সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার
হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠাল আদালত
রাষ্ট্রদ্রোহসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রবিবার (২৯ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি.এম. ফারহান ইশতিয়াকের আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিন তিন দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান।
হাবিবুল আউয়ালের পক্ষে তার আইনজীবী শফিউল আলম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করেন।
শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালের নির্বাচনকে ‘ডামি নির্বাচন’ বলে স্বীকার সাবেক সিইসি আউয়ালের
গত ২৫ জুন মগবাজার এলাকা থেকে কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এর আগে গত ২২ জুন সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদাকে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব ‘পালন না করে’ উল্টো ‘ভয়-ভীতি দেখিয়ে’ জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে মামলা করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং মামলা, গুম, খুন ও তথ্য সংরক্ষণ সমন্বয়ক সালাহ উদ্দিন খান। এরপর মামলায় দণ্ডবিধির ১২৪ (ক)/৪২০/৪০৬ ধারায় অভিযোগ সংযুক্ত করার আবেদন করা হয়।
মামলায় ২০১৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সিইসি এ কে এম নূরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ মামলার আসামি।
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজির আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে মামলায়।
১৫৮ দিন আগে
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা আটক
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে রবিবার (২২ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরা এলাকার নিজ বাসা থেকে আটক করেছে পুলিশ। আটকের পর তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার হাফিজুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উত্তরা সেক্টর-৫ এর একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে কে এম নূরুল হুদাকে আটক করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের একটি দল।
শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির দায়ের করা একটি মামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাকে আটক করা হয়। ওই মামলায় দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
উপ-কমিশনার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘নিরাপত্তার কারণে তাকে ডিবি কার্যালয়ে (মিন্টো রোড) হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে।’
এর আগে, আজ (শনিবার) সকালে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন খানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি দায়ের করে।
আরও পড়ুন: মেধাপাচার রোধ ও শিক্ষা পুনর্গঠনের অঙ্গীকার বিএনপির
মামলায় সাবেক সিইসি কাজী রাকিবউদ্দিন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা, কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ আরও কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
বিএনপি অভিযোগ করেছে, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনগুলো একতরফাভাবে এবং দলীয় সরকারের অধীনে অনিয়মের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারা বলেছে, বারবার নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানানো হলেও তৎকালীন নির্বাচন কমিশনগুলো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
মামলার বাদী সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনটি নির্বাচনেই ব্যাপক অনিয়ম হলেও সে সময়ের সিইসিরা কোনো সংশোধনী উদ্যোগ নেননি। আমরা আশা করি, বর্তমান নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো ভোট বর্জন করায় আওয়ামী লীগের ১৫৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সিইসি কাজী রাকিবউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে।
২০১৮ সালের একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, সিইসি কে এম নূরুল হুদার অধীনে বিএনপি অভিযোগ করে যে, ভোটগ্রহণের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরাট করা হয়।
২০২৪ সালের দ্বাদশতম জাতীয় নির্বাচন, সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়, যা বিএনপি ‘নকল নির্বাচন’ বলে প্রত্যাখ্যান করে।
এ মাসের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ওই তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের ভূমিকা তদন্তে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।
১৬৫ দিন আগে
নির্বাচনি ব্যবস্থা পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই: সাবেক সিইসি আবু হেনা
নির্বাচনি ব্যবস্থা পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হেনা।
তিনি বলেন, 'আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো, নির্বাচনি প্রক্রিয়া পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের দেশের বর্তমান ব্যবস্থা কার্যকর হতে পারে। আমাদের দেশের মানুষ এই ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত।’
সোমবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই সিইসি এ কথা বলেন।
আবু হেনার অভিমত ছিল, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা (পিআর) বিভিন্ন দেশে ভালোভাবে কাজ করেনি।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশন ১৬ বছরে সবচেয়ে বড় দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল: সারজিস আলম
আবু হেনা বলেন, 'দেশের একজন সিনিয়র নাগরিক হিসেবে আমি চাই আগামীর নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও দেশের কল্যাণ বয়ে আনুক।’
চলমান সংস্কার উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আইনগুলোর যথাযথ প্রয়োগ না হলে যতই সংস্কার করা হোক না কেন, অর্থবহ ফলাফল আসবে না।
দেশের সপ্তম সিইসি হেনা বলেন, ‘নির্বাচনি সফলতা নির্ভর করছে নির্বাচনি আইন প্রয়োগের ওপর। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’
তিনি বলেন, সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে। তারা যোগ্য না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে অনেক বাধা আসবে।
আবু হেনা বলেন, নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোকে যোগ্য ব্যক্তিদের প্রার্থী হিসেবে বেছে নিতে হবে। দলের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া আরও সুষ্ঠু হওয়া উচিত। উচ্চপদস্থদের নয়, তৃণমূলের ভোটে প্রার্থী বাছাই করা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচন পরিচালনাকারী আবু হেনা বলেন, 'স্থানীয় ভোটের মাধ্যমে প্রাথমিক নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করতে হবে।’
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আইন সংশোধনের পরিবর্তে প্রয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
নির্বাচন কমিশনই আইন প্রয়োগ করে উল্লেখ করে সাবেক এই সিইসি বলেন, 'যোগ্য লোক থাকলে রাজনৈতিক সরকারের শাসনামলেও তারা ভালো নির্বাচন করতে পারে।’
এদিকে নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, তারা সব আইন ও বিধিমালা পর্যালোচনা করছেন এবং অনেক বিষয় চিহ্নিত করেছেন। 'আমরা আশা করছি সময়মতো আমাদের প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন করতে পারব।’
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে অনেক প্রস্তাব পেয়েছেন তারা। আশা করছি আরও প্রস্তাব পাব। সবার মতামতের ভিত্তিতে সুপারিশ তুলে ধরব।
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সুগম হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জামায়াতের
৩৮৮ দিন আগে