প্রেস সচিব শফিকুল আলম
রোহিঙ্গা সমস্যাকে আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনার কেন্দ্রে নিতে প্রচেষ্টা জোরদার সরকারের
অন্তর্বর্তী সরকার রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাকে আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনার একটি প্রধান বিষয় হিসেবে ফিরিয়ে আনতে ও মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে।
শফিকুল আলম বলেন, এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আগামী রবিবার (২৪ আগস্ট) থেকে কক্সবাজারে তিন দিনের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ২৫ আগস্ট সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং সম্মেলনটি ২৬ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
এসময় প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস সচিব বলেন, চলতি বছরের শেষের দিকে নিউইয়র্ক এবং দোহায় আরও দুটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সবচেয়ে বড় সম্মেলনটি আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হবে।
কক্সবাজার সম্মেলনে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি, ৪০টি দেশের প্রতিনিধি, ঢাকায় অবস্থিত কূটনীতিক এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আলম আরও বলেন, ২৪ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
তিন দিনের এই সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন ও তহবিলের জন্য একটি বিস্তৃত রোডম্যাপের বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে।
আরও পড়ুন: ২৫ আগস্ট কক্সবাজার যাবেন প্রধান উপদেষ্টা
রাখাইন রাজ্যে পরিকল্পিত সহিংসতা ও নিপীড়ন এবং মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে।
মিয়ানমার থেকে কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এই আগমন ২০১৭ সালের পর থেকে সবচেয়ে বেশি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা তাদের আদি আবাসভূমি রাখাইন রাজ্যে ভয়াবহ সহিংসতার কারণে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
নতুন আগতদের মধ্যে, জুনের শেষ নাগাদ প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার জনকে বায়োমেট্রিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যেই জনাকীর্ণ শরণার্থী শিবিরে অনানুষ্ঠানিকভাবে বসবাস করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
নতুন আগতদের জন্য জরুরিভাবে আরও মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। কারণ, নতুন আগতরা মূলত শিবিরে বসবাসকারীদের সাহায্যের উপর নির্ভরশীল, যা মারাত্মকভাবে কমছে।
১০৬ দিন আগে
কোনো শক্তি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন প্রতিহত করতে পারবে না: শফিকুল আলম
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে। এমন কোনো শক্তি নেই এটি প্রতিহত করবে। ইতোমধ্যে নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব দপ্তর বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চাই। আশা করছি সেটি সবার সহযোগিতায় সম্ভব হবে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে মাগুরার পারন্দুয়ালীতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মেহেদী হাসান রাব্বি ও আল আমিনের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন ।
প্রেস সচিব বলেন, যারা জীবন দিয়ে আমাদের জন্য একটি স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন, তাদের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্ষা শুরু হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বর্ষা শেষ হলে দেখবেন পাড়া মহল্লায় নির্বাচনের আমেজ নেমে এসেছে। সম্ভাব্য প্রার্থী ভোটের জন্য দুয়ারে দুয়ারে যাবেন। পাড়ায় পাড়ায় ভোটের অফিস হবে। এই ভোটের আমেজ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। আমরা নিশ্চিত, তখন কারো মনে যদি কোনো সন্দেহ থাকে সেই সন্দেহটুকু চলে যাবে। নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে এবং রোজার আগেই হবে।
পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে জনগণের শঙ্কা রয়ে গেছে: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
তিনি আরও বলেন, জুলাই আগস্টে মাগুরায় মোট ১০ জন শহীদ হয়েছেন। আওয়ামী লীগ যুবলীগের খুনি বাহিনীর হাতে শহীদ হয়েছেন মেহেদী হাসান রাব্বি। উনি ছাত্রদলের স্থানীয় একজন নেতা ছিলেন। আমি তার কবরে গিয়েছিলাম। একই এলাকার আল আমিন ছোট ব্যবসা করতেন ঢাকাতে। উনাকেও গুলি করে মারা হয়েছে। উনার কবর মাগুরা উপকণ্ঠে রয়েছে। সেখানেও গিয়েছিলাম ফুল দিতে। মাগুরা জেলায় মোট ১০ জন শহীদ আছেন। বাকি ৮ জনের প্রত্যেকের কবরস্থানে যাবো।
