ইসরায়েলের হামলা
ইসরায়েলের হামলার মধ্যেই যুদ্ধবিরতির আলোচনা প্রত্যাখান ইরানের
ইসরায়েল হামলা অব্যাহত রাখলে কোনো যুদ্ধবিরতির কথা বিবেচনা করবে না বলে আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারী কাতার ও ওমানকে স্পষ্ট জানিয়েছে ইরান। চলামান উত্তেজনার মধ্যে ইরানের এ অবস্থানে বড় সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সময় রবিবার (১৫ জুন) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মধ্যস্থতার আলোচনা সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘কাতার ও ওমানকে ইরান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, ‘তারা কেবল তখনই বাস্তবিক অর্থে আলোচনায় বসবে, যখন ইসরায়েলের চালানো হামলার জবাব সম্পূর্ণ হবে।’
সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ইরান বর্তমান পরিস্থিতিতে যেকোনো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এর আগে, শুক্রবার (১৪ জুন) ভোরে ইসরায়েল একটি আকস্মিক হামলা শুরু করে। ইরানের শীর্ষ সামরিক নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয় এবং দেশটির পারমাণবিক অবকাঠামোরও কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইতোমধ্যে অভিযান আরও কঠিন হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরায়েল। এর জবাবে ইরানও কঠোর প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তেহরান বলেছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তারা ‘নরকের দরজা খুলে দেবে’। এই পরিস্থিতিতে চলমান সংঘাত আরও তীব্র আকার ধারণ করার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এদিকে, কিছু গণমাধ্যমে বলা হয়েছিল, পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য কাতার ও ওমানকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে যুক্ত করতে বলেছে ইরান। এই সংবাদ সঠিক নয় বলে জানান নাম প্রকাশ না করা ওই কর্মকর্তা।
তবে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইরান, কাতার ও ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় আইআরজিসি গোয়েন্দা প্রধান ও দুই জেনারেল নিহত
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছে ওমান। যদিও ইসরায়েলের সর্বশেষ বিমান হামলার পর সর্বশেষ রাউন্ডের আলোচনা বাতিল হয়েছে। তাছাড়া, কাতারও উভয় পক্ষের মধ্যে সংলাপ সহজ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে, এর মধ্যে ২০২৩ সালে একটি বন্দি বিনিময়ের মধ্যস্থতাও ছিল।
কাতার ও ওমান উভয়ই ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলে। এরপর ইসরায়েলের সঙ্গেও সরাসরি যোগাযোগে যুক্ত হয় এই দেশ দুটি।
১৭২ দিন আগে
ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান নিহত
ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া পৃথক হামলায় দেশটির অভিজাত বাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) প্রধান হোসেইন সালামিসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
খবরে বলা হয়, শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ একাধিক স্থানে হামলা চালায় ইসরায়েল। তেহরানে আইআরজিসির সদর দপ্তরেও হামলা হয়েছে। তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও গুরুত্বর্পূর্ণ সামরিক কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে চালানো হামলার নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন রাইজিং লায়ন।
বাঘেরি ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তা। শুক্রবার ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়া ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তাও তিনি।
শুক্রবার ভোরে ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা নাতানজসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায় ইসরায়েল। পরে দেশটির আরও কয়েকটি স্থানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়েছে।
টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, ইরানে ইসরায়েলি হামলায় ২০০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়, যেগুলো দেশটির ভেতরে প্রায় ১০০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি নিহত
এদিকে, একইদিনে পৃথক একটি হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের অভিজাত বাহিনী আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি। ইরানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম তথ্যটি নিশ্চিত করেছে। এই হামলায় সালামি, জরুরি কমান্ড ইউনিটের প্রধান জেনারেল গোলাম আলি রশিদসহ আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা নিহত হয়েছেন বলেও খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত হোসেইন সালামিকে ইরানের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সালামির নেতৃত্বেই ২০২৪ সালে ইরান প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক হামলা চালায়। ওই হামলায় ৩০০টিরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়।
দুই পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের পরমাণু জ্বালানি সংস্থার (এইওআই) সাবেক প্রধান ফিরেদুন আব্বাসি ও তেহরানের ইসলামি আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ মেহদি তেরাঞ্চি এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
দেশটির পরমাণু স্থাপনাগুলোর দেখভাল করে থাকে পরমাণু শক্তি সংস্থা (এইওআই)।
