার্সেলোনা। পেদ্রির বাড়ানো পাস ধরে ষষ্ঠ মিনিটে গোলে শট নেন লামিন, তবে সহজেই তা লুফে নেন বেনফিকা গোলরক্ষক আনাতোলি ত্রুবিন।
দশম মিনিটে লামিনের পাস ধরে বক্সের মাঝ থেকে লেভানডোভস্কির নেওয়া আরও একটি শট প্রতিহত করেন ত্রুবিন। তবে পরের মিনিটে আর জাল অক্ষত রাখতে পারেননি এই ইউক্রেনীয় গোলরক্ষক।
একাদশ মিনিটে ডান পাশ দিয়ে প্রতিপক্ষের কয়েক খেলোয়াড়কে ড্রিবল করে বক্সে ঢুকেই বিপরীত পাশ দিয়ে এগোতে থাকা রাফিনিয়াকে লক্ষ্য করে একটি নিখুঁত ক্রস বাড়ান লামিন। এরপর ট্যাপ-ইনে তা ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া রাফিনিয়ার জন্য ছিল জলের মতো সরল।
২৬৮ দিন আগে
অসীম ধৈর্য্য ও স্টান্সনির কৃতিত্বে জিতে ফিরল ১০ জনের বার্সেলোনা
শুরুতেই দশজনের দলে পরিণত হয়ে গত মৌসুমের মতো আরও একবার বিপর্যয়ের আশঙ্কা জাগিয়েছিল বার্সেলোনা, তবে হান্সি ফ্লিকের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া দলটি এদিন দিল অসীম ধৈর্যে্যর পরীক্ষা। সেইসঙ্গে প্রতিপক্ষের অসংখ্য শটের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন অবসর ভেঙে বার্সেলোনায় খেলতে আসা পোলিশ গোলরক্ষক ভয়চিয়েখ স্টান্সনি। সব মিলিয়ে বিপদে হাল না ছেড়ে দুরন্ত বেনফিকাকে রুখে দিয়ে জয় নিয়ে ঘরে ফিরেছে কাতালান জায়ান্টরা।
বার্সেলোনার পাওয়া লাল কার্ডের সুযোগ নিতে কতটা মরিয়া ছিল পর্তুগলের ক্লাবটি, তা পরিসংখ্যানের ওপর চোখ মেললেই স্পষ্ট হয়ে যায়। ম্যাচজুড়ে মোট ২৬টি শট নিয়ে তার আটটি লক্ষ্যে রাখে তারা। সেখানে ১০টি শটের পাঁচটি লক্ষ্যে রাখতে পারে বার্সেলোনা।
অবশ্য আটটি শট নিলেও সেগুলোর অধিকাংশই ছিল গোল পাওয়ার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু স্টান্সনির দৈবিক পারফরম্যান্সের সামনে বেনফিকার খেলোয়াড়দের অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে বারংবার।
আটটি গোল সেভ করে নিজেদের জাল অক্ষত রেখেও ম্যাচসেরার মুকুটটি ওঠেনি স্টান্সনির মাথায়। তবে ম্যাচের সব আলো কেড়ে নিয়ে সমালোচকদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন তিনি। এছাড়া অবসর থেকে ফিরে বার্সেলোনার জার্সি গায়ে জড়িয়ে নিজের অপরাজেয় যাত্রাটি আরও একবার দীর্ঘ করে নিলেন এই গোলরক্ষক। অবসর থেকে ফেরার পর এখন পর্যন্ত গ্লাভস পরে মাঠে নেমে হারেননি তিনি।
এছাড়া, ২০০৩-০৪ মৌসুমের পর এই প্রথম কোনো বার্সেলোনা গোলরক্ষক চ্যাম্পিয়ন্স লিগের একটি ম্যাচে আটটি সেভ করে ক্লিনশিট ধরে রাখল।
এবার আসা যাক খেলার ফলাফলে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচ খেলতে লিসবনে বার্সেলোনাকে আতিথ্য দেয় বেনফিকা। রাফিনিয়ার ৬১তম মিনিটের গোলে ম্যাচটি ১-০ ব্যাবধানে জিতেছে হান্সি ফ্লিকের দল।
২৭৪ দিন আগে
নাটকীয় বেনফিকা-বার্সা ম্যাচে হলো যেসব রেকর্ড
ফুটবলপাড়ায় গতরাতের পাগলাটে ম্যাচের রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। বার্সেলোনা সমর্থকদের অনেকে এখনও স্বপ্নের মধ্যে ডুবে আছেন। এর মাঝে চলুন দেখে নেই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ওই ম্যাচটি কতগুলো রেকর্ডে নাম তুলল।
বেনফিকাকে ৫-৪ গোলে হারানোর রাতে জোড়া গোল করেন রাফিনিয়া। এর মাধ্যমে চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তার গোলসংখ্যা বেড়ে হলো ৮টি। এর ফলে চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে বসেছেন তিনি। ৯ গোল করে তালিকার শীর্ষে তারই সতীর্থ রবের্ট লেভানডোভস্কি। তিনিও ম্যাচটিতে পেয়েছেন জোড়া গোলের দেখা।