শফিকুল আলম বলেন, এই শহীদরা নতুন বাংলাদেশের নির্মাতা। তাদের আত্মদানের ফলে আমরা নতুন একটা দেশ পেয়েছি। আমরা আজকের এই দিনে সবাই মুখ ফুটে কথা বলতে পারছি। আমরা এখন পলিটিকাল সেটেলমেন্ট করছি। সামনে সুন্দর একটি নির্বাচন হবে।
তিনি বলেন, শহীদদের কারণে আমরা নতুন বাংলাদেশটা পেয়েছি। সেজন্য তাদের সম্মান জানাতে কবরস্থানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি।
১১১ দিন আগে
উপদেষ্টা ফরিদা ভুল কথা বলেছেন: প্রেস সচিব
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক সংক্রান্ত খসড়া চুক্তি প্রকাশ না করার বিষয়ে ‘ভুলভাবে কথা বলেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, এ বিষয়ে তিনি ভুল মন্তব্য করেছেন।
এর আগে ফরিদা আখতার খসড়া চুক্তি প্রকাশ না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
পড়ুন: শেখ হাসিনা সরকারের নজরদারি সরঞ্জাম ক্রয় খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি
প্রেস সচিব জানান, দ্বিপক্ষীয় চুক্তির খসড়া প্রকাশ না করা কূটনৈতিকভাবে একটি প্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়া।
অন্তর্বর্তী সরকার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং শুল্ক সংক্রান্ত চুক্তি সম্পূর্ণ হলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গোপনীয়তার শর্ত তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
১১২ দিন আগে
মালয়েশিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার সফর গুরুত্বপূর্ণ ও কর্মমুখর হবে: প্রেস সচিব
মালয়েশিয়ায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন তিন দিনের সরকারি সফরটি ঢাকা ও কুয়ালালামপুরের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর’ হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
রবিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, ‘সফরটি কর্মব্যস্তময় হবে। আমরা এই সফরের সফলতার প্রত্যাশা করছি। এতে সব বিষয়ে গভীর ও বিস্তৃত আলোচনা হবে।’
মালয়েশিয়া বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যস্থল হিসেবে বিবেচিত এবং এ সফরে কর্মী নিয়োগ ও ভিসা সম্পর্কিত বিষয়গুলো আলোচনায় আসবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
‘সফরে মাইগ্রেশন ও বিনিয়োগে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে,’ শফিকুল আলম বলেন।
গভীর সাগরের মাছ ধরা ও বৈদ্যুতিক যানবাহন উৎপাদনের জন্য যৌথ উদ্যোগের বিষয়ে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার সহযোগিতা চাইবে বলে জানান তিনি।
এ সময়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের মহাপরিচালক শাহ আসিফ রহমান জানান, প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও তিনটি অতিরিক্ত নোট সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারও ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) পুত্রজায়ায় বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মজবুত করা ও বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং শ্রম সহযোগিতাসহ একাধিক ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ উদ্যোগ গ্রহণ এই আলোচনার প্রধান লক্ষ্য।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনুস সোমবার (১১ আগস্ট) হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে রওনা হবেন। আনোয়ার বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও একনিষ্ঠ সমর্থক।
সফরে বাংলাদেশি কর্মীদের স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নিয়োগ, শক্তি, বাণিজ্য, উচ্চশিক্ষা, হালাল খাদ্য উৎপাদন, ব্লু ইকোনমি এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানসহ নানা বিষয় আলোচনা করা হবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সফরে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
পড়ুন: জিরো রিটার্ন’ দাখিল বেআইনি, শাস্তি সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর গত অক্টোবর মাসে প্রথম সরকার প্রধান হিসেবে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় সরকারি সফর করেছিলেন।
মঙ্গলবার পুত্রাজায়ার পারদানাপুত্রায় সরকারি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও গার্ড অব অনার দেওয়া হবে।
আনোয়ার ইব্রাহিম এরপর মালয়েশিয়ান প্রতিনিধি দলকে পরিচয় করিয়ে দেবেন এবং প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলকে পরিচয় করিয়ে দেবেন, এরপর অতিথি বইয়ে স্বাক্ষর করবেন তিনি।
সোমবার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বুংগা রায়া ভিভিআইপি কমপ্লেক্সে পৌঁছানোর পর অধ্যাপক ইউনুসকে বোর্ডিং ব্রিজে মালয়েশিয়ার প্রধান প্রোটোকল কর্মকর্তা গ্রহণ করবেন।
