চীনের বাজার
চীনা বাজারে বাংলাদেশি আমের প্রবেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
চীনের বাজারে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশি আম। এটি শুধু চীন-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধিই করবে না, ভারসাম্য উন্নত করবে বলে মন্তব্য করেন ঢাকায় নিযুক্ত বেইজিংয়ের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
বুধবার (২৮ মে) বাংলাদেশের তাজা আমের প্রথম চালানের বিমান পরিবহনের বিদায়ের অনুষ্ঠানে তিনি এসব বলেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, এই পদক্ষেপ বাণিজ্যের ভারসাম্য উন্নতির পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ‘উইন-উইন‘ অবস্থা সৃষ্টি করবে। যেখানে দুই পক্ষই জয়ী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা করি বাংলাদেশি আম চীনা ভোক্তাদের টেবিলে ঠিকঠাকভাবে পৌঁছাবে এবং ভবিষ্যতে আরও অনেক উচ্চমানের বাংলাদেশি কৃষিপণ্য চীনা বাজারে প্রবেশ করবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও মো. আনোয়ার হোসাইন।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, গঙ্গার বদ্বীপ এলাকার উর্বর মাটিতে উৎপাদিত বাংলাদেশি আম সবুজ ও উচ্চমানের কৃষিপণ্য হিসেবে পরিচিত।
চীনা ভোক্তাদের সবজির ঝুড়িতে এটি বৈচিত্রপূর্ণ বিকল্প সরবরাহ করবে এবং মানুষের জীবনমান উন্নত করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
চীনা বাজারের বিশাল সম্ভাবনা বাংলাদেশের আম শিল্পে সরাসরি উন্নয়ন আনবে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি এ উদ্যোগ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলেও মত দেন তিনি।
চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং বহুবার উল্লেখ করেছেন, চীনের উন্মুক্ত হওয়ার দরজা কখনো বন্ধ হবে না, বরং ক্রমশ আরও বিস্তৃত হবে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও জানান, ‘চীনে বাংলাদেশি আমের রপ্তানি কেবল একটি সূচনা মাত্র। ইতোমধ্যে দেশটির বাজারে বাংলাদেশি পেয়ারা ও কাঁঠালের প্রবেশ নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করেছে বেইজিং।’
বাংলাদেশ থেকে কাঁচা পশম আমদানি নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। এ ছাড়া, বাংলাদেশ থেকে চীনে ইলিশ মাছ রপ্তানির প্রত্যাশাও রয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান হামলা: নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান চীনা রাষ্ট্রদূতের
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আশা করছি শিগগিরই আরও বেশি সংখ্যক উচ্চমানের বাংলাদেশি কৃষিপণ্য চীনের সুপারমার্কেটে জায়গা করে নেবে, যা দুই দেশের মানুষের জন্য বাস্তবিক সুবিধা বয়ে আনবে।’
ইয়াও বলেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে বিরাজ করছে অস্থিরতা ও অনিশ্চিয়তা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একতরফাভাবে শুরু করা বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ব্যাপকভাবে ব্যাহত করেছে।
চীন ও বাংলাদেশসহ সব দেশ শান্তিপূর্ণ বিশ্ব ও স্থিতিশীল আন্তর্জাতিক পরিবেশ কামনা করে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মান, সমর্থন, সমতা ও উইন-উইন সহযোগিতা বজায় রাখতে চায় বেইজিং।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মতো বহুপাক্ষিক কাঠামোতে সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করব এবং দুই দেশের শিল্প ও সরবরাহ শৃঙ্খলের সমন্বিত উন্নয়ন ঘটাবো।’
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বেইজিং সফরের কথা উল্লেখ করে ইয়াও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সফলভাবে সফর সম্পন্ন করেছেন এর ফলাফল প্রত্যাশার বাইরে। বাংলাদেশের আম চীনে রপ্তানি হওয়া এ ফলাফল বাস্তবায়নের একটি দৃশ্যমান পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
১৯১ দিন আগে
বাংলাদেশি পণ্য চীনের বাজারে শুল্কমুক্তভাবে রপ্তানিতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারে: উপদেষ্টা
বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশি পণ্য চীনের বাজারে শুল্কমুক্ত রপ্তানিতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারে।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বুধবার (২ অক্টোবর) চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার নতুন মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া
এ সময় সামুদ্রিক মাছের সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ করেন চীনা রাষ্ট্রদূত। একই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে সামুদ্রিক মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া, কুঁচিয়া, পাট ও পাটজাত পণ্য, আম আমদানির আগ্রহও প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বেসরকারি পর্যায়ে চীনের বিনিয়োগকারীরা সামুদ্রিক মাছ প্রক্রিয়াকরণ কারখানা তৈরি করে মাছ রপ্তানি করতে চায়।
চীনা রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, এ সমস্ত পণ্য চীনের বাজারে যথেষ্ট চাহিদা থাকায় বাংলাদেশ রপ্তানির সুযোগ নিতে পারে।
দুই দেশের প্রতিনিধি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে একমত পোষণ করে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, অতিরিক্ত সচিব এ.টি.এম. মোস্তফা কামাল, অতিরিক্ত সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেনসহ দূতাবাসের বাণিজ্যিক কাউন্সিলর সাং ইয়াং, দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি শি চেন, থার্ড সেক্রেটারি বাই জাওশি।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে উপদেষ্টাদের সংলাপ শুরু শনিবার
সুসম্পর্ক স্থাপনে সম্মত ঢাকা-দিল্লি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
৪২৮ দিন আগে