কড়া জবাবের হুশিয়ারি ইরানের
এদিকে, ইসরায়েলের হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে তেহরান।
ইসরায়েলের হামলার জবাবে এবার পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান। দেশটির পক্ষ থেকে ইসরায়েলের দিকে প্রায় ১০০টি ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন জানিয়েছেন, গত এক ঘণ্টায় ইসরায়েল অভিমুখে অন্তত ১০০টি ইউএভি (ড্রোন) ছোড়া হয়েছে, যেগুলো আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করছি।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের মুখপাত্র আবুলফজল শেখারচি বলেন, ‘জায়নবাদী এ হামলার জবাব অবশ্যই দেবে ইরানি সশস্ত্র বাহিনী।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলকে তার হামলার চড়া মূল্য দিতে হবে এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর কঠোর জবাবের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
১৭৫ দিন আগে
খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রাণ গেল ৩১ গাজাবাসীর
গাজায় খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩১ জন, আহত হয়েছেন ১৭০ জনেরও বেশি। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
স্থানীয় সময় রবিবার (১ জুন) ইসরায়েল-সমর্থিত ফাউন্ডেশনের পরিচালিত একটি সহায়তা কেন্দ্র থেকে খাবার সংগ্রহ করতে যাওয়া জনতার ওপর ওই হামলা চালানো হয়।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা এমন তথ্য জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, রবিবার ভোরের কিছু আগে ওই সহায়তা কেন্দ্র থেকে খাবার সংগ্রহ করতে যাচ্ছিলেন স্থানীয়রা। সহায়তা কেন্দ্র থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ভাষ্যে, সহায়তা কেন্দ্রে বা তার আশেপাশে বেসামরিক নাগরিকদের দিকে গুলি চালায়নি তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ বিষয়ে এক ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা জানান, রাতে তাদের দিকে এগিয়ে আসা বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনের দিকে সতর্কীকরণ গুলি চালানো হয়।
এ ঘটনার পর আরও একটি ড্রোন ফুটেজ প্রকাশ করে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। ফুটেজে দেখা যায়, মুখোশধারী ও সশস্ত্র কয়েকজন ব্যক্তি খাদ্য সংগ্রহ করতে আসা বেসামরিক লোকদের ওপর গুলি চালাচ্ছেন। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
এদিকে, হামাস গাজায় খাদ্য বিতরণ প্রক্রিয়াকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করছে বলে এক বিবৃতিতে দাবি করে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: গাজায় চিকিৎসক দম্পতির ১০ সন্তানের ৯ জনই নিহত
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের আওতায় গাজায় নতুন করে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই সংস্থাটি সহায়তা কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে বিশৃঙ্খলা ও গোলাগুলির ঘটনা অস্বীকার করেছে।
তবে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা রেড ক্রস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাফার একটি ফিল্ড হাসপাতালে নারী ও শিশুসহ ১৭৯ আহতকে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর আহতের মধ্যে ২১ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়, যাদের বেশিরভাগেরই শরীরে গুলি বা বোমার স্প্লিন্টারের ক্ষত ছিল। তবে নিহতদের মধ্যে কেউ সশস্ত্র যোদ্ধা ছিল কিনা তা স্পষ্ট নয়।
রেড ক্রসের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, আহতরা সবাই একটি সহায়তা কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন।
এ হামলার ঘটনারকে একটি ‘ট্র্যাজেডি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রধান সিন্ডি ম্যাককেইন।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য পরিচালিত সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, ‘ত্রাণ কেন্দ্রগুলোও এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।’
এদিকে, পৃথক এক বিবৃতিতে গাজায় আর ত্রাণ কেন্দ্র স্থাপন এবং উত্তর ও দক্ষিণ গাজার অনির্দিষ্ট অংশে স্থল অভিযান সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির।
আরও পড়ুন: ক্ষুধার রাজ্যে পরিণত হয়েছে গাজা, উপচে পড়ছে হাসপাতাল
বিশৃঙ্খলায় পূর্ণ নতুন সহায়তা ব্যবস্থা
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ইসরায়েল সমর্থিত ফাউন্ডেশনের ত্রাণ কেন্দ্রগুলোর কাছে ইসরায়েলি সেনারা জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রেকর্ড বিভাগের প্রধান জাহের আল-ওহাইদি জানিয়েছেন, রবিবারের আগেই এসব কেন্দ্রে পৌঁছাতে গিয়ে ১৭ জন নিহত হয়েছেন।
তবে ফাউন্ডেশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা ছাড়াই তারা রবিবার ১৬ ট্রাক ত্রাণ বিতরণ করেছে। মৃত্যুর ঘটনা, ব্যাপক আহত ও বিশৃঙ্খলার ভুল প্রতিবেদন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে সংস্থাটি।
নতুন ত্রাণ ব্যবস্থা মানবিক নীতিমালা লঙ্ঘন করছে
ইসরায়েলের পরিচালিত নতুন এই ত্রাণ ব্যবস্থার সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা। হামাসকে সহায়তা না দিয়ে ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর এই বিষয়টিকে তারা মানবিক নীতিমালার পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে।