এরপর তাকে ভিভিআইপি কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হবে, যেখানে মালয়েশিয়ার গৃহমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুতিয়ান বিন ইসমাইল স্বাগত জানাবেন এবং একটি স্থির গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।
দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ও সমঝোতা স্মারক বিনিময়ের পর একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর প্রধান উপদেষ্টার সম্মানে সরকারি মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
সফর শেষে বুধবার (১৪ আগস্ট) রাতে প্রধান উপদেষ্টা ঢাকায় ফিরবেন।
১১৭ দিন আগে
রাষ্ট্রীয় সংকটময় পরিস্থিতিতে ড. ইউনূসের নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক সমর্থন পেয়েছিল: শফিকুল আলম
রাষ্ট্রীয় সংকটময় পরিস্থিতিতে অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সমর্থন পেয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
সোমবার (৪ আগস্ট) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে প্রেস সচিব বলেন, ড. ইউনূসের জনকল্যাণমুখী অবস্থান আমাদের ভবিষ্যতের পথ দেখায়।
শফিকুল আলম জানান, কোনো কোনো সময় রাজনৈতিক হিসাবের চেয়ে স্পষ্টতা ও সাহস বেশি জরুরি হয়ে পড়ে। ২০২৪ সালের জুলাই মাস ছিল তেমনই এক সময়। হাসিনা সরকারের হাতে বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের বহু তরুণের প্রাণহানি ঘটেছিল। এই অন্ধকার সময়ে অধ্যাপক ইউনূস সেই নৈতিক বল ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সামনে আসেন, যা ওই মুহূর্তে অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল।
তিনি বলেন, ২১ জুলাই সহিংসতা যখন চূড়ান্ত রূপ নেয়, তখন ড. ইউনূস জাতিসংঘ ও বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে একটি বৈশ্বিক আবেদন জানান। তিনি এটিকে ‘দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তা বন্ধের আহ্বান জানান এবং আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেন।
‘এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মতামত বদলে দেয়, হাসিনাকে বিশ্বমঞ্চে একঘরে করে এবং শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের পথ তৈরি করে,’ বলেন প্রেস সচিব।
তিনি আরও বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস রাজনীতিবিদ হিসেবে নয়, বরং একজন নাগরিক হিসেবে কথা বলেন। তিনি আন্দোলনকারীদের অভিনন্দন জানান, তাদের জয়কে ‘দ্বিতীয় বিজয় দিবস’ বলেন এবং প্রতিশোধপরায়ণ না হয়ে দেশ পুনর্গঠনের কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।’
এই নেতৃত্ব কোনো একদিনে তৈরি হয়নি বলে মন্তব্য করেন শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই অধ্যাপক ইউনূস শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরোধিতা করে আসছিলেন। তিনি হাসিনার শাসনকে ফ্যাসিবাদ বলেছিলেন, ভুয়া নির্বাচনের নিন্দা করেছিলেন, বিচার বিভাগ, প্রশাসন ও সংবিধানে সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলেন। এসবের কারণে তাকে ভোগ করতে হয়েছে—জনসমক্ষে অপমান, মামলা, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, এমনকি ২০২৪ সালের শুরুতে জেলদণ্ড, পরে জামিনে মুক্ত হন তিনি।’
পড়ুন: জুলাই সনদে যেকোনো সময় সই করতে প্রস্তুত বিএনপি: সালাহউদ্দিন
আন্দোলনের সময় জনগণ এমন একজন রূপান্তরকারী নেতৃত্ব খুঁজছিলেন যিনি দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে এবং তাদের আকাঙ্ক্ষিত মূল্যবোধ ধারণ করেন। সেই আস্থায় তারা ইউনূসকে বেছে নেন।
‘তিনি ক্ষমতা চাননি, বরং মানুষ তার ওপর আস্থা রেখেছিল,’ বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।
তিনি আরও বলেন, ওই সময় বিএনপির সাবেক নেতা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ অনেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছিলেন এবং নির্যাতিতও হয়েছেন। তবে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে যখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কণ্ঠস্বর দরকার ছিল, তখন মেজর হাফিজের কণ্ঠ সবচেয়ে জোরালো বা কার্যকর ছিল না।
শফিকুল আলম বলেন, ‘এই পার্থক্যটা—কারও অবদান বা ভোগান্তিকে খাটো করতে নয়, বরং কেন ড. ইউনূস জাতীয় আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠছিলেন তা বোঝানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
১২২ দিন আগে
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনের অগ্রগতি উপস্থাপন
অন্তবর্তকালীন সরকারের ১০০ দিনের প্রধান অর্জনগুলো তুলে ধরেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, কমিশনগুলো যেসব প্রতিবেদন জমা দেবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
প্রেস সচিব বলেন, দশটি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দেবে।
