নিম্নমুখী তাপমাত্রা
নিম্নমুখী তাপমাত্রায় কাঁপছে খুলনা বিভাগ
খুলনায় দেখা মিলছে না সূর্যের। ভোর থেকেই ঘনকুয়াশা। তারপর সারাদিন মেঘলা আকাশ। কুয়াশার সঙ্গে বইছে কনকনে ঠান্ডা বাতাস। খড়কুটোতে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন হতদরিদ্র মানুষেরা।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ১০টা অবধি সূর্যের আলো দেখা যায় নাই। দোকানপাট বন্ধ। কাঁচা বাজারে নেই মানুষের সমাগম।
এমন পরিস্থিতিতে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম প্রতিদিন নিঃস্ব ও গরীবদের মাঝে কম্বল বিতরণ করছেন।
খুলনার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবীদ মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত খুলনা বিভাগের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপাত্রা রেকর্ড করা হয় কুমারখালীতে (কুষ্টিয়া) ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া খুলনায় ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সকালে ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন যশোরে ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি, সাতক্ষীরায় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি, চুয়াডাঙ্গায় ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি, মোংলায় ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও কয়রায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।’
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে বেড়েছে শীতের তীব্রতা, তাপমাত্রা ১২.৫ ডিগ্রি
তিনি বলেন, ‘দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেতুলিয়ায় ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত একদিনে তাপমাত্রা কমেছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিনের তুলনায় খুলনা বিভাগের তাপমাত্রা গড়ে ২ থেকে ২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমেছে।’
খুলনা আবহাওয়া অফিস সূত্র মতে, শুক্রবার খুলনা ও চুয়াডাঙ্গায় বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা পরিমাণ ছিল শতকরা ৯৪ ভাগ। এছাড়া কুমারখালীতে ৮৮ ভাগ ও খুলনার কয়রা উপজেলায় বাতাসে আপেক্ষিক আদ্রতার পরিমাণ ছিল শতকরা ৯৪ ভাগ।
এদিকে আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতিতে বিনোদন স্পট হিসেবে পরিচিত খুলনা মহানগরী ৬ নম্বর ঘাটে বিকালে লোকের সমাগম ছিল খুবই কম।
ঘাটে বাদাম বিক্রেতা সুজন মিয়া বলেন, ‘প্রতি শুক্রবার ছুটি থাকায় অনেকে এখানে ঘুরতে আসেন। নৌকা ভাড়া করে চড়েন।’
ঘণ্টা খানেকের মধ্যে বাদাম বিক্রি হতো ১ হাজার টাকার মতো। এখন বাজে বিকাল সাড়ে ৩টা। আরেকটু পড়ে দেবে আছরের আযান। কিন্তুর লোকের সেইরকম দেখা মিলছে না। শীতের কারণে ঘর থেকে কেউ বের হচ্ছেন না। যার কারণে বিগত শুক্রবারের তুলনায় এখানে লোক নেই বললেই চলে।
শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ। প্রচণ্ড ঠান্ডা এবং হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে জনজীবন। ভোর থেকে প্রকৃতি ঢাকা থাকছে ঘন কুয়াশায়। চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে সড়ক ও নৌ যোগাযোগ। শীতের জন্য স্বাভাবিক কাজ-কর্মে নেমে এসেছে অলসতা।
এই পরিস্থিতিতে খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষেরা মুখোমুখি হচ্ছেন অসহনীয় কষ্টের। খড়কুটো জোগাড় করে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। অনেকে অল্প টাকায় গরম কাপড় কিনতে ভিড় করছেন ফুটপাতের দোকানগুলোতে।
নগরীর ফুজিকালার এলাকার বাসিন্দা মুজিবর রহমান বলেন, ‘ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: তীব্র শীতে কাহিল কুড়িগ্রামের মানুষ
৩৩৫ দিন আগে