হামাসকে ত্রাণ চুরি থেকে বিরত রাখতে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। যদিও নিজেদের বক্তব্যের স্বপক্ষে তারা কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। যদিও এই চুরির বিষয়টি অস্বীকার করেছে জাতিসংঘ।
এই নতুন ব্যবস্থা ইসরায়েলকে নির্ধারণ করতে দিচ্ছে কে সহায়তা পাবে, পাশাপাশি মানুষকে সহায়তা কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করছে — যার ফলে উপকূলীয় এই এলাকার মানুষ আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘসহ অনান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
প্রায় তিন মাসের অবরোধের পর গত ২০ মে থেকে গাজায় প্রবেশ করে মানবিক সহায়তা। তবে যে পরিমাণ সহায়তা পৌঁছাচ্ছে তা প্রায় ২০ লাখ গাজাবাসীর জন্য অপ্রতুল বলে মন্তব্য করেন অনেকে। আরও সহায়তা না এলে এই অঞ্চল দুর্ভিক্ষের মুখে পড়বে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: টানা তিনমাস পর গাজায় প্রবেশ করল মানবিক সহায়তা
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে গাজায় এ পর্যন্ত ৫৪ হাজরের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
এদিকে, মার্কিন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস সংশোধনী চাওয়ায় শনিবার (৩১ মে) আবারও বাধার মুখে পড়েছে যুদ্ধবিরতির আলোচনা। তবে ৬০ দিনের একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিশর।
১৮৬ দিন আগে
ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হতেই গাজা, ইয়েমেনে ইসরায়েলের হামলা জোরাদার
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হতেই স্বরূপে ফিরেছে ইসরায়েল। অবরুদ্ধ গাজা ও ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ফের জোরেশোরে সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনারা।
স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (১৬ মে) সারা রাত ধরে গাজা উপত্যকার দাইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসে লাগাতার বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই হামলায় অন্তত ১০৮ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
এই হামলার ব্যাপারে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামাসের হাতে থাকা ৫৮ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করতে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, জিম্মিদের মুক্তি না দিলে আরও বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালানো হবে।
অন্যদিকে, ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত ২টি বন্দরেও বিমান হামলায় চালিয়েছে ইসরায়েল। এ ঘটনায় অন্তত একজন নিহত ও ৯ জন আহত হওয়ার খবর দিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হওয়ার পরপরই ইসরায়েল হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজা ও ইয়েমেনের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্পের এ সফর শেষ হতেই ইসরায়েলি হামলায় যোদ্ধা ও বেসামরিক মিলিয়ে উপত্যকার ১৩০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
গাজায় দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে মানবিক সহায়তা বন্ধ রেখেছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্য সফরকাল ট্রাম্প গাজায় পুনরায় যুদ্ধবিরতি কিংবা অন্তত মানবিক সহায়তা কার্যক্রম ফের চালু করার চেষ্টা করবেন বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ সফর করলেও এ বিষয়ে তাকে তেমন কিছু বলতে দেখা যায়নি।
অবশ্য গাজার মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। সফরের শেষ দিন আবুধাবিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, গাজাসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক সংকট তিনি সমাধানের চেষ্টা করছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টি গাজার দিকে। আমাদের এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে হবে। সেখানে ভয়াবহ অবস্থা চলছে। অসংখ্য মানুষ অনাহারে দিনাতিপাত করছে।’
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর: আলোচনায় কূটনীতি, উপেক্ষিত মানবাধিকার
একই সঙ্গে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনাও অব্যাহত রেখেছেন তিনি। ট্রাম্প প্রশাসন গাজায় হামাস এবং ইয়েমেনে হুথিসহ বেশ কয়েকটি ইসরায়েল-বিরোধী গোষ্ঠীকে সমর্থন দেওয়া দেশটির সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তির করার চেষ্টা করছেন।
২০১ দিন আগে
ইসরায়েলের হামলায় লেবাননে গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৫৫, আহত ১৫৬
লেবাননজুড়ে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ জন নিহত ও ১৫৬ জন আহত হয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয় জানায়, বালবেক-হারমেল জেলায় ১১ জন, নাবাতিয়েহ প্রদেশে ২২ জন, বৈরুত ও মাউন্ট লেবাননে যথাক্রমে তিনজন এবং দক্ষিণ প্রদেশে ১৬ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: লেবাননে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘাতে লেবাননে ক্রমাগত নজিরবিহীন বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
গাজা উপত্যকায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধের মধ্যেই লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের তীব্র লড়াই শুরু হওয়ায় ওই অঞ্চলে বৃহত্তর সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৯৫, আহত ১৭২
৪২৯ দিন আগে