এ পর্যন্ত অর্জিত সাফল্য সম্পর্কে তার মতামত ব্যক্ত করেন আলম। তিনি বলেন, ‘একবার দেশের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে উঠলে, অন্তবর্তী সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে।’
আরও পড়ুন: আ. লীগের সমাবেশের ঘোষণায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের হুঁশিয়ারি
আলাদাভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন ও গ্রহণযোগ্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনারদের খুঁজে বের করতে একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আলম বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠিত হলে ভোটার তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু করবে।
প্রেস সচিব তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অর্জনগুলো তুলে ধরেন।
তার মতে, মূল অর্জনগুলো হলো-মসৃণ উত্তরণ, জুলাই-আগস্টের গণহত্যার জন্য জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার, বড় ধরনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, সংস্কার রোডম্যাপ, বিপুল বৈশ্বিক সমর্থন, দুর্নীতি শূন্য, অস্থিরতা ও সংকটের দক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থাপনা, পররাষ্ট্রনীতিতে নতুন দিকনির্দেশনা এবং সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ।
প্রেস সচিব বলেন, অধ্যাপক ইউনূস বারবার সার্ক পুনরুজ্জীবিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আসিয়ানের সদস্যপদ লাভের জন্যও সক্রিয় পদক্ষেপ নেন তিনি।
ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়, তবে তা হতে হবে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে।
ক্যাম্পগুলোর ওপর চাপ কমাতে রোহিঙ্গাদের তৃতীয় দেশগুলোর পুনর্বাসন দ্রুত করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নতুন দিকনির্দেশনার জন্য জাতিসংঘের নেতৃত্বে নতুন সম্মেলন আহ্বান করেছেন অধ্যাপক ইউনূস।
প্রেস সচিব বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল প্রত্যাশা পূরণ করা।
তিনি বলেন, 'বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ে অনেক দল রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে সেসব মোকাবিলা করেছে।’
বিক্ষোভ দমনে বল প্রয়োগের ঘটনা বিরল বলে উল্লেখ করেন আলম।
তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে অস্থিরতার কারণে পোশাক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ‘কিছু সমস্যা এখনও রয়েছে, কিন্তু সেগুলো আমাদের রপ্তানি কার্যক্রমে প্রভাব ফেলেনি।’
প্রেস সচিব বলেন, শেষ ১০০ দিনে সমাজে অভূতপূর্ব বিরোধী মত প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তীকালনী সরকারের মাত্র ৪ জন উপদেষ্টার এনজিও ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
৩৮৪ দিন আগে
রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
রাষ্ট্রপতির বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে যথাসময়ে গণমাধ্যমকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের অংশীদার। এটা (বিএনপির সঙ্গে আজকের বৈঠক) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপের অংশ। কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা তা সময়মতো আপনারা জানতে পারবেন।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণের সম্ভাবনা নিয়ে সাংবাদিকদের বারবার প্রশ্নের জবাবে আলম এ মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ সম্পর্কে আশ্বস্ত করে প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা সুস্থ আছেন এবং যথারীতি বৈঠক করছেন।
আরও পড়ু্ন: রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবন ঘিরে বিক্ষোভ, নিরাপত্তা জোরদার
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের বিষয়ে আইন উপদেষ্টার অবস্থানকে সরকার সমর্থন করে।
তিনি আরও বলেন, 'আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এর আগে রাষ্ট্রপতির বিষয়ে যা বলেছেন, তার সঙ্গে সরকার একমত। রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র না পাওয়ার বিষয়ে মিথ্যাচারের জন্য রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনকে অভিযুক্ত করে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, রাষ্ট্রপতির বক্তব্য তার শপথ লঙ্ঘন করেছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র না পেয়ে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
ড. আসিফ বলেন, 'শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি বলে রাষ্ট্রপতির দাবি মিথ্যা ও শপথের লঙ্ঘন।
আরও পড়ু্ন: রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ
৪০৮ দিন আগে