গোল করায় দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও গোলে অবদান রাখার তালিকায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড। আট গোলের পাশাপাশি তিনটি অ্যাসিস্টের কল্যাণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি আসরে মোট ১১ গোলে অবদান রেখেছেন তিনি।
রাফিনিয়ার প্রথম গোলটি ছিল ডি-বক্সের বাইরে থেকে হেডারে করা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় গোল। সেটিও দেখা গেল এক যুগ পর। সবশেষ ২০০৩ সালে আয়াক্সের বিপক্ষে বক্সের বাইরে থেকে হেডারে লক্ষ্যভেদ করেন ক্লাব ব্রুজের নরওয়ে স্ট্রাইকার রুনে লাঙ্গে।
আরও পড়ুন: ভাগ্যের পালাবদলের রাতে ৯ গোলের থ্রিলারে শেষ হাসি বার্সেলোনার
গতরাতে পেনাল্টি থেকে জোড়া গোল আদায় করে নতুন উচ্চতায় উঠেছেন রবের্ট লেভানডোভস্কি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে পেনাল্টি থেকে গোল করায় লিওনেল মেসিকে (১৮) ছাড়িয়ে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর রেকর্ড স্পর্শ করেছেন এই পোলিশ। স্পট কিক থেকে গোল করার রেকর্ডে ১৯ গোল নিয়ে রোনালদোর সঙ্গে এখন যৌথভাবে শীর্ষে রয়েছেন লেভা। সামনের ম্যাচগুলোতে পেনাল্টি গোলে রূপান্তর করতে পারলেই সবাইকে ছাড়িয়ে যাবেন তিনি।
ইউরোপীয় এই প্রতিযোগিতার নাম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ করার পর থেকে মাত্র পঞ্চম খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েও ম্যাচ হেরেছেন ভাঙ্গেলিস পাভলিদিস।
২০০৩ সালে সর্বপ্রথম এমন দুর্ভাগ্যজনক কীর্তি গড়েন ব্রাজিল কিংকদন্তি রোনালদো নাজারিও। সে বছর ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে হ্যাটট্রিক করেও রিয়াল মাদ্রিদকে ম্যাচ জেতাতে ব্যর্থ হন তিনি; ৪-৩ গোলে ম্যাচটিতে জয় পায় ইউনাইটেড। এরপর ২০১০ সালে সান সিরোতে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেও টটেনহ্যামকে জেতাতে পারেননি গ্যারেথ বেল; ওই ম্যচটিও ৪-৩ গোলে শেষ হয়। ২০২০ সালে তুরস্কের মিডফিল্ডার ইরফান কাভেচি ইস্তানবুল বাসাকসেহিরের জার্সিতে হ্যাটট্রিক করেন, তবুও লাইপসিগের কাছে ৪-৩ গোলে হারে তার দল। পরের বছর কপাল পোড়ে ক্রিস্তোফার এনকুঙ্কুর। ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ক্লাব ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পেলেও লাইপসিগ ম্যাচটি হারে ৬-৩ ব্যবধানে। এ মৌসুমে সেইসব অভাগাদের দলে নাম লেখালেন পাভলিদিস।
ম্যাচ হারলেও গতরাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসের তৃতীয় দ্রুততম হ্যাটট্রিক (৩০ মিনিট) করেছেন এই গ্রিক ফরোয়ার্ড। এই তালিকায়ও শীর্ষে রয়েছেন লেভানডোভস্কি। ২০২২ সালে রেডবুল জালৎসবুর্গের বিপক্ষে ৭-১ গোলে বায়ার্নের জয়ের ম্যাচে মাত্র ২৩ মিনিটে হ্যাটট্রিক করেন এই স্ট্রাইকার। এছাড়া ১৯৯৬ সালে এসি মিলানের হয়ে ২৪ মিনিটে নরওয়ের ক্লাব রোজেনবর্গের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ইতালিয়ান স্ট্রাইকার মার্কো সিমোনে।
আরও পড়ুন: ধ্রুপদী ফুটবলের রাতে গৌরবময় সময়ে ফেরার ইঙ্গিত বার্সেলোনার
চার গোল হজম করেও ইউরোপের এই এলিট লিগের ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় দল হিসেবে গতরাতে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েছে বার্সেলোনা। এর আগে ২০০৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে টটেনহ্যামকে একই স্কোরলাইনে হারিয়ে রেকর্ড গড়ে আর্সেনাল।
তবে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই প্রথম কোনো ম্যাচ জিতল বার্সেলোনা।
এছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যাচ জয়ের ক্ষেত্রে (অন্তত ১০ ম্যাচ) এখন সবার উপরে হান্সি ফ্লিক। বায়ার্ন মিউনিখ ও বার্সেলোনা মিলিয়ে ২৪ ম্যাচ খেলেছে তার দল, যার ২১টিই জিতেছেন তিনি; এছাড়া ড্র করেছেন একটি ও হেরেছেন মাত্র দুটি ম্যাচ। সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখন পর্যন্ত ৮৮ শতাংশ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড এই জার্মান কোচের।
৩১৬ দিন আগে
ভাগ্যের পালাবদলের রাতে ৯ গোলের থ্রিলারে শেষ হাসি বার্সেলোনার
খ্যাতিমান কোনো নাট্যকার বা সিনেমার গল্পলেখককেও যেন হারিয়ে দিল বেনফিকা-বার্সেলোনা ম্যাচ। একের পর এক দৃশ্যপট পরিবর্তন, বারবার ভাগ্যদেবীর রসিকতা, ২ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর জানুয়ারির শীতে বৃষ্টির হানা, ব্যবধান কমিয়ে ফের ২ গোলে পিছিয়ে পড়া এবং একেবারে শেষ মুহূর্তে হারতে গিয়েও অকল্পনীয়ভাবে জিতে যাওয়া— বিশ্বের দুর্দান্ত সব থ্রিলার গল্পের চেয়ে কোনো অংশেই কম কিছু ছিল না। এসবের জেরে পুরোটা সময় আনন্দে টইটম্বুর থেকে ম্যাচশেষে গোমড়া মুখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বেনফিকার সমর্থকদের। ‘অবিচার করা হয়েছে’ ভেবে রাতের ঘুম তাদের হবে কি না, বলা মুশকিল।
পর্তুগালের দা লুস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচে স্বাগতিকদের ৫-৪ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা।
এর ফলে সাত ম্যাচে ৬ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই টেবিলের চূড়ায় থাকা লিভারপুলের সঙ্গে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
ভানগেলিস পাভলিদিসের প্রথমার্ধের হ্যাটট্রিকের পর দ্বিতীয়ার্ধে রোনালদ আরাউহোর আত্মঘাতী গোল, সব মিলিয়ে চার গোল করে বেনফিকা। অপরদিকে, দুই অর্ধে পেনাল্টি থেকে দুই গোল করেন রবের্ট লেভানডোভস্কি এবং এরিক গার্সিয়ার একটি ও রাফিনিয়ার জোড়া গোলে জয় নিশ্চিত করে বার্সেলোনা।
এদিন খেলা শুরুর পরপরই বেনফিকার দুর্দান্ত একটি আক্রমণে গোল খেয়ে বসে বার্সেলোনা। দ্বিতীয় মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে সতীর্থের কাছ থেকে আসা উড়ন্ত পাস ধরে বাঁ পাশ দিয়ে এগিয়ে গিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সের মধ্যে ক্রস দেন আলভারো কারেরাস। অসাধারণ ভলিতে প্রথম স্পর্শেই তা থেকে সমর্থকদের উল্লাসের উপলক্ষ এনে দেন পাভলিদিস।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয়ার্ধের চরম নাটকীয়তা শেষে ডর্টমুন্ড বধ বার্সেলোনার
গোল খাওয়ার পর আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা শুরু করে বার্সেলোনা, অপরদিকে বেনফিকাও সফরকারীদের ছেড়ে কথা বলার মনোভাব দেখায় না। ফলে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে উত্তেজনার পারদ চড়ে খেলায়।
এরই ধারাবাহিকতায় ম্যাচের ত্রয়োদশ মিনিটে পেনাল্টি থেকে পাওয়া গোলে সমতায় ফেরে কাতালান জায়ান্টরা। বেনফিকার বক্সের মধ্যে বল নিয়ে ঢোকার পর আলেহান্দ্রো বালদের শট প্রতিহত করতে গিয়ে তার পায়ে পাড়া দিয়ে বসেন দলটির পর্তুগিজ ডিফেন্ডার তমাস আরাউহো।
শুরুতে বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা আবেদন করেনি, রেফারিও গুরুত্ব দেনটি বিষয়টিতে। তবে কিছুক্ষণ পর ভিএআর বক্স থেকে রেফারিকে রিভিউ দেখার কথা জানানো হয়। এরপর টাচলাইন মনিটর থেকে রিভিউ দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি, আর নিখুঁত স্পট কিকে দলকে সমতায় ফেরান লেভানডোভস্কি।
৩১৭ দিন আগে